স্কুলশিক্ষকের সঙ্গে নবম শ্রেণীর ছাত্রীর প্রেম ও বিয়ে নিয়ে তোলপাড় সিলেটের দক্ষিণ সুরমায়

39426_37স্কুলশিক্ষকের সঙ্গে নবম শ্রেণীর ছাত্রীর প্রেম ও বিয়ে নিয়ে তোলপাড় চলছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমায়। দীর্ঘ ৬ মাস প্রেম ও দৈহিক মিলনের বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর ওই শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রীর বিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে, এ বিষয়টি মেনে নেয়নি এলাকার লোকজন। তারা স্কুলশিক্ষকের অনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন। এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগও দিয়েছেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান। ওই অভিযোগে চেয়ারম্যান দাবি করেন, স্কুলশিক্ষক আফাজ আহমদের সঙ্গে ছাত্রী পান্না বেগমের শারীরিক সম্পর্কের কারণে সে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল। এ ঘটনাটি ঘটেছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার আকিলপুর এলাকায়। তেতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উসমান আলীর অভিযোগ থেকে জানা গেছে, তেতলী ইউনিয়নের আকিলপুর গ্রামের দুদু মিয়ার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে পান্না বেগম (১৭)-এর সঙ্গে মোহাম্মদ আবদুল আহাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আফাজ আহমদের বিয়ে সংঘটিত হয়। অভিযোগে তিনি জানান, বিগত ৬ মাস ধরে শিক্ষক আফাজ আহমদের সঙ্গে ছাত্রী পান্না বেগমের অনৈতিক কার্যকলাপ ছিল। এতে পান্না বেগম অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। গত ২২শে আগস্ট আফাজ উদ্দিন ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে করেন পান্না বেগমকে। কিন্তু মেয়ের জন্ম নিবন্ধনের আলোকে জানা গেছে, পান্না বেগম অপ্রাপ্তবয়স্কা। তার বয়স ১৭ বছর। আবেদনে তিনি শিক্ষক আফাজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। অপর এক আবেদনে চেয়ারম্যান উসমান জানান, মোহাম্মদ আবদুল আহাদ উচ্চ বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত স্কুল। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ের সরকারি ভবন ব্যবহার করে কিন্ডারগার্টেন স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের অফিস রুমে ডিশ লাইন চালু আছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বাধ্যতামূলক কোচিং ক্লাসের জন্য সকাল ৮টায় উপস্থিত হতে হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কোচিং ক্লাস সহ বিদ্যালয়ের পাঠদান চলতে থাকে। ছাত্র ও শিক্ষকদের জন্য রান্না করা হয় স্কুলে। বেশির ভাগ ছাত্রীই বিদ্যালয়ে খাবার রান্না করে। ছাত্র-শিক্ষক সবাই মিলে বিদ্যালয়ে খাওয়া-দাওয়া করেন। অভিযোগে তিনি জানান, এসব কারণে বিদ্যালয়ে পান্না বেগমের ঘটনার মতো আরও ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য তিনি প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন। শুক্রবার বিয়ের ঘটনার পর পান্নাকে নিয়ে নিজ বাড়ি সুনামগঞ্জে চলে যান আফাজ আহমদ। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ২৪শে আগস্ট রাতে স্থানীয় তেতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়। স্থানীয় মুরুব্বি আবদুল খালিকের সভাপতিত্বে ওই সভায় বক্তারা এ ঘটনার নিন্দা জানান। বৈঠকে উপস্থিত থাকা এলাকার মুরব্বি বশির আহমদ জানিয়েছেন, শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রীর অনৈতিক সম্পর্ক, অন্তঃসত্ত্বা ও বিয়ের ঘটনায় এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। তিনি শিক্ষকের শাস্তি দাবি করে বলেন, ওই বিদ্যালয়ে এখন সন্তানদের পড়ালেখা করতে পাঠানো নিরাপদ নয়। এ জন্য তিনি সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেন। শিক্ষক আফাজের সঙ্গে পান্নার বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ইকবাল আহমদ। তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে, মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বার ব্যাপারে তারা কোন প্রমাণ পাননি।

Developed by: