হুমায়ূন আহমেদের মা আয়েশা ফয়েজ আর নেই

প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মা আয়েশা ফয়েজ মারা গেছেন।

শনিবার সকালে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ৮৪ বছর বয়সী আয়েশা ফয়েজ বেশ কিছুদিন ধরেই কিডনিসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
ল্যাব এইডের চিকিৎসক মোহাম্মদ ইমরান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন আয়েশা ফয়েজ। সকাল ৭টা ২০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এ সময় প্রয়াতের ছেলে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব মায়ের পাশে ছিলেন।

গত ১১ সেপ্টেম্বর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে আয়েশা ফয়েজকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তখন হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক বরেণ চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আয়েশা ফয়েজের কিডনিতে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে। ছয় মাস আগেও তার ডায়ালাইসিস করা হয়েছিল।”

প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ, লেখক ও অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং কার্টুনিস্ট ও রম্য লেখক আহসান হাবীবের মা আয়েশা ফয়েজ। তার তিন মেয়ে রয়েছে।

জোহরের নামাজের পর দুপুর দেড়টার দিকে ছেলে আহসান হাবীবের পল্লবীর বাসার পাশের একটি মসজিদে আয়েশা ফয়েজের জানাজা হয়।

তার ছেলে আহসান হাবীব জানান, তার মরদেহ পৈত্রিক বাড়ি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে নেয়া হবে। রোববার সকাল ১০টায় সেখানে জানাজার পর তার দাফন হবে।

আয়েশা ফয়েজের জন্ম ১৯৩০ সালের ২৩ মার্চ; নানাবাড়ি বারহাট্টার কৈলাটি গ্রামে। বাবা শেখ আবুল হোসেন এবং মা খায়রুন নেসা। ১৯৪৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ফয়জুর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন পুলিশ কর্মকর্তা ফয়জুর।

এক প্রজন্মে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই লেখক এবং জনপ্রিয় একজন কার্টুনিস্টকে গর্ভে ধারণ করার জন্য ‘রত্নগর্ভা’ পরিচিতি পান আয়েশা ফয়েজ।

‘জীবন যে রকম’ নামে একটি আত্মজীবনীমূলক বই রয়েছে আয়েশা ফয়েজের, যাতে নিজের বেড়ে ওঠা, বিয়ে, ছেলে-মেয়েদের জন্ম, মুক্তিযুদ্ধে স্বামীর নিহত হওয়া এবং পরবর্তী সময়ে ছয় সন্তানকে নিয়ে জীবনসংগ্রামের নানা দিক উঠে এসেছে।

মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তা স্বামী নিহত হওয়ার পর ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সংসার চালাতে বেশ কষ্ট করতে হয় আয়েশা ফয়েজকে। স্বাধীনতার পরে শহীদ পরিবার হিসেবে মোহাম্মদপুরে একটি বাসা পেলেও সেখান থেকে পরে তাদের উচ্ছেদ করা হয়।

Developed by: