সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বরইকান্দি ইউনিয়নের বরইকান্দি গ্রামে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে ড. কবির হোসেন চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রিতে বি.এস.সি অনার্স ও ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে এম.এস.সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে ফার্মাসিউটিক্যালসে এম.এস ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে একই ইউনিভার্সিটি থেকে একই শাস্ত্রে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি রয়্যাল সম্মানিত মেম্বার এবং ক্যামিক্যাল সোসাইটির সম্মানিত ফেলো।
১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে তিনি ওয়ার্ল্ড ইয়ূথ কাউন্সিলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি ম্যানচেস্টার কাউন্সিল ফর দ্যা কমিউনিটি রিলেশন্সের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি কুয়েতে থাকাকালে কুয়েতে বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলাদেশ-ব্রিটিশ চেম্বার অব কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা ডাইরেক্টর জেনারেল হন। একই খ্রিস্টাব্দে যুক্তরাজ্যের গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের যুগ্মআহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন।
তিনি বাংলা, ইংরেজি ও আরবি এই তিনটি ভাষায় খুবই পারদর্শী। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ট্রাফালগার স্কোয়ারের বিশাল গণজমায়েতে উদ্দীপনাময়ী বক্তৃতা করেন। ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে একই স্থানে কুয়েতমুক্ত করার আন্দোলন চলাকালে অনুষ্ঠিত সভায় তাঁর বক্তৃতা বিরাট আবেদন ও সাড়া জাগায় মানুষের মনে। লন্ডনের স্কুল অব ইকনোমিক্সে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের উপর অক্সফোর্ডের নাফিল্ড কলেজে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উপর তাঁর বক্তৃতা সমাজে আলোড়ন সৃষ্টির পাশাপাশি অক্সফোমের অক্সফামের ফান্ডরাইজিং অভিযানেও তাঁর বক্তৃতা বিরাট সহায়তা জোগায়।
রাজনীতির ক্ষেত্রে ট্রেনিং শিক্ষা সম্প্রসারণ এবং উন্নয়নমূলক কাজের দিকে ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল কনজারভেটিভ পার্টিকে তিনি ব্রিটেনের বিশেষ করে পূর্ব লন্ডনের বাঙালি কমিউনিটির স্বার্থ ও অধিকার এবং উন্নয়ন কর্মপ্রচেষ্টার প্রতি আন্তরিকভাবে আরও বেশ আগ্রহী করে তুলছেন। তিনি ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাশীন কনজারভেটিভ পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে টাওয়ার হেমলেটেস বেথেনল গ্রিন অ্যান্ড ব্রো নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে সাড়া জাগান।
কবির চৌধুরী একজন নিরহংকার, সদালাপী, মার্জিত রুচির মানুষ। তিনি নিরলসভাবে কাজ করতে ভালোবাসেন। দক্ষিণ সুরমার শিক্ষা বিস্তারে তাঁর উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তিনি শিক্ষার ক্ষেত্রে দক্ষিণ সুরমার অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজে শিক্ষা বিস্তারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি ২০০২ খ্রিস্টাব্দ থেকে দেশে অবস্থান করছেন। দেশে অবস্থানকালীন তিনি প্রথমে শাহজালাল ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করেন। তিনি সিলেটের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির (সাবেক) ভিসির দায়িত্ব পালন করেন। হাফিজ আহমদ মজুমদার ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ও স্কলার্স হোম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যানও তিনি।