বিভাগ: প্রবাস

সিলেটে নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা প্রবাসীদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায়ের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর কে এম আবু তাহের চৌধুরী

বিলেতে বাংলাদেশি কমিউনিটির উজ্জ্বল মুখ, বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ইউকে’র প্রেসিডেন্ট, বিশিষ্ট সাংবাদিক-কলামিস্ট, লেখক এবং কমিউনিটি সংগঠক কে এম আবু তাহের চৌধুরীর সম্মানে ৯ মে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিভাগীয় নগরী সিলেটে এক নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরো সিলেট বিভাগীয় চ্যাপ্টার এবং ভিশন সিলেট-এর যৌথ উদ্যোগে নগরীর উত্তর জেল রোডস্থ হোটেল ডালাস মিলনায়তনে আয়োজিত এ নাগরিক সংবর্ধনায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরো সিলেট বিভাগীয় চ্যাপ্টারের সভাপতি, ভিশন সিলেট-এর চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট সাংবাদিক-লেখক-গবেষক মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান।

বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরো সিলেট ডিস্ট্রিক্ট চ্যাপ্টারের সভাপতি, সিলেট জেলা বারের বিশিষ্ট আইনজীবী ও নোটারি পাবলিক আব্দুর রহমান চৌধুরী কর্তৃক পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সভাপতি মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও স্বনামধন্য কবি প্রিন্সিপাল কালাম আজাদ,দৈনিক জালালাবাদ সম্পাদক ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুকতাবিস্ উন্ নূর, বিশিষ্ট সাংবাদিক-কলামিস্ট ও লেখক আফতাব চৌধুরী, ইসলামী ফাউন্ডেশন সিলেট-এর উপ-পরিচালক মাওলানা শাহ্ নজরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি ডা. ছাদিক আহমদ।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংক গোলাপগঞ্জ শাখার অফিসার সৈয়দ এহতেশাম আরেফিন, মাসিক শাহজালাল পত্রিকার সম্পাদক রুহুল ফারুক, লেখক- কলামিস্ট বেলাল আহমদ চৌধুরী, অধ্যাপক কবি বাছিত ইবনে হাবীব, সিলেট বিভাগ গণদাবী ফোরামের সভাপতি চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ এডভোকেট, মতিন উদ্দীন জাদুঘর সিলেট-এর পরিচালক ও বিশিষ্ট সমাজসেবী ডা. মোস্তফা শাহ্ জামান চৌধুরী বাহার, দৈনিক সিলেটের ডাক-এর চিফ রিপোর্টার ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, প্রবীণ সাংবাদিক ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি আ,ফ,ম,সাঈদ এবং সিলেট প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আবদুল কাদের তাপাদার প্রমুখ।
সমাজের সর্বস্তরের নাগরিকবৃন্দের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে সরব এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বিলেতে এবং স্বদেশে মানবতাবাদী কে এম আবু তাহের চৌধুরীর জনকল্যাণমূলক নানা কর্মকা-ের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সেই সাথে তাঁর সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করেন। বক্তারা বলেন, প্রবাসীদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া আদায়ের সাথে জড়িয়ে আছে কে এম আবু তাহের চৌধুরীর নাম। এক কথায় তিনি বিলেতের বাংলাদেশি কমিউনিটির একটি অপরিহার্য নাম।
অনুষ্ঠানে মানবকল্যাণে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সংবর্ধিত অতিথি কে এম আবু তাহের চৌধুরীকে সম্মাননা স্মারকও প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সংবর্ধিত অতিথির বড় ভাই, মৌলভীবাজার জেলা আদালতের প্রবীণ আইনজীবী, বিশিষ্ট লেখক ও ইতিহাস গবেষক সদ্য প্রয়াত এডভোকেট সৈয়দ জয়নাল আবেদীনের রূহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ইসলামি ফাউন্ডেশন সিলেট-এর উপ-পরিচালক, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা শাহ্ নজরুল ইসলাম।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন নলেজ হারবার স্কুল,সিলেট-এর প্রিন্সিপাল কবি নাজমুল আনসারী।

সেপ্টেম্বরে লন্ডনে ১১তম বইমেলা ও সাহিত্য উৎসব

আগামী সেপ্টেম্বরে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১১তম বাংলাদেশ বইমেলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব।

এ উপলক্ষে (সোমবার) ৮ মে ২০২৩ সন্ধ্যা ৬টায় পূর্ব লন্ডনে সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্যের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় চলতি বছরে ১১তম বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজনসহ সাংগঠনিক কার্যক্রম ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়।

সংগঠনের সভাপতি ময়নূর রহমান বাবুলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আব্দুল্লাহর পরিচালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন কার্যনির্বাহী সদস্য গবেষক ফারুক আহমদ, কবি আতাউর রহমান মিলাদ, সাংবাদিক রহমত আলী, শামীম আহমদ সহসভাপতি কবি কাজল রশীদ, সহ সাধারণ সম্পাদক কবি এম মোসাইদ খান, সহকোষাধ্যক্ষ কবি মুহাম্মদ মুহিদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কবি মোহাম্মদ ইকবাল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, সাংবাদিক জুয়েল রাজ প্রমুখ।

সভায় আগামী সেপ্টেম্বরে বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজনের তারিখ নির্ধারণ, প্রকাশক ও অতিথি তালিকাসহ মেলা উদযাপনে সংগঠনের বিশেষ প্রকাশনার জন্য সম্পাদনা কমিটি গঠনসহ বিবিধ বিষয়ে আলোচনা হয়।

সভায় কমিউনিটির সর্বস্তরের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিশেষ পরামর্শ সভাসহ নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যে কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেন বিশ্বনাথের শিরিন আক্তার ও মো. শহিদ

গত ৪মে যুক্তরাজ্যের চেস্টার সিটি নির্বাচনে আপটন এলাকা থেকে তিনি লেবার পার্টি থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয় লাভ করেছেন এবং চেস্টার সিটির আপটন এলাকা থেকে প্রথম বাংলাদেশী কাউন্সিলর।

বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত শিরিন আক্তার সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার উত্তর ধর্মদা গ্রামের শাহ হুশিয়ার উল্ল্যা ও পারভীন আক্তার দম্পতির দ্বিতীয় মেয়ে। জন্ম যুক্তরাজ্যে হলেও ছোটবেলায় তিনি বিশ্বনাথের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর লেখাপড়া করেন। পরবর্তীতে বাবা-মায়ের সাথে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান এবং সেখানে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি সমাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছেন। শিরিন আক্তার নির্বাচিত হওয়ায় বাঙালি কমিউনিটির পাশাপাশি নিজ জন্মভূমি বিশ্বানথে স্বজনদের মধ্যে আনন্দ উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। তিনি বিজয়ী হয়ে প্রবাসে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন।

এদিকে, ২য় বারের মত যুক্তরাজ্যের কিগলী টাউনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল মো. শহিদ। তিনি বৃটেনের কিগলী’র স্থায়ী বাসিন্দা ও বিশ্বনাথের দশঘর ইউনিয়নের দশঘর নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত হাজী আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র। গত ৪ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জালাল উদ্দিন শেখকে হারিয়ে ২য় বারের মত কাউন্সিলর নির্বাচিত হন আব্দুল মো. শহিদ।

তাঁর বিজয়ে এলাকায় আত্মীয়-স্বজনসহ আনন্দিত হয়ে মিষ্টি বিতরন করেছেন। বৃটেনের মাটিতে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে নিজ উপজেলা বিশ্বনাথবাসিকে আরো এগিয়ে নিয়েছেন আব্দুল মো. শহিদ। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি স্ত্রী রাসনা বেগম আসমা, ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে নিয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। তাঁরা ৩ ভাই ২ বোনের মধ্যে তিনি ৪র্থ।

প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাব ফ্রান্স’র কমিটি গঠন: সভাপতি শাহ সুহেল, সম্পাদক রাসেল

ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের অন্যতম সংগঠন ‘প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাব ফ্রান্স’র কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা টেলিগ্রাম’র সম্পাদক শাহ সুহেল আহমদকে সভাপতি ও বাংলা টিভির ফ্রান্স প্রতিনিধি রাসেল আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
সোমবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় প্যারিসের একটি অভিজাত রেস্তোরাঁয় সংগঠনের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় ২০২৩-২৪ সেশনের নতুন এ কমিটি ঘোষণা করেন ৩ সদস্য বিশিষ্ট ‘সাবজেক্ট কমিটি’।
সংগঠনের আহবায়ক এনটিভি ফ্রান্স প্রতিনিধি আবুল কালাম মামুনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রাসেল আহমেদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি এনায়েত হোসেন সোহেল।
নবগঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মুনির হোসেন (বিডি সংবাদ), সহসভাপতি ইকবাল মোহাম্মদ জাফর (দৈনিক ঢাকা টাইমস), সহসভাপতি জামিল আহমেদ সাহেদ (এলবি২৪ টিভি), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল ইসলাম (অনুক্ত কামরুল-টাইমস টিভি), কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান (ডেইলি সিলেট), সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আফরোজ হোসেন (দৈনিক সন্ধ্যাবাণী), সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ শিব্বির, পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক দেলোয়ার হোসাইন (লাতু এক্সপ্রেস) প্রচার সম্পাদক তানভীর তালুকদার (বাংলা টেলিগ্রাম), দপ্তর সম্পাদক সাদিক তাজিন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল মুহিব, সহ-ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাহেদ আহমদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইয়াকুব আলী প্রধান (আমার ফ্রান্স)।
কমিটির নির্বাহী সদস্যরা হলেন এনায়েত হোসেন সোহেল (বিশেষ প্রতিনিধি -আইওনটিভি), আবুল কালাম মামুন (এনটিভি-ইউরোপ), মোহাম্মদ তাইজুল ইসলাম (আর টিভি), শাবুল আহমেদ (বিয়ানীবাজার নিউজ২৪ডটকম), মোহাম্মদ আলী চৌধুরী (ইউরো ফোকাস-২৪) ও মো. মনির হোসেন মোল্লা (দিগন্ত টিভি অনলাইন)।
আয়োজিত দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া সভার দ্বিতীয় পর্বে নবাগত সভাপতি শাহ সুহেল আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহমেদের হাতে প্রেসক্লাবের কাগজপত্র তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন বিদায়ী আহবায়ক ও সদস্য সচিব।

যুক্তরাজ্য : শরতের সন্ধিক্ষণে বাংলাভাষী কবিদের নিয়ে শেক্সপিয়ারের বাড়ি’তে কাব্যময় দিন…

নব গঠিত মিডল্যান্ডস সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ ইউকে কর্তৃক আয়োজিত ইংরেজ মহাকবি ও উপন্যাসিক উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের বাড়ির সন্নিকটে এক ব্যাতিক্রমী উদ্যোগে কাব্যময় দিন যাপনের নিজেদের সৃস্টি সাহিত্য-গল্প-কবিতার উৎসব ও আড্ডায় যোগ দেন- লন্ডন থেকে সাপ্তাহিক সুরমার সাবেক সম্পাদক কবি আহমেদ ময়েজ, ম্যানচেষ্টার থেকে কবি গবেষক তাবেদার রসূল বকুল, কবি কলামিষ্ট ফারুক যোশী, কবি লিয়াকত খান, যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান থেকে ব্রিটেন ভ্রমনে আসা কমিউনিটি নেতা ও কবি আব্দুল মুকিত সহ ওয়েস্ট মিডল্যান্ডের কবি সাহিত্যিকরা।

মিডল্যান্ড সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ ইউকের সভাপতি ছড়াকার, সাংবাদিক ও সম্পাদক সৈয়দ নাসির আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কবি সৈয়দ মাসুমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বার্মিংহাম মিডল্যান্ডস বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি লেখক ও সম্পাদক মোহাম্মদ মারুফ।

কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, গান ও আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন কমিউনিটি নেতা ডাঃ মিসবাউর রহমান, মোর্শেদ নোমান চৌধুরী, শাহ আব্দুল ওয়াদুদ, বাউল হারুনুর রশিদ, জয়নাল আবেদিন, সাংবাদিক কায়সার ইসলাম সুমন, সাংবাদিক কাফি কামাল, সাংবাবিক ও সম্পাদক বদরুল আলম, মনিরুজ্জামান মনির, এম হাসান খোকন, কামরুজ্জামান কামরুল,বাহার উদ্দিন প্রমুখ-।

অত্যন্ত সুন্দর আবহাওয়া-সুন্দর পরিবেশের মধ্যে ইংরেজের মহাকবির জন্মভূমি ও বাসস্থান সংলগ্ন স্থানে কবি-সাহিত্যিকদের মন মাতানো মনমুগ্ধকর কবিতা আবৃত্তি আর কবি আহমদ ময়েজের হৃদয়ছোয়া কন্ঠে মরমি গানের সুর সত্যি মনের রাখার মতো। উপস্থিত শ্রোতারা কবি আহমদ ময়েজের গানগুলো খুব উপভোগ করেন গান গুলো সবার মন ছোয়ে যায়।

পরিশেষে নব গঠিত মিজল্যান্ডস সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি সৈয়দ নাসির উপস্থিত কবি-সাহিত্যিক, শুভাকাঙ্ক্ষী সবার প্রতি শতব্যস্ততার মধ্যে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত হওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

নব গঠিত সংগঠনের কবি-সাহিত্যিকদের নিয়ে বাংলা সাহিত্যের কার্যক্রম সমাজের বাঙালি কমিউনিটিতে পৌছে দিতে সবার সহযোগিতা চান এবং আগামীতে আরও বড় পরিষরে সাড়া বৃটেনের কবি-সাহিত্যিকদের বৃহৎ আড্ডা বসানোর আশা ব্যক্ত করে আড্ডার সমাপ্তি ঘোষনা করে মধ্যহৃভোজ আর চা কফি পানের মাধ্যমে সবাই আনন্দ উপভোগ করেন।

বিশ্বনাথ ফ্লাড আপিল ২০২২ এর উদ্যোগে রামপুরে অর্থ বিতরণ

বিশ্বনাথের প্রবাসীদের উদ্যোগে বিশ্বনাথ ফ্লাড আপিল ২০২২ এর আয়োজনে উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মধ্যে নগদ এক হাজার টাকা করে বত্রিশ লক্ষাধিক টাকা বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে চুয়াল্লিশ পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয় নগদ এক হাজার টাকা করে।

রামপুর হাফিজিয়া মাদরাসা মিলনায়তনে আয়োজিত বিতরণপূর্ব আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী সমাজসেবী ও শিক্ষানুরাগী মাওলানা কবি সিরাজুল ইসলাম সাদ।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ সিলেট বিভাগীয় আহবায়ক সাজিদুর রহমান সোহেল এর সভাপতিত্বে ও হাফিজ নাঈম আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক কবি নাজমুল ইসলাম মকবুল, মাওলানা আকমল হোসেন শাকুর, হাফিজ ইউসুফ আলী।

বক্তারা বলেন র‌্যামিট্যান্সযোদ্ধা প্রবাসীরা আমাদের গর্বের ধন। তারা দেশের যে কোন দুর্যোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। শুধু তাই নয় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রবাসীদের অবদানই সবচেয়ে বেশি। তাদের এ অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে আমরা স্মরণ করি।

আলোচনা সভা শেষে সকল প্রবাসী ও মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা কবি সিরাজুল ইসলাম সাদ।

আলোচনা সভা শেষে অলংকারী ইউনিয়নের সাবেক ১নং ওয়ার্ডের চুয়াল্লিশ পরিবারের হাতে বিশ^নাথ ফ্লাড আপিল ২০২২ এর পক্ষ থেকে তুলে দেয়া হয় নগদ এক হাজার টাকা করে।

আশির দশকের তরুণ ছাত্র সংগঠক জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জনাব মাহমুদ আলী এর সাথে মতবিনিময় সভা

গত ৯ই আগষ্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যা ঘটিকায় হুয়াইট চ্যাপেল এর একটি রেষ্টুরেন্টে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বৃহত্তর লালাবাজারবাসী আয়োজনে লন্ডনে ভ্রমণরত আমেরিকা প্রবাসী আশির দশকের তরুণ ছাত্র সংগঠক জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জনাব মাহমুদ আলী এর সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় । আব্দুর নুর খলকু এর সভাপতিত্বে ও খালেছ উদ্দিন ( সাবেক স্পিকার টাওয়ার হেমলেট ) এর পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় স্মৃতিচারন করেন মাহমুদ আলীর সহপাঠী ও সহকর্মিবৃন্দ আব্দুর রাজ্জাক, এম এ মুনিম ( ওবিই ) আব্দুল ওদ্দুদ মল্লিক ( সাক্কু ) আব্দুর রব খান নেওর বক্তারা তৎকালীন সময়ের ছাত্র রাজনীতির নিতি নৈতিকতা ও আদর্শের কথা তুলে ধরেন এবং জনাব মাহমুদ আলীর কর্মতৎপরতা ও ভুমিকার প্রশংসা করেন । জনাব মাহমুদ আলী দীর্ঘদিন পর সহপাঠী ও সহকর্মিদের কাছে পেয়ে আনন্দবোধ করেন এবং নিজ এলাকাবাসীর ভালবাসায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন । তিনি বলেন সেই ১৯৮৫ সাল থেকে আমি দেশের বাইরে আপনারা এখন যে আমাকে মনে রেখেছেন এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া আজকের এই দিনটি আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে আমি আপনাদের ভালবাসায় অভিভূত । মতবিনিময় সভায় বক্তব্যে রাখেন কাউন্সিলর মিজান চৌঃ আব্দুল হক আবু ( সাবেক প্রতিষ্ঠা সভাপতি লালাবাজার ইউনিয়ন উন্নয়ন সংস্থা ) মোহাম্মদ আসিক মিয়া ( সাবেক শিক্ষক লালাবাজার স্কুল এন্ড কলেজ ) খালেছ উদ্দিন ( সাবেক স্পিকার টাওয়ার হেমলেট ) আব্দুল মুক্তার সাইস্তা ( সাবেক সভাপতি লালাবাজার ইউনিয়ন উন্নয়ন ট্রাস্ট ইউকে ) মকসুদ রহমান ( সভাপতি লালাবাজার ইউনিয়ন উন্নয়ন ট্রাস্ট ইউকে ) আরও বক্তব্যে রাখেন আরশ আলী, আলী আহসান খান দিপু, আব্দুর রব, সাইস্তা মিয়া, ফারুক আহমদ, মিয়া মোহাম্মদ চন্দন, ফখর উদ্দিন ফারুক, রফিক উদ্দিন, এম মোসাইদ খান, মুহিবুর রহমান, সামসুল খান ( বাদশা ) সানুর খান প্রমুখ । লালাবাজারবাসীর পক্ষে মাহমুদ আলীকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন লালাবাজার ইউনিয়ন উন্নয়ন ট্রাস্ট ইউকে এর সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ এম মোসাইদ খান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মুহিবুর রহমান ও অন্যান্যরা । নৈশভোজের মধ্য দিয়ে মতবিনিময় সভার সমাপ্তি হয় ।

সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্যের সংবাদ সম্মেলন : লন্ডনে ১০ম বাংলাদেশ বইমেলা সফল করতে সকলের সহযোগিতা কামনা

লন্ডন, ৮ আগস্ট ২০২২: আগামী ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর (রবি-সোমবার) লন্ডনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘১০ম বাংলাদেশ বইমেলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব’। সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্যের উদ্যোগে দু’দিনব্যাপী এই বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে পূর্ব লন্ডনের মাইল এন্ড-এর দ্যা আর্ট প্যাভিলনে, প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি, যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক ড. শাহাদুজ্জামান।

গত ৮ আগস্ট সোমবার বিকেলে সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের উদ্যোগে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্যের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আব্দুল্লাহ । বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি ময়নুর রহমান বাবুল, সহ সভাপতি অাবুল কালাম আজাদ ছোটন, ট্রেজারার লেখক-সাংবাদিক আনোয়ার শাহজাহান ও সাবেক সভাপতি লেখক ও গবেষক ফারুক আহমদ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্যের যাত্রা শুরু হয় এবং এই দীর্ঘ সময়ে এই সংগঠনের কার্যক্রমে প্রায় সবসময় সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করে আসছেন । নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। বিশেষ করে আমাদের সংগঠন এবং এর কার্যক্রমের প্রচারে সহযোগিতা করেছেন। এজন্য আমরা সাংবাদিকদের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ যুক্তরাজ্য বিলাতের বিভিন্ন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সম্মিলিত রূপ । ২০০৯ সালে এই সংগঠনের জন্ম হয় ।২০১০ সালে প্রথম বইমেলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয় । বাংলা একাডেমি-সহ খ্যাতিমান প্রকাশনী সংস্থা বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করে। প্রথম বইমেলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মরহুম প্রফেসর শামসুজ্জামান খান । উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক সাহিত্যিক প্রয়াত আবদুল গাফফার চৌধূরী। এ ছাড়াও ২০১১ সালে ‘বাংলা একাডেমি বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসবকে কেন্দ্র করে বাংলা একাডেমির একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল, ‘বাংলা একাডেমির প্রবাসী লেখক পুরস্কার’-এর প্রবর্তন। এরপর ২০১৫ সালে পুরস্কারটির নামকরণ করা হয়, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ পুরস্কার। এই ধারাবাহিকতায় প্রায় প্রতি বছরই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। গত দুবছর করোনা মহামারির কারণে বইমেলা করা সম্ভব হয়নি। এবার দশম বাংলাদেশ বইমেলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, দ্যা আর্ট প্যাভিলন মাইল এন্ড পার্কে।


নানা আয়োজনের সাথে থাকবে আলোচনা, সাহিত্য অনুষ্ঠান, শিশুদের পরিবেশনা, নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, প্রতিবন্ধী শিশুদের পরিবেশনা, কবিতা আবৃত্তি, স্বরচিত কবিতাপাঠ, সম্মিলিত সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার প্রদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি । দুদিনব্যাপি অনুষ্ঠান সকলের জন্য থাকবে উন্মুক্ত এবং প্রবেশ ফ্রি।
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে বিলেতের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এবং ভিন্নভাষী মানুষের কাছে আমাদের সাহিত্য- সংস্কৃতিকে পরিচয় করিয়ে দিতে এই উৎসব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এতে আরো বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে বিশিষ্ট সাহিত্যিক, রাজনৈতিক, সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব বইমেলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবে যোগ দিয়ে আসছেন । যাঁদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক ও লেখক জনাব আবদুল গাফফার চৌধুরী, কবি ও লেখক উইলিয়াম রেডিস, অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিক এবং বাংলাদেশের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংস্কৃতি বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী আবুল কামাল আজাদ, জনাব আসাদুজ্জামান নূর, ড. দীপু মণি এমপি, কবি কামাল চৌধুরী, কবি আসাদ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল, বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, মাহমুদ শাহ কোরেশী, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সাবেক পরিচালক ড. এ এম আখতারুজ্জামান, জনাব কে এম খালিদ এমপি, যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম, সাবেক মেয়র জন বিগস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ভীষ্মদেব চৌধুরী, ড. এস.কে. মুসলিমা মুন, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ড.শাহাদুজ্জামান সহ বিশিষ্টজন ।
বাংলাদেশ থেকে মেলায় অংশগ্রহণ করেছে বাংলা একাডেমি, জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্র, ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ, উৎস প্রকাশ, অনিন্দ্য প্রকাশ, শব্দশৈলী, পারিজাত প্রকাশনী, আহমেদ পাবলিশিং হাউস, কথা প্রকাশ, নালন্দা পাবলিকেশন্স, অনন্যা প্রকাশনী, অনার্য পাবলিকেশন্স, আগামী প্রকাশনী, অন্নপ্রকাশ, মাওলা ব্রাদার্স, মুক্তধারা, বাসিয়া প্রকাশনী, পাণ্ডুলিপি প্রকাশনীসহ বিলাতভিত্তিক অনেকগুলো প্রকাশনী সংস্থা।
এবারের বইমেলা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কবি- সাহিত্যিক সহ বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৫টির মতো খ্যাতিমান প্রকাশনী সংস্থা ও বিলেতের ৫টি প্রকাশনী সংস্থা অংশগ্রহণ করবে । মেলা সফল করতে সাংবাদিক, সাহিত্যিকসহ ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করা হয়।

শিশিরকন্যা জয়িতার প্রথম বই : ‘দূর পরবাসে’-এর পাঠ প্রতিক্রিয়া

শুনেছি এক কোটির বেশি বাংলাদেশি দেশের বাইরে থাকে। বিশাল একটা সংখ্যা। পৃথিবীর অনেক দেশের জনসংখ্যাই এক কোটি না, আর আমরা সেই পরিমাণ আদম সন্তান রপ্তানি করে দিয়েছি! প্রবাসে তাই বাংলাদেশি কমিউনিটি বিরল না। বড় শহরে তো বটেই, মাঝারি, এমন কী ছোট শহরেও বাংলাদেশি পাবেন আপনারা, আমরা প্রবাসী বাংলাদেশিরা একে দেশি কমিউনিটি বলে থাকি। কেমন আছেন তারা? কী ভাবছেন? কী খাচ্ছেন, কতখানি অভিযোজিত হয়েছেন ভিন্ন দেশে, ভিন্ন প্রতিবেশে? জীবন বৈরী হয়ে উঠলে কী করেন তারা? এই প্রশ্নগুলো উত্তর আপনারা পত্রিকাতে পাবেন না। অন্তর্জালে বাংলা লেখার সহজলভ্যতার কারণে প্রবাসীরাও লিখছেন, দেশি কমিউনিটির মধ্যে দেশি লেখক সমাজও গড়ে উঠছে আস্তে আস্তে। আমি জিনিসটাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখি। নোয়াখালির গ্রাম থেকেও মিনিটের মধ্যে নেব্রাস্কার ছোট শহরের বাংলাদেশির জীবনটা এখন দেখা সম্ভব।
আমি নিজেকে বøগার মনে করি। বøগ অনেকটা ডায়েরির মতোন, ব্যক্তিগত ভাবনা আর পারিপার্শ্বিক এবং তার আড়ালে যা আছে সেগুলো সব উঠে আসে এতে। আমি মনে করি বøগ একটা সমাজের চিত্র, এতে খুঁটিনাটি ব্যাপার যেগুলো ধরা পড়ে আর কোনো কিছুতে একটা সময়কে অতটা ধরা সম্ভব না। প্রবাসী বাংলাদেশীদের জানতে হলে সবচেয়ে উত্তম তাদের লেখা বøগ পড়া। পড়ে শেষ করলাম শিশিরকন্যা জয়িতার প্রথম বই- ‘দূর পরবাসে’। বইটার নামই বলে দিচ্ছে দুই মলাটের ভেতরে কী আছে। শিশিরকন্যা জয়িতা আমেরিকাতে আছেন ৩০ বছর ধরে। তিনি আমেরিকার ঢাকা শহর নিউইয়র্কে থেকেছেন, থেকেছেন অপেক্ষাকৃত ছোট শহর অস্টিনেও। কাজ করেছেন কর্পোরেশনে, সন্তান বড় করেছেন, সংসারধর্ম পালন করেছেন। অর্থাৎ একটা জীবনে যা যা অনুষঙ্গ থাকে সবই তাঁর আছে, তাই দূর প্রবাসের জীবনের ৩৬০ ডিগ্রি একটি ছবি তিনি দিতে পারবেন সেই বিশ্বাস আমার বইটা হাতে নেওয়ার আগেই ছিল।
দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া সহজ কাজ না, বহু কষ্ট আর শূন্যতা বয়ে বেড়াতে হয় প্রথম জেনারেশনের বাংলাদেশিদের। আত্মপরিচয়ের সংকট আছে, সেই সাথে আছে পরবর্তী প্রজন্মকে নিজের সমাজ ও জীবন দর্শন চেনানোর সুকঠিন দায়িত্ব। মাছেভাতে বাঙালি জাতি আমরা কিন্তু অবধারিত প্রশ্ন ধেয়ে আসে সন্তানের কাছ থেকে- What is so special about fish? সেই সঙ্গে বাংলাদেশি নারীকে কর্মক্ষেত্রে কী কী প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় সেটাও এই বইতে উঠে এসেছে। টানাপোড়েন আরও প্রখর হয়ে উঠে যখন সন্তান কুকুর পালার আবদার করে, অধিকাংশ দেশি মানুষ যখন কুকুর দেখলে ভয়ে কাঠ হয়ে যান, তখন এই আব্দার কীভাবে মেটানো সম্ভব?
জয়িতা আরও দুই একটা অভিজ্ঞতার কথা লিখেছে যেটার সাথে বাকি প্রবাসীরাও সংযোগ করতে পারবেন। প্যারিসের রাস্তাতে বাংলাতে কথা বলতে শুনে এক প্রবাসী বাংলাদেশীর স্ট্রিট ভেন্ডরের সহমর্মিতার কথা এসেছে জয়িতার বইয়ে একটি অধ্যায়ে। এই অভিজ্ঞতা আমাদের প্রায় সবারই হয়েছে। এক কোটি রেমিটেন্স যোদ্ধা ছড়িয়ে আছে জাপান থেক পেরু পর্যন্ত, এদের প্রায় সবাই পায়ের ঘাম মাথায় ফেলছেন জীবন ও জীবিকার জন্য, ঋদ্ধ করছেন বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার। কিন্তু রাস্তায় হঠাৎ বাংলা শুনলে আমরা ভুলে যাই দেশ থেকে বহুদূরে আছি, আমি একবার প্রচÐ তৃষ্ণার্ত হয়ে এক বোতল পানি কিনেছিলাম নিউইয়র্কের রাস্তাতে, সেই পানির দাম দিতে আমাকে অনুনয় বিনুনয় করতে হয়েছিল। জয়িতার মতো আমিও জানি না স্বজাতির প্রতি এত টান আর কোন জাতির মানুষ অনুভব করে কি না।
বইতে বিভিন্ন কিছু চিত্তাকার্ষক টপিকও উঠে এসেছে, যেমন মৃত্যুর কাছাকাছি থেকে ফেরৎ আসার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি লেখা আছে (ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নয়), কলম্বাস ডে আর ভ্যালেন্টাইন্স ডে নিয়ে দুটো অধ্যায় আছে। ৯/১১ এর সময় জয়িতা নিউইয়র্কে কর্মরত ছিলেন, সেই সময়ের অভিজ্ঞতার কথা আছে, আছে ছেলেবেলার ইদ উৎসবের কথাও।
আত্মপ্রকাশের তাগিদ মানুষের মজ্জাগত। আমার মনে হয় এই তাগিদেই গল্প, উপন্যাস, কবিতাসহ যাবতীয় শিল্পমাধ্যমের সৃষ্টি হয়েছে। দূর পরবাসে জয়িতার আত্মপ্রকাশের সূচনা। জয়িতা ভাষা সাবলীল, বাহুল্যবর্জিত। ৩০ বছর পরবাস জীবন একটি বইতে ধরা পড়বে না, জয়িতার কলম (কী বোর্ড বলা উচিত) চালু থাকবে এই বিশ্বাস আমার আছে। আরও অনেক অনেক বিষয় নিয়ে সে লিখবে, প্রবাস জীবনের আনাচে কানাচে ও গভীরে সে প্রবেশ করবে, আরও অনেক অনেক ঋদ্ধ হবে ওর লেখনি এই প্রত্যাশা আমার আছে। আমি সেই অপেক্ষাতে আছি।
দূর পরবাসে প্রকাশ করেছে বাসিয়া প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছেন দেলোয়ার রিপন। মূল্য রাখা হয়েছে ২০০ টাকা। বাংলাদেশে রকমারি ডট কম থেকে কিনতে পারবেন।

তাসনীম হোসেন । বøগার/ লেখক।
টেক্সাস, ইউএসএ

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সম্মাননা পেয়েছেন কবি সৈয়দ মাসুম

বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ আন্তর্জাতিক পর্ষদ ও বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ কর্তৃক সৈয়দ মাসুমকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী সম্মাননা পদকে ভূষিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকার সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ আন্তর্জাতিক পর্ষদ ও বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদের নেতৃবৃন্দ এই সম্মাননা পুরুস্কার কবির সহোদর সৈয়দ মাহবুবের হাতে তোলে দেন।

বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ আন্তর্জাতিক পর্ষদ ও বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদের আয়োজনে বীরমুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. শাহজাহান মৃধা বেনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক জাতিসত্তার কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি অসীম সাহা, মারুফুল ইসলাম, তারিক সুজাত ও অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন। মনোজ্ঞ সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও এই আয়োজনে কবিতা আবৃত্তি করেন জালাল উদ্দিন নলুয়া, ড. তপন বাগচী, শফিকুর রাহী, রিফাত নিগার শাপলা, আনতানুর হক, হানিফ খান, ইউসুফ রেজা, রোকশানা সাথী, জমশেদ ওয়াজেদ, মাসুদ আলম বাবুল, মাদবর রফিক, লুৎফর চৌধুরী, হাসনাইন সাজ্জাদী, গিয়াসউদ্দিন চাষা, হেনা খান, কৌমুদী নার্গিস, বোরহান মাসুদ, সৈয়দ একতেদার আলী, আলী নিয়ামত, মিহির কান্তি ভৌমিক, লুৎফা জালাল, তানিয়া মাহমুদ, শ্রাবণ রেজা, ইমরান পরশ, সৈয়দ তপু, মেরীনা সাঈদ, শাফিন প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ আন্তর্জাতিক পর্ষদ ও বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ কর্তৃক সৈয়দ মাসুমকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী সম্মাননা পদকে ভূষিত করায় অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কানাডা থেকে প্রকাশিত বিশ্ব বাংলা সংবাদ মাধ্যম সিবিএনএ-এর প্রধান নির্বাহী সদেরা সুজন এবং প্রধান উপদেষ্টা বিদ্যুৎ ভৌমিক।  সৈয়দ মাসুম বলতে গেলে শৈশব থেকেই লেখালেখি করে যাচ্ছেন প্রবাসের কষ্টকঠিন জীবনেও থেমে থাকেননি। দেশ-মাটি-মানুষ, স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধ আর অসাম্প্রদায়িক চেতনায় তাঁর পথচলা।

Developed by: