ইরাকে বিমান হামলা জোরদার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হামলার সঙ্গে সঙ্গে চলছে আটকে পড়া মানুষের জন্য ত্রাণ সাহায্য। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ইরাক ও সিরিয়ার ভুখণ্ডে তিনি সুন্নি জিহাদিদের খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে দেবেন না। ইরাকে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের অবস্থানের ওপর মার্কিন বিমান হামলার পর নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ওবামা এ কথা বলেন। ওবামা ইরাকে হামলার কোনো সময়সীমাও উল্লেখ করেননি। এই হামলা দীর্ঘসময় ব্যাপী চলতে পারে বলেও জানান তিনি। খবর বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা ও সিএনএন’র।
পেন্টাগনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সি-১৭ ও সি-১৩০ বিমান থেকে মোট ৭২ বান্ডিল খাদ্য সামগ্রী ফেলা হয়েছে। মার্কিন রণতরী ইউএসএস জর্জ এইচডব্লিউ বুশের দুটি যুদ্ধ বিমান এফ/এ-১৮ মালবাহী ওই দুটি বিমানের প্রহরায় নিয়োজিত ছিল। সিনজার শহরের চারপাশের পার্বত্য এলাকায় বিমান থেকে এ ত্রাণসামগ্রী ফেলা হয়। এক সপ্তাহ আগে আইসিস জঙ্গিদের অগ্রসরের মুখে ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের কমপক্ষে ৫০ হাজার সদস্য এখানে আশ্রয় নিয়েছে। গতকাল থেকে কুর্দিশরা আটকে ইয়াজিদিদের উদ্ধার করতে শুরু করেছে।
একই সঙ্গে ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়ার (আইসিস) অগ্রগতি আটকাতে ড্রোন হানা চালানো হল। বৃহস্পতিবার সীমিত বিমান আক্রমণ চালানোর অনুমতি দিয়েছিলেন বারাক ওবামা। শুক্রবার সকালে উত্তর ইরাকে আইসিস’র গোলাবারুদের সংগ্রহে বিমান আক্রমণ চালায় যুক্তরাষ্ট্র। দুইটি এফ-১৮ সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান জঙ্গিদের অবস্থানের উপরে ২২৭ কেজির বোমা ফেলে। ইরাকি সূত্র জানিয়েছে, এই মার্কিন হানায় আইসিসর ৪৫ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে, আহত প্রায় ৬০ জন। আইসিস জঙ্গিদের অগ্রগতি ঠেকানো যাবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের আশা।
শুক্রবার ইরবিল শহরের সুরক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহূত আইসিস জঙ্গিদের গোলন্দাজ ইউনিট লক্ষ্য করে মার্কিন বিমান হামলা চালানো হয়। পরে পেন্টাগন দ্বিতীয় দফা হামলার কথাও জানায়। পেন্টাগন জানায়, মার্কিন চালকবিহীন বিমান ও যুদ্ধবিমান আইসিস জঙ্গিদের একটি মর্টার অবস্থান ও জঙ্গি বহনকারী সাতটি গাড়িতে হামলা করে। ভূমধ্যসাগরে থাকা একটি বিমানবাহী ক্যারিয়ার থেকে ওই হামলাগুলো পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে আইসিস মার্কিন হামলাকে গ্রাহ্য করছে না। এর এক সদস্য বলেন, তাদের অগ্রগতিতে মার্কিন হামলা কোন প্রভাব ফেলবে না। ইরাকের সেনা প্রধান বলেছেন, তাদের বাহিনী ও পেশমার্গা যোদ্ধারা আগামী কয়েক ঘন্টার মধ্যে বিস্তীর্ণ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন। তিনি আরো বলেন, আইসিস নিয়ন্ত্রিত অন্যান্য শহরেও যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালাবে বলে তিনি মনে করেন। তবে কোন শহরের নাম নির্দিষ্ট করে বলেননি। কুর্দি পেশমার্গার মিলিশিয়া বাহিনী আইসিসর হাত থেকে ইরবিল শহর রক্ষার জন্য লড়াই করছে। উত্তর ইরাকে পার্বত্য এলাকায় হাজার হাজার ইয়াজিদি বাড়িঘর ফেলে আশ্রয় নিয়েছে। ইরবিলে ইউনিসেফের একজন মুখপাত্র জুলিয়েট টোমা বলেন, এর মধ্যেই ৫০টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে এবং তাদেরকে ওই পার্বত্য এলাকাতেই কবর দেয়া হয়েছে। আইসিস এখন সিরিয়া এবং ইরাকে বিরাট অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।