সাংবাদিকরা বদমাইশ, চরিত্রহীন, লম্পট : সমাজকল্যাণমন্ত্রী

9-4আদিবাসী দিবস উপলক্ষে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করলেন সমাজকল্যানমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী। অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি ছিলেন সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত। মঞ্চে ওঠেই তিনি মাইক নিয়ে সাংবাদিকদের অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগের নির্দেশ দেন। কিন্তু পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকরা সেখানে থেকে গেলে বক্তৃতার সময় তিনি অকথ্য ভাষায় ক্ষোভ ঝাড়েন।

সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন- ‘সাংবাদিকদের ঠিক করতে নীতিমালা হয়েছে। ওই দিন কেবিনেট মিটিংয়ে আমি থাকলে সাংবাদিকদের …. (অকথ্য শব্দ) দিয়ে বাঁশ ঢুকাতাম। সাংবাদিকদের এখন এমনভাবে ঠিক করা হবে যাতে নিজের স্ত্রীকে পাশে নিয়েও শান্তিতে ঘুমাতে পারবে না। সাংবাদিকরা বদমাইশ, চরিত্রহীন, লম্পট।’

বক্তব্য চলাকালে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর শিষ্টাচার বর্হিভূত এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন উপস্থিত সাংবাদিকরা। এসময় অনুষ্ঠানস্থলে হট্টগোল শুরু হলে মহিলা সাংসদ কেয়া চৌধুরী ও সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী সাংবাদিকদের কাছে করজোড়ে মাফ চান। কিন্তু সমাজকল্যানমন্ত্রী তার অশ্লীল বক্তব্য চালিয়ে গেলে সাংবাদিকরা অনুষ্ঠান বয়কট করে চলে আসেন।

বক্তব্যের শুরুতে সাংবাদিকদের ছবি তুলে অনুষ্ঠানস্থল থেকে চলে যেতে বলে সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন- যতদিন দুনিয়া থাকবে ততোদিন ফজরের নামাজের পর মসজিদে কোরআন শরীফ পাঠ হবে। মাদরাসা শিক্ষায় আরবীর পাশাপাশি বাংলা-ইংরেজি শিক্ষা না দিলে তারা পিছিয়ে পড়বে। মন্ত্রী বলেন- আমি একটি অনুষ্ঠানে এরকম কথা বলেছিলাম, কিন্তু সাংবাদিকরা আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রকাশ করেছে।

একটি জাতীয় দৈনিকের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন- আজ ওই পত্রিকা লিখেছে তারা আমাকে লাল পানি খাওয়াবে। ওই পত্রিকা আমাদের গর্ব অর্থমন্ত্রী সম্পর্কেও আজেবাজে লিখেছে।

মন্ত্রী বলেন- শেখ হাসিনা আমাকে ডেকে বলেছেন হাসানুল হক ইনু ১৪ দলের নেতা, আর তুমি আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা। সাংবাদিকরা যা ইচ্ছে লেখুক, তাতে কিছু যায় আসে না। তুমি চালিয়ে যাও।

মন্ত্রীত্বের পরোয়া করেন না -এমন দম্ভোক্তি করে মহসিন আলী বলেন- মন্ত্রীত্ব থাকলেই কী, আর না থাকলে কী? জনগণ আমাকে ভালোবাসে, আমিও জনগণের ভালোবাসা নিয়ে বাঁচতে চাই।

সাংবাদিকরা অল্পশিক্ষিত উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন- আমার মেয়ে সাংবাদিকতায় মাস্টার্স। আর যারা পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে লেখালেখি করে তারা দু’এক কলম পড়ালেখা করেছে। আমি বলি একটা, তারা লিখে আরেকটা। দুই টাকা খেয়ে তারা আমার … (অকথ্য শব্দ) দিয়ে বাঁশ ঢুকাতে চায়। আমার শ্বশুর বাড়ি সিলেটে। সাংবাদিকদের পেছনে সিলেটের মানুষ লেলিয়ে দিতে আমার সময় লাগবে না। সাংবাদিকরা আমার … (অকথ্য শব্দ) ছিঁড়তে পারবে না।

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় সিলেট বিভাগীয় আদিবাসী দিবস উদযাপন কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আদিবাসী নেতা গৌরাঙ্গ পাত্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, নারী সাংসদ কেয়া চৌধুরী, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, আদিবাসী নেতা একে শেরাম প্রমুখ।

Developed by: