উইন্ডিজে শেষ টেস্টেও লজ্জার হার বাংলাদেশের

তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হকের শতরানের জুটি ম্যাচ বাঁচানোর স্বপ্ন না দেখালেও অন্তত পঞ্চম দিন পর্যন্ত খেলা নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিল। কিন্তু পারেনি বাংলাদেশ। মাত্র চার দিনেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট ২৯৬ রানে হেরেছে অতিথিরা।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে হারের পর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধান হেরেছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার শিবনারায়ন চন্দরপলের শতকে ভর করে বাংলাদেশকে ৪৮৯ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।অসম্ভব লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে টি-টোয়েন্টি মেজাজে শুরু করেছিলেন শামসুর রহমান। উইকেট পড়তেও দেরি হয়নি; হুক করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে বিদায় নেন। ২৭ বলে ৩৯ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

বছরের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে দুই ইনিংসেই ব্যর্থ এনামুল হক। প্রথম ইনিংসে ৯ রান করলেও এবার ফিরেন শূন্য রানে।

তৃতীয় উইকেটে তামিম-মুমিনুলের ১১০ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে বাংলাদেশ। সুলেমান বেনের বল সুইপ করতে গিয়ে তামিম শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের ক্যাচে পরিণত হলে ভাঙে ৪৭.১ ওভার স্থায়ী জুটি।

১৫৮ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে তামিম করেন ৬৪ রান।

তামিমের বিদায়ের পর ৩৪ রান যোগ করতে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে বড় পরাজয় এড়াতে পারেনি বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে প্রতিরোধ গড়া মাহমুদুল্লাহ এবার ফেরেন শূন্য রানে। আর অর্ধশতকে পৌঁছানোর পর মুমিনুলের (৫৬) বিদায় বাংলাদেশকে ভীষণ বিপদে ফেলে দেয়।

বড় হার এড়াতে বাংলাদেশ তাকিয়ে ছিল মুশফিকুর রহিম ও নাসির হোসেনের দিকে। কিন্তু তারাও খুব একটা প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। মুশফিক দুই অঙ্কে পৌঁছতে পারলেও নাসির বিদায় নেন মাত্র ২ রান করে।

বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের বিদায়ের পর বাকিরা আর খেলাটা শেষ দিনে নিয়ে যেতে পারেননি।

৭৭ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা বোলার বাঁহাতি স্পিনার বেন।

এর আগে বসেজু স্টেডিয়ামে ৪ উইকেটে ২০৮ রান নিয়ে খেলা শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চতুর্থ দিন কোনো উইকেট না হারিয়ে আর ৬১ রান যোগ করে ২৬৯ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে দলটি।

বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের দুটি ইনিংসে ৮৫ ও ৮৪ রানে অপরাজিত ছিলেন চন্দরপল। এবার শতকে পেয়েছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

৬৩ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করা চন্দরপল ৩০তম টেস্ট শতকে পৌঁছানোর পর ইনিংস ঘোষণা করেন দিনেশ রামদিন। ১০১ রানে অপরাজিত থাকা চন্দরপলের ১৩৪ বলের ইনিংসটি ৮টি চার সমৃদ্ধ।

অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে চন্দরপলের সঙ্গে ১৬৯ রানের জুটি গড়া জেরেমাইন ব্ল্যাকউড অপরাজিত থাকেন ৬৬ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৮০ (চন্দরপল ৮৪*, জনসন ৬৬, ব্রেথওয়েইট ৬৩; আল-আমিন ৩/৮০) ও ২৬৯/৪ ইনিংস ঘোষণা (ব্রেথওয়েইট ৪৫, জনসন ৪১, এডওয়ার্ডস ২, ব্র্যাভো ৭, চন্দরপল ১০১*, ব্ল্যাকউড ৬৬*; মাহমুদুল্লাহ ২/৬৪, শফিউল ১/৪২, তাইজুল ১/৮১)

বাংলাদেশ: ১৬১ (মাহমুদুল্লাহ ৫৩, তামিম ৪৮; রোচ ৫/৪২) ও ১৯২ (তামিম ৬৪, শামসুর ৩৯, এনামুল ০, মুমিনুল ৫৬, মাহমুদুল্লাহ ০, মুশফিক ১১, নাসির ২, তাইজুল ৪, শফিউল ১৪, রবিউল ০, আল-আমিন ০*; বেন ৫/৭২, টেইলর ৩/৩৯, গ্যাব্রিয়েল ১/২৪, রোচ ১/৪৩)

ম্যাচ সেরা: শিবনারায়ন চন্দরপল।

সিরিজ সেরা: ক্রেইগ ব্রেথওয়েইট।

Developed by: