চাঁদাবাজির অভিযোগে সিলেটের কুখ্যাত সন্ত্রাসী ছাত্রলীগ ক্যাডার, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক পিযুষ কান্তি দে’কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তালতলাস্থ হোটেল ইস্ট এন্ড এর ১০৫ নং কক্ষ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কোতোয়ালী থানার সহকারী কমিশনার এ কে এম সাজ্জাদ এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে বিশ্বস্ত একটি সূত্র দাবী করেছে, দলের হাইকমান্ডের সম্মতির প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পীযুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোতোয়ালী থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, গতকাল রোববার বিকেলে নগরীর ৩ টি হোটেলে চাঁদাবাজির ঘটনায় থানায় মামলা হয়। ফলে রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। তবে তার কাছে কোন অস্ত্র পাওয়া যায়নি। ওসি জানান, তার কাছে অস্ত্র থাকতে পারে এমনটা আশংকা করা হচ্ছিলো। তবে পাওয়া যায়নি। কোতোয়ালী থানার সহকারী কমিশনার একেএম সাজ্জাদ জানান, পীযুষের বিরুদ্ধে জমি দখল ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পীযুষ কান্তি দে বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য সিলেটে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত। চাঁদাবাজি, বাসা দখল, অস্ত্রবাজি সব কিছুতেই তার অংশ গ্রহণ ছিল। বেশ কিছু দিন দেশের বাইরে থাকলেও ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে আসেন পীযুষ। এরপর নানা অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। বিগত জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উত্তাল এর সময়ে ইসলামী ব্যাংকের তালতলা শাখা লুটপাট, এটিএম বুথ ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ, জিন্দাবাজারে বনফুলের শোরুমে ভাংচুর, শহরতলীর ছালিয়ায় ভূমি দখল করতে গিয়ে গ্রামবাসীর উপর গুলি বর্ষণ, নগরীর জিন্দাবাজারের পানসি রেষ্টুরেন্ট লুটপাট, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অগ্নি সংযোগসহ অনেকগুলো সন্ত্রাসী কার্যকলাপে পীযুষের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। নগরীর রাজপথে প্রকাশ্যে বন্দুক উঁচিয়ে নিজ দলের ক্যাডারদের নিয়ে পুলিশের সামনে সশস্ত্র মহড়া দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন পিযুষ কান্তি দে। এছাড়া মির্জাজাঙ্গাল ও সুবিদবাজারে কোটি টাকা মূল্যের বাসা দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগের সাবেক এ নেতার বিরুদ্ধে। এত সব অভিযোগ থাকার পরও কখনো তাকে পুলিশের কাছে ধরা পড়তে হয়নি। সর্বশেষ গতকাল রোববার চাঁদাবাজির ৩ টি মামলায় তাকে আটক করা হয় বলে জানান কোতোয়ালী থানার ওসি। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ হেড কোয়ার্টারের পাঠানো সিলেটের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ২২ সন্ত্রাসীর তালিকা মেট্রোপলিটন পুলিশের হাতে পৌঁছেছে। তাদের সম্পর্কে যাঁচাই বাঁছাইয়ের পাশাপাশি গ্রেফতার অভিযান চালাবে পুলিশ। সূত্র জানিয়েছে, এই তালিকায়- ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত সন্ত্রাসীরা রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, পিযুষ কান্তি দে ২২ জনের তালিকা থেকে পুলিশের প্রথম শিকার। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পিযুষ কান্দি দে থানা হাজতে ছিলেন। রাত ১২টায় তার অনুসারীরা থানায় ছুটে আসেন এবং তাকে ছাড়িয়ে নিতে দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে যোগাযোগ করছেন।

