রাজন হত্যা: ময়না চৌকিদারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

951398c3865cd01e55f62767966d0105পৈশাচিক নির্যাতনে খুন হওয়া শিশু সামিউল আলম রাজন খুনের ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ময়না চৌকিদার। জবানবন্দিতে সে খুনের দায় কামরুল ইসলাম, তার ভাই মুহিদুল ইসলাম ও পাভেল নামের আরেক যুবকের উপর চাপানোর চেষ্টা করেছে। তবে নির্যাতনের আগে সে রাজনকে খুঁটির সাথে বেঁধে চড় থাপ্পড় মারা ও ফোনে কামরুলদের ডেকে আনার কথা স্বীকার করেছে।

সোমবার মহানগর হাকিম ৩য় আদালতের বিচারক আনোয়ারুল হক বিকেল সোয়া ৪টা থেকে প্রায় তিনঘন্টা তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার জানান- ময়না চৌকিদার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের শেখপাড়া গ্রামের কামরুল ইসলামদের মালিকানাধীন ওয়ার্কশপে চৌকিদারের কাজ করত। ঘটনার দিন পার্শ্ববর্তী একটি দোকানের চৌকিদার জানায় তাদের ওয়ার্কশপে রাজন চুরি করতে ঢুকেছে। তখন সে রাজনকে ধরে এনে খুঁটির সাথে বেঁধে চড় থাপ্পড় মেরে মোবাইল ফোনে ওয়ার্কশপের মালিক কামরুল ও তার ভাইদের খবর দেয়।

কামরুল, তার ভাই মুহিদুল ও পাভেল নামের এক যুবক এসে রাজনকে বেধড়ক মারপিট করে। তাদের মারপিটেই রাজন মারা যায়। তার মারধরে রাজনের মৃত্যু হয়নি জবানবন্দিতে ময়না চৌকিদার এমনটা দাবি করেছে। তবে সে কামরুলদেরকে মারধর করার সময় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছে বলে আদালতকে জানায়।

গত ১৪ জুলাই রাতে রাজন হত্যা মামলার অন্যতম আসামী ময়না চৌকিদারকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে দেয়। ১৫ জুলাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডের সময় শেষ হওয়ার আগেই ময়না আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া ৪টায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য তাকে আদালতে হাজির করা হয়।

চ্যাঞ্চল্যকর এ মামলায় মুহিদুল ইসলাম, তার ভাই আলী হায়দার, মুহিদের শ্যালক ইসমাইল হোসেন আবলুছ, দুলাল মিয়া ও নির্যাতনের ভিডিওচিত্রগ্রাহক নুর মিয়াকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এছাড়া মুহিতের স্ত্রী লিপি বেগমও দুই প্রত্যক্ষদর্শীসহ এখন পর্যন্ত এ মামলায় ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করে কয়েকজন যুবক। পরে ওই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে তারাই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়।

Developed by: