কল্পকাহিনী নয়, এসে গেছে ডিএনএ “এডিট” করার প্রযুক্তিও

07বেশিরভাগ রোগের পিছনে আমাদের ডিএনএর কোনো ধরণের হাত থাকে। ভাবুন, এডিট করে যদি ডিএনএর এসব সমস্যা সারিয়ে ফেলা যেত? এই প্রযুক্তি এখন আর কল্পকাহিনী নয়, বাস্তব।
CSISPR/Cas একটি নতুন প্রযুক্তি যা দ্বারা ডিএনএ কোড নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এতে জেনেটিকস এবং সেল বায়োলজি ক্ষেত্রে রোগের প্রতিকার আবিষ্কারের ভবিষ্যতে দেখা যাচ্ছে নতুন আশা। কেউ কেউ আবার ভাবছেন এতে “ডিজাইনার বেবি” ধারণাটি মাথাচাড়া দিতে পারে এবং বিভিন্ন বিপজ্জনক পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। এ কারণে এক্ষেত্রে যেন কোনো ধরণের অযাচিত সমস্যা না হয় তার জন্য এই প্রযুক্তির ওপর সাময়িক স্থগিতাবস্থা জারি রেখেছেন গবেষকেরা।
ডিএনএ এর মিউটেশন হবার কারণে বেশিরভাগ রোগের পেছনে এর কিছু না কিছু হাত থাকে। বর্তমানে থেরাপির সাহায্যে বিভিন্ন লক্ষণের মাত্রা কমানো গেলেও সমস্যাটির শেকড়ে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণ হলো তিন বিলিয়ন লেটার ডিএনএ কোডের মাঝে সূক্ষ্ম পরিবর্তন আনাটা দুষ্কর। আর জীবন্ত মানুষের মাঝে এমন পরিবর্তন আনার কথা তো চিন্তাই করা যায় না। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে গবেষকেরা CRISPR/Cas প্রযুক্তির সাহায্যে ডিএনএ পরিবর্তন করার ব্যাপারটি জানা যায়। এভাবে ডিএনএ কেটে ফেললে সে নিজেই নিজেকে সারিয়ে তোলা শুরু করে এবং এ পদ্ধতিকে ব্যবহার করে রোগের জন্য দায়ী কোনো একটি জিন সারিয়ে তোলা যায় অথবা অকার্যকর করে দেওয়া যায়।
এই প্রযুক্তি আসার সাথে সাথে মানব ভ্রূণের মাঝে জিনে পরিবর্তন আনার ব্যাপারটি এখন অনেক সহজ মনে হচ্ছে। এ নিয়ে অনেকে শঙ্কিত কারণ এখন ডিজাইনার বেবি তৈরি আর অসম্ভব নয়। কিন্তু নির্ভুল ডিএনএ সার্জারি সম্ভব হলেও, ডিএনএ এর পরিবর্তনের ফলে মানুষের শরীরে এর কী প্রভাব দেখা দেবে আমরা তার ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নই। আর সাধারণ সার্জারির মতো এই সার্জারিতেও ঝুঁকি রয়েছে বই কি। ডিএনএ কাঠামোতে সার্জারির কাজটি যে প্রোটিনের সাহায্যে করা হবে, সে ভুলভাল জায়গায় ডিএনএ কেটে ফেললে দেখা দেবে বিপদ। হয়তো একটি দরকারি জিন কাটা পড়বে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধের পরিবর্তে ঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে।
এসব কারণে গবেষকদের মাঝে যথেষ্টই উদ্বেগ দেখা গেছে এ ব্যাপারে। চীনে সংঘটিত এক গবেষণায় দেখা যায় এই ধরণের গবেষণা অনেক ঝুঁকি তৈরি করে ভ্রূণের জীবনের ওপর এবং এই সার্জারিতে ভুল হবার ঝুঁকি অনেক। এসব কারণেই গবেষকেরা সয়াময়িকভাবে এই ক্ষেত্রে গবেষণা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Developed by: