বাহরাইনে পলাতক অলিদ আহমদের বিরোদ্ধে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত

003সালেহ আহমদ সাকী, বাহরাইন থেকে বাহরাইনে ভিসা প্রতারক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী অলিদ আহমদের বিরোদ্ধে বৃহত্তর সিলেটবাসীর ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার রাজধানী মানামায় কিউই রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর সিলেটবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জসিম আহমদ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় অলিদ আহমদ। পাসপোর্ট অনুযায়ী তার ঠিকানা ছিল, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার বাগাউরা গ্রামের ইউনুছ মিয়ার পুত্র। কিন্তু খুজ-খবর নিয়ে যানা যায় সেটা তার শশুর বাড়ীর ঠিকানা ছিল। আসল ঠিকানা হলো মৌলভীবাজার জেলার, কমলগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ছিতলী এলাকার ইউনুছ মিয়ার পুত্র। সে দীর্ঘদিন থেকে বাহরাইনে বিভিন্ন ভাবে প্রতারণা করে আসছিলেন। ভিসার দালালী, জালিয়াতি, চাঁদাবাজী, নারী কেলেঙ্কারী, অর্থ আত্মসাৎ ও সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন প্রকার সম্মানহানীকর কর্মকান্ডে জড়িত ছিল।দীর্ঘদিন থেকে সে মানামায় একটি নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে নিরীহ মানুষদের হয়রানী করে থাকত। বিভিন্ন ভাবে মানুষকে জিম্মি, ব্ল্যাকমেইল, ভিসা পরিবর্তনের কথা বলে পাসপোর্ট আটক টাকা আদায় করাই ছিল তার পেশা। এছাড়া তার বাহিনী দ্বারা চাঁদাবাজী, চুরি, ছিনতাই, অপহরণ সহ বিভিন্ন অপরাধমুলক কর্মকান্ড করে থাকত। তার ভয়ে এতদিন কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি।
গত ১৭ জুলাই একটি ধর্ষণ মামলায় বাহরাইনি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলে নির্যাতিত মানুষগণ তাদের প্রয়োজনী তথ্যাবলী নিয়ে বৃহত্তর সিলেট কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের নিকট ও বাংলাদেশ দূতাবাসে অভিযোগ দাখিল করতে থাকেন। পরে ১৯ জুলাই সে জামিনে বেরিয়ে বিভিন্ন জনকে হুমকি ধামকি দিতে থাকে। কিন্তু রাষ্ট্রদূত তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অবহিত হওয়ায় এবং বৃহত্তর সিলেট কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ অভিযোগ গুলো খতিয়ে দেখে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিন্ধান্ত নেয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তার কাছে থাকা রুহুল আমিন নামের আরেকজনের পাসপোর্ট জাল করে ২৯ জুলাই ভোর রাত ৩.৩৫ মিনিটে বাহরাইন থেকে দেশে পালিয়ে যায়। বাহরাইনে তার স্পনসর সহ বিভিন্ন প্রবাসীদের বাংলাদেশী টাকায় প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে তারা অভিযোগ করেন। এ সময় নেতৃবৃন্দ জানান, জাকির সেন্ট্রাল পপুলেশন রেজিষ্ট্রার (সিপিআর) নং ৮২০১৭২৫২২৯। তিনি অলিদ আহমদের কাছে সেন্ট্রাল মার্কেটের মালামাল ক্রয় বাবৎ ১১ হাজার দিনার যা বাংলাদেশী টাকায় ২২লাখ টাকা পান। এছাড়া জসিম উদ্দিন (সিপিআর নং ৭৮০৬৫৭৩৫৭) ৩৪ লাখ টাকা, হাসান ইষ্ট ভেজেটেবিল মার্কেট এবং রেড আলাওয়ায়ী এক্সপোর্ট-ইনপুর্ট নামক দুটি প্রতিষ্ঠান ১৩লাখ ৭৬ হাজার টাকাসহ ৩২ জনের অভিযোগের ভিত্তিতে দেখা যায় মোট ২কোটি টাকা আত্মসাৎ করে তাদের পথে বসিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। পালিয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে খুজ নিয়ে তার রুমে প্রায় ২৫টি পাসপোর্ট পাওয়া যায়। এছাড়া সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে চট্ট্রগাম জেলার শাহজাহান মিয়া যিনি বাহরাইন পুলিশ বিভাগে কর্মরত আছেন। তিন অভিযোগ করেন ৩লাখ ৩০ হাজার টাকার ২টি ভূয়া চেক দিয়ে অলিদ আহমদ তার সাথে প্রতারণা করেছেন। যে চেকে কোন টাকাই নেই। সিলেট জেলার কামাল আহমদ অভিযোগ করেন, প্রায় ২২ বৎসর যাবত বাহরাইনে অবস্থান করছি। কিন্তু গত মে মাসে অলিদ আহমদের নেতৃত্বে তার সহকারী ফরহাদ, মনির, সামছুল, সালমান গংরা তাকে অপহরন করে নিয়ে একটি কক্ষে বন্দি করে মারধর করে। পরে তারা মুক্তিপণের জন্যে ১লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দাবী করে। আমি ৬০ হাজার টাকা দিয়ে তাদের কাছ থেকে মুক্তি পাই। মুক্ত হওয়ার পর আরো ৪০ হাজার টাকা ওলিদ আহমদ আমার কাছ থেকে নেয়। বাকী টাকা পরিশোধের জন্যে বিভিন্ন ভাবে চাপ দিতে থাকে। তাই সংবাদ সম্মেলনে সমস্থ্য প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সহযোগীতায় দেশবাসী ও প্রশাসনকে অভহিত করে আর কোন প্রতারণা ও দেশ থেকে অন্য কোথাও পালিয়ে যেতে না পারে এ ব্যপারে সকলের সহযোগীতা কামনা করা হয়। উপস্থিত সকলেই তখন দাবী করেন পূর্বেও একই পদ্ধতিতে সে দুবাই থেকে প্রতারণা করে পালিয়ে বাহরাইনে এসেছিল।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ দূতাবাসের জনকল্যাণ বিভাগের কর্মকর্তা তাজ উদ্দিন, কমিউনিটি নেতা সুরমান আলী, বিষ্ণ দেব, অভিযোগকারী জাকির, জসিম উদ্দিন, মো.হোসাইন মিয়া, সুন্দর মিয়া, মো. আব্দুর রহমান, মো. সেলিম মিয়া, জাকির মিয়া, কায়সার মিয়া, রুমেল ইসলাম, হারুন মিয়াসহ বাহরাইনে অবস্থানরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

Developed by: