এসএসসি পরীক্ষা সোমবার শুরু, পরীক্ষার্থী সাড়ে ১৬ লাখ

আগামী সোমবার শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবারের পরীক্ষায় ১৬ লাখ ৫১ হাজার ৫২৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবে। এরমধ্যে আট লাখ ৪২ হাজার ৯৩৩ জন ছাত্র এবং আট লাখ আট হাজার ৫৯০ জন ছাত্রী।

শনিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব তথ্য জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা হবে, দুই পরীক্ষার মধ্যে ১০ মিনিট সময়ের ব্যবধান থাকবে।

১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত তত্ত্বীয় পরীক্ষা এবং ৯ মার্চ থেকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২৮ হাজার ১১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ৩,১৪৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেবে।

গত বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৬ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ৭২ হাজার ২৫৭ জন।

এবারের পরীক্ষায় আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে ১৩ লাখ ৪,২৭৪ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে দুই লাখ ৪৮,৮৬৫ জন এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এসএসসি ভোকেশনালে ৯৮,৩৮৪ জন পরীক্ষায় অংশ নেবে।

তিনি জানান, বিদেশের আটটি কেন্দ্রে এবার ৪০৪ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে ২০১ জন ছাত্র এবং ২০৩ জন ছাত্রী।

এবার বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র ছাড়া অন্য সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা হবে। গত বছর থেকে চালু হওয়া শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা বিষয়েও এবার সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। এ ধরনের প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেওয়া হবে।

এছাড়া বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (অটিস্টিক এবং ডাউন সিনড্রোম বা সেরিব্রালপালসি আক্রান্ত) পরীক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট অতিরিক্ত সময় এবং পরীক্ষা কক্ষে তার অভিভাবক, শিক্ষক বা সাহায্যকারী নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে জানিয়ে নাহিদ বলেন, আগে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কম থাকায় আমরা উদ্বিগ্ন থাকতাম। এখন এই সংখ্যা বাড়ায় ভালো লাগছে।

পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যেই ফল প্রকাশ করা হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ফেসবুকে ভুয়া প্রশ্ন ছড়ালে সঙ্গে সঙ্গেই বিটিআরসি ব্যবস্থা নেবে।

তিনি বলেন, “কিছু শিক্ষক নামধারী ব্যক্তি ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধার লোভে ছাত্রদের প্রশ্ন বলে দেয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকাও আর করা হয় না।”

বিজি প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার সুযোগই নেই দাবি করে নাহিদ বলেন, কারো পক্ষেই জানা সম্ভব না কোন প্রশ্ন ছাপা হচ্ছে। কারণ কারো হাতে প্রশ্ন এক মিনিটের বেশি থাকে না।

পাসের হার ও জিপিএ-৫ বাড়াতে বেশি নম্বর দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমি সব পরীক্ষক এবং পরীক্ষার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে জানিয়ে দিচ্ছি আমাদের এমন কোনো ইন্সটাকশন নাই যে, কাউকে বেশি নম্বর দেবেন, আবার কাউকে কম নম্বর দেবেন। যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দেবেন, সঠিকভাবে খাতা দেখবেন, সঠিকভাবে মূল্যায়ন করবেন। এতে সংখ্যা বাড়ল না কমল এনিয়ে আমাদের কোনো চাপ নেই।”

শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইনসহ ঢাকা শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। -ইআ

Developed by: