এবারকার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্ত ১১ জনের বহরে ২ সিলেটীও রয়েছেন। সোমবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে তারা পুরস্কারও গ্রহণ করেছেন ইতোমধ্যে। পূণ্যভূমি সিলেটের এই দুই কৃতি সন্তান হলেন তাজুল মোহাম্মদ ও অপরজন ফারুক চৌধুরী। সাহিত্য ক্ষেত্রে যে অবদানের জন্য তারা এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার অর্জন করেছেন সিলেটভিউ২৪ডটকম পাঠকদের জন্য সেসব অবদানের কথা তুলে ধরছে।
তাজুল মোহাম্মদ : মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার সন্তান তাজুল মোহাম্মদ কৃষি বিভাগে চাকরির পাশাপাশি গ্রামীণ জনপদে ঘুরে ঘুরে মুক্তিযুদ্ধের তৃণমূলের ইতিহাস সংগ্রহ ছিল তাজুল মোহাম্মদের নেশা। এক সময় তিনি সেসব ইতিহাস লিখে রাখার তাগিদ অনুভব করেন এবং সিলেটের বালাগঞ্জের বুরুঙ্গা গ্রামে ৮১ জনকে গণহত্যার একটি ঘটনা সংগ্রহ করে পাঠান স্থানীয় একটি পত্রিকায়। ১৯৮০ সালের জুলাই মাসের কথা সেটি।
পরের দুই যুগে হাজার হাজার শহীদের নাম-ঠিকানা, তাদের বীরত্বের কাহিনী এবং পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের বর্বরতার নানা ঘটনার কথা তিনি তুলে এনেছেন গ্রাম বাংলার পথে পথে ঘুরে।
বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনাগুলো নিয়ে ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত হয় তাজুল মোহাম্মদের প্রথম বই ‘সিলেটে গণহত্যা’। এরপর বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘সিলেটের যুদ্ধকথা’, ‘একাত্তরে সিলেট: স্মৃতিকথা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের খোঁজে’, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সন্ধানে’ এবং ‘কুরুক্ষেত্রী সেনা ১৯৭১’।
তাজুল মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে নিয়ে বই লিখেছেন।
ফারুক চৌধুরী : সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার সন্তান সাবেক কূটনীতিবিদ ফারুক চৌধুরীর লেখায় বার বার উঠে এসেছে দীর্ঘ কর্মজীবনের নানা অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন দেশ আর সময়ের নানা ঘটনার বিশ্লেষণ। স্মৃতিকথা ও ভ্রমণবিষয়ক বই ছাড়াও তার হাত দিয়ে বেরিয়েছে এ দেশের ইতিহাস ও অর্থনীতি নিয়ে বেশ কিছু লেখা।
১৯৩৪ সালে আসামের করিমগঞ্জে জ্ন্মগ্রহণ করা ফারুক চৌধুরীর পৈত্রিক বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায়। ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক শেষ করে স্নাতকোত্তরে পড়ার সময়ই তিনি পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন।
স্বাধীন বাংলাদেশে কিছুদিন রাষ্ট্রাচার প্রধান হিসেবে নিয়োজিত থাকার পর বিভিন্ন দেশে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। ছিলেন পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্বেও।- সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এমইউএ