গন্তব্য বিভ্রম
অন্ধকার নিমগ্ন ফুটপাতে দাঁড়িয়ে আছি একা
আলো কবেই খেয়েছে সব রাজনৈতিক দল
অন্ধকারে সবকিছু মরা জোসনার ছায়া
আমি দাঁড়িয়ে আছ গন্তব্য বিভ্রমে
কোন দিকে যাবো!
কোন পথে যাবো!
চল্লিশ বছর ধরে গন্তব্যের খোঁজে আছি
আমি যাবো
আমি যেতে চাই,যেভাবে
নাটাইয়ের হাত ধরে যায় ঘুড়ির আকাশ
বাবার হাত ধরে সন্তানের নির্ভয় নির্ভরতা
মাটির ভেতর যায় তৃষ্ণার স্রোতহীন জল
প্রেমিকার চুম্বনের ভেতর যায় ভালবাসা ওম
যাত্রার গন্তব্য থাকে;থাকে পথের নকশা
ছিনতাই হয়েছে পথ,যেতে পারিনা যেভাবে
রাজনীতির ভেতর সন্ত্রাস যায় গানের মুদ্রায়
ক্ষমতার ভেতর দুর্নীতি যায় ওমের তীব্রতায়
সংসদে যায় জাল ভোটে জেতা নিরক্ষর নেতা
নেতাদের পুকুরে যায় ত্রানের পুষ্টিবান টিন
মানুষের ভেতর যায় আগুনের লেলিহান লোভ
অন্ধকার নিমগ্ন ফুটপাথে দাঁড়িয়ে আছি একা
চারিদিকে নগ্নতার সৌখিন রাজনৈতিক বিলাস
লাওয়ারিশ কুকুরের দখলে ক্ষমতার রাজপথ
আশটে জমিনে খুঁজি শর্তহীন আলোর ঈশারা
মাঠে ঘাটে জীবন আজ যাযাবর পাখি
কষ্ট পারাপার।
কোন দিকে যাবো!
কোন পথে যাবো!
আত্ম বিকৃতি
এই যে জীবন বহন করি সে জীবন আমার নয়
অলিখিত শর্তের শতজালের কফিনে মোড়ানো
জীবনের মানচিত্র লিখা হয় অন্যের কলমে
এই যে কিশোরী মেয়েরা বেড়ে উঠছে রঙীন ব্রেসিয়ারে
তাদের যুবতী স্বপ্নটা ভেঙ্গে যাবে মৌলবাদের থাবায়
মৃত স্বপ্ন কুড়াতে কুড়াতে একদিন চুলে ধরবে পাক
এই যে ছেলেটা সিনা টান করে মিছিলে মুখর শ্লোগানে
তার বুকের রঞ্জিত রাজপথে কৌশলী পা ফেলে
মন্ত্রীর শপথ নেবে নির্বাচিত সেই প্রিয় নেতা
এই যে রাতজাগা বুদ্ধিজীবিরা ভীড় করে টিভির পর্দায়
অন্যের বিশ্বাস হরণ করে গড়ে বাণিজ্য-বেসাত
অচল ঘড়ির সময় মেপে ওরাও ঘুমিয়ে যাবে স্থবিরতায়
এই যে আমাকে পেছনে ফেলে আমারই ছায়া যায়
সফল সময় ধরবে বলে ভ্রাম্যমান পথের সন্ধানে
সেও একদিন এখানে ওখানে প্রসব করবে মৃত কচ্ছপ
এই যে চতুর কোলাহল ঠেলে নির্ঝণ পার্কে বসে
মানুষেরা প্রতিদিন খুটে খায় নগ্ন নীরবতা
তারাও একদিন ঝরে যাবে আর্দ্রতার কালে
এই যে এই পৃথিবী জুড়ে এতো আলোর মিছিল
স্রোত ভেঙ্গে এগিয়ে যাবার তীব্র প্রতিযোগিতা
আমাদের কোন ঋণ নেই কাতর আর্তি ছাড়া।
অন্ধকার চক্র
উদার আকাশের নীচে পুষ্টিহীন অন্ধকার গভীরে
যে শিশু জন্ম নিলো অভুক্ত জরায়ু থেকে
ধূসর পৃথিবীতে
তাকে কি করে বলি, ভাল থেকো…
শোষণের পিচ্ছিল পথে যাদের জন্মের যাত্রা শুরু
জীবনের ছেঁড়া খোঁড়া মাঠে
হাটি হাটি পা’ পা’ করে
তাদের,ভালো থাকা মানায় না এই সুগন্ধি সমাজে
যারা কেড়ে নেয় অবুঝ শিশুর দুঘের বোতল
শিথান থেকে স্বপ্নের বালিশ
উষ্ণ স্নেহের শীতের কাঁথা
তারাই আজ সমাজের মাপকাঠি হাতে মেপে দেয়
কংকালসার জীবনের উচ্চতা নিম্নতা
বেড়ে উঠার পকেট সাইজ ডাইরি
শর্তের তালি দেয়া জীবনের মলিন চাদর
অর্থহীন পড়ে থাকে কারো কারো গায়ে…