হাতের মুঠোফোনে সেলফির ঝড়টাও এখন পুরোনো হয়ে গেছে। কে কত বিচিত্র উপায়ে নিজের মুখচ্ছবি তুলতে পারে তার প্রতিযোগিতা হরহামেশাই হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। তবে ঠিক কবে থেকে মূলত শুরু হয়েছে এই সেলফি তোলার ঘটনা -ভেবেছেন কখনো? ২০১৪ সালে সেলফি ঝড় চরম আকার ধারণ করলেও মূলত ১৮৫০ সালেই সর্বপ্রথম সেলফি তুলেছিলেন কিংবদন্তী আলোকচিত্রী অস্কার জেল্ডার।
সম্প্রতি আলোকচিত্রী অস্কারের তোলা সেই মুখচ্ছবি সমৃদ্ধ অ্যালবামটি বিক্রি হয়েছে ৭০ হাজার পাউন্ডে। অস্কারের নিজের তোলা ছবিটির পেছনে ১৮৫০ সালের তারিখ উল্লেখ ছিল। সুইডেনের এক চিত্রকর চামড়ায় মোড়া এই অ্যালবামটি বিক্রি করার জন্য নর্থ ইয়র্কশায়ারের মরফেস নিলামঘরে নিয়ে যান। নিলামে নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো ধারণাই ছিল না ঠিক কতটা দামি বা গুরুত্বপূর্ণ ওই ছবিগুলো।
নিলামঘরের কর্মকর্তা লিজ পিপার জানান, ‘এই অ্যালবামটির মালিক আমাদের অফিসে নিয়ে এসেছিল অ্যালবামটি। তিনি মাত্র ১০০ পাউন্ড চেয়েছিলেন এই অ্যালবামটির বিনিময়ে। আমরা অতিদ্রুত অ্যালবামটি বিক্রি করার ব্যবস্থা করি। কারণ আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে এই ছবিগুলো শুধুমাত্র একটি অ্যালবামেই আবদ্ধ নয়, এর মধ্যে আছে ফটোগ্রাফি শুরুর জামানার দুর্লভ কিছু ছবি।’
অ্যালবামটির মধ্যে শিল্পী জেল্ডারের নিজের, তার স্ত্রী হাল্লাম টেনিসন এবং সন্তান কবি লর্ড আলফ্রেড টেনিসনের ছবিও আছে। জেল্ডার মূলত আলোকচিত্রী হিসেবে সূচনা করার আগে বিভিন্ন মানুষের মুখচ্ছবি আঁকতেন। কিন্তু পরবর্তীতে ক্যামেরা আসায় তিনি ক্যামেরা দিয়ে মানুষের মুখের ছবি তুলতে শুরু করেন। তবে জেল্ডার বিতর্কিত ছিলেন তার তোলা নগ্ন আলোকচিত্রের জন্য, কারণ সেই সময় পর্যন্ত ইউরোপ আলোকচিত্রে নগ্নতা মেনে নিতে পারেনি। জেল্ডার তার শেষ জীবনে রানী ভিক্টোরিয়ার ছবি তোলেন।
এমনও কথিত আছে যে, রানী ভিক্টোরিয়া তার স্বামী প্রিন্স আলবার্টকে উপহার দেয়ার জন্য জেল্ডারের কাছ থেকে ছবিও কিনেছিলেন। উনিশ শতকে তার তোলা রানী ভিক্টোরিয়ার ছবিটিই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রধান উপজীব্য হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছিল।


