আসমা মতিন প্রবাসে সাহিত্য চর্চায় একজন নিবেদিত প্রাণ। কবিতার সাথে সখ্যতা ছোটবেলা থেকেই। তাই কবিতা ছাড়া জীবনের হিসাব নিকাশ মিলাতে পারেন না। কবিতা নিয়ে বসবাস করতে ভালোবাসেন। প্রবাসের শত ব্যস্ততার মাঝে কবি আসমা মতিন ঘর সংসারের কাজ শেষে আরাম আয়েশের সময়টুকু শব্দ বুননে কাটিয়ে দেন। তেরো বছর বয়স থেকে কিশোরী কবি লিখে যেতেন ছোট্ট জীবন থেকে নেয়া গল্প-কবিতা। মাঝখানে হল দীর্ঘতম ছাড়াছাড়ি; হারিয়ে যাওয়া আপনারে আবার ফিরে পেয়েছেন আপন ভুবনে। তিনি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সাহিত্য সংগঠনের সাথে জড়িত। শৈশবের স্বর্ণযুগ তিনি অতিবাহিত করেন শ্যামলা বনের ধারে একটি পাতা দুটি কুঁড়ির দেশে। সেখানে বাস করতো বহুজাতি ও বহু ভাষাভাষী লোকজন। জীবনের বৈচিত্র্য দেখে দেখে বড় হতে থাকেন তিনি। কচিমনে মানবপ্রেমের অনুভূতি সবটুকু জায়গা তখন থেকেই জুড়ে নিয়েছিল। অসংখ্য প্রশ্নের ভিড় জমা হতো তাঁর বিবেকের কাছে। নীরবে অবলোকন করে যেতেন ভাঙাগড়ার খেলা। শ্রেণিভেদ দাগ কাটত ছোট মনে। পাখির গান ফুলে ফসলে ভরা ছিল পুরোটা এলাকা। মনোহর প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের লীলাময় দিনগুলোতে বেড়ে উঠা ভাবুক মেয়ে এক দুরূহ পথ পেরিয়ে আজকের কবি আসমা মতিন। তাঁর কবিতায় স্বদেশ, মাটি ও মানুষের কথা, বাংলার রূপ সৌন্দর্যের কথা নিখুঁতভাবে তুলে আনেন। নির্যাতিত নিপিড়িত মানুষের কথা, অধিকার বঞ্চিত নারীদের কথা, তাঁর কবিতায় সহজ সরলভাবে ফুটে ওঠে। দুবোধ্য কবিতা নয়, সহজ সরল ভাষায় কবিতা চর্চা করতে আসমা মতিন ভালোবাসেন। কবিতার পাশাপাশি তিনি গল্প ও উপন্যাস লিখছেন। আসমা মতিনের পৈত্রিক নিবাস মৌলভীবাজার জেলার উলুআইল গ্রামের মাস্টারবাড়ি। পিতা বকসী আবদুল মান্নান। আসমা মতিন বর্তমানে স্থায়ীভাবে ইংল্যান্ডে বসবাস করছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। স্বামী আবদুল মতিন। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের জননী। গান শোনা, কবিতা লেখা ও গান গাওয়া তাঁর নেশা। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ- কবিতা হাতে নির্জনে দাঁড়িয়ে, রৌদ্রছায়ার করতলে, মনোরতœ, অমরাবতী। যৌথ কাব্যগ্রন্থ- পঙ্ক্তি স্বজন, প্রবাসী কবিদের নির্বাচিত প্রেমের কবিতা। প্রাপ্ত পুরস্কার- ‘উপকূল সাহিত্য ও সংস্কৃতি সংস্থা’ থেকে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ।