নদীর তীরে পড়ে আছে ১৪ বছরের মেয়ে সুরাইয়ার লাশ! লাশ দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়। কৌতূহল সবার মাঝে, কীভাবে মারা গেল সুন্দর ফুটফুটে নবম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী সুরাইয়া। কেনই বা লাশ পড়ে আছে নদীর তীরে। কোন অপরাধের বলি হলো সুরাইয়া? এমন নানা প্রশ্নের কোনো উত্তর জানা নেই কারো। অপরদিকে প্রাপ্তবয়স্ক শিপু এবং তাঁর মায়ের হাতে হাতকড়া। তাঁদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। সবদিকে যেন একটা অস্থির পরিস্থিতি। কোন অপরাধে গ্রেপ্তার হলেন মা-ছেলে? নাটকটি না দেখলে পুরো ঘটনা পরিষ্কার হওয়ার নয়।
একটি বাল্যবিয়ে কীভাবে একটি মেয়ে এবং ছেলের পরিবারকে ধ্বংস করে দিতে পারে তা-ই ওঠে এসেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সচেতনতামূলক স্বল্পদৈর্ঘ্য নাটক ‘ভুলের মাশুল’-এ। গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে আলোচিত এ নাটকের শুটিং।
বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক স্বল্পদৈর্ঘ্যরে নাটক নির্মাণ করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। শীঘ্রই নাটকটির প্রদর্শনী হবে। ‘ভুলের মাশুল’ নামের নাটকটির শুটিং গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয় এবং গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ হয়।
নাটকটির কাহিনি সাজিয়েছেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য, দৈনিক সবুজ সিলেটের স্টাফ রিপোর্টার নুরুল হক শিপু। চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় ছিলেন মো. কামরুল চৌধুরী। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের এ জনসচেতনামূলক নাটকে সার্বিক সহযোগিতা করছে সিলেট মহানগর পুলিশ। সিলেট নগরীর কোতোয়ালি থানা, শাহজালাল উপশহর, সুরমা নদী এবং শহরতলির বিভিন্ন মনোরম লোকেশনে নাটকটির দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে।
সিলেটের স্বনামধন্য অভিনেতা-অভিনেত্রীরা এ নাটকে অভিনয় করছেন। মা চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিলেটের সিনিয়র অভিনেত্রী ‘বিবি সাব’ খ্যাত রওশনারা মনির রুনা। যার কারণে মেয়েটিকে মরতে হয়, সেই চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুরুল হক শিপু, অল্পবয়সি মেয়ের চরিত্রে সুরাইয়া, পুরোহিত চরিত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম পরিচালক, সিনিয়র অভিনেতা অশোক কুমার নাগ কাঞ্চন, সাংবাদিক চরিত্রে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত ও এম. দেলওয়ার চৌধুরী, এলাকার মুরুব্বি চরিত্রে কটাই মিয়া খ্যাত কৌতুক অভিনেতা সাহেদ মোশারফ, মৌলভী চরিত্রে নাট্যনির্দেশক বিশ্বজিৎ সরকার, জাল জš§নিবন্ধন তৈরিকারী চরিত্রে নাট্যনির্দেশক রাসেল হামিদ, শিপুর বোন চরিত্রে পিংকি, মেয়েটির (সুরাইয়া) মা চরিত্রে হেনা, বান্ধবী চরিত্রে মাহি, আইনজীবী চরিত্রে সুইটি এবং সিসিক কর্মকর্তার চরিত্রে শাহদাত হোসেন লোলন।
বিশেষ চরিত্রে আছেন, সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব, মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা, অ্যাডিশনাল পিপি সামসুল ইসলাম এবং কোতোয়ালি থানাপুলিশের কয়েকজন সদস্য।
নাটকির চিত্র ধারণ করছেন শাহজাদা মিয়া। ড্রোন ব্যবহারে ছিলেন জাহাঙ্গীর আহমদ। রূপ ও অঙ্গসজ্জায় সুমন রায়, ক্যামেরা সহকারী সানি রহমান ও আমির আলী।
নাটকটি প্রসঙ্গে নুরুল হক শিপু বলেন, ‘এ নাটকটি ছিল সিলেট সিটি কর্পোরেশনের একটি ব্যতিক্রমী পরিকল্পনা। যা নিয়ে পুরো দুই মাস আমরা কাজ করে শুটিংয়ে হাত দিই। বল্যবিয়ে বন্ধে সচেতনতামূলক এ নাটকটি মানুষকে সচেতন করতে অনেক ভূমিকা রাখবে। মিশ্রিত ভাষায় নির্মিত এ নাটকটি সিলেটের বিভিন্ন লোকেশনে চিত্রধারণ করা হয়। নাটকটি আকর্ষণীয় ও সুন্দর করতে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে। সিলেটে নির্মিত কোনো নাটকে এই প্রথম ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।’