বহুসংস্কৃতির চারণভূমি যুক্তরাজ্যের লণ্ডন শহরে প্রতি বছরের মতো এবারও বইমেলার উদ্যোগ নিয়েছে সম্মিলিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ, যুক্তরাজ্য। এই সংগঠনের ব্যানারে ৯ম বইমেলা দু‘দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর, পূর্ব লণ্ডনের ব্রাডি আর্ট সেণ্টারে। এ উপলক্ষ্যে ৩০ আগষ্ট ২:১৫ মিনিটে লণ্ডন বাংলা প্রেসক্লাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মেলার বিস্তারিত কর্মসূচি লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরেন সংগঠনের সেক্রেটারী কবি ইকবাল হোসেন বুলবুল।
মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। তার সঙ্গে থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রণালেয়র ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনীম, টাওয়ার হ্যামলেট্স কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জনাব জন বিগ্স, মহান একুশের অমর গানের রচয়িতা বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ভীষ্মদেব চৌধুরী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ড. শাহাদুজ্জামান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, বাংলাদেশ প্রতিদিন-এর সম্পাদক নঈম নিজাম এবং লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী।
মেলায় এ বছর অংশগ্রহণ করছে- বাংলা একাডেমি, আগামী প্রকাশনী, অন্যপ্রকাশ, ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ, আহমেদ পাবলিশিং হাউস, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স, অনিন্দ্য প্রকাশ, উৎস প্রকাশন, অনার্য পাবলিকেশন্স, পারিজাত প্রকাশনী, পুঁথিনিলয়, নালন্দা, বাসিয়া প্রকাশনী এবং পাণ্ডুলিপি প্রকাশনসহ বাংলাদেশের মোট ১৭টি প্রকাশনা সংস্থা। এছাড়াও রয়েছে বিলাতের বঙ্গবন্ধু বইমেলা, প্রবাস প্রকাশনী, মেট্রোমেঘ, কবিতাস্বজন, স্পন্দনসহ বেশকিছু স্টল। থাকবে বাংলাদেশ হাইকমিশনের তত্ত¡াবধানে ‘বঙ্গবন্ধু মঞ্চ’। আপনারা জানেন যে, এ বছর জাতীয়ভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে। আপনারা আরও জেনে খুশি হবেন যে, এ বছর আমরাও আমাদের পুরো আয়োজন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
লিখিত বক্তব্যে দু‘দিনব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে উলেখ করা হয়, প্রথম দিন ৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১১:৩০ মিনিটে ব্রাডি আর্টস অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারের সামনে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা এই মেলা উদ্বোধন করার প্রস্তুতি নিয়েছি। মেলায় আগত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিবৃন্দসহ সবাইকে নিয়ে মেলা উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের হিরন্ময় ইতিহাসের সূর্যসন্তান, আমাদের সংগঠনের সম্মানীত প্রধান উপদেষ্টা এবং অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। দু’দিন ব্যাপী এই মেলা ও উৎসব চলবে প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। পাশাপাশি স্টুডিও থিয়েটারে প্রথমদিন থাকবে উদ্বোধনী অনুষ্টান, আলোচনাসভা, পদকপ্রদান, কবিদের কন্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা আবৃত্তি, এবং সব শেষে বিলেতের শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠান।
দ্বিতীয় দিনে তিনটি সেমিনার রয়েছে। প্রথম সেমিনার শুরু হবে দুপুর বারোটায়। বিষয় : ‘বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে সরকারের পরিকল্পনা’। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন ড. শেখ মুসলিমা মুন, ডেপুটি সেক্রেটারি, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। দ্বিতীয় সেমিনার শুরু হবে বিকেল ২:৩০। বিষয় : ‘অনাবাসী সাহিত্য’। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিলেতবাসী কবি হামিদ মোহাম্মদ। তৃতীয় সেমিনার শুরু হবে বিকাল ৩.৩০। বিষয় : লেখক ও প্রকাশ সম্পর্ক। সেমিনার তিনটির আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন- ড. ভীষ্মদেব চৌধুরী, ড. শাহাদুজ্জামান, শামীম আজাদ, নঈম নিজাম, ওসমান গণি, ড. মুকিদ চৌধুরী, এমদাদুল হক চৌধুরী, মিলটন রহমান প্রমুখ। দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় পর্বে আরও রয়েছে লেখক, কবি ও শিল্পীদের নিয়ে কবিতাপাঠ, গল্পবলা এবং সঙ্গীতানুষ্ঠান। এর বিস্তারিত বিবরণ আমাদের প্রকাশনায় আছে।
সুপ্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ আমরা উলেখ করতে চাই যে, আমাদের এই মেলায় আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছি। তবে প্রতি বছরের মতো এবছরও আমরা সংগঠনের সদস্যদের চাঁদার পাশাপাশি কমিউনিটির বিশিষ্টজনের সহযোগিতায় মেলা অনুষ্ঠানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এই সহযোগিতায় মূল স্পন্সর হিসাবে এগিয়ে এসেছেন চ্যানেল-এস এবং এটির কর্ণধার মাহি ফেরদৌস জলিল, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা ও ব্যবসায়ী এম এ গণি এবং এনামুল মুনিম লোদী (শামীম লোদী)। এছাড়া আরও যারা আমাদেরকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছেন আমরা তাদের নাম আমাদের প্রকাশনায় উলেখ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি। ব্রাডি আর্টস অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টারের দুইদিনের ভাড়া বাবত যে খরচ আসে তা মওকুফের জন্য আমরা টাওয়ার হ্যামলেটস্ কাউন্সিল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। গত বছর কাউন্সিল কর্তৃপক্ষ আমাদের আবেদনের পরিপেক্ষিতে অর্ধেক ভাড়া মওকুফ করেছিলেন। সে জন্য আজকের এই সুযোগ আমরা আমাদের নির্বাহী মেয়র, সম্মানীত কাউন্সিলারবৃন্দ সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি এবং আশা করছি এবছরও আমরা কাউন্সিলের কাক্সিক্ষত সহযোগিতা চাচ্ছি।