সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহরস্থ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে বিদেশগামী কর্মীদের টিকার রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে ২৫ জন কর্মী রেজিস্ট্রেশন করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে, ব্যাংক খোলা না থাকায় অনেকেই পড়েছেন বিপাকে। অবশ্য যারা নগদ বা বিকাশ, রকেট কিংবা শিওর ক্যাশে ফি জমা দিতে পেরেছেন তাদের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস সিলেটের উপ সহকারী পরিচালক মো: মাহফুজ উল আদিব এ তথ্য জানান।
প্রবাসী কর্মীদের কর্মস্থলে গমন নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত করতে বিদেশগামী কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এছাড়া বেশ কিছুদিন থেকে বিদেশগামী কর্মীরা ভ্যাকসিনের জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন। সর্বশেষ বিদেশগামী কর্মীদের কথা বিবেচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা কার্যক্রম শুরু করা হয়। এর অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে নগরীর শাহজালাল উপশহরস্থ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে (বাড়ি-১, রোড-৪১, ব্লক-সি) ভিড় করেন শতাধিক বিদেশগামী কর্মী। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম। তবে অনেকেই রেজিস্ট্রেশন করতে পারেননি।
জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস সিলেটের উপ সহকারী পরিচালক মো: মাহফুজ উল আদিব জানান, শুক্রবার সকাল থেকেই অনেকে বিদেশযাত্রী কোভিড ১৯ ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন করতে অফিসে এসেছিলেন। তবে পে অর্ডারের মাধ্যমে ফি জমা দেয়ার কথা থাকলেও ব্যাংক বন্ধ থাকায় অনেকেই ফি জমা দিতে পারেননি। তিনি জানান, যাদের ই পাসপোর্ট রয়েছে তাদের নগদে টাকা গ্রহণ করে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া হয়েছে। এরকম ২৩ জন যাত্রী রয়েছেন। এছাড়া দুইজন বিকাশে প্যামেন্ট দিতে পারায় আরো দুইজনের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়। মো: মাহফুজ উল আদিব জানান, সবাইকে ফি জমা দেয়ার নিয়ম বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। সবাইকে নগদ, বিকাশ, রকেট কিংবা শিওর ক্যাশে জমা দেয়ার জন্য ট্রাই করার কথা বলা হয়েছে। তিনি রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান।
সিলেট জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস জানায়, বিদেশগামী কর্মীদের অগ্রাধিকার প্রাপ্তি ও বয়স প্রমার্জন করে টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশনের সুবিধার্থে গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) রেজিস্ট্রেশন। শুক্রবার থেকে (প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত) সিলেটসহ দেশের ৪২টি জনশক্তি অফিস, ৯টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ১টি মেরিন টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে অথবা ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপে বিএমইটির এই রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চলবে। প্রবাসী কর্মীদের কর্মস্থলে গমন নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত করতে বিদেশগামী কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকল্পে বয়স প্রমার্জন ও অগ্রাধিকার পাওয়ার লক্ষ্যে যেসব কর্মীর বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধন ও স্মার্ট কার্ড নেই অথবা চলতি বছরের গত ১ জানুয়ারির পূর্বের বিএমইটির স্মার্ট কার্ড আছে সে সব কর্মীর টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের সুবিধার্থে বৈধ পাসপোর্ট দিয়ে ২ জুলাই থেকে বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধন করতে হবে। তবে জানুয়ারি থেকে নিবন্ধিত কর্মীদের নতুনভাবে নিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৪২টি জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, ৯ টিটিসি (ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, মাদারীপুর, মেহেরপুর, শরীয়তপুর, সুনামগঞ্জ, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট) এবং বিআইএমটি, নারায়ণগঞ্জে (তালিকা:www.bmet.gov.bd তে পাওয়া যাবে) স্বাস্থ্যবিধি মেনে সশরীরে হাজির হয়ে নির্ধারিত ও নিজ জেলায় সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত অথবা অনলাইনে ‘আমি প্রবাসী’ (Ami Probashi) অ্যাপে নিবন্ধন করা যাবে।
বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধিত কর্মীরা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রাপ্তির লক্ষ্যে Surokkha Apps বা www.surokkha.gov.bd এর মাধ্যমে জরুরিভাবে টিকা গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। surokkha App এ রেজিস্ট্রেশন সফল হলে মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে টিকা সেন্টার ও টিকার তারিখ জানা যাবে।
কোভিড-১৯ টিকা প্রদান ও সনদায়ন কার্যক্রম সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড। সে কারণে surokkha App বাwww.surokkha.gov.bd এ নিবন্ধিত হয়ে টিকা কেন্দ্র ও তারিখ সংক্রান্ত মেসেজ না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশগামী কর্মীদের কোনো হাসপাতাল, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বিএমইটি বা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করে জমায়েত হয়ে টিকা গ্রহণের সুযোগ নেই। বিষয়টি অনুধাবনের জন্য বিএমইটি থেকে বিদেশগামী কর্মীদের অনুরোধ করা হয়েছে।