সিলেট বিভাগের ঠিক মধ্যবিন্দুতে, মহাভারতে বর্ণিত প্রাচীন বরবক্র (বরাক) নদীর তীর ঘেষে, বরাকের শাখা নদী ও তৎপার্শ্ববর্তী হাওড়সমূহের চতূস্পার্শ্বে গড়ে ওঠা জনবসতি, বর্তমান জরিপী ১৪৪টি মৌজায় ২৯৩ গ্রাম ২২৪.৫৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট, ২০১৫ সালের হিসাবানুযায়ী ২,৩০,৪৬৭ জন জনসংখ্যা সম্বলিত একটি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক জনপদ যা ‘ওসমানীনগর উপজেলা’ নামে পরিচিত।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক, সাদীপুর ইউনিয়নের শেরপুর থেকে দয়ামীর ইউনিয়নের আহমদনগর এবং কুশিয়ারা-বিবিয়ানার নাব্য নদীপথ ও পরবর্তীতে নৌ ও স্থল যোগাযোগ এ অঞ্চলকে পাশর্^বর্তী জেলাসমূহ তথা সারা দেশের সাথে প্রাচীন নৌ ও বর্তমান সড়কপথে সিলেট অঞ্চলের যোগাযোগের কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছে এবং সিলেট বিভাগের যোগাযোগ ব্যবস্থার কেন্দ্রস্থলে থাকার সুবাদে এ অঞ্চল বৃহত্তর সিলেটের রাজনীতি-সংস্কৃতির মিলনস্থল হিসেবে বরাবরই খ্যাতি লাভ করে আসছে।
এর উত্তরে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা ও বিশ^নাথ উপজেলা, দক্ষিণে কুশিয়ারা নদীর ওপারে মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা, পশ্চিমে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর আর পূর্বে বর্তমান বালাগঞ্জ উপজেলা। সূদুর অতীত কাল থেকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, বৃহত্তর সিলেটের ভাঙা-গড়া, বৌদ্ধ সংষ্কৃতি, অগ্রহার, ব্রাম্মণ্য বসতি ইত্যাদি অতি নিকট থেকে অবলোকন করেছে এ অঞ্চল এবং প্রভাবিতও হয়েছে সময় সময়। প্রাচীন গৌড়-লাউড় ও দক্ষিণ সিলেটের সীমানা বেষ্টিত এ অঞ্চলটি প্রাচীন গৌড় রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। হযরত শাহজালালের (র.) গৌড়বিজয় কালে তাঁর প্রথম পদস্পর্শে ধন্য হয়েছে এ অঞ্চলের মাটি ও মানুষ। এ অঞ্চল তাই তার প্রাচীনত্ব ছাড়াও ইতিহাসের বিভিন্ন ভাঙা-গড়া, উত্থান-পতন ও বহুমূখী বিনির্মাণে রেখেছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ও কালের সাক্ষী হয়ে রয়েছে।