অন্য দুই প্রাথীকে সামনে রেখে হাবিব বললেন, ‘উনারা যেন আবার মাঝপথে নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ান।’ তার কথার জবাব দিলেন আতিক। বলেছেন, ‘ইন্শাআল্লাহ্ আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করবো। আমরা যারা প্রার্থী আছি, আমরা আশা করবো সরকারি দল যাতে আমাদের ওপর জুলুম-নির্যাতন না করে।’ গত ১৭ জুন মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে শফি আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘আমার তো মনে হয় সুষ্ঠুভাবে উনারা যাচাই-বাছাই করছেন। কেউ কেউ কারও বিরুদ্ধে অবজেকশন করেছেন। কিন্তু আমার কোনো কমেন্ট নেই। আই হ্যাভ নো অবজেকশন।’ জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘আমাদের মূল কথা হচ্ছে নির্বাচনে যেন ভোটাররা ভোট দিতে পারেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। ভোটারদের মনে একটা প্রশ্ন- ভোট কী আসলে হয় বা হবে। আমি ভোট দিতে পারবো কি-না, না আমার ভোট কেউ আরেকজন দিয়ে দেবে? আমরা চাই একটা অবাধ নির্বাচন। যার ভোট সে যেন দিতে পারে।’ আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ‘আপনারা দেখেছেন বর্তমান সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী শফি আহমদ চৌধুরী ও আতিকুর রহমান আতিক দু’জনই আমার সিনিয়র। একজন প্রবীণ মুরব্বি। ৮২ বছর বয়স। আতিক ভাই আমার অনেক সিনিয়র। তারও বয়স ৭০-এর কাছাকাছি। এই দু’জন প্রবীণ মুরব্বির সঙ্গে আমি একজন তরুণ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেনো আমাকে ২৮শে জুলাইয়ের নির্বাচনে জয়যুক্ত করেন।’ হাবিব আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশন চায় বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। সেই সুষ্ঠু নির্বাচনে বিরোধী দলের দায়িত্ব অনেক। উনারা যেন আবার মাঝপথে নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ান।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন প্রার্থীদের সামনেই মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের ফলাফল ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিক, স্বতন্ত্র হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমেদ চৌধুরী, জুনায়েদ মোহাম্মদ মিয়ার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন। এছাড়া শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম, ফাহমিদা হোসেন লোমার প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে বাতিল প্রার্থীদের আপিলের সুযোগ রয়েছে বলে জানান। বাছাইয়ের এক পর্যায়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিকসহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিরের মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তারা দাবি করেন- হাবিবুর রহমান হাবিব বৃটেন ও বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক। সংবিধান অনুযায়ী তিনি নির্বাচনে বৈধ হতে পারেন না। তবে তাদের এই দাবি আমলে নেননি নির্বাচন কর্মকর্তারা। বিষয়টি অভিযোগকারীদের প্রমাণের কথা বলেন। শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন- এবারের নির্বাচনে ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। যাচাই-বাছাই শেষে গতকাল ৪ জনের মনোনয়ন বৈধ ও ২ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। তিনি জানান, শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম নামের এক প্রার্থী মনোনয়নপত্রে মোট ভোটারের এক শতাংশেরও কোনো তথ্য দেননি। অপর প্রার্থী ফাহমিদা হোসেন লোমার দাখিলকৃত মনোনয়নপত্রে মোট ভোটারের এক শতাংশ ভোটারের তথ্য দিলেও তা যাচাই-বাছাই করে সঠিক না পাওয়ায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। প্রার্থিতা বাতিল হওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাহমিদা হোসেন লোমা জানান, তার মনোনয়নপত্রে কোনো ভুল ছিল না। তিনি প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করবেন।