স্টাফ রিপোর্টার : সিলেট জেলা ছাত্রলীগের নয়া কমিটিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী প্রায় ১শ’ জন প্রার্থী কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। গতকাল রোববার ৫ গ্রুপে ভাগ হয়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীরা সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। এ সময় তারা তাদের জীবন বৃত্তান্তও জমা দেন। এদিকে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিলেট সফরকে ঘিরে বিভিন্ন গ্রুপ-উপ-গ্রুপে বিভক্ত হয়ে দলীয় নেতা-কর্মীরা সার্কিট হাউস এলাকায় শোডাউন করে। এ নিয়ে কিছুটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও শেষ পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সিলেট জেলা শাখার নয়া কমিটি গঠন উপলক্ষে গতকাল রোববার সিলেটে আসেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক ছিদ্দিকী নাজমুল আলমসহ ৮ জনের একটি প্রতিনিধি দল। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আগমন ও নয়া কমিটি গঠন উপলক্ষে সিলেট জেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে। নগরীসহ সার্কিট হাউজ এলাকায় দিনভর তারা মহড়া দিতে থাকেন। বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সিলেট সার্কিট হাউজে আসলে সেখানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ব্যাপক সমাগম ঘটে। বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তারা শ্লোগান দিতে থাকেন। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে শুভেচ্ছা না জানিয়ে নিজ গ্রুপের নেতার নামে শ্লোগান দেন তারা। বিভিন্ন গ্রুপের নেতাকর্মীর উপস্থিতি ও শ্লোগানে সার্কিট হাউজ এলাকায় টান টান উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে কোন ধরণের বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়নি। নেতাকর্মীদের শান্ত করতে এক পর্যায়ে ভিতর থেকে বের হয়ে আসেন কেন্দ্রীয় সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ। রিক্সায় উঠে তিনি শ্লোগানরত কর্মীদের শান্ত হওয়ার আহবান জানান এবং প্রার্থীদের একজন একজন করে জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে সাক্ষাৎকার দিতে বলেন। বিকেল ৪টা থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ শুরু হয়। এ সময় বিধান কুমার সাহা সমর্থিত কাশ্মির গ্রুপ, আজাদ-রঞ্জিত সমর্থিত টিলাগড় গ্রুপ, শফিউল আলম নাদেল সমর্থিত দর্শন দেউড়ি গ্রুপ, নাসির উদ্দিন খান সমর্থিত তেলিহাওর গ্রুপ ও শফিকুর রহমান চৌধুরী সমর্থিত টিলাগড় গ্রুপের প্রায় ১শ’ জন প্রার্থী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সাক্ষাৎকারসহ তাদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের সাথে আলাপ করে জানা যায়, এবার জেলা ছাত্রলীগের নয়া কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ। পদ-পদবী প্রত্যাশী নেতা-কর্মীদের পুরোদস্তুর পরীক্ষা দিতে হয় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে। প্রত্যেক প্রার্থীকে সংগঠনের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও দলীয় বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। সাক্ষাৎকার শেষে কেন্দ্রীয় সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মেধাবী ও নিয়মিত ছাত্রদের হাতে দলের নেতৃত্ব তুলে দেয়া হবে। উর্ধ্বে ২৯ বছর বয়সী মেধাবী ছাত্ররা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্য হবেন। সাক্ষাৎকার গ্রহণ শেষে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে দেখা করেন। সাক্ষাৎকালে তারা নেতৃবৃন্দের সাথে কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ সিলেটের ডাককে জানান, যে কোন সময় নয়া কমিটির নাম ঘোষণা করা হবে। কমিটি গঠন নিয়ে তিনি সিলেট জেলা আওয়ামীলীগ ও সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করেছেন। মেধাবী ও নিয়মিত ছাত্ররা কমিটিতে স্থান পাওয়া নিয়ে সিলেটের নেতৃবৃন্দ তার সাথে একমত পোষণ করেছেন।