শাহ মোহাম্মদ শরফ উদ্দিন চিশতী একই সাথে একজন গীতিকার, সুরকার ও সংগীত শিল্পী। অর্থাৎ যাকে বলে একের ভেতর তিন। তাঁর জন্ম সিলেট জেলার অন্তর্গত দণি সুরমা উপজেলা মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের লামাহাজরাই গ্রামে। পিতা মরহুম মোঃ আত্তর আলী ঠাকুর মিয়া ও মাতা মোছা. তাসলিমা খানম।
শাহ মোহাম্মদ শরফ উদ্দিন চিশতী পেশায় কবিরাজ হলেও নেশা মূলত সংগীতচর্চা। তাঁর পিতা মরহুম মোঃ আত্তর আলী ঠাকুর মিয়া সংগীত চর্চা করতেন, সেই সূত্র ধরেই তিনি সংগীতের জগতে প্রবেশ করেন। ছোটবেলা কোন শিকের কাছ থেকে গানের তালিম নেবার সুযোগ তাঁর হয়নি। তাঁর ভাষায় তিনি নিজেই নিজের শিক আবার নিজেই নিজের ছাত্র। মুক্তিযুদ্ধের বছর থেকে তিনি নিজের গানে সুর দেন ও গান করেন। তিনি দেহতাত্ত্বিক, আধ্যাত্মিক, ভাটিয়ালি, পল্লীগীতি, বাউল ইত্যাদি বিভিন্ন ধারার সংগীতের চর্চা করে থাকেন। তাঁর গানগুলো গ্রাম ও শহর সব অঞ্চলের মানুষেরই শোনার উপযোগী। সুশীল সমাজের আর্থিক সহযোগীতা পেলে ভবিষ্যতে গানের সিডি বের করতে তিনি ইচ্ছুক। আমাদের দেশের সংগীতের ত্রে নিয়ে তাঁর বক্তব্য হলো, দেশে বর্তমানে যথেষ্ট ভালো সংগীতচর্চা হচ্ছে। তবে এক শ্রেণির গায়কেরা গানের মূল সুর ও মিউজিক বিকৃত করে গান গাচ্ছেন যা ঠিক নয়। গানের শ্রোতা ও সংগীত শিল্পীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বক্তব্য হলো গান আধ্যাত্মিক জগতের বস্তু। একে শুধু কান দিয়ে শুনলেই হবে না একে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করাও জরুরী। না বুঝে গান গাওয়া ঠিক নয়। প্রতিটি গানের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ও গভীর অর্থ রয়েছে। একে বুঝে আত্মস্থ করা উচিত।
প্রাইমারী পড়–য়া শাহ মোহাম্মদ শরফ উদ্দিন চিশতী অলি আউলিয়াদের মাজারে মাজারে কাটান বেশিরভাগ সময়। ওলী আওলিয়ার সংস্পর্শে থাকতে চান। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত।
সংগীতকে ভালোবেসে তিনি নিয়মিত সংগীতের সাথে আছেন। তাঁর প্রত্যাশা একদিন তার গানগুলো গ্রন্থাকারে ও সিডি আকারে প্রকাশিত হবে। আমরা শরফ উদ্দিনের কটি গান পত্রস্থ করলাম
০০০
অপুরন্ত ভান্ডার হতে ফিরলে খালি কলংক রবে
ভিখারীর মনে ভরসা তোমারই দয়া পাবে।।
দয়া পাইতে আসা নিয়া কত না যাতনা লইয়া
আসে সবে
ভক্তের মনে ঐ ভরসা দয়াল হইয়া ভিা দিবে।।
আমার অপরাধের নাইগো সীমা ভিা মাগি পাইতে মা
আসে সবে
তুমি নায়রে নবী উজ্জল রবি একুল সেকুল খেয়া দিবে।।
তব জাতের জাতি করে কুলেনি লইবে আমারে
আপন ভেবে
শাহ শরফ উদ্দিন কয় তাই না হলে দয়াল নামের কিগুণ রবে।।
০০০
ভারের দেশে যাবে যদি মন
ভাবের দেশ মুকাম্মীলে শাকারে পায় সাই নিরঞ্জন।।
ভাবের দেশের কায্য নিত্য সরলে রয় সবাই লিপ্ত
মরা বৃে জল দিতে রয় বহুজন হইয়া একজন।।
ভাবের দেশের কঠিন রীতি সুসাধনে পায় যে জুতি
সঙ্গি হলে আপ্ত জ্ঞাতি আলো ছড়ায় বিশ্ব ভুবন।।
শরফ উদ্দিন কয় আলীফ দাল মিম
তিন হরফে আদম মুমিন
ভেদাভেদ নাই হিন্দু মুসলিম দেশে করে রনে গমন।।
০০০
বাহির চোখে আল্লাহ দেখা নাহি যায়
বাহির চোখে দলিল দেখে ভাবরে খোদা রইল কোথায়।।
বাহির চোখে দিচ্ছে জুতি দেখিতে সুন্দন আকৃতি
সৃজন করছে জগৎপতি ফাদ পাতিয়া দুটানায়
বাহির চোখে করবে দোষি না হইলে অন্ধের তল্লাশি
বাহির চোু নফছ রাশি ঘন্টা জলে নাও ডোবায়।
ভেবে কয় শাহ শরফ উদ্দিন অন্ধ চোখে মৌলার শাকিন
বুঝলে না তুই মনরে কমিন চোখ সাধনা জঙ্গলায়।।