যুক্তরাষ্ট্রের যে শহরে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ!

4a6f191346fa7615d6fad6201966d123এমন শহর কি এখনো আছে? যে শহরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা বারণ? ওয়াই-ফাই সংযোগ দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহারেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা? সেই শহরে তাই স্মার্টফোন নিয়ে পড়ে থাকার বদলে একজন আরেকজনের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেন। পুরো শহরটি যেন পড়ে আছে কয়েক দশক পেছনে? কিন্তু কেন? একটু পরই বিষয়টি পরিষ্কার হবে আপনাদের কাছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় অবস্থিত এই শহরের নাম গ্রিন ব্যাংক। এই শহরে বাস করেন মাত্র ১৪৩ জন। তবে বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তাঁরা কোনো সেলফোন বা ওয়াইফাই সংযোগ ব্যবহার করতে পারেন না।

১৩ হাজার স্কয়ার মাইলের এই এলাকা পরিচিত ‘ন্যাশনাল রেডিও কোয়াইট জোন’ হিসেবে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ রেডিও টেলিস্কোপ অপারেট করা হয় এই শহর থেকেই। এ খবর জানিয়েছে টুডে ডটকম।

৪৮৫ ফুট লম্বা ও ১৭ মিলিয়ন পাউন্ড ওজনের এই রেডিও টেলিস্কোপ একটি ছোটখাটো স্টেডিয়ামের সমান। আর এই টেলিস্কোপের জন্যই ওয়ারল্যাস সিগন্যাল উৎপন্ন করতে পারে এমন ইলেকট্রনিক পণ্য ব্যবহার নিষিদ্ধ এই শহরে। টেলিস্কোপটি ব্যবহার হয় মহাকাশ গবেষণার কাজে। তরঙ্গভিত্তিক গবেষণার কাজ যেন নিশ্ছিদ্রভাবে করা যায়, সে জন্যই এমন নিষেধ বারণ।

রেডিও টেলিস্কোপটির দেখভাল করে ‘ন্যাশনাল রেডিও অ্যাস্ট্রনোমি অবজারভেটরি’। এই প্রতিষ্ঠানের বিজনেস ম্যানেজার মাইকেল হোলস্টাইন বলেন, ‘টেলিস্কোপটি যেন ঠিকভাবে সংকেত নিতে ও পাঠাতে পারে সে জন্য ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবহার এখানে সীমিত।’

শহরটিতে বিভিন্ন রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি দেখভাল ও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রয়েছে ‘রেডিও পুলিশ’। এমনিতে কেউ নিয়ম ভঙ্গ করেন না, তারপরও সাবধানের মার নেই! আর সতর্ক থাকার জন্যই এই তদারকির কাজটি করে থাকেন ‘রেডিও পুলিশ’। তারা সব সময় পরীক্ষা করতে থাকেন অবাঞ্ছিত তরঙ্গ আছে কি না ওই অঞ্চলে।

যেহেতু মোবাইল ফোন নেই তাই ওই শহরের বাসিন্দারা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ল্যান্ডফোনের মাধ্যমে। তারা ইন্টারনেট সংযোগও ব্যবহার করে থাকেন তবে সেটা ডায়াল আপ বা ইথারনেট ক্যাবল কানেকশনের মাধ্যমে। শহরের কিশোর-কিশোরীরাও এ রকম জীবনযাপনের ক্ষেত্রে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে, আর বাকিরা বেশ ভালোই আছেন।

শহরের পুরোনো বাসিন্দা শেরি চেস্টনাট বলেন, ‘একদিক থেকে আমরা ভালোই আছি। অন্যদের মতো স্মার্টফোনের স্ক্রিনের দিকে না তাকিয়ে আমরা মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলি। কারো সঙ্গে দেখা করতে হলে তার বাসায় চলে যাই, সেখানে গিয়ে আড্ডা মারি।’

এফ/০৮:৫৭/১৪জুলাই

Developed by: