দর্শক গ্যালারি থেকে মা দেখছিলেন ছেলের সাইক্লিং। হঠাত এক দুর্ঘটনায় আরও কয়েকজন প্রতিপক্ষের সঙ্গে পড়ে যান এলিয়া ভিভিয়ানি। মা তখন হয়তো চিন্তা করছিলেন আমার ছেলের কিছু হয়নিতো। সেই ছেলেই শেষ পর্যন্ত সোনা জিতলো।
রেসটা প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছিল। ৪০ কিলোমিটার পয়েন্ট রেসের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ বাকি। ঠিক এমন সময় কিন্তু হাল ছাড়লেন না ইতালিয়ান এই সাইক্লিস্ট। একেবারে শেষ মুহূর্তে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ছেলেদের ওমনিয়াম ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলেন ভিভিয়ানি। দেশকে এনে দিলেন মনে রাখার মতো একটা মুহূর্ত। ১৯৯৬ সালের পর এই প্রথম সাইক্লিংয়ের ওমনিয়াম ইভেন্টে পদক জিতল ইতালি।
পরশু দুই দিনব্যাপী এই ইভেন্টের ষষ্ঠ ও শেষ রাউন্ডে ঘটে দুর্ঘটনাটা। ব্রিটিশ সাইক্লিস্ট মার্ক ক্যাভেন্ডিসের ভুলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন ডেনমার্কের লাসে হ্যানসেন, অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ও’শিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার পার্ক স্যাং-হুন ও ভিভিয়ানি। পার্ক স্যাং-হুনকে তো শেষ পর্যন্ত ট্র্যাক থেকেই হাসপাতালে যেতে হয়েছে। একই ভাগ্যবরণ করতে হতে পারত ভিভিয়ানিকেও। কিন্তু হাল না ছাড়ার মানসিকতা শেষ পর্যন্ত জিতিয়েছে তাঁকেই। আর জয়টা এমনভাবে এসেছে বলেই একটু বেশি আবেগাপ্লুত তিনি, ‘আমার বাবা-মাও আজ (পরশু) এখানে ছিলেন। ওরাও দেখেছেন পুরো ব্যাপারটা। আমার কাছে এটা একটা আবেগঘন মুহূর্ত।’
এই ইভেন্টে শেষ পর্যন্ত রুপা জিতেছেন মার্ক ক্যাভেন্ডিস, ডেনমার্কের লাসে হ্যানসেন পেয়েছেন ব্রোঞ্জ। তবে রেসের পর দুর্ঘটনায় নিজের দায়টা স্বীকার করেছেন ক্যাভেন্ডিস, ‘আসলে আমারই ভুল ছিল। কোথায় যাচ্ছি এ বিষয়ে আমার আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। আশা করছি, পার্কের খুব বেশি কিছু হয়নি। এলিয়া পড়ে যাওয়ার পরই আমি ওর কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’
ক্যাভেন্ডিসের প্রতি কোনো রাগ নেই ভিভিয়ানিরও, ‘আসলে ওর দোষ নেই। এটা তো বাইক রেস, আর আমরা সবাই ট্র্যাকে। এখানে যেকোনো সময় যেকোনো কিছু হতে পারে। সাধারণত আমরা সবাই খেয়াল রাখি সামনের জন কোন দিকে যাচ্ছে, তার কী অবস্থা। সেই অনুযায়ী যদি আপনি নিজের দিক পরিবর্তন না করতে পারেন, তাহলে সামনের জন পড়লে আপনিও পড়বেন।’