বিভাগ: প্রবাস

দুই জন প্রবাসী লেখককে নিয়ে বাসিয়ার অন্তরঙ্গ আড্ডা আগামী ৮ জানুয়ারি

00000000000000মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসী সংগঠক ও লেখক মো. কাচা মিয়া এবং প্রবাসী কবি এম মোসাইদ খান- গুণীদ্বয়কে নিয়ে আগামী ৮ জানুয়ারি শুক্রবার বিকাল ৩.০০ ঘটিকার সময় মাসিক বাসিয়া পত্রিকার কার্যালয়ে এক অন্তরঙ্গ আড্ডার আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত আড্ডায় সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য আহবান জানিয়েছেন মাসিক বাসিয়া সম্পাদক ও প্রকাশক মোহাম্মদ নওয়াব আলী।

দুই জন প্রবাসী লেখককে নিয়ে বাসিয়ার অন্তরঙ্গ আড্ডা আগামী ৮ জানুয়ারি

0001মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসী সংগঠক ও লেখক মো. কাচা মিয়া এবং প্রবাসী কবি এম মোসাইদ খান- গুণীদ্বয়কে নিয়ে আগামী ৮ জানুয়ারি শুক্রবার বিকাল ৩.০০ ঘটিকার সময় মাসিক বাসিয়া পত্রিকার কার্যালয়ে এক অন্তরঙ্গ আড্ডার আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত আড্ডায় সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য আহবান জানিয়েছেন মাসিক বাসিয়া সম্পাদক ও প্রকাশক মোহাম্মদ নওয়াব আলী।

আজ কবি ফকির ইলিয়াস এর জন্মদিন

FOKIR-ELIYAS20151228033902আজ ২৮ ডিসেম্বর এই সময়ের বিশিষ্ট কবি ফকির ইলিয়াস এর জন্মদিন। ১৯৬২ সালের এই দিনে তিনি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রাবন্ধিক, গল্পকার, গ্রন্থসমালোচক, সাংবাদিক হিসেবেও রয়েছে তার ব্যাপক পরিচিতি। প্রবাসে বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি- লালন ও চর্চায় তিনি নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা তেরোটি। উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ-`অবরুদ্ধ বসন্তের কোরাস`, `বৃত্তের ব্যবচ্ছেদ`, `গুহার দরিয়া থেকে ভাসে সূর্যমেঘ`, `ছায়াদীর্ঘ সমুদ্রের গ্রাম`, `গৃহীত গ্রাফগদ্য`, `অনির্বাচিত কবিতা`। এছাড়াও `কবিতার বিভাসূত্র` (প্রবন্ধ সংকলন), `চৈতন্যের চাষকথা` (গল্প সংকলন), `অনন্ত আত্মার গান` (গীতি সংকলন) এর জন্য তিনি নন্দিত হয়েছেন পাঠক মহলে।

তার লেখা নিয়মিত ছাপা হচ্ছে ঢাকা ,কলকাতা, লন্ডন, নিউইয়র্ক, কানাডা, সুইডেন, ইতালী, অষ্ট্রেলিয়া, জাপানসহ দেশে-বিদেশের বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক, ম্যাগাজিন, সাহিত্যপত্রে। ওয়েব, ব্লগ, ই নিউজ গ্রুপেও তিনি লিখছেন নিয়মিত। সাহিত্য কর্মের জন্য তিনি `ফোবানা সাহিত্য পুরস্কার` , `ঠিকানা শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ পুরস্কার` পেয়েছেন। তিনি দ্যা একাডেমি অব আমেরিকান পোয়েটস, দ্যা এ্যমেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিষ্টস, আমেরিকান ইমেজ প্রেস- এর সদস্য। সহধর্মিনী কবি ফারহানা ইলিয়াস তুলি ও দু`কন্যা নাহিয়ান ইলিয়াস ও নাশরাত ইলিয়াসকে নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন নিউইয়র্কে।

বাসিয়ার সাথে একান্ত আলাপচারিতায় তরুণ কবি এম মোসাইদ খান ‘আলোয় আলোয় উজ্জ্বল যৌবনা নগরীর কোলে ফেরারী আমি।’ শুধু মা, মানুষ আর মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা আমার নিত্যসঙ্গী

0001তৃতীয় বাংলা খ্যাত বিলেতের সাহিত্যঙ্গনে অতি সুপরিচিত মুখ তরুণ কবি এম মোসাইদ খান।
এম মোসাইদ খান সিলেট জেলার দণি সুরমা উপজেলার অন্তর্গত লালাবাজার ইউনিয়নের লালারগাঁও গ্রামে ১৯৭৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মোহাম্মদ মদরিছ খান, মাতার নাম নুরজাহান বেগম। এম মোসাইদ খানসহ তিন ভাই ও তিন বোন।
২০০৩ সাল থেকে লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। এম মোসাইদ খান ছাত্র জীবন থেকেই লেখালেখির সাথে জড়িত, গান দিয়ে লেখালেখির শুরু হলেও বর্তমানে কবিতার পাশাপাশি লিখছেন নাটক ও ছড়া। দেশ বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকা, সাহিত্যের ছোট কাগজ ও আমাদের বাংলা ব্লগসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন। শব্দের বেনুনে স্বপ্ন বুনে যাওয়া কবি এম মোসাইদ খানের ছড়াগ্রন্থ তিনটি- তালপাতার ঘোড়া, ভুলের ঘণ্টা, কদম আলী লন্ডন ব্রীজ। গীতিকাব্য- মিনতি। কাব্যগ্রন্থ দুইটি- আয়না বিভ্রম এবং হাড়ের মিছিল। লন্ডনের একমাত্র বাংলা রেডিও চ্যানেল বেতার বাংলা তার রচনা, শব্দগ্রহণ, সম্পাদনায় ও পরিচালনায় প্রচারিত বেতার নাটক ছয়টি, যথা- কর্মফল, ফুলপরির ভালোবাস্,া ইলেকশন, মায়ার পুতুল, মজর আলীর লন্ডন সফর এবং বাউলিয়ানা। এছাড়াও শব্দগ্রহণ ও সম্পাদনা করেছেন বেতার নাটক গোলাপজান (১) ও গোলাপজান (২)
চ্যানেল এস টিভিতে প্রচারিত জনপ্রিয় নাটক অসহায় এর সংলাপ এম মোসাইদ খানেরই রচিত। সম্পাদনা করেছেন ম্যাগাজিন প্রবাহ।
টেমস নদীর পার থেকে মা, মানুষ আর মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসার চিত্র কলমের আঁছড়ে নান্দনিক শব্দ চয়ন আর চমৎকার উপমায় ফুটিয়ে তুলেন কবিতায়। কোন প্রকার কৃত্রিমতা ছাড়া সহজ সরলভাবে সামাজের সঙ্গতি-অঙ্গতি তুলে ধরেন ছড়ার ছন্দে।
অসহায় দরিদ্র মানুষের জীবন যাপন ব্যথিত করে তার কবি মনকে তাইতো তার কলম থেকে বেরিয়ে আসে, ‘মারবেলের বারান্দায়/ কফির কাপে ধোঁয়ার ঝড় তুলে/ তৃপ্ত চুমুকে ভাবো/ বাড়িটা যদি হতো আরেকটু বড়ো/ সারা শহর জুড়ে কিংবা তার চেয়ে আরও বেশি/ ডিজাইনটা যদি আরও একটু হতো আধুনিক/ মসলিন সুতার কিংবা বাতাসের দেয়াল/ নীল চাদুয়ার নিচে সংখ্যাহীন ঘুমন্ত মানুষের সারি/
ভারী কাঁচের চশমায় পড়ে না ধরা/ ভুতা অনুভতিতে আঘাত করে না/ বিবস্র হাড়ের শরীর
সুখের কোলে মাথা রেখে দুঃখ পোষো বুকে/ আহা আরও একটু যদি…।’ (কাব্য গ্রন্থ’ আয়না বিভ্রম)
কিশোর বেলার স্মৃতি যখন তাকে তাড়া করে ফিরে তখন লিখেন, ‘স্মৃতি বোঝাই মনের সাম্পান/ ভেসে চলে সুরমার স্বচ্ছ জলে পদচিহ্ন কুড়ায়/ কালিঘাট, বন্দর বাজার, আম্বরখানা, তেতইর তল।’ (কাব্য গ্রন্থ’ আয়না বিভ্রম)
সমাজের অনাচার-অবিচার আর মানুষের মানবিক মুল্যবোধের অবয় তাকে ভাবিয়ে তুলে আর তাইতো বলেন, ‘মস্তিস্কের ভিতরে ভিতরে/ মানুষ আর কুকুরের প্রভু ভক্তির তুমুল দর কষাকষি/ দন্দ্বের ভেড়া জালে আধার ঘনায় আরও/ দীর্ঘশ্বাসে খসে পড়া শব্দ কত দুর আর কত দূর প্রভাত ফেরি।’ (কাব্য গ্রন্থ’ আয়না বিভ্রম)
‘মানুষকে মানুষ ভেবে ভুল করি/চোখের পাতায় অমানুষের ছায়া হিমেল হাওয়ার ঝাপটার মতো চমকে উঠি/ পাহাড় গড়িয়ে চলে বিশ্বাসী চাঁদ।’ (কাব্য গ্রন্থ’ হাড়ের মিছিল)
মাতৃভুমির টান তাকে কতোটা বিচলিত করে তুলে সেটা আমরা তার কবিতায় দেখতে পাই।- ‘ভোগ বিলাসের কানায় কানায় পূর্ন লন্ডন নগরী/ সু-সভ্যতার ঘ্রানমাখা আলোয় আলোয় উজ্জল যৌবনা নগরীর কোলে ফেরারী আমি।’ (কাব্য গ্রন্থ’ হাড়ের মিছিল)
‘নিশব্দ ছায়াহীন রাত/ র্নিঘুম দৃষ্টির পাতায় ভেসে উঠে আতুড় ঘর, টিনের চালে বৃষ্টির মতো বিরহের খই ফুটে হৃদয় গহনে।’ (কাব্য গ্রন্থ’ আয়না বিভ্রম)
একটি সুশিতি ও সুশৃংখল শান্তিময় সমাজের স্বপ্ন দেখেন তার কবিতার ভাষায়, ‘শান্ত হও, শান্ত হও মাটির মানুষ/ আলোয় আলোয় ভরে উঠুক পৃথিবী আমার।/ বৃষ্টির বর মাগি তপ্ত হৃদয়ে আজো/ বৃরে পাশাপাশি বেড়ে উঠা আমি…।’ (কাব্য গ্রন্থ’ আয়না বিভ্রম)
‘স্যাতস্যাতে ভিজা ঘরে / এক মুঠো রৌদ্র খুজি/ ফসলি মাটির বুক খুলে অঙ্কুরিত বৃরে বেড়ে উঠায়।’ (কাব্য গ্রন্থ’ হাড়ের মিছিল)
কখনওবা প্রেমের দোলায় দুলে প্রেমিকের ভুমিকার দাঁড়িয়ে ব্যক্ত করেন, ‘শূন্য কলসীর মতো শূন্য হৃদয়ে/ মাছরাঙ্গা চোখ গুঁজে রাখি পথের বাঁকে/ যদি তুমি ফিরে আসো অচেনা পথে।/ দিনের আলো ফুরায়, ফুরায় না পলক/ দিনান্তে থেকে যায় কষ্টের প্রহর, মেঘাবৃত সুর্যের আলো দৃষ্টির পাতা পোড়ে/ আমি পুড়ি তোমার প্রতিায়।’ (কাব্য গ্রন্থ’ হাড়ের মিছিল)
‘সঞ্চিত চাদের স্নেহ প্রেমের পরাগে দুলে উঠে আতœার/আনন্দ ডেউ তুলে অনন্ত সাগর জলে, উড়াউড়ি করে গাঙচিল মন, বুকের বন্দরে নোঙর করে লাল নীল প্রজাপতি।’ (কাব্য গ্রন্থ’ আয়না বিভ্রম)
কবি এম মোসাইদ খানের সাথে বাসিয়া পত্রিকার অন্তরঙ্গ আলাপে বেরিয়ে আসবে কবির আত্মস্ত ভাবনাগুলো। আমরা পাঠকের জন্য কবির সাথে কিছু প্রশ্ন নিয়ে আলাপ করি।
বাসিয়া: আপনার কাছে প্রথমেই জানতে চাই এই কর্মব্যস্ত প্রবাস জীবনে লেখালেখির সময়টা কিভাবে বের কররেন?
মোসাইদ খান: ঘুমের কাছ থেকে সময় চুরি করে লিখি, অর্থাৎ রাতে যখন ঘুমে থাকার কথা তখন না ঘুমিয়ে কিছুটা সময় লেখালেখির পিছনে ব্যয় করি।
বাসিয়া: কবিতা লেখার েেত্র কোন বিষয়টা আপনাকে প্রেরণা যোগায়?
মোসাইদ খান: মানুষকে নিয়ে ভাবতে আমার ভালো লাগে। আমি যা ভাবি এবং আমাকে যা ভাবায় তাই আমি আমার লেখায় তুলে ধরার চেষ্টা করি। পাঠকের আলোচনা-সমালোচনা, পাঠকের ভালো লাগা-ভালোবাসা, আমাকে আরও লিখতে উৎসাহ দেয়।
বাসিয়া: আপনিতো গান, ছড়া নাটক কবিতা লিখছেন, কোনটি লিখতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন?
মোসাইদ খান: আগে এক সময় গান লেখতাম এখন আর লিখছি না তবে যে সময় যেটা লিখি সেটাই ভালো লাগে। বতর্মানে কবিতাতেই ডুবে থাকতে বেশি ভালো লাগে।
বাসিয়া: কবিতায় ছন্দের বিষয়ে একটু বলুল কবিতা চর্চায় ছন্দ জানাটা কতটা জরুরী?
মোসাইদ খান: কবিতায় এক প্রকার ছন্দ থাকতেই হয়, এখন সেটা পদ্যছন্দ হোক কিংবা গদ্য ছন্দ হোক। ছন্দের একটা ন্যূনতম দোলা কবিতায় না থাকলে কবিতা পড়তে যেমন ভাল লাগবে না তেমনই শুনতেও ভালো লাগবে না। ছন্দবদ্বƒ কবিতা বলতে আমরা যেগুলো বুঝি আজকাল সেগুলোর চর্চা অনেকটা কমে গেছে কারণ এই ধরনের কবিতা লিখতে হলে স্বরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্ত, অরবৃত্ত ছন্দ সমন্বেƒ ভালো জ্ঞান থাকতে হয় এবং এ গুলো জানার জন্য একটু সময় ব্যয় ও পরিশ্রম করতে হয়, তাই আজকাল বেশির ভাগ কবিই গদ্যধারায় কবিতা লিখতে সাচ্ছন্বƒ বোধ করেন।
বাসিয়া: বতর্মান সময়ে কবিতার দুবোর্ধ্যতার কারনে পাঠক কবিতা বিমুখ হয়ে পড়ছেন এ বিষযে আপনার মাতামত কি?
মোসাইদ খান: উত্তর আধুনিক কবিতায় কিছুটা দুর্বোধ্যতা এসেছে সেটা সত্য কবিতায় গভীরতা থাকবে সেটা স্বাভাবিক কিন্তু আমি মনে করি এতোটা দুবোর্ধ্য হওয়া উচিৎ নয় যেখানে পাঠক কবিতার পাঠ উম্মোচনে ব্যর্থ হয়।
বাসিয়া: ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে অনেকেই কবিতা লিখেন, মাঝে মাঝে আপনারও কবিতা ফেইসবুকে পড়ি। সাহিত্য চর্চায় ফেইসবুক কতটা ভূমিকা রাখছে বলে আপনি মনে করেন?
মোসাইদ খান: ফেইছবুকে সাহিত্য চর্চা এটা সাহিত্যের জন্য অবশ্যই একটা সুখবর। কম বেশি সবাই কবিতা লেখার চেষ্টা করছে এবং কবিতা পড়ছে এটাও আনন্দের বিষয়। এখানে অনেকেই ভালো লেখেন এবং অনেক সুনামধন্য কবিদের কবিতা ফেইসবুকের মাধ্যমে খুব তাড়াতাড়ি পাঠকের কাছে পৌছে যাচ্ছে এটাও একটা ভালো দিক।
বাসিয়া: আপনি কোন কোন ব্লগে লিখেন?
মোসাইদ খান: আমি আমাদের বাংলা ব্লগে কবিতাই লিখি, আমাদের বাংলা ব্লগটির প্রতিষ্ঠাতা লন্ডনেরই আমার অগ্রজ কবি ফারুক আহমেদ রনি ভাই এবং এই ব্লগটি লন্ডনেরই কয়েকজন কবি পরিচালনা করেন। আমি এখানে একটা কথা বলি অনেকেই ব্লগার সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করেন, মনে করেন সকল ব্লগার হয় নাস্তিক। ব্লগার মানে ব্লগ লেখক। যিনি ব্লগে লিখেন, অনেক ব্লগার আছেন যারা ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চমৎকার লেখা লিখে থাকেন। আমাদের বাংলা ব্লগে প্রায় হাজারের উপরে ব্লগার আছেন আমি কখনও কাউকে ধর্মের বিরুদ্বেƒ কোন লেখা লিখতে দেখিনি।
বাসিয়া: অপনার কাছে সবচেয়ে অপছন্দনীয় বিষয়টি কি?
মোসাইদ খান: মুখোশদারী মানুষ।

বাসিয়া: এটা আমি আপনার অনেক কবিতায় দেখেছি যেমন একটি কবিতায় আপনি বলেছেন, বিভৎস প্রাণের কোষে কোষে/ বাদুরের মতো ঝুলে থাকা আয়ু/ অজস্র রক্তাভ চোখ গাঁথা ভ্রষ্ট দেয়ালে/ মুখোশ মুখের মিছিল আর মিছিল। (কাব্য গ্রন্থ’ হাড়ের মিছিল)
মোসাইদ খান: আমি যখন দেখি আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য মুখোশদারী মানুষ এবং তাদের দ্বারা আমরা প্রতারিত হচ্ছি প্রতিনিয়ত তখন সেটা আমাকে খুব পীড়া দেয়।
বাসিয়া: আপনাকে কোন বিষয়টি আনন্দ দেয়?
মোসাইদ খান: অনেক কিছুই আনন্দ দেয়, তবে একটা ভালো কবিতা লেখার আনন্দটা অন্য রকম।
বাসিয়া: আপনি নতুন একটা কবিতা লেখার পর এমন কেউ কি আছেন যে যাকে আপনি প্রথমে কবিতাটা পড়তে দেন অথবা নিজে পাঠ করে শুনান?
মোসাইদ খান: নতুন কবিতা লেখার পর সেটা সব সময় সেটা হয় না তবে মাঝে মধ্য আমার স্ত্রীকে পড়ে শুনাই অথবা মেয়েরা যখন জানতে চায় কি লিখছি তখন তাদের ছড়া পড়ে শুনাই, যদিও তারা পুরোপুরি বাংলা বুঝে না তবুও তারা মনযোগ দিয়ে শুনে। এছাড়া বিভিন্ন সাহিত্য আড্ডায় কবিতা পাঠকরি।
বাসিয়া: বর্তমান সময়ে এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে কেউ কেউ বলেন ইন্টারনেটের সহায়তায় বিভিন্ন ইলেক্টনিক মাধ্যমে যেখানে কবিতা, গল্প, উপন্যাস পড়া যায় সেখানে বই প্রকাশ করা অনেকটা পুরানো হয়ে গেছে।
আপনি কি মনে করনে বইয়ের জায়গা অন্য কিছু দখল করতে পারবে?
মোসাইদ খান: খুবই চমৎকার একটা প্রশ্ন করেছেন, গল্প, উপন্যাস কিংবা কবিতার বই পড়ে যতোটা তৃপ্তি পাই ডেস্টটপ কম্পিউটার, লেপ্টপ কিংবা আইপ্যাড, ট্যাবলয়েট কিংবা আনড্রয়েট মোবাইলে এসব পড়ে আমি ততোটা তৃপ্তি পাই না। নতুন বইয়ের গন্বƒটাইতো অন্যরকম যেটা আর অন্যকিছুতে পাওয়া যায় না। আর বইয়ের আলাদা একটা সৌন্দর্য্য আছে যা তাকে অন্য কিছু থেকে বিশিষ্ট ও সতন্ত্র করে দেয়,
ইচ্ছে করলে বই আমি কাউকে উপহার দিতে পারি, আমার সংগ্রহে রাখতে পারি। যেহেতু বই শিার প্রধান মাধ্যম তাই আমি মনে করি বইয়ের জায়গা অন্য কিছু দখল করতে পারবে না।
বাসিয়া: কদম আলী লন্ডন ব্রীজ ছড়াগ্রন্থ পড়ে মনে হলো সেটা গল্প বা উপন্যাস হতে পারতো ছড়ায় নিয়ে আসার ভাবনাটা আপনার কিভাবে এলো?
মোসাইদ খান: যারা ইংল্যান্ডে বসবাস করেন কদম আলী চরিত্রটি তাদের সবার কাছে পরিচিত। অসংখ্য কদম আলী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিলেতে, প্রথমে ভেবেছিলাম এটা নিয়ে একটা নাটক লিখব তারপর ভাবলাম নাটক না লিখে ধারাবাহিক ভাবে ছড়ার আকারে গল্পটি বনর্ণা করব এই ভাবনা থেকেই কদম আলী লন্ডন ব্রীজ ছড়াগ্রন্থটি লেখা।
বাসিয়া: ‘আয়না বিভ্রম’ কাব্যগ্রন্থে অনেক অসাধরণ কবিতা রয়েছে, কবিতায় চমৎকার ভাবে বলেছেন
‘‘পরম মমতায় বুকের রুমালে ভাঁজ করে রাখি/ এক খন্ড মানচিত্র/ একটি নাম বাংলাদেশ’’
মোসাইদ খান: কাছের মানুষ যতণ কাছে থাকে ততণ ততটা আপন মনে হয় না যখন সে চোখের আড়াল হয় তখনই তার শূন্যতাটুকু বুঝা যায়। দেশের বাইরে না এলে হয়তো বুঝতে পারতাম না দেশকে কতটা ভালাবাসি, মা, মাটির টান, শিকড়ের ডাক সব সময়ই অনুভুত হয়।
বাসিয়া: আপনার ‘হাড়ের মিছিলি’ কাব্যগ্রন্থে অনেক ভালো লাগার কবিতা রয়েছে। গ্রন্থের নামও চমৎকার এখানে বিষন্ন ঋতু কবিতার প্রথম অংশ তুলে ধরছি,- ‘‘যে দিকে চোখ ফেলি ধোঁয়ার গোলক/ তুমিহীন গাঢ় অন্বƒকার সুর্যস্নাত দিন/ বোধের শরীরে ফোসকা উঠে/ এলোমেলো ভাবনায়/ কষ্টের স্রোতে ভেসে যাই, ভেসে যাই তুমিহীন’’ এখানে আপনি কাকে ইংগিত করেছেন?
মোসাইদ খান: এই কবিতাটির বিষয় হচ্ছে মা, মা ছাড়াতো সমস্ত পৃথিবীটাই অন্বƒকার। মা এই এক অরের একটি শব্দের মতো এতো ওজনদার এবং মিষ্টি শব্দ পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই, সেইতো সবচেয়ে বেশি সুখি যার মা পাশে আছে, আমার অনেক গুলো কবিতা জুড়ে আছেন মা।
বাসিয়া: বিলেতে অনেক সুনামধন্য কবি রয়েছেন তাদের মধ্য আপনার প্রিয় কবি কে?
মোসাইদ খান: বিলেতে আমার অনেক প্রিয় কবি আছেন, অনেকের কবিতাই আমার কাছে ভালা লাগে প্রিয় কয়েক জন কবির নাম বলতে হলে কবি আতাউর রহমান মিলাদের নামটি প্রথমে চলে আসে।
বাসিয়া: লন্ডনের বেতার বাংলা রেডিওতে আপনার রচনা ও সম্পাদনায় বেশ কয়েকটি নাটক প্রচারিত হয়েছে এ বিষয়ে আপনার কাছ থেকে কিছু জানতে চাই?
মোসাইদ খান: শ্রোতা ফোরামের কিছু সদস্য এবং বেতার বাংলার উপস্থাপক ও উপস্থাপিকাদের নিয়ে আমি কয়েকটি নাটক করেছি। বেতার বাংলায় সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় নাটক আমিই প্রথম করেছি এবং নাটকগুলি শ্রোতাদের কাছে প্রসংশিত হয়েছে।
বাসিয়া: এখন নতুন কোন বেতার নাটকের কাজ করছেন কি না?
মোসাইদ খান: একটা নাটক লেখা এবং রেকডিং, এডিটিং করতে অনেকটা সময়ের প্রয়োজন, একা এই কাজগুলো করার মতো সময় আমার হাতে নেই, তাই এখন আর নাটক করছি না।
বাসিয়া: অনেক দিন থেকে আপনি সংহতি সাহিত্য পরিষদের সাথে যুক্ত আছেন আপনাদের কার্যক্রম সর্ম্পকে একটু বলুন?
মোসাইদ খান: সংহতি সাহিত্য পরিষদ সর্ম্পকে বলতে গেলে অনেকটা সময় লেগে যাবে কারণ এর কার্যক্রম অনেক। কবিতা উৎসব সর্ম্পকে একটু বলি সংহতি সাহিত্য পরিষদ প্রতি বছর কবিতা উৎসবের আয়োজন করে থাকে এবং সেই কবিতা উৎসবে বাংলাদেশ থেকে কবি সাহিত্যিক আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে যোগ দেন এছাড়াও আমেরিকা ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কবি সাহিত্যিকরা এসে যোগ দেন। উক্ত অনুষ্টানে কবিতা নৃত্য, কবিতা আবৃতি, স্বরচিত কবিতা পাঠ, সাহিত্য বিষয়ক আলোচনা থাকে। সংহতি সাহিত্য পদক প্রদান করা হয়। কবিতা উৎসককে কেন্দ্র করে সাহিত্য প্রেমিদের ঢল নামে, সারাদিন ব্যপি অনুষ্টান চলে।
বাসিয়া: আপনার গল্প বা উপন্যাস লেখার ইচ্ছে আছে কি না?
মোসাইদ খান: এই মুহুর্তে গল্প বা উপন্যাস লেখার কথা ভাবছি না তবে আগামীতে লিখতে পারি, সময়ই সেটা বলে দেবে।
বাসিয়া: আগামী একুশে বই মেলায় আপনার কোন বই প্রকাশ হচ্ছে কি না?
মোসাইদ খান: আগামী বই মেলায় ‘জলের পেরেক’ শিরোনামে আমার একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের অপোয় এবং ‘স্বজনপংক্তি’ শিরোনামে একটি যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ হবে।
বাসিয়া: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার এই মূল্যবান সময়টুকু আমাকে দেওয়ার জন্য, আপনার সাহিত্য চর্চা অব্যাহত থাকুক। দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা থাকলো।
মোসাইদ খান: আপনাকের অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞা। আপনার প্রত্রিকার সকল পাঠককেও অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।

একান্ত সাাৎকারে প্রবাসী মুক্তিযুদ্ধা মো. কাচা মিয়া সাাৎকার গ্রহণ: মোহাম্মদ নওয়াব আলী

Kasa Miah-4Kasa Miah-2মো. কাচা মিয়া মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন প্রবাসী সংগঠক। ১৯৭১ সালে রক্তয়ী মুক্তিযুদ্ধে পরাধীন দেশ জাতির স্বাধীনতার সোনালি স্বপ্ন নিয়ে বহির্বিশ্বে যে সব স্বদেশ প্রেমিকরা সংগঠিত হয়ে বিভিন্নভাবে বাঙালি জাতির স্বাধীনতার্জনের বন্ধুর পথকে সুগম করার সার্থক প্রয়াস পেয়েছিলেন, ঐতিহ্যবাহী বিশ্বনাথ উপজেলার কৃতীসন্তান মো. কাচা মিয়া তাদের একজন, এমনকি অগ্রগণ্য বলা যায়। স্বদেশ স্বজাতি যখন পাকহানাদার বাহিনীর অতর্কিত আক্রমনে দিশেহারা, পাকিস্তানী দুর্বৃত্তদের বহুজাতিক নির্মম অত্যাচারে আবহমান বাঙালি জাতি যখন অতিষ্ট ঠিক তখন নির্যাতিত দেশ জাতির পে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করার তীব্র প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন মো. কাচা মিয়া। তিনি স্বাধীনতাকামী কতিপয় হৃদয়বান প্রবাসী বাঙালি বন্ধুদের নিয়ে যুক্তরাজ্যের ওল্ডহ্যাম শহরে ওল্ডহ্যাম-বাংলাদেশি ইয়ুথলীগ নামে একটি ব্যতিক্রমধর্মী সংগঠনের রূপায়ন করেন এবং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকের পদে অধিষ্ঠিত হয়ে সম্পূর্ণ অভিনব দতার সাথে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। উল্লেখিত সংগঠনটি বহির্বিশ্বে মুক্তিযুদ্ধের পে সর্বপ্রথম সংগঠন। ওল্ডহ্যাম-বাংলাদেশি ইয়ুথলীগের ল্য ছিল প্রবাসী বাঙালিদের নিকট থেকে সাপ্তাহিক চাঁদা সংগ্রহ করে ওইসব মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে দান করা। স্বদেশ প্রেমিক কাচা মিয়ার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সুদ নেতৃত্বে স্বাধীনতাকামী ওল্ডহ্যামবাসী বাঙালিরা বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধের তহবিলে বিপুল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা জমা করেন। ওইসব মুদ্রা অস্ত্র কেনার কাজে ব্যবহৃত হয়। সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব মো. কাচা মিয়া বিশ্বনাথ উপজেলার ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামে ১৯৩৮ খ্রি. ১লা জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মো. ছিদ্দেক আলী ও মাতা আফতেরা বিবি। তিনি ১৯৬২ খ্রি. যুক্তরাজ্য গমন করেন। মো. কাচা মিয়া একজন সফল সংগঠক এবং বিশ্বস্ত সমাজসেবক। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির ধারক মো. কাচা মিয়া ওল্ডহ্যাম শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের প্রাণ পুরুষ। এক সময় বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন ওল্ডহ্যাম বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক। প্রগতিশীল রাজনীতিতে আস্থাশীল মো. কাচা মিয়া দীর্ঘদিন ওল্ডহ্যাম আওয়ামীলীগের সম্পাদকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন জনকল্যাণ মূলক কর্মকাণ্ডের সাথে তাঁর গভীর সম্পৃক্ততা রয়েছে যথারীতি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বইপত্রে উজ্জ্বল অরে লিপিবদ্ধ রয়েছে তার সংগ্রামী ভূমিকার কথা। বিশ্বনাথের অহংকার, মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসী সংগঠক মো. কাচা মিয়ার একটি সংপ্তি সাাৎকার মাসিক বাসিয়ায় প্রকাশিত হলো। এটা মননশীল পাঠকের নিকট প্রিয়পাঠ্য হলে আমাদের পরিশ্রম সার্থক মনে করবো।
বাসিয়া: সুদূর প্রবাসে থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধে আপনি বিরাট অবদান রাখার প্রয়াস পেয়েছেন। তো এ েেত্র কাজ করার আপনার মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
কাচা মিয়া: বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। এখানকার মাটিতে আমার নাঁড়ি প্রোথিত। সঙ্গতকারণে এদেশ ও দেশের মাটির সাথে আমি আত্মিকভাবে সম্পর্কিত। স্বদেশ স্বজাতির সমস্যাকে আমি আমার নিজের সমস্যা মনে করি। দেশজাতির অগ্রগতি-উন্নয়নের সংবাদে যে রকম পুলকিতবোধ করি তদ্রপ অবনতি ও অশান্তির সংবাদে ও মর্মাহত হয়ে থাকি। ’৭১ এর ৭ মার্চের ভাষণের পর থেকে আমার ধারণা হয়েছিল যে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতার্জনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। পরবর্তীতে ২৬ শে মার্চ যখন পাকহানাদার বাহিনী অতর্কিত হামলা চালাতে শুরু করলো তখন গোটা বিশ্ব বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকাতে শুরু করলো তাদের পৈচাশিক কর্মকাণ্ডের দিকে। বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শুরু হলো প্রতিরোধ থেকে মুক্তিযুদ্ধ। যেটা সুদীর্ঘ ন’মাস চলমান ছিল। পাকিস্তানী স্বৈরাচারীদের প্রতি আমরা প্রবাসীদের মনোভাব বেশ অসন্তুষ্ট ছিল সেই ’৭০ সালের নির্বাচন থেকে। ওই সময়ের সাধারণ নির্বাচনে শেখ মুজিবের বিজয় হলে মতা হস্তান্তরে কর্তৃপরে গড়িমসি আমাদেরকে সীমাহীন হতাশ করে। তখন থেকে আমাদের আর বুঝতে অবশিষ্ট থাকলো না যে বিনা রক্তপাতে স্বাধীনতা আসবে না। সেই উপলব্ধিকে কেন্দ্র করে মোট ৩৬ জন সহকমীদের নিয়ে আমি ওল্ডহ্যাম বাংলাদেশি ইয়ূথলীগ নামে বাংলাদেশে চলমান মুক্তিযুদ্ধকে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে সংগঠন করি।
বাসিয়া: বহির্বিশ্বে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আপনি। এটা বিরাট এক অহংকারের বিষয়। এ প্রসঙ্গে আপনার অনুভূতি জানতে চাই?
কাচা মিয়া: বহির্বিশ্বে ওল্ডহ্যাম শহরে আমার উদ্যোগে অন্যান্য সহযোদ্ধাদের সার্বিক সহযোগিতায় ওল্ডহ্যাম-বাংলাদেশি ইয়ূথলীগ গঠন করি। আমি ছিলাম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। সে বাস্তবতায় বহির্বিশ্বের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সংগঠক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। পরবর্তীতে বিশেষ করে ইংল্যান্ডের অন্যান্য শহরে মুক্তিযুদ্ধের স্বপে বিভিন্ন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এটা এক বিরাট গৌরবের বিষয়। আমি সংগঠনটির নেতৃত্বে ছিলাম। এক সময় স্বাধীনতা অর্জিত হলে আমি আমার স্বপ্নকে সফল মনে করলাম।
বাসিয়া: কিছুদিন পূর্বে আমরা জানতে পারলাম যে, মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখার জন্য আপনাকে প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধার সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিলম্বের কারণ কী মনে করেন।
কাচা মিয়া: কিছুদিন পূর্বে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আমাকে সম্মান প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সংবাদে আমিও আশাবাদী হই। অতপর কর্তৃপরে পিছুটানের প্রকৃত কারণ খুঁজে পাইনি। হয়তো সময় সুযোগের অপোয় তারা রয়েছেন। এ ব্যাপারে আমার করণীয় কিছু আছে বলে মনে করি না। বাংলাদেশ সরকারের ডাক এলে আমি সে ডাকে তাৎণিক সাড়া দিতে দ্বিধাবোধ করবো না।
বাসিয়া: স্বাধীনতার্জনের পর বাঙালি জাতি কতোটুকু উপকৃত হয়েছে বলে মনে করেন?
কাচা মিয়া: স্বাধীনতা বাঙালি জাতিকে যথার্থ উচ্চতায় প্রতিস্থাপিত করেছে। বাঙালি আর পরাধীন নয়। একটি স্বাধীন দেশ ও জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবদীপ্ত পরিচিতি আজ বিশ্বময়। আমরা এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নই- এমনকি কচুপাতার পানিও নই। স্বাধীনতার্জনের পর বাঙালি বহুপ্রকার বিজয়ের অসংখ্য মাইলফলক অতিক্রম করেছে। আমরা যে সীমাহীন উপকৃত হয়েছি তা বলার অপো রাখে না।
বাসিয়া: জাতির জনক শেখ মুজিব সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই?
কাচা মিয়া: শেখ মুজিব বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। বিশ্বসেরা যে ৫/৭ জন নেতা রয়েছেন শেখ মুজিব তাদের একজন। আমি যখন ওল্ডহ্যাম শহরস্থ মাপল মিলে চাকরি করি তখন মঞ্জুর আহমদ নামধারী আমার এক সহকর্মী কথা প্রসঙ্গে আমাকে বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানে একটা টাইগার আছেন যার নাম শেখ মুজিব।’ কিউবার প্রেসিডেন্ট যাকে হিমালয়ের সাথে তুলনা করেছেন তার মূল্যায়ন ও কী করবো। শেখ মুজিব একজন আন্তর্জাতিক মানের নেতা। সাহস, বুদ্ধি, প্রজ্ঞা, বিচণতা দূরদর্শিতা ইত্যাদি কোনো কিছুর কমতি ছিল না শেখ মুজিবের।
বাসিয়া: একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আপনি কীভাবে দেখেন?
কাচা মিয়া: সূচনালগ্ন থেকেই গণতন্ত্র নানা ঘাত প্রতিঘাতের মুখোমুখি হয়ে আসছে। ’৭৫ এর পনোরো আগস্ট জাতির জনক ট্রাজেডি গণতন্ত্রের ভিত্তিকে প্রকম্পিত করেছে। পঁচাত্তর পরবর্তীতে অনেক স্বৈরাচারীদের করতলগত হয়েছে এদেশের মসনদ। তারা খেয়াল খুশী মত মূল চার নীতির শল্য চিকিৎসা করেছেন। আমার মতে জিয়াউর রহমানের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড গণতন্ত্রের ধারাকে বাধাগ্রস্থ করেছে। ফলে তিগ্রস্থ হয়েছে গণতন্ত্র। ওই সব না হলে এতদিনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিশ্ব দহলিজে আদর্শ হয়ে যেতো। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এখনও আমাদের স্বপে অবস্থান করতে পারছে না। একাত্তরে তাদের ভূমিকা যেরূপ ছিল বর্তমানে সেরূপ রয়েছে বলে মনে হয়। তারা চায় না বাংলাদেশ অগ্রগতির ধারায় আবর্তিত হোক। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকার ৭ম নৌবহরের সংবাদ কার অজানা? রাশিয়া, ভারত আমাদের পাশে না থাকলে এত কম সময়ে স্বাধীনতার্জন সম্ভব হতো না। ইউরোপ-আমেরিকা চায় বাংলাদেশ তাদের দিকনির্দেশনায় চলুক পান্তরে শেখ মুজিবের মেয়ে চান স্বাধীন দেশের মানুষ হিসেবে স্বাধীনভাবে চলতে। পশ্চিমারা শেখ হাসিনার নীতি আদর্শের প্রতি সন্তুষ্ট হতে পারছে না। শেখ হাসিনার গঠনমূলক নেতৃত্ব দেশজাতিকে আলাদা উচ্চতায় উপনীত করেছে। তাঁর ব্যতিক্রমী অগ্রযাত্রা প্রতিরোধকল্পে আন্তজার্তিক অসংখ্য ষড়যন্ত্র ক্রিয়াশীল রয়েছে। কোনো মোড়ল রাষ্ট্রের করুণায় নয়; আপন বুদ্ধিমত্তার বলে শেখ হাসিনা এখন বিশ্বনেত্রী। এ গৌরব গোটা বাঙালি জাতির। উচ্চ মতাসম্পন্ন কোনো অস্ত্র নয়, জনপ্রিয়তাই ছিল শেখ মুজিবের মোম হাতিয়ার। ১৯৭৪ সালের দুর্ভি ছিল অনেকটা মানব সৃষ্ট। আমেরিকা সময় মতো ত্রাণ জাহাজ প্রেরণ করলে দুর্ভিরে মাত্রা এত সীমাহীন হতো না। ওই সময় পাক প্রেসিডেন্ট, ’৭১ এর পরাজিত মুখ, ইয়াহিয়া চীন সফরে যাওয়ার সময় দুর্ভি পীড়িত বাংলাদেশের করুণ চিত্র দেখে রুমাল দিয়ে মুখ ডেকে ছিলেন।
বাসিয়া: অনেক বাঙালি যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব লাভ করেছেন। সেখানে তারা স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তাদের পরবর্তী প্রজন্ম বাংলাদেশ সম্পর্কে কীরূপ ধারণা পোষণ করে থাকে?
কাচা মিয়া: গণতন্ত্রের দৌড়ে বাংলাদেশ বেশ অগ্রগামী। শেখ হাসিনার মতো নেতার নেতৃত্ব অব্যাহত থাকলে অচিরেই গণতান্ত্রিক বিকাশ ঘটবে তা মনে করা যায়। আমি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিজয়ে সম্পূর্ণরূপে আশাবাদী। যে যেখানে জন্মগ্রহণ করে সে স্থানই তার জন্মভূমি। যুক্তরাজ্যে অসংখ্য বাঙালি স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত করছে। খুঁজে নিচ্ছে সুখ সমৃদ্ধজীবন তাদের উত্তরসূরীরা বাংলাদেশকে তাদের পিতার কিংবা দাদার দেশ বলে ভালো জানে। তারা বাংলাদেশকে ভালোবাসে মনে প্রাণে। দেশের উন্নয়নের সংবাদে খুশী হয়, আনন্দবোধ করে থাকে। তাদের অধিকাংশরা সময় সুযোগে বাংলাদেশ সফর করে এমন কি করবেও। বাংলাদেশ সুখী সমৃদ্ধ একটি আত্ম নির্ভরশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভে ধন্য হোক ওই প্রত্যাশা আমারও।
ধন্যবাদ আপনাকে।

বিমানের এওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সিলেট-লন্ডন রুটে সরাসরি ফাইট চালুর ল্েয সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছি

01বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বৃটেন প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবী সিলেট লন্ডন রুুটে সরাসরি ফাইট খুব শীঘ্রই চালু হবে। এতোদিন রিফুয়েলিং সমস্যার সমাধান হলেও রানওয়ের ত্র“টির কারণে এই রুটে এখনই যাত্রী ও কার্গো একই সাথে নিয়ে বোয়িং ৭৭৭ এর মতো বিশাল আকারের বিমান উড্ডয়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। এর শীঘ্রই সমাধান করে প্রবাসীদের এই দাবী পূরণের লক্ষ্যে বিমান কর্তৃপ সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উদ্যোগে গত ৩ নভেম্বর মঙ্গলবার ব্রিটেনে বিমানের প্যাসেঞ্জার সেলস এজেন্ট এবং কার্গো সেলস এজেন্টদের মধ্যে টপ সেলিং এজেন্টদের এওয়ার্ড প্রদান উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী।
বিমানের এওয়ার্ড বিজয়ীদের শুরুতেই অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, লোকসানের বদনাম ঘুচিয়ে বিমান এখন দিন দিন লাভের দিকে যাচ্ছে। অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের ফাইট চালুর ফলে অন্যান্য দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলো তাদের টিকেট মুল্য অনেক কমিয়েছে।
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গতবার বৃটেন সফরে আপনাদের কাছ থেকে বিমানের অনেক সমস্যার কথা শুনেছিলাম। এবার আপনাদের মুখ থেকে বিমানের সার্ভিস ও বিভিন্ন প্রশংসার কথা শুনে সত্যিই আনন্দ লাগছে।
পর্যটন শিল্প নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময়ী একটি দেশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত সিলেটের বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করে দিতে প্রবাসীদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।
পূর্ব লন্ডনের রিজেন্ট লেক ব্যাংকুয়েটিং হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিমানের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল অবসরপ্রাপ্ত জামাল উদ্দিন আহমেদ, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী, লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাই কমিশনার আব্দুল হান্নান প্রমুখ।
বিমানের চেয়ারম্যান এর মার্শাল অবসরপ্রাপ্ত জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, নানা সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিমান আপনাদের সকলের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। অতি সম্প্রতি বিমান বহরে আরো বেশ কয়েকটি নতুন উড়োজাহাজ সম্পৃক্ত করা হবে। অনেক দিন ধরে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের ফাইট চলাচল বন্ধ ছিল, বর্তমানে এসব রুটে আমরা দুটো উড়োজাহাজ দিয়ে পুনরায় চালু করেছি।
লন্ডন সিলেট লন্ডন রুটের বিমানের ফাইট চালুর বিষয়টি নিয়ে তিনি বিশেষ ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান। তিনি বলেন, এই রুটের বোয়িং ৭৭৭ ফাইটের জন্য যে ধরণের রানওয়ে থাকা দরকার তা সিলেটে থাকলেও এই রানওয়ের কিছুটা অংশে ত্র“টি থাকায় সরারসরি সিলেট লন্ডন রুটে ফাইট চালু করা যাচ্ছে না। রানওয়ের এই ত্র“টি নিরসনে কাজ চলছে।
বিমানের জন্য কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ বিমানের টপ সেলস এওয়ার্ড বিজয়ীদের বিমানের প থেকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ মিলিয়ন যা স্মরণকারের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। যার অবদান প্রবাসীদের। আর এই জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টে সরকার পরিকল্পনা করার জন্য সাহস পাচ্ছেন।
বৃটেন প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবী লন্ডন সিলেট লন্ডন রুটের বিমানের ফাইট চালুর বিষয়টি বিমানের আগামী ফিট প্ল্যানিং সভায় উত্থাপন করবেন বলে জানান তিনি।
ঢাকায় গিয়ে এবার বিমানে যাত্রীদের জন্য খাদ্য তালিকা প্রিন্ট করে সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাই কমিশনার আব্দুল হান্নান বলেন, আগামী বছরকে পর্যটন বর্ষ হিসেবে ঘোষণা হওয়ার পর পরই মাননীয় বিমান ও পর্যটন মন্ত্রীর নির্দেশেই প্রবাসী ও বিদেশীদের ট্যুরিজম সেক্টরের সাথে সম্পৃক্ততা করার জন্য বিমানের ইউকে কান্ট্রি ম্যানেজারের সাথে আলোচনা করি। এই আলোচনা থেকে বিমানের যাত্রীদের জন্য নতুন ধরণের সুযোগ সুবিধা সম্বলিত প্যাকেজ এর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
উর্মি মাজাহারের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিমানের ইউকে ও আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত কান্ট্রি ম্যানেজার ম্যানেজার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিমান এই কমিউনিটির সম্পদ। কমিউনিটি সব সময়ই বিমানে সুখে দুঃখে আছে এবং থাকবে বলে আমার বিশ্বাস। বিমানকে কমিউনিটির একেবারে কাছে নিয়ে যেতে ট্রাভেল ও কার্গো ব্যবসায়ীদের অবদান অনস্বীকার্য। আজ আমরা এখানে তাদের এই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এওয়ার্ড প্রদান করতে যাচ্ছি এবং এই অনুষ্ঠানে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকার কারণেই বিমান বাংলাদেশ ইউকে এর জন্য আজকের দিনটি অত্যন্ত স্মরণীয় দিন।
এ বছর বিমানের টপ সেলিং এজেন্ট হিসেবে ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে এওয়ার্ড ও সম্মাননা সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এতে প্যাসেঞ্জার সেলস এজেন্ট হিসেবে শ্রেষ্ঠ ও প্রথম এজেন্ট হিসেবে এওয়ার্ড লাভ করেন হেলাল খানের মালিকানাধীন হিলসাইড ট্রাভেলস। একমাত্র কার্গো সেলস এজেন্ট হিসেব পুরষ্কার লাভ করেন মনির আহমেদের মালিকানাধীন জেএমজি কার্গো। এরপর প্যাসেঞ্জার সেলস এজেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম এওয়ার্ড লাভ করেন যথাক্রমে ইমরান ট্রাভেল, এয়ার এক্সপ্রেস, ট্রাভেল লিংক ও সুরমা ট্রাভেলস।
জেএমজি কার্গোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনির আহমেদ বলেন, বিমান বাংলাদেশ ইউকে এর সাবেক কান্ট্রি ম্যানেজারদের ধারাবাহিকতায় বর্তমান কান্ট্রি ম্যানেজার শফিকুল ইসলামের সর্বাত্মক সহযোগিতায় বিমানের কার্গোর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কার্গো ব্যবসার এই সফলতার জন্য কমিউনিটি ও মিডিয়া অবদান আমি কখনো ভুলবো না। আজকের এই এওয়ার্ড আমার ব্যবসায়িক অগ্রযাত্রায় আরো উৎসাহ ও প্রেরণা যোগাবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার আব্দুল মুকিত চুনু এমবিই, ইউকে বাংলা প্রেস কাবের আহবায়ক ও চ্যানেল আই ইউরোপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজা আহমেদ ফয়সল চৌধুরী শোয়াইব, লন্ডন বাংলা প্রেস কাবের সভাপতি ও জনমত সম্পাদক নবাব উদ্দিন, প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা, কবি শামীম আজাদ, ক্যানারি ওয়ার্ফ গ্রপের জাকির খান, চ্যানেল এস এর প্রধান নির্বাহী তাজ চৌধুরী, এনটিভি ইউরোপের প্রধান নির্বাহী সাবরিনা হোসাইন, বেতার বাংলা প্রধান নির্বাহী নাজিম চৌধুরী।
এ সময় বক্তারা বলেন, বিমান কমিউনিটির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিমান পুরো বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের নাম প্রসারে অন্যতম ভূমিকা রাখছে। বিমানের জন্মলগ্ন থেকেই কমিউনিটি বিমানকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে এবং আগামীতে বিমানের উন্নত সার্ভিসের মাধ্যমে বৃটিশ বাংলাদেশী তৃতীয় প্রজন্মসহ বিদেশীদের আকৃষ্ট করতে পারবে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

কানাডার ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো

01কানাডার ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো। এর মধ্য দিয়ে অবসান ঘটলো দেশটির এক দশকের রক্ষণশীল শাসনের। বুধবার (০৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৯টায় অটোয়ার রিদুয়া হলে লিবারেল পার্টি নেতা ট্রুডো ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন। ট্রুডোর মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া ৩১ জনের মধ্যে অর্ধেক সদস্য, অর্থাৎ ১৫ জন নারী রয়েছেন। মন্ত্রীদের বয়স ৩৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।

জাস্টিন ট্রুডোর বাবা পিয়েরে ট্রুডোও কানাডার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৬৮ সালের ‘ট্রুডোম্যানিয়া’র মধ্য দিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন। সে সময় কানাডার তরুণ ও প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে পিয়েরের যে জনপ্রিয়তার সৃষ্টি হয়েছিল, তা ‘ট্রুডোম্যানিয়া’ হিসেবে বিখ্যাত। ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

সাবেক স্কুল শিক্ষক জাস্টিন ট্রুডো ২০০৮ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৪৩ বছর বয়সী এই নেতা ২০১৫ সালে নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই পরিবর্তনের আভাস দেন। তিনি তরুণদের অংশগ্রহণে ও প্রবীণদের পরামর্শে সরকার পরিচালনার আশ্বাস দেন সে সময়।

শিক্ষামন্ত্রীর সাথে প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাব নেতাদের সৌজন্য সাক্ষাত

02প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য ৩৮তম সেশন ইউনেসকো জেনারেল কনফারেন্সে আসা বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপির সাথে প্যারিস-বাংলা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাত হয়েছে। গতকাল ০২/১১/২০১৫ সোমবার বিকেলে প্যারিসের কমবার্নি এলাকার হোটেল ইবিসের বলরুমে এ সাক্ষাত অনুষ্টিত হয়।

প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাতকালে শিক্ষামন্ত্রী বলেন,দেশের শিক্ষিতের হার বেড়েছে, একই সাথে শিক্ষা ব্যবস্থারও আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন ,শিক্ষা হচ্ছে আমাদের সরকার ও জাতির একটি অগ্রাধিকার খাত। তবে কিছু বিষয় থাকে, যা অগ্রাধিকারের চেয়েও বেশি অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। তাদের মধ্যে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা হচ্ছে অন্যতম । বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন হয়েছে, বিশেষ করে নারীদের কথা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য। সরকারের সকল উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডে প্রবাসীদের ইতিবাচক সহায়তা অত্যন্ত প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন বর্তমান সরকার প্রবাসীদের সকল সমস্যা সমাধানে বদ্ধ পরিকর।
তিনি জানান,শিক্ষাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনতে হলে সবার সহযোগীতা প্রয়োজন। সরকারের পক্ষে একা এ কাজ করা অনেক দূরুহ। শিক্ষামন্ত্রী প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দকে বাংলাদেশের শিক্ষার অগ্রগতির কথা বিশ্ববাসীকে জানানোর আহবান জানান।

সাক্ষাত কালে এসময় প্যারিস-বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তাহির,সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন সোহেল,সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান বাবু,কোষাধ্যক্ষ ফেরদৌস করিম আকনজী,প্রচার সম্পাদক নয়ন মামুনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী ৮ই নভেম্বর দেশে ফিরবেন বলে জানান ।

প্যারিসে ফ্রেঞ্চ-বাংলা স্কুলের উদ্বোধন

01এনায়েত হোসেন সোহেল, (প্যারিস) ফ্রান্স থেকে প্যারিসের লা কর্ণভে ফ্রেঞ্চ-বাংলা স্কুল উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ ফ্রান্সের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় স্কুলের শুভ উদ্বোধন করা হয়। ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম ও লা কর্ণভের মেয়র জিল পুকস আনুষ্ঠানিক ভাবে এ স্কুলের উদ্বোধন করেন।

স্কুল উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ ফ্রান্সের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জামিরুল ইসলাম মিয়া। পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক আমিন খান হাজারী ও স্কুলের শিক্ষিকা হাসনাত জাহানের যৌথ পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন,ফ্রান্সে বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠা করা একটি গৌরব ও সম্মানের বিষয়। বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত করার এবং পরিচিতি ঘটানোর এটা একটা মহতি উদ্যেগ। আমি বিশ্বাস করি এই স্কুল প্রতিষ্ঠার ফলে ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশের শিশু কিশোররা অনেক উপকৃত হবে। তিনি বলেন, বিদেশের মাঠিতে বাংলা স্কুল প্রিতিষ্ঠা করা সহজ সাধ্য বিষয় নয়। অনেক প্রতিকূলতা ভেদকরে মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ আজকের এ পর্যায়ে আসতে হয়েছে। এই দুরহ কাজটিতে সহজ করার জন্য যারা অনেক পরিশ্রম করেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তিনি স্কুলের উন্নয়নে সামগ্রিক বিষয়ে বাংলাদেশ দুতাবাস ফ্রান্সের সকল প্রকার সর্বাত্বক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। সেই সাথে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে এরূপ একটি মহত্কাজ বিশ্বের দরবারে সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লা কর্ণভের মেয়র জিল পুকস, লা কর্ণভ মেরির সোসাইটি প্রধান ভানিয়েল ঝিবের তিনি, ফ্রান্সে বাংলাদেশ দুতাবাসের হেড অব চ্যান্সরী হজরত আলী খান,বঙ্গবন্ধু পরিষদ ফ্রান্সের সভাপতি এবিএম শাজাহান,সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম,ফ্রান্স আওয়ামীলীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক আতিকুল ইসলাম আতিক,ইয়থ ক্লাব ফ্রান্সের সাধারণ সম্পাদক টিএম রেজা,ফ্রান্স আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ হায়দার।

জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রানী তাহের, লিটন হাসান। শিক্ষাথীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাকিব,রিদিতা ও প্রিয়ন্তি।
অনুষ্ঠানে স্কুলের শিক্ষাথীদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ও দুতাবাসের পক্ষ থেকে কয়েক সেট বই প্রদান করেন রাষ্ট্রদূত সহিদুল ইসলাম। এ সময় এবিএম শাহাজাহান ও আতিকুল ইসলাম ২০হাজার টাকার বই প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।

‘গ্রেট ব্রিটিশ বেক অব’ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন সিলেটী মেয়ে নাদিয়া

5833বৃহস্পতিবার ৮ অক্টোবর ২০১৫ ॥ ব্রিটেনের ব্যাকার তৈরি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সিলেটের বিয়ানীবাজারের মেয়ে নাদিয়া হোসেন। তার এ জয়ের পর বাংলাদেশি তিন কন্যার ব্রিটিশ পার্লামেন্ট জয়ের পর ব্রিটেনে নতুন আরেকটি রেকর্ড গড়লেন বাংলাদেশি এই নারী।

নাদিয়ার জন্ম ও বেড়ে ওঠা ব্রিটেনে। লুটনে কেটেছে নাদিয়ার শৈশব ও কৈশোর। তার স্বামী আবদাল একজন কারিগরি ব্যবস্থাপক। বর্তমানে স্বামী সন্তান নিয়ে উত্তর ইংল্যান্ডের লিডসে বসবাস করলেও অধিকাংশ সময়ই থাকেন লুটনে।

যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশি সংবাদিক মুনজের আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, বৃটেনের লুটন শহরের চালনি গার্লস হাইস্কুলে অধ্যয়নকালে নাদিয়া কেক ও নানা ধরনের পিঠা পুলি বানাতেন। তিন সন্তানের জননী নাদিয়া এ জয়ে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তার বাবা সিলেটের বিয়ানীবাজারের মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার জয়ে মোহাম্মদপুরে বয়ে যাচ্ছে বেশ আনন্দের জোয়ার।

বুধবার স্থানীয় সময় রাত ৮টায় ব্রিটিশ একাডেমি ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস প্রতিযোগিতা ‘গ্রেট ব্রিটিশ বেক অব’র ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নাদিয়া হোসেইন। শুধু অংশ গ্রহণের মধ্যে তিনি সীমাবদ্ধ থাকেননি, তিনি ওই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নের গৌরব অর্জন করেছেন।

বিবিসি-১ এর ‘গ্রেট ব্রিটিশ বেক অব’ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া নাদিয়ার ভক্ত শুধু বাঙালি কমিউনিটি বা ব্রিটিশ ভোজন রসিকরা এমনটা ভাবলে ভুল করবেন। খোদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও এখন নাদিয়া’র একজন ভক্ত। ব্রিটেনের জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে নাদিয়ার জন্য শুভকামনা জানিয়ে মন্তব্যও করেছিলেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, ‘একজনই জিতবে, সে নাদিয়া। কারণ তীব্র চাপের মধ্যেও সে শান্ত থাকতে পারে’।

এছাড়া অনুষ্ঠানের কতটা জনপ্রিয় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যকলাপেই তা বোঝা যায়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, দলের কনফারেন্সে বক্তব্য দেয়ার প্রস্তুতির পাশাপাশি ‘গ্রেট ব্রিটিশ বেক অব’ প্রতিযোগিতার ফাইনাল পর্ব উপভোগ করাও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কয়েক মিলিয়ন দর্শকের সঙ্গে নিজ পরিবার সদস্যদের নিয়ে তিনি নিয়মিতই টিভিতে দেখেছেন অনুষ্ঠানটি। মধ্যাহ্নের আগে ছেলেমেয়েদের টেলিভিশন দেখা নিষেধ হলেও ‘গ্রেট ব্রিটিশ বেক অব’ এর কারণে এই নিষেধাজ্ঞাও শিথিলও করেছিলেন ডেভিড ক্যামেরন।

Developed by: