দক্ষিণ সুরমার ইতিহাস ও ঐতিহ্য গ্রন্থ প্রকাশনা অনুষ্ঠান ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে মূল্যায়ন করে প্রতিটি প্রজন্মকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এমপি

31-09শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে মূল্যায়ন করে প্রতিটি প্রজন্মকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি গত ১ নভেম্বর শুক্রবার রাতে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে গীতিকার ও ছড়াকার মোহাম্মদ নওয়াব আলী রচিত দক্ষিণ সুরমার ইতিহাস ও ঐতিহ্য গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
দক্ষিণ সুরমার ইতিহাস ও ঐতিহ্য গ্রন্থ প্রকাশনা কমিটির আহ্বায়ক, দক্ষিণ সুরমা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শামছুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাংবাদিক শাহ সুহেল আহমদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রকশনা উৎসবে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ইতিহাস ঐতিহ্যের গৌরব উজ্জ্বল এলাকার নাম দক্ষিণ সুরমা। শিক্ষা-সংস্কৃতি সহ নানা দিক থেকে এলাকাটি এগিয়ে রয়েছে। গ্রন্থের লেখক বইটি রচনা করে অনেক কাজের সূচনা করেছেন। বইটি দক্ষিণ সুরমার শিক্ষা, ইতিহাস-ঐতিহ্য, জীবন ধারার একটি প্রমাণ্য দলিল। এখান থেকে আগামীতে যারাই বই লিখবেন তারা উপাদান এবং উৎস তথ্য নিতে পারবেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ সুরমা সিলেটের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই এলাকার সার্বিক দিক এই বইয়ে ফুটে উঠেছে। এটি একটি সুন্দর ও চমৎকার প্রকাশনা। তিনি বলেন, দক্ষিণ সুরমার শিক্ষার উন্নয়ন, প্রসার ও বিকাশে এই বইটি অবদান রাখবে। তিনি দক্ষিণ সুরমায় অচিরেই একটি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপন হবে বলে ঘোষণা দেন এবং আগামীতে সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে একটি সরকারী কলেজ হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ৩০ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ৪২ বছর পরও আমরা একটি মর্যাদশীল জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে পারিনি। এখনো দেশের অর্ধেক লোক দরিদ্র ও নিরক্ষর। আমাদের চিন্তা চেতনার পরিবর্তন ছাড়া দেশকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নতুন প্রজন্মকে বিশ্বমানের শিক্ষায় শিক্ষিত ও জ্ঞান অর্জন করতে হবে। শিক্ষার গুণগত পরিবর্তনের জন্য নতুন শিক্ষানীতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে সেই মানের শিক্ষা নতুন প্রজন্মকে দিতে হবে। বিশ্বসমাজে স্থান করে নিতে হবে। তিনি বলেন, ’৬২ এর আইয়ূব বিরোধী আন্দোলন থেকে এখন পর্যন্ত শিক্ষার জন্য আন্দোলনেই রয়েছি। দলীয় শিক্ষানীতি নয়, জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উদারতার পরিচয় দিয়েছেন। জাতীয় শিক্ষানীতিতে সর্বদলীয় মতের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি ও অনিয়ম দূর করতে হলে এটা হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জে আমাদের জিতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশপ্রেম না থাকার কারণে আমাদের দেশটি দুর্নীতির কারণে পিছিয়ে রয়েছে। সকলে মিলে বাংলাদেশের জন্য একযোগে আসুন কাজ করি। তিনি দক্ষিণ সুরমার গৌরব উজ্জল ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণে নওয়াব আলীর প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন, এ ধরনের উদ্যোগকে আমাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া দরকার। ইতিহাস ঐতিহ্য সংরক্ষণে এ ভাবে কাজ করলে আমাদের আগামী প্রজন্ম উপকৃত হবে। তিনি বর্তমান সরকারের আমলে সিলেট-৩ নির্বাচনী এলাকায় ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তি সহ প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে বলে অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য প্রফেসর ড. মোঃ আমিনুল হক ভুইয়া, সিলেট মেট্টোপলিটন ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য্য প্রফেসর ড. কবির চৌধুরী, বইয়ের লেখক গীতিকার-ছড়াকার মোহাম্মদ নওয়াব আলী। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ সুরমা ইতিহাস ও ঐতিহ্য গ্রন্থ প্রকাশনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও দৈনিক সিলেটের ডাক এর সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার এম. আহমদ আলী। গ্রন্থের উপর আলোচনা করেন প্রকাশনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও রাগিব-রাবেয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক কবি শিউল মঞ্জুর। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা অংশ গ্রহণ করেন মদন মোহন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, কবি এ.কে শেরাম, প্রকাশনা কমিটির উপদেষ্টা ডা. মোঃ আব্দুল হাই, সমাজসেবী আলী আহমদ, অর্থ উপ-কমিটির আহ্বায়ক আবু জাহিদ, জালালপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আওলাদ হোসেন, লতিফা শফি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল আলম খান, দক্ষিণ সুরমা প্রেসক্লাব সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মুসিক, প্রকাশনা কমিটির আপ্যায়ন উপ-কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব ইসমাইল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য, দৈনিক সিলেটের ডাক এর ডেপুটী চীফ রিপোর্টার মুহাম্মদ তাজ উদ্দিন, মেট্টোপলিটন ইউনিভার্সিটির গণসংযোগ কর্মকর্তা আব্বাস উদ্দিন, প্রকাশনা কমিটির সদস্য মতিউর রহমান মতি প্রমুখ। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন প্রকাশনা কমিটির সদস্য শিক্ষক শাহ ইমাদ উদ্দিন আল নাসিরী। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সিলেট এর উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর কবির, সিলেট বেতার এর উপ-আঞ্চলিক পরিচালক আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তারিক, সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছিত, রাজনীতিবিদ মুক্তিযোদ্ধ সাইফুল আলম, সাবেক চেয়ারম্যান হাজী রইছ আলী, কবি অধ্যাপক মামুনুর রশীদ, কবি আব্দুল হান্নান, শিশু একাডেমী সিলেট জেলা সংগঠক মাহবুবুজ্জামান চৌধুরী, ব্যাংকার গজনফর আলী, কবি মাহবুবা শামসুদ, কবি পুলিন চন্দ্র রায়, প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম, প্রধান শিক্ষক দিলীপ লাল রায়, ছড়া শিল্পী তাজুল ইসলাম বাঙালী, ছড়াকার অধ্যাপক বদরুল আলম খান, কবি ধ্রুব গৌতম, অধ্যাপক আব্দুল খালিক, কবি নাজমুল আনছারী, কবি বাছিত ইবনে হাবিব, আব্দুর রাজ্জাক, ফজলুল করিম হেলাল, মিছবাহ উদ্দিন, কবি কামরুন নাহার চৌধুরী শেফালী, স্বপন দাস, কবি মিজান মোহাম্মদ, কবি নুরুল ইসলাম, কবি মাছুমা আক্তার চৌধুরী রেহানা, রিয়াজ উদ্দিন, এম. কামাল আহমদ, শাহেদ আহমদ শান্ত, গীতিকার ইমরুল কয়েছ, শেখর আচার্য্য, এডভোকেট আব্দুল মালিক, শাহনারা বেগম ইমা, অধ্যাপক মুর্শেদ আলম, মাছুদা সিদ্দিকা রুহী

Developed by: