মিজান মোহাম্মদ : মৌলভীবাজার উপজেলার শেরপুর এলাকায় চলছে পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে ৩ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত। স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর তীরে প্রায় দুইশ বছর আগে থেকে এ মেলা চলে আসছে। কালের ধারাবাহিকতায় এ মেলা এখনও প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তিতে অনুষ্ঠিত হয়। তবে মাছের মেলাটি হিন্দু ধর্মাবলম্বী থেকে এখন সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মৎস্য ব্যবসায়ীরা চারপাশের ডালায় সাজিয়ে বসে আছেন। মাছ কিনতে আসা হাজারো মানুষের ভিড় নেমেছে এ মেলায়। এখানে শুধু মাছ কিনতে সবাই আসেনি, অনেকে এসেছে মাছ দেখতেও।
স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী আলী হোসেন বাংলামেইলকে জানান, কুশিয়ারা নদী, সুরমা নদী, মনু নদী, হাকালুকি হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর, কাওয়াদিঘি হাওর, হাইল হাওরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা রুই, কাতলা, বোয়াল, গজার, বাঘ, আইড় মাছসহ বিশাল আকৃতির মাছ নিয়ে আসেন এ মেলায়।
মৎস্য ব্যবসায়ী আবুল মিয়া, মফিজ মিয়া, রাধা কুমারসহ পশ্চিমে হবিগঞ্জ জেলার নবিগঞ্জ উপজেলা, উত্তরে কুশিয়ারা ও সিলেট জেলার বালাগঞ্জ-ওসমানীনগর উপজেলা মৎস্য ব্যবসায়ীদের দাবি এটি দেশের সর্ববৃহৎ মাছের মেলা ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাছের মেলা নামে পরিচিত হলেও এখানে মাছ ছাড়াও কয়েক হাজার দোকান বসে কুশিয়ারার তীরজুড়ে। ফার্নিচার, গৃহস্থলী, খেলনা সামগ্রী, নানা জাতের দেশীয় খাবারের দোকানসহ গ্রামীণ ঐতিহ্যের দোকানও স্থান পেয়েছে মেলায়।
এছাড়া শিশুসহ সব শ্রেণির মানুষকে মাতিয়ে তোলার জন্য রয়েছে বায়োস্কোপ ও চড়কি খেলা। আগে এই মাছের মেলায় স্থানীয় বিভিন্ন হাওর-বাওরের, নদ-নদীর মাছ নিয়ে আসতো জেলেরা।
এখন মৎস্য খামারগুলোর মাছতো আসেই, আসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীদের বিরাট বিরাট চালান। এবার এ মেলা ইজার নেয়া হয়েছে ১৭ লাখ টাকায়।