অন্ধকবি
বুকসাগরে জেগে উঠেছে নিঝুম দ্বীপ
এক অন্ধকবি নিয়েছে জলজ জীবন
দেখেনা মাস্তুলের শির
শুধু হুইসেলের শব্দ আসে কানে
জানে না কোন জাহাজ
যায় কোন বন্দরে
তবুও জীবন আর চলনের
বিমূর্ত চিত্র আঁকে কল্পনার রঙে।
অস্থির
পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ আমার আত্মার আত্মীয়
প্রতিটি ঘরে আমার উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার
যেখানে যেতে পারি সেখানে হৃদয়খোলা সম্ভাষণ
পারিনা যেখানে যেতে সেখানে আমার অপারগতা
অসীমের কাছে পেলাম অপরিসীম অধিকার
পেলাম দানকৃত বিবেকের অনন্ত স্বাধিকার
নিয়ন্ত্রনের কঠিন দাসখত আমি দিয়েছি আমাকে
এ নয় আমার সীমাবদ্ধতার চৌকাঠে লটকে থাকা সমাচার
আমি এক মুক্ত আকাশ মেঘ আর রোদের আধার
আমাকে করো না মাপজোক বিচ্ছিন্ন কৃতকর্মের ফিতায়
অখন্ড সময়ের যাত্রী কত পথে ফেলতে হয় পদক্ষেপ
এক পথে খুঁজো না বিমুগ্ধ পথিকের পদচিহ্ন
মন আর দেহ কখন স্থির নয় অস্থির জীবনযাত্রায়
আমিও আপাদমস্তক অস্থির এক যাযাবর
মন উড়ে শঙ্খচিলের উল্লাসী ডানায়
ঘুরে বুনোশালিকের বাসায় বাসায়
ভাসান জলে পানকৌড়ির সাথে খেলে জলকেলী
গঙাফড়িংয়ের লেজ ধরে পাড়ি দেয় তেপান্তর
আমার মনের ঠিকানা খুঁজে কেউ হইও হয়রান।
বেড এন্ড ব্রেকফাস্ট
ঘুমভাঙা সকালে ধুমায়িত চায়ে ভেজাই মাক্ষন দলিত টোষ্ট
নিমিষে ফুরায় আরম্ভের প্রারম্ভিক আমেজ
ফন্দি ফিকির আঁটি দুপুরের লাঞ্চ সাড়তে হবে কোন রেস্তোরায়
মরিয়া মনোরতে তড়িঘড়ি ছাড়ি বেড এন্ড ব্রেকফাস্ট
আহার শেষে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে হাত মুছি স্বপ্নের তোয়ালে
রাতের ডিনারটা আরেকটু যুথসই চাই
রিজিকে সহায় হন অন্নদাতা
পূর্ণাঙ্গ দিনাতিপাতের আনন্দে ভুলে যাই
গত হওয়া একটি দিনই জীবন ছিল
বোধের অলিগলী হাঁটি আয়েসী আবাসিক ভাবনায়
স্বপ্ন সাজাই বর্ধিত কলেবরে
স্বপ্ন গোছাতে রাত ঘনায়
চোখে স্বাভাবিক নিয়মে নামে ক্লান্তির ঘুম
অসমাপ্ত কাজ হাতে নিয়ে আবার ফিরি তড়িঘড়ি কোন এক বেড এন্ড ব্রেকফাস্টে।
শোকবই
৭৫ থেকে হৃদয়ে খুলে রেখেছি
একটি শোকবই
কে করল কে করল না স্বাক্ষর
যায় আসে না কিছু
এ আমার একান্ত ব্যক্তিগত
শোক গ্রন্থনা
হত্যার কোন যুক্তি কিংবা
ব্যাখ্যা আমি মানিনা
আমি মানুষের রক্তপাতে
ধর্ম বর্ণ দল বুঝি না
একা একঘরে হয়ে যাব
বিশাল জনপদে
আমুল বন্দি হয়ে যাব
নিজস্ব চৌহদ্দিতে
তবুও বিবেকের মুক্তিতে বাঁচব
এক অহংকারী জীবন
খবরদার আমাকে কেউ
কোন খুনের পক্ষে সাফাই দিতে এসোনা।