বিপিএলে মাতোয়ারা সিলেট : ৩১ অক্টোবর থেকে মিলবে টিকেট

32015সিলেটে সর্বত্র এখন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে আলোচনা। শহর কিংবা গ্রাম, এমন কোন স্থান নেই যেখানে বিপিএল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। এর আগে সিলেটের কোন ক্রীড়া ইভেন্টকে ঘিরে এতো মাতামাতি হয়নি।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সিলেটের অধিকাংশ মানুষ বিপিএলের চার-ছক্কা দেখতে মাঠে এসে পড়বেন! সিলেটের ক্রীড়ার জন্য এটা ইতিবাচক দিক হলেও, এর বাইরে অন্য শংকাও কাজ করছে। কারণ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণ ক্ষমতা প্রায় ১৮ হাজার। কিন্তু বিপিএল নিয়ে সিলেটবাসীর মাঝে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে, তাতে দর্শকদের উপচেপড়া উপস্থিতির আভাস পাওয়া যাচ্ছে। টিকেটপ্রাপ্তি নিয়ে ব্যাকুল দর্শকরা। এই সুযোগে টিকেট কবজায় নিতে কালোবাজারিরাও তৎপর রয়েছে। এমন অবস্থায় সুষ্ঠুভাবে টিকেট বিতরণ ও পরিস্থিতি সামাল দেওয়াটাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।

বিপিএলের সিলেট পর্বের টিকেট বিক্রি আগামী মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রিকাবীবাজারস্থ সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের বুথে টিকিট পাওয়া যাবে। এছাড়া ওই দিন থেকে ইউসিবিএল (ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড)-এর সুবিদবাজার ও উপশহর শাখায় টিকিট পাওয়া যাবে। অন্য আরেকটি শাখা এখনো চুড়ান্ত না হলেও ধারণা করা হচ্ছে সেটি লামাবাজার শাখা হতে পারে।

এছাড়াও অনলাইনে SHOHOZ.COM, SURJOMUKHI.COM.BD, gadgetbangla.com টিকেট পাওয়া যাবে।

এদিকে, বিপিএলকে টার্গেট করে বাণিজ্যের ধান্ধায় রয়েছে কালোবাজারি চক্র। অতীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে দেখা গেছে- দর্শকরা লাইনে আসার আগেই কালোবাজারিরা নিজেদের শত শত লোক দাঁড় করিয়ে লাইন দখলে নিয়ে নেয়। পরে কালোবাজারিরা এসব টিকেট চড়া দামে বিক্রি করে।

এসব চক্র অনেক সময় লাইনে এসে অপ্রীতিকর ঘটনারও জন্ম দেয়। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসন হয় মারমুখি। আর এই সুযোগটি নেয় কালোবাজারিরা। তাই কালোবাজারি রোধ ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে সুষ্ঠুভাবে টিকেট বন্টন; প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সিলেটের ক্রীড়াপ্রেমী দর্শকরা।

সিলেট শহরতলীর খাদিমনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা মিজানুর রহমান রুমন জানানÑ সিলেটে প্রথমবারের মতো বিপিএল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। এজন্য সিলেটের ক্রীড়া সংগঠকদের ধন্যবাদ জানাই। তবে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিপিএল উপভোগ করতে চাই। অনেক সময় টিকিট নিয়ে নানা নৈরাজ্য হয়। কষ্ট করে হলেও আমরা টিকিট সংগ্রহ করবো। তবে টিকিট যাতে কালোবাজারিদের হাতে না যায় এবং লাইনে দাঁড়িয়ে যাতে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে টিকিট পাই, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমাদের সেই প্রত্যাশা রইলো।

বিসিবি সূত্রে জানা যায়, ৫ ক্যাটাগরিতে টিকেটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডে টিকেটের মূল্য দুই হাজার, ক্লাব হাউস ৫০০, গ্রিন গ্যালারি ৪০০, ওয়েস্টার্ন গ্যালারি ৩০০ ও নর্দান গ্যালারি ২০০ টাকা নির্ধারণ করেছে বিসিবি। একজন, দুই টিকেটের বেশি ক্রয় করতে পারবেন না।

এদিকে দর্শকরা যাতে ভোগান্তির শিকার না হন, তার জন্য সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে দর্শকদেরকে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু বিপিএল একটি বড় আসর তাই এখানে আইনের কোন ব্যত্যয় হতে দিবে না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ ক্ষেত্রে জেনেশুনে সঠিক গেইট না গেলে ভোগান্তিতে পড়তে পারেন দর্শকরা। বিষয়টি মাথায় রেখে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা বিভিন্ন ক্যাটাগরির টিকিট নিয়ে কোন গেইট দিয়ে মাঠে প্রবেশ করবেন, তা ইতোমধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছে।

সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল জানান- ভোগান্তি এড়াতে স্টেডিয়ামের ৪টি গেটের মধ্যে নির্দিষ্ট গেইট দিয়ে দর্শকদের প্রবেশ করতে হবে। অন্যথায় ভুল গেইটে গেলে তাকে আবার ফিরে আসতে হবে। সে অনুযায়ী ১নং গেইট হয়ে খেলোয়াড়, ভিআইপি ও গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডের দর্শকরা, ২নং গেইট (বাগানের মেডিক্যাল) হয়ে ক্লাব হাউস (দ্বিতল গ্যালারী যেটি) ও ওয়েস্টার্ন গ্যালারির (দ্বিতল গ্যালারীর নিচের অংশ) দর্শকরা, ৩নং গেইট (বাদাম বাগিচা) হয়ে নর্দান গ্যালারীর দর্শকরা প্রবেশ করতে পারবেন। এই গেইট দিয়ে সাংবাদিকরাও প্রবেশ করবেন এবং ৪ নং গেট (পীর মহল্লা) হয়ে গ্রিন গ্যালারী ও নর্দান গ্যালারীর একাংশ প্রবেশ করতে পারবেন। তিনি আরো জানান- খেলোয়াড়দের মাঠের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দর্শকরা মাঠে পানির বোতল, দেয়াশলাই, কলম, লিপিস্টিক, চিরুনী আনতে পারবেন না। ছুড়ে মারা যায়, এমন কোন কিছু দর্শকরা বহন করতে পারবেন না।

টিকেট বিক্রি প্রসঙ্গে তিনি বলেন- টিকেট নিয়ে মানুষের চাহিদা আকাশচুম্বী। টিকেট মূলত বিসিবির অধীনে নেই। এটা অন্য একটি কোম্পানী দ্বারা বিক্রি হচ্ছে। তবে সুষ্ঠুভাবে টিকেট বিক্রির জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত আছেন।

সুষ্ঠুভাবে টিকেট বন্টন বিষয়ে এসএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান- যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করবো। আশা করি সিলেটের দর্শকরা শান্তিপূর্ণভাবে নিয়ম মেনে টিকেট সংগ্রহ করবেন। শান্তি-শৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে, তার জন্য আমরা সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে।

Developed by: