করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকার এবারের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ক্লাস বাতিল করেছে।
এর পরিবর্তে কেবল নৈর্বাচনিক বিষয়ের ওপর তাদের অ্যাসাইনমেন্ট করানো হবে। এসএসসিতে অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে ২৪টি আর এইচএসসিতে ৩০টি।
বাংলা-ইংরেজির মতো আবশ্যিক এবং চতুর্থ (অতিরিক্ত) বিষয়ে কোনো অ্যাসাইনমেন্ট করানো হবে না। আর পরিস্থিতি অনুকূলে এলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। আর এইচএসসি পরীক্ষা হবে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।
বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। এ সময় তিনি বলেন, এসএসসি, এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা জেএসসি, জেডিসি, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় আবশ্যিক বিষয়গুলো যেমন-বাংলা, ইংরেজি, গণিত, আইসিটি ও ধর্ম বিষয়ে অধ্যয়ন করেছে। এই বিষয়গুলো ওইসব পরীক্ষায় মূল্যায়ন করা হয়েছে।
এসএসসি/সমমান পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক বিষয়গুলোয় ইতঃপূর্বে বোর্ডগুলো পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করেনি। সে কারণে এই বিষয়গুলোর মূল্যায়ন আবশ্যক।
তাছাড়াও আবশ্যিক বিষয়গুলোর নম্বর জেএসসি, জেডিসি, এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এসএসসি, এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ে নম্বর দেওয়া সম্ভব।
তিনি বলেন, শিক্ষাজীবনের উচ্চতর পর্যায়ে নৈর্বাচনিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেজন্য অ্যাসাইনমেন্ট করানোর পাশাপাশি পরিস্থিতির উন্নতি সাপেক্ষে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে না এলেই সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে সার্বিক ফল তৈরি করা হবে।
গত ফেব্রুয়ারিতে চলতি বছরের এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষাগুলো নেওয়ার কথা ছিল। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় পরীক্ষা নেওয়া যায়নি।
পরে ‘কাস্টমাইজ’ (সংক্ষিপ্ত) সিলেবাসের আলোকে এসএসসিতে ৬০ আর এইচএসসিতে ৮৪ কর্মদিবস পাঠদান শেষে পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল সরকারের।
সেটাও সম্ভব হয়নি। তবে সরকারের প্রস্তুতি ছিল। এর অংশ হিসাবে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে বিজি প্রেসে ট্রাংকবদ্ধ করে রাখা আছে। আর এইচএসসি ও সমমানের প্রশ্নপত্র তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। এর মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে সরকার চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। তখন প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও পরিশোধনের কাজ আটকে যায়।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ছাপানো প্রশ্নেই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। যে কারণে প্রশ্নের বিকল্প সংখ্যা আগের মতোই থাকবে। কিন্তু উত্তর দিতে হবে অর্ধেক প্রশ্নের। অর্থাৎ, আগে যেখানে এমসিকিউ ৩০টি ছিল, এখন সেখানে ১৫টির উত্তর দিতে হবে।
আর সিকিউ (সৃজনশীল প্রশ্ন) উত্তর করতে হবে ৩-৪টি। তেমনি তিন ঘণ্টার পরীক্ষা দেড় ঘণ্টা আর দুই ঘণ্টার পরীক্ষা এক ঘণ্টা নেওয়া হবে। বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগের প্রতিটিতে নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ে নেওয়া হবে পরীক্ষা।
অ্যাসাইনমেন্ট ও পরীক্ষা উভয়টিই কাস্টমাইজড (সংক্ষিপ্ত) সিলেবাসের আলোকে নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্টগুলো ঠিকমতো তৈরি বা অনুশীলন করলে তাদের পরীক্ষাও ভালো হবে। কেননা, অ্যাসাইনমেন্ট অনুসরণেই পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তবে পরীক্ষার সময় এবং পূর্ণমান অর্ধেক করা হবে। একই সঙ্গে প্রশ্নপত্রে উত্তর দেওয়ার বিকল্প প্রশ্নসংখ্যা বেশি থাকবে। অর্ধেক নম্বরে বা এমসিকিউ ও সিকিউ মিলিয়ে ৫০ নম্বরে পরীক্ষা নেওয়া হলেও তা ১০০ নম্বরে রূপান্তর করে পরীক্ষার ফল দেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, যারা অনিয়মিত পরীক্ষার্থী, তাদের ক্ষেত্রেও এই নীতি প্রযোজ্য হবে। যারা মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থী, তারা যদি আবশ্যিক বিষয়ে ফরম পূরণ করে, তাহলে তাদেরও আগের পরীক্ষার ফল অনুযায়ী সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে গ্রেড দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশে বর্তমানে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে আছে।
তাই সংগত কারণেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ মুহূর্তে খোলা যাবে না। এটা দুই কারণে-প্রথমত, এই পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি যেভাবে আছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তো আছেই। দ্বিতীয়ত, প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৩ লাখ শিক্ষক আছেন। তাদের মধ্যে কতজনকে টিকা দেওয়া গেছে।
শিক্ষকদের যদি আমরা ফ্রন্টলাইনার হিসাবে বিবেচনা করি, তাহলে বলা যায়, স্কুল-কলেজ খুলে দিলে কাজ করতে গিয়ে তারা সংক্রমিত হয়ে যেতে পারেন। টিকা না দিয়ে তাকে ক্লাসরুমে যেতে বলার অধিকার আমার নেই। সুতরাং বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যথাযথ প্রস্তুতিসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রয়োজন আছে।
এমন বাস্তবতায় সরকার পরীক্ষা এবং শিখনফল অর্জনের লক্ষ্যে যে ঘোষণা দিয়েছে একে স্বাগত জানাই। ফলে সবচেয়ে বড় যে লাভটা হয়েছে, সেটা হচ্ছে-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বেগ কমে যেতে পারে। লেখাপড়া ও পরীক্ষা নিয়ে কমপক্ষে একটা প্রক্রিয়া ও পন্থা তারা দেখালেন। তবে কিছু বিষয়ে সরকারকে জোরালো নজর দিতে হবে। প্রথমত, যেসব বিষয়ে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে, সেগুলো সবই ঐচ্ছিক বিষয়। এগুলোর মধ্যে আছে বিজ্ঞানের বিষয়। বিজ্ঞানে ব্যাবহারিক আছে।
ব্যাবহারিকের বিষয়ে কী হবে? এর ওপর তো নম্বর আছে। আমি মনে করি, বিজ্ঞানে ব্যাবহারিক ক্লাস ও পরীক্ষা হওয়া প্রয়োজন। ব্যাবহারিক না করানো হলে বিশেষ করে উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষায় গিয়ে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।
দ্বিতীয়ত, অ্যাসাইনমেন্ট যে দেওয়া হবে, সেটা কতটা নৈর্ব্যক্তিক করা হবে। পাবলিক পরীক্ষায় নিজ শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র শিক্ষকরা মূল্যায়ন করেন না।
এখানে তাদের হাতেই মূল্যায়ন রাখা হয়েছে। যদিও স্বচ্ছতার অভাব দেখা দিলে পুনর্মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এমনকি শিক্ষক ও তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। সেটা হচ্ছে, অন্যদের দিয়ে তা দেখানোর ব্যবস্থা।
পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে এই দিকটি সরকার ভেবে দেখতে পারে। তৃতীয়ত, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে। তারা গ্রামে চলে গেছে। আবার অনেকে তার পরিবারকে গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছে। এমন ক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্ট কীভাবে নিশ্চিত করা হবে? হল-হোস্টেল বন্ধ আছে। এমন বাস্তবতায় বিশেষ করে ছাত্রীরা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে। কিছুদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই দৃষ্টান্ত সামনে রেখে নীতিনির্ধারকরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন।
নভেম্বর পর্যন্ত যা হবে : শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এসএসসি ও সমমানের অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম ১৮ জুলাই শুরু হবে। ১২ সপ্তাহে মোট ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে প্রতি সপ্তাহে ২টি করে মোট ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেবে শিক্ষার্থীরা। প্রতিটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে মোট আটটি করে অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে। এর মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি সম্পন্ন হবে।
অন্যদিকে এইচএসসি ও সমমানের অ্যাসাইনমেন্ট ২৬ জুলাই শুরু হবে। ওই স্তরের শিক্ষার্থীদের ১৫ সপ্তাহে মোট ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। তাদেরও গ্রুপভিত্তিক তিনটি করে নৈর্বাচনিক বিষয়ে মোট ছয়টি পত্রে (প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র) এই অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। প্রতি পত্রে পাঁচটি অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। তাদেরও সপ্তাহে দুটি করে অ্যাসাইনমেন্ট জমা থাকবে।
শিক্ষকরা অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন করে নম্বর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে পাঠাবেন। এই অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বোর্ড ফলাফলে নম্বর যুক্ত করার আগে ফের মূল্যায়ন করবে। পাশাপাশি অস্বচ্ছতার দায়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য অ্যাসাইনমেন্ট পেপারগুলো দৈবচয়ন পদ্ধতিতে সংগ্রহ করবে শিক্ষা বোর্ড।
এসএসসির শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ হয়ে গেছে। ঈদুল-আজহার পর অনলাইনের মাধ্যমে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু হবে। শিক্ষার্থীরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ফি পরিশোধ করবে। কেবল যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হবে, সেসব বিষয়ে ফি নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা কলেজে যাবে না। কলেজ ফরম পূরণের কাজ শেষ করে অনলাইনে শিক্ষা বোর্ডে পাঠাবে।
পরীক্ষা হলে যেভাবে মূল্যায়ন : শিক্ষামন্ত্রী জানান, আবশ্যিক বিষয়ে পরীক্ষা হবে না। এসব বিষয়ে গ্রেড দেওয়া হবে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে (পূর্বের পাবলিক পরীক্ষার ফল বিবেচনায়)। শিক্ষার্থীকে আবশ্যিক ও চতুর্থ বিষয়ের কোনো অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে না। তাই ফল তৈরিতে এসব বিষয়ে অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর বিবেচনার কোনো অবকাশ নেই।
আর নৈর্বাচনিক বিষয়ে কেবল পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষা নেওয়ার জন্য ইতঃপূর্বে যে প্রশ্নপত্র ছাপানো হয়েছিল তাতেই পরীক্ষা হবে। তাই প্রশ্নের বিকল্প আগের মতোই থাকবে। অর্থাৎ বিজ্ঞান বিভাগে আগের ৮টি প্রশ্ন থাকত, এর মধ্যে ৫টির উত্তর করতে হতো। এমসিকিউ থাকত ২৫টি, এখন ১২-১৩টি করা হবে। এককথায়-উত্তর দিতে হবে আগের তুলনায় অর্ধেক প্রশ্নের; এমসিকিউ এবং সিকিউ অংশে প্রশ্নের সংখ্যা সমানুপাতিক হারে ৫০ শতাংশ করে কমবে। ব্যাবহারিক পরীক্ষা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে।
পরীক্ষা না হলে যেভাবে ফল : শিক্ষামন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে জানান, যদি পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তাহলে আবশ্যিক, নৈর্বাচনিক এবং চতুর্থ বিষয়ের ফল আগের পাবলিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্ট থেকে নেওয়া হবে ১০-২০ শতাংশ নম্বর আর বাকি ৮০-৯০ শতাংশ আগের ফলের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সাবজেক্ট ম্যাপিং বলতে বোঝানো হয়েছে, সরাসরি যে বিষয় আগের পরীক্ষায় ছিল, সেখান থেকে সরাসরি নম্বর প্রাপ্তির প্রবণতা বিবেচনা করা হবে। আর যেখানে সরাসরি বিষয়টি ছিল না, সেখানে কাছাকাছি বিষয় বিবেচনা করা হবে। যেমন, এসএসসিতে উচ্চতর গণিত আছে কিন্তু জেএসসিতে ছিল না। আবার এসএসসিতে বিজ্ঞানের রসায়ন, পদার্থ ইত্যাদি বিষয় আছে, যা জেএসসিতে ছিল না। এক্ষেত্রে সাধারণ বিজ্ঞানের নম্বর বিবেচনা করা হবে। অন্যদিকে এইচএসসির ফল তৈরির ক্ষেত্রে জেএসসি, এসএসসির নম্বর এবং অ্যাসাইনমেন্টে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করা হবে। তবে এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, অ্যাসাইনমেন্টের নম্বরে স্বচ্ছতার ব্যাপারে প্রশ্ন উঠলে প্রয়োজনে তা বিবেচনা করা হবে না। পাশাপাশি অভিযোগ উঠলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্যই দৈবচয়ন পদ্ধতিতে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করা হবে।
তিনি বলেন, এসব অ্যাসাইনমেন্ট ভালোভাবে করতে পারলে শিক্ষার্থী ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারবে এবং ভালো ফল করতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনিয়মিত ও মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থী : শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনিয়মিত শিক্ষার্থীদেরও উল্লিখিত পন্থায় আসতে হবে। তারা নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মতোই অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিবে। মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থীরা আবশ্যিক বিষয়ে ফরম পূরণ করলে তাদের ক্ষেত্রেও আগের পরীক্ষার গ্রেড বিবেচনা করা হবে। আর নৈর্বাচনিক বিষয়ের পরীক্ষার্থী হলে পরীক্ষা দিতে হবে। আর পরীক্ষা না হলে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে তারাও গ্রেড পাবে।
জেএসসির বিষয় সিদ্ধান্ত পরে : শিক্ষামন্ত্রী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, জেএসসির বিষয়ে আমরা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। এ ব্যাপারে পরে জানানো হবে।
সংক্রমণ কমলে খুলবে প্রতিষ্ঠান : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা কমে এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। দেড় বছর ধরে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নিতে আমাদের পরিকল্পনা আছে। তিনি বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাই না। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে টেলিভিশনে ক্লাস সম্প্রচার হচ্ছে। অনলাইনে ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হচ্ছে।
এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করা হচ্ছে। বিকল্প কার্যক্রমে যারা যুক্ত হতে পারেনি, তাদের নিয়েও ভাবা হচ্ছে। এজন্য বেশকিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, গত দেড় বছরের মধ্যে যাদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল কিন্তু হতে পারেনি, তাদের জন্যও আমাদের পরিকল্পনা আছে। কীভাবে এ ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।