করোনা নামক অতিমারি তাবৎ দুনিয়ায় বাসা বেঁধেছে প্রবল আক্রোশে। বুকের পাজরে, চোখের কোঠরে ভয় এসে দানা বাঁধে তিলে তিলে। এক আজানা ব্যাধির হিংস্র থাবায় অসহায় পৃথিবীর মানুষ। শ্লথ হয়ে পড়ে জীবনের গতিধারা, সভ্যতার রথ। ফিকে হয়ে যায় মানুষের বেঁচে থাকার স্বপ্ন। এরকম শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতেও কবি তাঁর কাব্য সুষমার বাতায়ন খুলে বসেন। ভয়-শংকাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে সৃষ্টির নিমগ্ন সাধনায় ব্রতী হন। এই করোনাকালে কাব্যরচনায় কবি এ কে শেরাম জীবন উদযাপনে মেতে ওঠেন চারদেয়ালের প্রকোষ্ঠে। জয় করেন প্রতিটি অপম্রিয়মাণ মুহূর্ত। তাঁর রচিত কৃষ্ণপক্ষের কবিতা বইটি করোনাকালের সময়কে ফ্রেমবন্দি করেছে। কবি অতিমারির বিষাদময়কালকে কবিতায় মলাটবদ্ধ করে মহাকালের হাতে তুলে দেয়ার প্রয়াস খুঁজেছেন।
কবি এ কে শেরাম কবিতাররাজ্যে অবিশ্রান্ত ও অভিজাত অভিযাত্রী। তাঁর কবিতা দিবালোকের মতো সহজ, চাক্ষুষ সুন্দর। তাঁর কবিতায় ভাবুক ধ্যানের প্রকাশ স্বচ্ছতা, কাল-যুক্ততা, নির্মাণকলার মুন্সিয়ানা তাঁকে বিশিষ্টতা এনে দিয়েছে।
তাঁর কৃষ্ণপক্ষের কবিতা বইয়ে হƒদয়ের গহিন থেকে খুঁড়ে খুঁড়ে এনেছেন বিষাদের নীলরং, ভালোবাসার আবির, আর বেঁচে থাকার শস্যদানা। বইটির ভূমিকায় তিনি লিখেছেন মহামারির করাল গ্রাসে পতিত হয় অসংখ্য জীবন। করালে মৃত্যু তার অশুভ ছায়া মেলে দেয় আমাদের ওপর; দুঃখ-কষ্ট, অসহায়তার আর্ত-হাহাকারে ভারি হয় আকাশ-বাতাস, পরিবেশ ও প্রতিবেশ। সবকিছু দেখে দেখে ক্লান্ত-বিষণœ মনে বেদনার হাহাকারগুলো বাণীবদ্ধ করি কবিতার আঙ্গিকে। কৃষ্ণপক্ষের এইসব চূর্ণক ভাবনা তাঁর কবিতায় কল্পনার আধার হয়ে উঠেছে। গ্রন্থাশ্রিত কবিতাসমূহ থেকে কয়েকটি কবিতা পড়ছি-
কোয়ারেন্টাইন জীবন
আমার এখন দিন শুরু হয় রৌদ্রদগ্ধ দুপুরে।/ সকাল দেখি না আমি,/ সকালের সোনালি রোদের স্নিগ্ধ রেণু/ শরীরে মাখিনি অনেকদিন,/ ভোরের বাতাসের সুশীতল ধারাজলে/ মুখ ধোয়া হয় না আমার।/ ঘুম থেকে উঠেই বসে যাই ক্লান্তির প্রাতরাশ নিয়ে,/ সামনে তখন টিভির নিউজ চ্যানেলে/ পপকর্ণের মতো ফটফট ফুটতে থাকে অসংখ্য শব্দ,/ প্রচারিত হতে থাকে চলমান সংকটের সচিত্র প্রতিবেদন।/ মনঃসংযোগ নেই কোনো কিছুতেই,/ মোবাইল নিয়ে নাড়াচাড়া করি/ বেখেয়ালে ঘুরাঘুরি করি ফেবুর পাতায়;/ কতজন কতকিছু লিখে/ প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় নানা বিষয় নিয়ে;/ নিজেও অনেক হাবিজাবি লিখি।/ এইসব করে করে ক্লান্ত হই,/ এক বিপন্নতার বোধ কেবল কাজ করে যায় গোপনে গোপনে।/ রাতে, বিবমিষা জাগানো মন নিয়ে,/ বিরক্তির বিছানায় শুয়ে শুয়ে দুঃস্বপ্ন দেখি।/ ছটফট করি, নানা উল্টোপাল্টা ভাবি,/ ঠিকমতো ঘুমও আসে না,/ কেবল প্রতীক্ষায় থাকি/ কখন পোহাবে এই দুঃস্বপ্নের রাত।
কবি দুঃস্বপ্ন রাত পোহানোর অপেক্ষায় ছটফট করছেন। গোটা দুনিয়ায় মানুষের মনে আতঙ্কের যে ছটফটানি তা যেন কবির মনেও সঞ্চারিত হয়েছে। কবি ফররুখ আহমদের সেই পাঞ্জেরী কবিতার আকুতি ‘রাত পোহাবার কত দেরী পাঞ্জেরী।’ কবি তাই বিবমিষা জাগানো মন নিয়ে দুঃস্বপ্ন রাত কাটাচ্ছেন।
মানুষের মৃত্যু নেই
আমরা দেখেছি,/ মারিতে-মড়কে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে,/ অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয় বারংবার;/ তবু মরে না মানুষ।/ মৃত্যুকে অতিক্রম করে বেঁচে থাকে সে।/ পুরাণের ফিনিক্স পাখির মতো/ বারবার সে জেগে ওঠে ভস্মস্তূপ থেকে।/ আসলে,/ মানুষের মৃত্যু নেই;/ অজস্র অসংখ্য মৃত্যুতে বরং সে অমরতা পায়।
মানুষের মৃত্যু নেই এ যেন কবির দার্শনিক উক্তি। আদতে মানুষের মৃত্যু নেই। বরং মৃত্যু মানুষকে অমরতা দান করে। গীতার সেই বাণী জাতস্য হি ধ্রুবমৃত্যুর্ধ্রুবং জন্ম মৃতস্য চ। অর্থাৎ, যার জন্ম হয়েছে তার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী এবং যার মৃত্যু হয়েছে তার জন্মও অবশ্যম্ভাবী। এই কবিতায় একটি আধ্যাত্মিক দর্শনের রসাস্বাদন করতে পারি। ব্রিটিশ কবি জর্জ হার্বার্টের কবিতায় আমরা আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে কাব্যের সংশ্লেষ পড়ে মুগ্ধ হই, প্রাণিত হই। আমাদের মন ভিজে যায়। কবি এ কে শেরাম তেমন করেই যেন তাঁর এই কবিতায় পাঠকের মন ছুঁয়েছেন।
আছি প্রতীক্ষায়
এখন আমার স্পর্শের যোগ্য কেউ নেই এ পৃথিবীতে,/ এমনকি তুমিও না।/ এখন সবাই অস্পৃশ্য, যেন অশুচি তারা;/ সবাই এখন দূরে দূরে থাকে/ দূর আকাশের তারার মতো।/ আমাদের মধ্যে সম্পর্কের এই নতুন মেরুকরণ/ সৃষ্টি করেছে এক অচেনা-অদেখা শত্রু।/ তাই কেবল প্রতীক্ষায় আছি/ সকলের সাথে/ তুমিও আবার কবে শুচি-শুভ্র সৌন্দর্যে জেগে উঠবে,/ কবে আবার তুমি স্পর্শযোগ্য হবে,/ হবে আগের মতো আবার একান্ত আপনার।
ধ্যানমগ্ন কোনো এক আর্য ঋষির মতো প্রতীক্ষায় আছেন কবি শুচি-শুভ্র দিনের জন্য। সুদিন ফিরে আসবে, পৃথিবীর ফুলেরা হেসে উঠবে। কবি স্পর্শ পাবেন প্রিয়মানুষের। কবি শুদ্ধতার অভিসারী। কবির হƒত হƒদয়ের আর্তনাদ এবং প্রণয়কাতর পাঠক হƒদয়ের হাহাকার; একাকার হয়ে আছে এখানে।
ভালো নেই
ভালো নেই।/ ভালো নেই মন/ ভালো নেই এ জীবন,/ ভালো নেই চেতনার সকাল/ ভালো নেই এই করোনারকাল।/ ভালো নেই এ-পৃথিবী আজ ভালো নেই/ ভালো নেই বিষাদে-বেদনায় তার মন ভালো নেই।/ ভালো নেই বিশ্বের তাবৎ মানুষ ভালো নেই।/ ভালো নেই বাতাস, এই সুনীল আকাশ,/ ভালো নেই গান, ফুলের বাগান,/ ভালো নেই কবিতা ও কবি/ ভালো নেই শিল্পীর ছবি,/ ভালো নেই কিছু,/ ভালো নেই।
কবির এই ভালো নেই কবিতাটি পড়লে, ব্রিটিশ কবি জর্জ হার্বাটের কবিতার শরীর কাঠামোর কথা মনে করিয়ে দেয়। ব্রিটেনের ওয়ালসে ১৫৯৩ সালে জন্ম নেয়া এই কবিকে ইংলিশ রিলিজিয়াস কবি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তাঁর কবিতায় প্রভু যিশুর পুনরুত্থানের মহিমাবার্তা বিকশিত হয়েছে। কবি এ কে শেরাম তাঁর ভালো নেই কবিতায়, মানুষের ভালো না-থাকার নানান অনুষঙ্গ তুলে এনে সেই কষ্টে জর্জরিত মানুষের বার্তা ¯্রষ্টার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন। কবিতার দৈহিক গঠনে হার্বাটের কবিতার সাযুজ্য কিছুটা খুঁজে পাই।
কবি এ কে শেরাম বইতে বিষাদের মাঝে জীবনের রং ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন। ভালোবাসার প্রণয়ের কৃষ্ণচূড়া রং মেখেছেন কিছু কিছু কবিতায়। চুম্বনের অধিকার, পরকীয়া, তবুও ভালোবাসা, বদলে যেও না তুমি ইত্যাদি কবিতা হƒদয় জুড়ে কেবলই মুগ্ধতা ছড়ায়। এই গ্রন্থে তাঁর কবিস্বরূপ নিন্দিষ্টতা ও স্বকীয়তা অর্জন করেছে বলে মনে করি। তাঁর কবিতা পরিশীলিত পাঠককুলের হƒদয় স্পর্শ করতে পারবে নিশ্চয়ই। কবির প্রজ্ঞাময় মঙ্গলপ্রত্যয়ী কবিতার পঙক্তি আমাদেরকে বেঁচে থাকতে উদ্বুদ্ধ করে।
কৃষ্ণপক্ষের কবিতা বইতে সর্বমোট চৌষট্টিটি কবিতা ঠাঁই পেয়েছে। আশি পৃষ্ঠার বইটি বাসিয়া প্রকাশনী বের করেছে। মূল্য রাখা হয়েছে একশো পঞ্চাশ টাকা। প্রচ্ছদ এঁকেছেন দেলোয়ার রিপন। কবি বইটি উৎসর্গকৃত করেছেন কবি আবিদ ফায়সালকে। কৃষ্ণপক্ষের কবিতা বইটি প্রিয়তা অর্জনে সক্ষম হবে নিশ্চয়ই। জয় হোক কবি এবং কবিতার । পৃথিবী নিরাময় হোক।
কবিতা-গান যুগ যুগ ধরে মানুষের প্রেরণা, শক্তি-সাহস যুগিয়ে আসছে। নৈশব্দিক একাকিত্বে গান কবিতা নির্মল প্রশান্তির অমূল্য উপকরণ হয়ে একাকিত্বের অবসান ঘটায়।
গ্রামপ্রধান বাংলাদেশের বাসিন্দা হিসেবে আমাদের গ্রাম আছে, গ্রামের নাম আছে, কিন্তু অধিকাংশ গ্রামের নামকরণের নেপথ্য কারণ-কাহিনি নেই এমনকি থাকলেও আমাদের অজানা। এ ব্যাপারে সম্যক ধারণা থাকা দরকার, কথাটি সত্য হলেও আমরা কজনে কতটুকু জানার আগ্রহ পোষণ করি? আমাদের আগ্রহের অভাব, সচেতনতার অভাব। মানব সভ্যতার সত্যিকার বিকাশের ক্ষেত্রে ওইসব নেতিবাচক প্রবণতা মূলত অন্তরায় স্বরূপ। আমাদের ইতিহাস আছে বাক্যটি যেরূপ সত্য, আমরা ইতিহাস সচেতন নই, বাক্যটিও সেরূপ সত্য মনে করি।
বাংলা সাহিত্যের আধুনিক কবিতার অন্যতম প্রধান জনক ‘গণমানুষের কবি’ দিলওয়ার-এর বিগত শতাব্দির ষাটের দশকে লেখা বিখ্যাত কবিতা ‘কীনব্রিজে সূর্যোদয়’।
ভ্রমণ মানেই ভালোবাসা। বেড়াতে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ভ্রমণ মানুষের এক সহজাত নেশা। এই নেশার টানে মানুষ ঘর ছেড়ে ঘুরে বেড়ায় পাহাড় থেকে বনে, বনভূমি থেকে সমুদ্র তীরে, উত্তরমেরু থেকে দক্ষিণমেরু, নায়েগ্রা জলপ্রপাত থেকে এভারেস্ট শৃঙ্গ পর্যন্ত।
দেশ যদি বৃক্ষ হয়, তুমি তার প্রণেতা শিকড়,
সুরাইয়া মঈন ফ্লোরা নিজের আগ্রহ এবং ভালো লাগা থেকেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসম্পর্কিত বিভিন্ন লেখা পড়েন এবং নিজেও লিখতে চান। বিভিন্ন লেখকের লেখায় মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা, নিষ্ঠুরতা ও মানবিক বিপর্যয়ের কাহিনি তার মনকে প্রবলভাবে আন্দোলিত করে, তাই নিজের লেখায়ও মুক্তিযুদ্ধ, স্বদেশ হয়ে ওঠে কেন্দ্রীয় বিষয়। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী ফ্লোরার লেখা ‘নাইনটিসিক্স আওয়ার্স ইন টর্চার সেল’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা এক সংক্ষিপ্ত আখ্যান- যা পাঠক হিশেবে আমাদের মনে দাগ কাটে, ভাবনাকে উদ্বেলিত করে। নিরীহ মানুষের ওপর অসভ্য-বর্বর হানাদারদের নিষ্ঠুরতার এক সাবলীল বর্ণনায় প্রদীপ্ত এই আখ্যান-‘নাইনটিসিক্স আওয়ার্স ইন টর্চার সেল’। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এটি তার দ্বিতীয় গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ। সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তার প্রথম গ্রন্থ ‘ঝাপসা দু’চোখ’ প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে। প্রচণ্ড দেশপ্রেমের আবহে লেখা গ্রন্থ দুটি ইতোমধ্যে পাঠককুলে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে।
ফেরদৌস শেরদিল এক সময়ের রাজপথ কাঁপানো নির্ভীক ছাত্রনেতা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত পরিচ্ছন্ন একজন রাজনীতিবিদ। বিদেশ বিভুঁইয়ে এসেও অবহেলিত নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষ, মা, মাটি, এসব এক মুহূর্তের জন্য তিনি ভুলে থাকতে পারেন নি। সদালাপী বন্ধুবৎসল এই ব্যক্তিটি আপাদমস্তক একজন কবি। তাঁর কবি সত্তা সমাজের কোথাও কোনো অনিয়ম অনাচার দেখলেই গর্জে ওঠে মানবতা, অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে তাঁর ক্ষুরধার লিখনী। রোমান্টিক মনের মানুষ তিনি। তাঁর লেখা কবিতায় প্রেম বিশেষভাবে দৃশ্যমান। ইতোমধ্যে তিনি গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্ল−াটফর্মে নিয়মিত লিখে আসছেন দুটি যৌথ কাব্যগ্রন্থেও তাঁর সরব অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো।
‘তারুণ্যে’ আমার একটি আধুনিক কাব্যগ্রন্থ। মোট ৫৬টি কবিতা নিয়ে সাজানো হয়েছে এ গ্রন্থ। ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের লেখা কবিতাগুলোই এ বইতে স্থান লাভ করেছে।
তরুণ প্রজন্মের কাছে আহমদ আলী হিরণ সুপরিচিত ও সমাদৃত একজন কবি। শৈশব হতেই কবিতার জগতে তাঁর বসবাস। তিনি আপাদমস্তক একজন কবি। তাকে শুধু কবি বললে আমার কাছে তার প্রকৃত মূল্যায়ণ হয় না। তিনি আদর্শিক, রোমান্টিক ও নান্দনিক কবি। তাঁর কবিতায় পত্রপুঞ্জে বর্ণিত থাকে সমাজ সনদের নন্দিত ঘটনা, থরে থরে সাজানো থাকে নন্দিত বারতা। অপরদিকে থাকে মা মাটি মানুষ আর প্রেম প্রণয়-প্রেয়সীর কথা। তাঁর মায়াবী অন্ধকার কবিতা গ্রন্থে গ্রন্থিত হয়েছে বিরহ-বেদনা আর ভালোবাসার অনবদ্য কথারমালা।
