বিভাগ: স ফ ল ব্য ক্তি ত্ব

সিলেটের গর্ব একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী

a12মোহাম্মদ নওয়াব আলী : প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভুমি আধ্যাত্মিক রাজধানী সিলেটে অগণিত কীর্তিমানদের জন্ম হয়েছে যারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে সিলেটকে আলোকিত ও গৌরবান্বিত করেছেন। এ ধরণেরই একজন আলোকিত ব্যক্তিত্ব একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের আকিলপুর গ্রামের অধিবাসী অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী।
১৯৫২ সালে এক সম্ভ্রান্ত জমিদার বংশে জন্মগ্রহণ করেন ড. অরূপরতন চৌধুরী। মাতা বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মঞ্জুশ্রী চৌধুরী, পিতা সিলেটের কৃতি সন্তান শৈলেন্দ্র কুমার চৌধুরী, বড় ভাই অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী, বোন অধ্যাপক ড. মধুশ্রী ভদ্র। স্ত্রী একজন সুগৃহিনী গৌরী চৌধুরী, দুই পুত্র অনিবার্ণ চৌধুরী ও সপ্তক চৌধুরী।
ড. চৌধুরী স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একজন কণ্ঠশিল্পী/ শব্দ সৈনিক।
১৯৭৬ সালে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ থেকে বি.ডি.এস ১৯৮২-৮৩ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দন্ত চিকিৎসায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফেলোশিপ এবং ১৯৯২-৯৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ষ্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়ার্ক এট স্ট্রনিব্রোক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দন্ত চিকিৎসায় ফেলোশিপ লাভ করেন। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জন করেন শিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি পিএইচ.ডি।
বিগত ৪০ বছর যাবত পেশাগত জীবনে ডেন্টাল সার্জারীতে চিকিৎসা সেবা ও গবেষণা কাজসহ বিভিন্ন তামাক ধূমপান ও মাদক বিরোধী আন্দোলনের সাথে সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে তিনি ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ অব সার্জনস থেকে FESRCS (ফেলোশিপ ইন ডেন্টাল সার্জারী, রয়েল কলেজ অব সার্জনস) ডিগ্রি লাভ করেন FESRCS- England- 2012G
দীর্ঘ ৪১ বৎসর এদেশের দন্ত চিকিৎসার ক্ষেত্রে বহু প্রকাশনা ও গবেষণা করেছেন এবং এদেশের জনগণের কাছে দন্ত চিকিৎসার বিভিন্ন তথ্য ও রোগ প্রতিরোধের উপর বেতার টেলিভিশনে অনুষ্ঠান নির্মাণ ও উপস্থাপনার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।
১৯৮৯ সালে মাদক ও ধূমপান বিরোধী সংগঠন মানস প্রতিষ্ঠা করেন এবং এ সংগঠনের মাধ্যমে দেশের যুব সম্প্রদায়কে ধূমপান ও মাদকদ্রব্যের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
সংগীত জগতে দীর্ঘদিন যাবৎ জড়িত এবং একজন প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী। ইতিমধ্যে ৪টি অডিও সিডি ও একটি ভিসিডি বের করেছেন।
বেতার ও টেলিভিশনে একজন সফল স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষত: তামাক, ধূমপান ও মাদকাসক্তি অনুষ্ঠান উপস্থাপক।
তিনি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষত: তামাক, ধূমপান ও মাদকাসক্তির উপর প্রবন্ধ লিখছেন।
২০০১ সালে আমেরিকা বায়োগ্রোফিক্যাল ইনস্টিটিউট এর সদস্য পদ লাভ করেন।
ইতিমধ্যে ৩৮টি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে, বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ উপস্থাপন করেছেন।
ড. চৌধুরী ১৭টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন যেমন, মুখ ও দাঁতের ৫০টি সমস্যা ও সমাধান, মুখের ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্য, মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্য (অ ঃড় ত), সুন্দর দাঁতে সুন্দর হাসি, মাদকাসক্তি ও এইডস, মাদক ও মাদকাসক্তি, দাঁত ও মুখের রোগের সাথে দেহের রোগের সম্পর্ক, মুখ ও দাঁতের রোগ: প্রতিকার-প্রতিরোধ, মুখের স্বাস্থ্য ও তামাক পাতা, তামাক পাতা ও ধূমপান, মুখ ও দাঁতের স্বাস্থ্য, আর ধূমপান নয়, মুখ ও দাঁতের ৬০টি সমস্যা ও সমাধান, মরণনেশা ইয়াবা ও ফেনসিডিল, ধূমপান থেকে মাদকাসক্তি, তামাক, মাদক ও নারী বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট।
ধূমপান ও তামাকের ক্ষয়ক্ষতি এবং মাদক ও মাদকাসক্তির উপর তার রচিত এইসব গ্রন্থ বর্তমানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাইব্রেরিগুলোতে স্থান পেয়েছে।
স্বল্পদৈর্ঘ্য ছায়াছবি নির্মাণ:
১। ডায়াবেটিস রোগ সংক্রান্ত স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র ‘শৃংখলাই জীবন’ এবং ‘শিশুদের ডায়াবেটিস’ (টিভিতে নিয়মিত প্রচারিত স্বাস্থ্য মূলক অনুষ্ঠান)।
২। তামাক, ধূমপান ও মাদকদ্রব্যের কুফল সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নির্মিত ‘নেশা সর্বনাশা’ বাংলাদেশথ টেলিভিশনে নিয়মিত প্রচারিত হচ্ছে।
মাদকাসক্তির উপর নিয়মিত তার তথ্যচিত্র বাচসাস পুরস্কার লাভ করে ২০০৩ সালে। এছাড়াও বর্তমানে মাদকের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তিনি ‘স্বর্গ থেকে নরক’ নামে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন ২০১৫ সালে।
বর্তমানে অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী বারডেম হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ও ডিপার্টমেন্ট অব ডেন্টাল সার্জারী বিভাগের সম্মানিত সিনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। পেশায় চিকিৎসক হিসাবে নিয়মিত রোগীদের সেবা প্রদানের পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ড যেমন- ধূমপান মাদক বিরোধী আন্দোলনে নিজেকে যেমন সক্রিয় রেখেছেন তেমনি বেতার টেলিভিশনে নিয়মিত ভাবে স্বাস্থ্য বিষয়ক উপস্থাপনা, রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশনা ছাড়াও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখালেখির কাজেও নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন।
মাদকাসক্তির উপর নির্মিত তথ্যচিত্র ‘নেশা সর্বনাশা’ বাচসাস পুরস্কার লাভ ২০০৩ সালে ঢাকা কালচারাল রিপোর্টাস এসোসিয়েশন কর্তৃক স্টার অ্যাওয়ার্ড ২০০৬, বাচসাস কর্তৃক লাইফটাইম এ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড- ২০০৪।
বাচসাস পুরস্কার লাইফ টাইম ্এ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০০৩, স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠান উপস্থাপনের জন্য টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসিাসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্র্যাব) অ্যাওয়ার্ড ২০০৬।
আন্তর্জাতিক পুরস্কার :
বিগত বৎসর যাবৎ ধূমপান ও মাদক বিরোধী কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৮৯ আন্তর্জাতিক পুরস্কার- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডঐঙ) মেডেল দঞড়নধপপড় ড়ৎ ঐবধষঃয
ড. অরূপরতন চৌধুরী পরিচালিত প্রথম মাদক বিরোধী চলচ্চিত্র ‘স্বর্গ থেকে নরক’ ছায়াছবিটি সম্প্রতি ভারতের কোলকাতায় অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত চলচ্চিত্র সংস্থা টেলিসিন সোসাইটি কর্তৃক বিশেষ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার লাভ করেছে।
গত ৪ জুন ২০১৬ কোলকাতা রবীন্দ্র সরবর নজরুল মঞ্চে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরুস্কারটি ড. অরূপরতন চৌধুরীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
অধ্যাপক চৌধুরী বর্তমানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের একজন সদস্য।
২০১৫ সালে তিনি সমাজসেবায় রাষ্ট্রীয় সম্মান জাতীয় পুরস্কার একুশে পদক লাভ করেন।

জিসিএসইতে ইশতিয়াক জামিল এর সাফল্য

unnamed

ইশতিয়াক জামিল ২০১৭ জিসিএসই পরীক্ষায় রাগবী শহরের স্বনামখ্যাত Lawrence sheriff school. থেকে
১২টি বিষয়ের মধ্যে 10A*s 2As লাভ করেছে ।

উক্ত হাইস্কুলের এবারের জিসিএসই পরীক্ষার্থীদের মধ্যে টপ-১০ ফলাফল প্রাপ্তদের একজন হয়েছে সে।

তার পিতা বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার ইউনিয়নের লালার গাও গ্রামের আব্দুল গফুর কিন্ডারগার্টেন এন্ড জুনিয়র হাইস্কুল এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচাক জনাব আসিক মিয়া।

তিনি ছেলের ভবিষ্যত পথ চলায় সবার দোয়া কামনা করেন।

একজন অসাধারণ প্রযুক্তি উদ্ভাবক আব্দুল হাই আজাদ বাবলা

002বাসিয়া রিপোর্ট : বর্তমান যুগ তথ্য ও প্রযুক্তির। উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে অনেক দূর। বাংলাদেশে অনেক প্রতিভাবান ব্যক্তি আছেন, যারা নিজস্ব প্রচেষ্টায় অনেক কিছু উদ্ভাবন করে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। তেমনি একজন সিলেটের আবদুল হই আজাদ বাবলা। মূল বাড়ি বালাগঞ্জ উপজেলার এওলাতৈল গ্রামে। তবে বর্তমানে বসবাস করছেন সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার ১৭ বি স্বর্নালি ভার্থখলায় এবং গবেষণা কর্ম লাউয়াই থেকে চালিয়ে যাচ্ছেন। লেখাপড়া খুব বেশি নয়। এসএসসি পাশের পর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ভর্তি হলেও চূড়ান্ত পরীক্ষা দেয়া হয়নি। জীবিকার সন্ধানে গিয়েছিলেন কুয়েতে। কিন্তু বেশিদিন থাকতে পারেননি। মাতৃভূমির টানে চলে আসেন দেশে। ৮০-৮১ সালে বিএডিসির সেচ শাখায় অকেজোঁ ও পরিত্যক্ত অনেক সেচযন্ত্র পাওয়া যেতো। বাবলা এসব সেচ যন্ত্রাংশ কিনে নিয়ে শ্রম ও মেধা খাঁটিয়ে সেগুলো সচল করে তুলতেন। মেরামত ও পুনঃসংযোজন কাজের মাধ্যমেই বাবলা জড়িয়ে পড়লেন বৃহত্তর সিলেটে সেচ কার্যক্রমের সঙ্গে। কৃষি মন্ত্রনালয়ের জাতীয় ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্প ও উত্তর পূর্ব-সেচ প্রকল্পে প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের সাথে কাজ করেছেন।
আবদুল হাই আজাদ বাবলা দেশ ও জাতির কল্যাণে এ পর্যন্ত অনেক কিছু আবিষ্কার করেছেন। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ৩৫-৪০ ফুট নিচে নেমে যাওয়ার যে সমস্ত নলকূপ অকেজোঁ হয়ে পড়েছে, সেগুলো স্বল্প খরচে তিনি কার্যকর ও সচল করতে পারেন। আবদুল হাই আজাদ বাবলার উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মতে, ৪ ইঞ্চি পাইপের মধ্যে অতিরিক্ত ২ ইঞ্চি পাইপ ঢুকিয়ে নিচে চেক বাল্ব এবং পাইপ সংযোজন আর উপরে ‘টি’ বসিয়ে দুই পাইপের মধ্যবর্তী স্থানে আধা লিটার পানি দিয়ে সফলভাবে প্রতি সেকেন্ড ৮ মিটার পানি উত্তোলন করার যায়। এ প্রযুক্তি উদ্ভাবক করতে বাবলার পরিশ্রম, মেধা ও সময় ব্যয় হলেও আবিষ্কৃত পদ্ধতিটি বেশ সহজ এবং সাশ্রয়ী। আর ফলাফল তো বাজিমাতের মতো। সিলেট অঞ্চলে তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহার করে জাতীয় ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প এবং উত্তর-পূর্ব ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প আশাতীত ফল লাভ করেছে। এই আবিষ্কারের জন্যে বাবলা সিলেট জেলা কৃষিমেলা ২০০০-এ প্রথম পুরষ্কার লাভ করেছেন। তাঁর উদ্ভাবিত সাতটি প্রযুক্তি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর, ঢাকা আগারগাঁওয়ে দর্শকদের দেখার জন্যে গ্যালারিতে রাখা হয়েছে। অপর্যাপ্ত বালির স্তর থেকে চারমাথা টিউবওয়েলকে এক মাথায় রুপান্তরিত করে পর্যাপ্ত সেচের পানি উত্তোলন পদ্ধতি ও বাবলা উদ্ভাবন করেছেন। এ জন্যে তিনি জেলা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ ২০০০-এর ৩য় পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও তাঁর উদ্ভাবিত প্রযুক্তিসমূহ হচ্ছে ভূগর্ভের বালি ও মাটির স্তর সংরক্ষণ করে রাখার জন্যে পলি প্রিন্টেড ব্যাগ, সারিসোজা ও বীজ রোপণের জন্যে স্বল্প ব্যয়ের লাইনার, নলকূপের পানির স্থিতির মাপ নির্ণয়ের জন্যে ম্যানুয়েল অটো রেকর্ডার, হস্তচালিত নলকূপের পানির লেবেল ৩৫-৪০ ফুটে চলে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে পানি না উঠিয়ে ‘গরিব বন্ধু’ নামের নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, নিরাপদভাবে মশার কয়েল জ্বালানোর জন্যে স্বল্প ব্যয়ে বক্স পদ্ধতি, লেবুর রস সংগ্রহের জন্যে স্থানীয় পদ্ধতির যন্ত্র, ভূগর্ভন্থ পানি রিচার্জ করার পদ্ধতি, ক্ষুদ্র ভাসমান পাম্প পদ্ধতি সহ বৃষ্টির পানি সংগ্রহ বা ব্যবহার পদ্ধতি, ৩ বা ৪ টি কূপ সংযুক্ত করে ওপেন ওয়েল সিস্টেম, কমান্ড এরিয়ায় পলি টিউব দ্বারা পানি সেচ দেয়ার পদ্ধতি-১ ও ২ এবং ছারফেইছ ওয়াটার ব্যবহারের লক্ষ্যে নদী থেকে পানি উঠিয়ে সড়ক ও জনপথের পার্শ্ববর্তী খাল দিয়ে সেকেন্ড লিফটিং সেচব্যবস্থা, সল্প ব্যয়ে ভুট্টা মাড়াই যন্ত্র ইত্যাদি। পদ্ধতিসমূহের উদ্ভাবক আবদুল হাই আজাদের আবিষ্কারস সমূহের জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দান আবশ্যক। একই সাথে তার উদ্ভাবনগুলো পেটেন্ট করাও প্রয়োজন, যাতে কেউ নকল করতে না পারে। সরকারি সাহায্য ও পূষ্ঠপোষকতা পেলে আবদুল হাই আজাদ বাবলা আরো অনেক কিছু উদ্ভাবক করতে সক্ষম হবেন। উদ্ভাবনীয় বিষয় যখন চিন্তা চেতনায় আসে তখন সাথে সাথে তৈরীর জন্য একটি লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ প্রয়োজন।
এছাড়া পানিতে আর্সেনিক দূষণ খুব সহজে চিহ্নিত করার উপায় সহ স্বল্প খরচে বিভিন্ন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। তিনি এগুলো বাজারজাত করতে চান এখন।
আবদুল হাই আজাদ বাবলা সাধারণ যন্ত্রাংশ দিয়ে অনেক কঠিন প্রযুক্তিকে সহজভাবে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। তাই দাম পড়েছে কম। স্বল্প আয়ের লোকজন তা ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন।
এক সময় তিনি উত্তর-পূর্ব ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের গভীর নলকূপ ও জাতীয় ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পে ও ঠিকাদার ছিলেন। তখন থেকেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে সহজভাবে বিভিন্ন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের চিন্তা তার মাথায় ভর করে। বিশেষ করে গ্যাস সমস্যার কারণে সেচ কাজে ব্যবহৃত শ্যালো টিউবওয়েল যখন অকার্যকর হয়ে পড়ে, তখন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কারের নেশা তাকে পেয়ে বসে।
১৯৯১ সালে উদ্ভাবন করেন নিউ সিস্টেম শ্যালো টিউবওয়েল ফর গ্যাস প্রবলেম জোন অপশন ওয়ান নামে একটি প্রযুক্তি, যা জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরে প্রদর্শন গ্যালারিতে সংরক্ষিত আছে। ফলে স্বল্প ব্যয়ে কৃষিকাজে পানি সেচের চাহিদা পূরণ হয়। এ জন্য আবদুল হাই আজাদ বাবলা নতুন কৃষিপ্রযুক্তি উদ্ভাবন বিষয়ে সিলেট জেলা পর্যায়ের কৃষি মেলার শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার লাভ করেন।
গ্যাস ও ভূগর্ভস্থ মাটির চাপে প্লাস্টিক ফিল্টার চেপে যাওয়া এবং ভেঙে যাওয়ার ফলে অকেজোঁ হয়ে পড়া নলকূপের ক্ষেত্রে ও তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তির নাম ইনসাইট সাপোর্টার ইত্যাদি মিলিয়ে প্রায় ২২টি উদ্ভাবন তাকে যথেষ্ট পরিচিতি এনে দিয়েছে। এ জন্য পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার। সিলেট বিভাগ থেকে জাতীয় পর্যায়ে ১৯৯৯ সালের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পদকের জন্যও মনোনীত হন তিনি। ২০০৫ সালে কৃষি যন্ত্র উদ্ভাবনে জাতীয় কৃষি পদক লাভ করেন। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এ টু আই প্রকল্পের আওতায় সার্ভিস ইনভেনশন ফান্ডের এওয়ার্ড লাভ করেন। তার বিষয় ছিল ড্রেনের কাদা, বালি, বর্জ্য অপসারণ পাম্প ও বর্জ্য সার উৎপাদন। তিনি আরো গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় পদক পাওয়ার আশাবাদী। গত ৭ জন সিলেট বিভাগীয় বিজ্ঞান মেলায় উদ্ভাবনী যন্ত্রপাতি প্রদর্শনীতে ও তিনি প্রথম পুরস্কার লাভ করেন।
এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানান, তিনি নিজের চিন্তা ও চেতনায় যা আসে তাই নিয়ে গবেষণা করেন। তিনি শুরু থেকেই মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন তাই বন্ধু-বান্ধবরা তাকে সব সময় উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। তার উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে নলকূপের পানি আর্সেনিকযুক্ত কিনা তা অতি অল্প ব্যয়ে পরীক্ষা করা সম্ভব বলেও তিনি দাবি করেন।
আবদুল হাই আজাদ বাবলা ‘লিথলজি অব সিলেট’ নামে এ অঞ্চলের ভূগর্ভের ওপর গবেষণামূলক একটি বইও রচনা করেছেন, কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে তা প্রকাশ করতে পরছেন না। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী খাল দিয়ে সেকেন্ড লিফটিং সেচব্যবস্থা, স্বল্প ব্যয়ে ভুট্টা মাড়াই যন্ত্রসহ অভাবনীয় পদ্ধতিসমূহের উদ্ভাবক আবদুল হাই আজাদ বাবলার আবিষ্কারসমূহের জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দান আবশ্যক। একই সাথে তার উদ্ভাবনগুলো পেটেন্ট করাও প্রয়োজন, যাতে কেউ নকল করতে না পারে। সরকারি সাহায্য ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আবদুল হাই আজাদ বাবলা আরো কিছু উদ্ভাবন করতে সক্ষম হবেন। যাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, যারা আমাকে আর্থিক সহায়তা করেছেন জনাব আলীমুছ এহছান চৌধুরী, আলীম ইন্ডাষ্ট্রিজ, এম.সি বিষ্কুট কোং, যশোর জনাব এনামুল হক। আমি বিভিন্ন স্টাষ্ট্র এর প্রধানদের কাছে আমার গবের্ষণা কর্ম চালিয়ে যেতে আর্থিক সহায়তা চাচ্ছি। দেশে বিদেশে কর্মরত প্রবাসী আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবদের কাছে আমার গবেষণা কর্ম চালিয়ে যাবার আর্থিক সহায়তা চাচ্ছি।

প্রবাসে একজন সফল ব্যবসায়ী মো. মখলিছ মিয়া

ssssমকসুদ আহমদ বাসিত: প্রবাসীরা বিপুল পরিমান অর্থের যোগান দিয়ে এদেশের অর্থনীতিকে ঠিকিয়ে রেখেছেন। প্রবাসীদের পরিশ্রয়ে আমাদের অর্থনীতির চাকা সচল থেকে সচল হচ্ছে দিন দিন। আমরা সমৃদ্ধ হচ্ছি অর্থনৈতিকভাবে। দেশ হচ্ছে স্বনির্ভর। ফলে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছি।
শুধু ইউরোপ আমেরিকা নয় মধ্যপ্রাচ্যের অনেক প্রবাসীরা আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছেন। তাঁদের প্রাণপণ প্রচেষ্টায় আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন তড়ান্বিত হচ্ছে।
এমনি একজন প্রবাসী সফল মো. মখলিছ মিয়া। মধ্যপাচ্যের কাতারে ১৯৮৪ সালের ১৫ জানুয়ারি চাকরির সুবাদে পাড়ি জমান। চার বছর চাকরি শেষে নিজ উদ্যোগে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন। পরিচ্ছন্ন ব্যবসায়ী হিসেবে বেছে নেন ডেকোরেশন ব্যবসা। গড়ে তুলেন কাতারের দোহা নিউ রোডের ২নং সিটি আলখোর সপ মার্কেটে মুহা. আপহোলস্টরি সপ নামের ডেকোরেশন ব্যবসা। যা দিন দিন জনপ্রিয়তা অর্জন করে। আর একজন সফল ও জনপ্রিয় ব্যবসায়ী হিসেবে মখলিছ মিয়ার সুনাম দিন দিন প্রসারিত হয়। এখন তিনি সেখানে একজন সুনামধন্য ও সফল ব্যবসায়ী। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশীদের কর্মসংস্থান হচ্ছে। সাথে সাথে বাংলাদেশ থেকে জনবল নিয়ে তিনি বিভিন্ন কোম্পানীতে চাকরির সুযোগ করে দিচ্ছেন। ফলে প্রবাসে বাঙালিরা যেমন উপকৃত হচ্ছে তেমনি বাংলাদেশ থেকে বাঙালিরা সেখানে গিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে।
সর্বদা হাস্যজ্জোল ও প্রাণচঞ্চল মখলিছ মিয়া সিলেটের দণি সুরমার লালাবাজারস্থ আকিলপুর গ্রামের অধিবাসী। পিতা মৃত সুনু মিয়া। জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৬২ সালে।
মখলিছ মিয়া সদা কর্মব্যস্ত একজন সরলমনা মানুষ। দেশ বিদেশে বিভিন্ন সামাজিক, মানবকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রচারবিমুখ মখলিছ মিয়া আকিলপুরস্থ হযরত ওমর শাহ হাফিজিয়া মাদ্রসার কোষাধ্যরে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর সফলতার পিছনে তাঁর স্বদিচ্ছা, কঠোরপরিশ্রম ও ধৈর্য কাজ করেছে বলে তিনি জানান।

ওয়াসিম খান : এ সময়ের একজন ব্যস্ত কী-বোড বাদক ও সুরকার

01হৃদয় সজীব : বৃহত্তর সিলেটের সংগীত জগতে ওয়াসিম খান নাম উচ্চারণ করলে সবাই এক নামে চিনে একজন সফল কী-বোড বাদক হিসেবে। এ সুনাম অর্জন করেছেন ওয়াসিম খান দীর্ঘদিনে। শিশুকালেই ওয়াসিম খান সুরের ভুবনে যাত্রা শুরু করেন। বড় ভাই লাল মিয়া তখন গান গাইতেন। তাঁর হাত ধরে ওয়াসিম খান গানের প্রতি ঝুঁকে পড়েন এবং বড় ভাইয়ের সাথে কণ্ঠ মিলাতে থাকেন। কম বয়সেই আয়ত্ত করেন একটি অসাধারণ গুণ। এক সাথে পাঁচটি ডফকি বাজানোর দুর্লভ অর্জন। বড় ভাই লাল মিয়ার অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ ছিল ওয়াসিম খান ডফকি বাজানো। মানুষ মুগ্ধ হয়ে যেমন গান শুনতো তেমনি ওয়াসিম খানের ডফকি বাজানো দেখে তাক লেগে যেত এবং অনুষ্ঠানে শেষে গুণীজনরা তাকে আর্শিবাদ করে যেতেন।
ওয়াসিম খানের ১৯৬৪ খ্রি. বি-বাড়িয়ার হাবলা উচ্চ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম মো. শহিদুল ইসলাম ও মাতা মরহুমা মোছা. সাফিয়া খাতুন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়।
বড় ভাই লাল মিয়ার সাথে ওয়াসিম খান বি-বাড়িয়ার আঁনাচে কাঁনাচে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করতেন। এক পর্যায়ে গানের নেশায় ও যন্ত্রের ভালোবাসায় তারা ছাতকে চলে আসেন। ছাতক বাজারের গুণীজন ও কিছু মুরব্বিরা বাউলদল দেখে গান গাওয়ার অনুরোধ করেন। তখন তিনি বড় ভাইয়ের সাথে গান গাওয়া শুরু করেন এবং একসাথেপাঁচটি ডফকি বাজাতে থাকেন। মুরব্বিদের দৃষ্টি পড়ে শিশু ওয়াসিমের অসাধারণ ডফকি বাজানোর দিকে। এক পর্যায়ে দুর্বিণ শাহর জনপ্রিয় গান ‘যৌবনরে ডেকছি তরে লইয়া আমি অভাগীনি’ গানটিতে টান দিলেই উপস্থিত সবাই মুগ্ধ হয়ে যান। এই আসরে ছিলেন মুরব্বিদের সারিতে দুর্বিণশাহও। গান শেষ হওযার পরে উপস্থিত সুধীজন জানতে চাইলে যার গান গাইয়ের সেই পীর সাহেবের সাথে আপনাদের পরিচয় আছে কি? কিন্তু ইতোপূর্বে দূর্বিণ শাহর সাথে তাদের পরিচয় হয়নি। ওয়াসিম সান্বিধ্য পেলেন বাউল সম্রাট দুর্বিন শাহর। শুধু সান্বিধ্য নয় দুর্বিন শাহ মুগ্ধ হয়ে মাথায় হাত দিয়ে আর্শিবাদ করলেন।
এভাবে এগুতে থাকেন ওয়াসিম গানের জগতে। সেই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৬ সালের শেষের দিকে বড় ভাইয়ের সাথে সিলেটের তালতলার দিকে যাচ্ছেন। তালতলার হোটেল ব্যবসায়ী কালা মিয়ার দৃষ্টিপরে তাদের দিকে। তিনি তাদেরকে নিয়ে যান তার নিজস্ব হোটলের অফিসে। সেখানে অনেক ভাবুকরা বসে আছেন। তখন বিকাল চারটা। বাংলাদেশ বেতারে অনুষ্ঠানপূর্ব সিলেটের বাউল পরিবেশিত হবে। সবাই শুনবেন। বেতারে শুরু হলো বাউল আবদুল হামিদের গান। সবাই মনোযোগ সহকারে শুনলেন। গান শেষে শুরু হলো ওয়াসিমদের পালা। ছাতকের মতো সিলেটেও সবাই মুগ্ধ হলেন ওয়াসিমের অসাধারণ ডফকি বাজানো দেখে। আসরের শেষ পর্যায়ে উপাস্থিত হলেন বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী আবদুল হামিদ। তিনি তাদেরকে নিয়ে লালদিঘির পারের হোটেল তাজ বোডিংয়ে যাপনের ব্যবস্থা করলেন। আবদুল হামিদ ওয়াসিমের প্রতিভায় মুক্ত হয়ে ছাড়তে চাইলেন না। শেষ পর্যন্ত আবদুল হামিদ ওয়াসিমকে তার বন্ধনে নিয়ে আসলেন। ওয়াসিম আবদুল আবদুল হামিদকে ধর্মীয় পিতা হিসেবে গ্রহণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে গানের তালিম নেয়া শুরু করেন এবং বিভিন্ন জায়গায় তার সাথে গানে কণ্ঠ মিলাতে থাকেন। বাউল আবদুল হামিদের সুযোগ্য শিষ্য হিসেবে ওয়াসিমের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।
ওয়াসিম ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্রের আধুনিক ও পলীগীতি গানের একজন কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তালিকাভূক্ত হন। ১৯৯৮ সালের (৭ পৃষ্ঠায় দেখুন) মিয়া (৬ পৃষ্ঠার পর) : পলীগীতি গানের একজন কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তালিকাভূক্ত হন। ১৯৯৮ সালের যন্ত্রশিল্পী হিসেবে বাংলাদেশ বেতার সিলেট কেন্দ্র তাকে চাকরি প্রদান করে। তিনি কী-বোর্ড, দুতারা, মেন্ডোলিন, তবলা, হারমোনিয়াম বাজান বেতারে।
২০০৭ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের কণ্ঠশিল্পী হিসেবে অনুমোদান লাভ করেন।
২০১৫ সালের শেষের দিকে বেতারের সুরকার হিসেবে তিনি গান সুরারোপ করতে থাকেন এবং বিশেষ বিশেষ প্রোগ্রামে তার সুরারোপিত গান পরিবেশিত হয়ে থাকে।
১৯৯১ সালে প্রথমবারের মতো ওয়াসিম শিল্পী হিসেবে লন্ডন সফর করেন। তার সাথে এ সফরে ছিলেন সৈয়দ আবদুর হাদী, বেবী নাজনীন, বাউল আবদুল হামিদ ও বাউল মুজিবুর সরকারসহ আরো অনেকে। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সময় ভারতে বিভিন্ন অনুষ্টানে গান পরিবেশন করেন। সম্প্রতি তিনি সুফী শিতালংশাহ শিল্পী গোষ্ঠী প্রদত্ত সম্মাননা পদক ২০১৬ গ্রহণ করেন।
তার প্রিয় শিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী, সুবীর নন্দী, সাবিনা ইয়াসমিন, রুনা লায়লা, মাহমুদুন নবী, খুশিদ আলম। খুশিদ আলমের গান নিজের করতেন। প্রিয় সুরকার খান আতাউর রহামন, সত্য সাহা।
জীবনে গান বাজনায় মগ্ধ থাকার কারণে ব্যক্তিজীবন নিয়ে ভাবা সম্ভব হয়নি। প্রায় ৪০ বছর বয়সে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর মোছা. সাবরীন ভূইয়া নিপার সহিত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

আলোকিত শিক্ষক

1464602996বেগম রোকেয়ার সমাজ থেকে এ সমাজের তেমন কোনো বিশেষ পার্থক্য নেই। শুধু খোলস পাল্টেছে মাত্র। সবসময় স্বপ্ন দেখি এমন সমাজের যা হবে নারী-পুরুষের বৈষম্যমুক্ত

বাবা ও মা দু’জনেই ছিলেন কবি। ছোটবেলায় দেখতেন নিজেদের যে কোন ঘরোয়া অনুষ্ঠানে কবি শামসুর রাহমান ও আসাদ চৌধুরীর মত অনেক কবিদের আড্ডা বসতো। এ জন্য ছোট থেকেই সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসার জন্ম নেয়। মাত্র ছয় বছর বয়সে ৪১ লাইনের কবিতা মুখস্থ আবৃত্তি করে পুরস্কার লাভ করেন। সে বছরই সেরা হন জাতীয় শিশু সাহিত্য প্রতিযোগিতাতেও। এভাবেই শুরু হয় জেবুন্নেসার সাহিত্যের পথ চলা। এরপর এসএসসি ও এইচএইসসি পাস করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগে। ছাত্রজীবনে পুরোদমে লেখা-লেখি চলে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও সাহিত্য পত্রিকায়। পড়াশুনা শেষ করেই তার কর্মজীবন শুরু হয় ইউএনডিপি’তে জেন্ডার প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে। তারপর গণবিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতা করার পরে যোগ দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে।

বর্তমানে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণা ও লিখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কারণ আশির দশকের শেষের দিকে তার বাবার রচিত ‘টাকার পাহাড় চাই’ নাটকের একটি সংলাপ ছিল: ‘জন্মদাতা, কর্মদাতা, শিক্ষাদাতার মতোই আমি ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি দেশের মুক্তিদাতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের’। এই সংলাপ শুনেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লিখবেন। তার প্রথম মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গ্রন্থ ‘মুক্তিযুদ্ধ: বুদ্ধিজীবীর দৃষ্টিকোণ ও অভিজ্ঞতা’। এরপর ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত হয় তার গবেষণাগ্রন্থ ‘মুক্তিযুদ্ধে নারী’। সবচেয়ে সাড়াজাগানো মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক তার সম্পাদিত গ্রন্থ হলো: ‘আলোকিত নারীদের স্মৃতিতে মুক্তিযুদ্ধ’।

বইটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আফরোজা পারভীন, পান্না কায়সার, মাহফুজা খানম, লায়লা হাসানসহ মোট ২৭ জন আলোকিত নারীদের লেখা রয়েছে। তাদের যুদ্ধ স্মৃতিতে লড়াই, শোক, দুঃখ আর নির্যাতনের লোমহর্ষক কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। এদের মধ্যে কারো ভাই, বোন, স্বামীসহ আত্মীয়-স্বজনদের জোর করে ধরে নিয়ে তত্কালীন পাকিস্তানী বাহিনীরা যেভাবে হত্যা করেছে, নির্যাতন করেছে তারই ঘটনা তুলে ধরেন সবাই। সম্প্রতি বইটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে বিতরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একজন আলোকিত নারী হিসেবে সাহিত্য ও মুক্তিযুদ্ধে এমন গবেষণার জন্য জেবুন্নেসা ভূষিত হয়েছেন বিভিন্ন সম্মাননায়। বিনোদনধারা পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড, আমরা কুঁড়ি পদক, বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি পুরস্কার, নক্ষত্র সাহিত্য পদক, অক্ষর সম্মাননা স্মারক, মৃত্তিকা পদক, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদ অ্যাওয়ার্ড ইত্যাদি। এছাড়া তিনি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নেটওয়ার্ক শিক্ষক, পেশাজীবী নারী সমাজের যুগ্ম সম্পাদক, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সদস্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে জড়িত রয়েছেন। নিজের এই প্রাপ্তির বিষয়ে তিনি বলেন, একজন নারী হিসেবে আমি আমার অর্জনে সন্তুষ্ট। যা একজন পুরুষের দ্বারাও অনেক সময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। এছাড়া নারীদের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, বেগম রোকেয়ার সমাজ থেকে এ সমাজের তেমন কোনো বিশেষ পার্থক্য নেই। শুধু খোলস পাল্টেছে মাত্র। সবসময় স্বপ্ন দেখি এমন সমাজের যা হবে নারী-পুরুষের বৈষম্যমুক্ত।

জাতীয় কবি নজরুলের জন্মদিন আজ

60555‘গাহি সাম্যের গান/ যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা ব্যবধান/ যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-খ্রিস্টান’…

আজ বুধবার ২৫ মে, ১১ জ্যেষ্ঠ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৭তম জন্মবার্ষিকী। দ্রোহ, প্রেম ও সাম্যের কবি হিসেবেও বাংলা সাহিত্যের অনন্য প্রতিভা নজরুল ইসলামকে অভিহিত করা হয়।

১৮৯৯ সাল, ১৩০৬ বঙ্গাব্দের এইদিনে বর্ধমান জেলার (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে) আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে কাজী পরিবারে নব জাগরণের এ কবির জন্ম।

জাতীয় পর্যায়ে জাতীয় কবির ১১৭তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে নানা কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। এ বছর জাতীয় পর্যায়ের এই অনুষ্ঠান হচ্ছে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে। কবির জন্মদিনের এ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ।

জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে নজরুলের স্মৃতি বিজড়িত ত্রিশাল, কুমিল্লায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দেশের অন্যান্য জেলায়ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে নজরুলের জন্মবার্ষিকীতে।

বেসরকারি উদ্যোগেও রয়েছে নানা আয়োজন। ভোরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে।

জাতীয় কবির জন্মদিনে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। জাতীয় সব দৈনিক কবির জন্মদিনে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। টেলিভিশন ও রেডিও প্রচার করছে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।

বাংলা সাহিত্যে নজরুল ইসলাম জনপ্রিয় হয়েছেন কবিতা ও গানে। ব্রিটিশ শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে কবিতা ও গান লিখে বিদ্রোহী কবি হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসেন নজরুল ইসলাম। রচনা করেন ‘বিদ্রোহী’ ও ‘ভাঙ্গার গান’র মতো কবিতা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ব্রিটিশ সরকার কবিকে জেলে পাঠায়। সেখানে বসে কবি রচনা করেন ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’। বাংলা সাহিত্যে নজরুল ইসলামের আবির্ভাবকে ধুমকেতুর আত্মপ্রকাশ হিসেবেও দেখেন অনেকে।

বহুমুখী প্রতিভার এ কবি বাংলা সাহিত্যের বিশাল অঙ্গনে ভূমিকা রাখেন ঔপন্যাসিক, গল্পকার, প্রাবন্ধিক হিসেবে। সাহিত্যকর্মের উল্লেখযোগ্য অংশ জুড়ে রয়েছে তার গান। প্রায় ৩ হাজার গান রচনা করেন নজরুল ইসলাম। ইসলামি গজল লিখে বাংলা গানে নতুন এক ধারার সৃষ্টি করেন তিনি। গান রচনার পাশাপাশি সেগুলোতে সুরারোপ করে সমৃদ্ধ করেছেন সঙ্গীতাঙ্গনকে।

নাটক লিখেছেন, ছেলেবেলায় লেটো দলে যোগ দিয়ে নাটকে অভিনয় করেছেন, পরিণত হয়ে লিখেছেনও নাটক। চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লিখেছেন, পরিচালনা এবং অভিনয়ও করেছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ছেলেবেলায় লেটো দলে শুরু হয় নজরুলের সাহিত্যচর্চা, যা পরিণতি পায় সৈনিক জীবন থেকে ফেরার পর। সৃষ্টির সময় মাত্র দুই দশক। যুদ্ধ থেকে ফিরে ১৯২২ থেকে ১৯৪২ সাল। স্বল্প এ সময়ে সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় নজরুলের অবদান অনন্য বলেও মত তাদের।

বরেণ্য এ কবি নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছেন। মাত্র ৯ বছর বয়সে পিতা কাজী ফকির আহমেদকে হারিয়ে এলামেলো হয়ে যায় সামনে চলার পথ। আর্থিক অনটনে পড়ে বই-খাতা রেখে রোজগারে নেমে পড়তে বাধ্য হন নজরুল। কখনও মসজিদের ইমামতি, মাজারের খাদেমগিরি, চায়ের দোকানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়েছে তাকে। ছেলেবেলায় তার নাম রাখা হয় ‘দুখু মিয়া’।

আসানসোলের চা-রুটির দোকানে রুটির কাজ করার সময় সেখানে কর্মরত দারোগা রফিজ উল্লাহ’র সঙ্গে পরিচয় হয় নজরুলের। তিনি কিশোর নজরুল নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন। এটা ১৯১৪ সালের কথা। মাধ্যমিকের প্রিটেস্ট পরীক্ষা না দিয়ে ১৯১৭ সালে সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন নজরুল ইসলাম। অংশ নেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে।

১৯৪২ সালে আকস্মিক অসুস্থ হয়ে পড়েন নজরুল। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, বাংলা সাহিত্যের অনন্য প্রতিভার এ কবি পিকস ডিজিজে আক্রান্ত। এক পর্যায়ে মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন চিরবিদ্রোহী এ কবি। এতে তার সাহিত্যচর্চা পুরোপুরি থেমে যায়।

কোলকাতায় পারিবারিক তত্ত্বাবধানে থাকা বাকরুদ্ধ এ কবিকে ১৯৭২ সালের ২৪ মে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এখানে সরকারি ব্যবস্থাপনায় রাখা হয় নজরুল ইসলামকে। অভিসিক্ত করা হয় বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদায়।

চিরবিদ্রোহী এ কবি ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ঢাকার পিজি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ‘আজান’ কবিতায় চাওয়া শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয় চির জাগরণের এ কবিকে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন।

ম্যারাডোনার চেয়েও বড় ফুটবলার ছিল বাংলাদেশে

ফুটবল জাদুকর সামাদকে বলা হয় কিংবাদন্তির মহানায়ক। তিনি যাদুকর উপাধি পেয়েছিলেন জাদুবিদ্যা জানার জন্য নয়, ফুটবল খেলার অপূর্ব দক্ষতা এবং উন্নতমানের কৌশল প্রদর্শনের জন্যই তার এ উপাধি। উপমহাদেশের প্রখ্যাত কিংবদন্তি ফুটবলার সামাদ ম্যারাডোনার চেয়েও বড় জাদুকর ছিলেন বলে অনেকেই মনে করেন। আজ ২ ফেব্রুয়ারি তার ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী।

১৯১৫ সাল থেকে ১৯৩৮ সাল এই ২৩ বছর ছিল সামাদের খেলোয়ার জীবন। তিনি ছিলেন একজন রেল কর্মচারী। সে সময় ইবিআর নামে যে রেলওয়ে ফুটবল টিম ছিল সামাদ তাতে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। সেই কারণে ইবিআরএ সামাদ নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। সামাদের ২৩ বছর খেলার জীবনে এমন সব বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছে যা ক্রীড়া জগতে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। দেশে এবং দেশের বাইরেও তার অভিনব খেলা দেখে মানুষ হতবাক হয়েছে। তার জাদুকরী খেলার কৌশল দেখে দর্শকরা উল্লাসে ফেটে পড়েছে। করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছে।

একবার খেলার আগে মাঠের চারদিকে পায়চারী করে এসে সামাদ সেখানকার কমিটির কাছে অভিযোগ করলেন যে, এ মাঠ আন্তর্জাতিক মাপ হিসেবে ছোট আছে বিধায় এ মাঠে আমাদের টিম খেলতে পারে না। পরে মাঠ মাপার পর তার অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।

আরেকবার মাঠের মধ্যস্থল থেকে বল নিয়ে সব খেলোয়াড়কে বোকা বানিয়ে বল ড্রিবলিং করে নিক্ষেপ করলেন গোলে। বল গোলে প্রবেশ না করে পোস্টের কয়েক ইঞ্চি উপর দিয়ে বাইরে চলে গেলে রেফারি বাঁশি বাজিয়ে বলকে আউট ঘোষণা করলেন। কিন্তু সামাদ তা গোল হয়েছে বলে চ্যালেঞ্জ করে বসেন। তিনি বলেন, ‘আমার শটে নিশ্চিত গোল হয়েছে। সামাদের শটের মেজারমেন্ট কোনোদিন ভুল হয় নাই। গোলপোস্ট উচ্চতায় ছোট আছে।’ পরে তার চ্যালেঞ্জ অনুযায়ী মেপে দেখা গেলো সত্যিই গোলপোস্ট কয়েক ইঞ্চি ছোট আছে।

তার খেলোয়াড় জীবনের এরকম বহু ঘটনা আজও দেশ-বিদেশের খেলার জগতে অগণিত সামাদ ভক্তের মুখে মুখে শোনা যায়। জাদুকর সামাদ ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানে চলে আসেন ও বসবাস করতে শুরু করেন দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে। রেলওয়ে জংশনের জন্য খ্যাত বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় জোনের বৃহৎ রেলওয়ে জংশন পার্বতীপুরে ফুটবল জাদুকর সামাদ ছিলেন।

যদিও রেলওয়ের কোনো প্লাটফর্ম ইনস্পেক্টর পদ নেই তবুও জাদুকর সামাদের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ এই পদ সৃষ্টি করেছিলেন। পরে তাকে বাংলাদেশ রেলওয়ে পার্বতীপুর জংশনে প্লাটফর্ম ইনস্পেক্টর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তিনি রেলওয়ে সাহেবপাড়া কলোনিতে টি-১৪৭ নম্বর বাসায় থাকতেন এবং মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি এই বাসাতেই ছিলেন।

ভারত বর্ষের বিহার এলাকার পুর্নিয়ায় ফুটবল জাদুকর সামাদের জন্ম হয়। তার পুরো নাম সৈয়দ আব্দুস সামাদ। তিনি ১৯৬৪ সালে ২ ফেব্রুয়ারি পার্বতীপুরে মৃত্যুবরণ করেন। পার্বতীপুর শহরের ইসলামপুর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

আজ আমরা বিদেশি খেলোয়াড়দের নিয়ে গর্ব করে তাদের ছবি গায়ের জামাতে ছাপিয়ে ঘুরে বেড়াই। শোনা যায়, ফুটবলার জাদুকর সামাদের সোনার মূর্তি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রক্ষিত আছে। আমরা বিশ্বনন্দিত ফুটবল জাদুকর সামাদকে কতটুকু মূল্যায়ন করছি? পার্বতীপুরে রেলওয়ের নির্মিত একটি মিলানায়তন আছে। যা ফুটবল জাদুকর সামাদের নামে রাখা হয়েছে।

পার্বতীপুর শহরের ইসলামপুর কবরস্থানে সমাহিত করার দীর্ঘ ২৫ বছর অবহেলিত অরক্ষিত থাকার পর ১৯৮৯ সালে ৫২ হাজার টাকা খরচ করে নির্মাণ করা হয় স্মৃতিসৌধ। এখনো সেখানে রয়েছে সামাদ রেলওয়ে মিলনায়তন যা ১৯৪৯ সালে ফুটবল জাদুকর সামাদের নামে উৎসর্গ করা হয়েছিল। রয়েছে তার বসবাসকৃত রেলের বাসাসহ বেশকিছু স্মৃতিচিহ্ন। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তার স্মৃতিচিহ্নগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে।

যদি সরকার স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে ফুটবল জাদুকর সামাদের ছবিসহ জীবনী তুলে ধরা হয় তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে তার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি বেঁচে থাকবেন যুগযুগ।

বাংলাদেশি বিজ্ঞানীর যুগান্তকারী সাফল্য: নোবেলের সম্ভাবনা

5c57b0ee2a0b27e086035a71910e61aaদীর্ঘ ৮৫ বছরে যেটা কেউ পারেনি, সেটা করে দেখিয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানী জাহিদ হাসান। বহুল প্রতীক্ষিত অধরা কণা ফার্মিয়ন, ভাইল ফার্মিয়ন অস্তিত্ব আবিষ্কার করেছেন তিনি।

গত কয়েকবছরে যারা পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন, তাদের অবদানের সাথে এম জাহিদ হাসানের অবদানের তুলনা করেও এ সম্ভাবনার কথা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের একদল গবেষক পদার্থবিদ জাহিদ হাসানের নেতৃত্বে পরীক্ষাগারে এই কণা খুঁজে পেয়েছেন। এই আবিষ্কার এখনকার মুঠোফোন, কম্পিউটারের মতো ইলেকট্রনিক সামগ্রীর গতি বাড়াবে, হবে শক্তিসাশ্রয়ী।

গত বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স-এ ভাইল ফার্মিয়নের পরীক্ষামূলক প্রমাণের বিষয়টি বিস্তারিত ছাপা হয়েছে।

এই আবিষ্কারের গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে জাহিদ হাসান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ভাইল ফার্মিয়নের অস্তিত্ব প্রমাণের মাধ্যমে দ্রুতগতির এবং অধিকতর দক্ষ নতুন যুগের ইলেকট্রনিকসের সূচনা হবে।

কেমন হবে সেই নতুন যুগের ইলেকট্রনিক সামগ্রী—জাহিদ হাসান বিষয়টির ব্যাখ্যা দিলেন এভাবে, উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, এই আবিষ্কার কাজে লাগিয়ে তৈরি নতুন প্রযুক্তির মুঠোফোন ব্যবহারের সময় সহজে গরম হবে না। কারণ, এই কণার ভর নেই। এটি ইলেকট্রনের মতো পথ চলতে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ে না।

গ্রহ-নক্ষত্র, পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা, গাছপালা, ফুল কিংবা মানুষ—সবই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণার পিণ্ড। দুনিয়ার এসব বস্তুকণাকে বিজ্ঞানীরা দুই দলে ভাগ করেন। এসব কণার একটি ফার্মিয়ন, যার একটি উপদল হলো ভাইল ফার্মিয়ন। ১৯২৯ সালে হারম্যান ভাইল এই কণার অস্তিত্বের কথা প্রথম জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি তাঁরই পরীক্ষামূলক প্রমাণ হাজির করলেন জাহিদ হাসান।

আরেক জাতের কণা হলো ‘বোসন’, যার নামের সঙ্গেই জড়িয়ে আছেন বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু। তাঁর আবিষ্কারের ৯১ বছর পর ভাইল ফার্মিয়নের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়ে পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে যুক্ত হলেন আরেক বাঙালি জাহিদ হাসান।

জাহিদ হাসান জানান, মোট তিন ধরনের ফার্মিয়নের মধ্যে ডিরাক ও মায়োরানা নামের বাকি দুই উপদলের ফার্মিয়ন বেশ আগেই আবিষ্কৃত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা ভেবেছেন, নিউট্রিনোই সম্ভবত ভাইল ফার্মিয়ন। কিন্তু ১৯৯৮ সালে নিউট্রিনোর ভরের ব্যাপারটা নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে আবার ভাইল ফার্মিয়নের খোঁজ শুরু হয়।
দীর্ঘদিন ধরে ফার্মিয়ন নিয়ে কাজ করছেন কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানী আন্তন ভার্খব। আন্তর্জাতিক জার্নাল আইইইই স্পেকট্রামকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উচ্ছ্বসিত ভার্খব বলেন, তত্ত্বীয় জগতের জিনিসপত্র বাস্তব জগতে খুঁজে পাওয়ার মতো আনন্দের বিষয় আর কিছুই নেই।

পেতে পারেন নোবেল পুরষ্কারও
অনন্য এ আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরষ্কারের জন্যও মনোনীত হতে পারেন এ বিজ্ঞানী। তার এ আবিষ্কারের ফলে কেবল তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানই পাল্টে যাবে না, বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে ইলেকট্রনিক ও কম্পিউটারের বাস্তব জগতেও। ইলেকট্রনিক আর কম্পিউটারের জগৎটা এমনিতেই বদলে যাচ্ছে দ্রুত, প্রতিনিয়ত উন্নতি হচ্ছে এ ক্ষেত্রে, কিন্তু এম জাহিদ হাসানদের আবিষ্কার এটাকে কী যে গতি দেবে, মসৃণতা দেবে, তা কল্পনা করতে গিয়ে হইচই পড়ে গেছে বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে।

গত কয়েকবছরে যারা পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন, তাদের অবদানের সাথে এম জাহিদ হাসানের অবদানের তুলনা করেও এ সম্ভাবনার কথা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
২০১৪ সালে পরিবেশবান্ধব বিকল্প আলোর উৎস নীল লাইট ইমিটিং ডায়োড (এলইডি) আবিষ্কারের জন্য পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেয়েছেন দুই জাপানি ও এক জাপানি বংশোদ্ভূত মার্কিন গবেষক। এরা হচ্ছেন জাপানের গবেষক ইসামু আকাসাকি, হিরোশি আমানো ও জাপানি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক শুজি নাকামুরা।

২০১৩ সালে ‘হিগস বোসন’ বা ঈশ্বর কণার অস্তিত্বের তাত্ত্বিক ধারণা দেওয়ায় ব্রিটিশ বিজ্ঞানী পিটার ওয়ের হিগস ও বেলজিয়ামের বিজ্ঞানী ফ্রাঁসোয়া এংলার্ট পদার্থবিদ্যায় যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ‘হিগস বোসন’ কণা সম্পর্কে এমন ধারণা, যা ব্যাখ্যা করে, কীভাবে কোনো বস্তুর ভর সৃষ্টি হয়। এছাড়া এই তত্ত্ব ব্যাখ্যা করে, ‘ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফোর্স’র তুলনায় কেন ‘উইকফোর্স’র ব্যাপ্তি ক্ষুদ্র। এর ফলে মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে ধারণা পেতে সাহায্য করবে।

আর ২০১২ সালে আলোর মৌলিক একক (ফোটন) বিশুদ্ধ কোয়ান্টাম অবস্থা পরিমাপের পদ্ধতি আবিষ্কারের স্বীকৃতি হিসেবে ফ্রান্সের সার্জ হারোশে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডেভিড ওয়াইনল্যান্ডকে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

জালালাবাদ টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্য অধ্যাপক মো. হাসমত উল্লাহর পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন

Bashi-04মনাক্কা আক্তার চৌধুরী: সিলেট বিভাগে প্রথম শিক প্রশিণ প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্য অধ্যাপক মো. হাসমত উল্লাহর পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন। আমেরিকা ওয়াল্ড ইউনিভার্সিটি কেলফোনিয়া ইউএসএ এর অধীনে সম্পাদিত তাঁর গবেষণার শিরোনাম হচ্ছে, এ স্টাডি ওন প্রাইভেট টিচারস ট্রেনিং কলেজ ইন বাংলাদেশ : প্রবলেমস এন্ড প্রসফেক্ট। তিনি বিগত ০৫ মে ২০১৫ ইং তারিখে এমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনির্ভাসিটি ক্যালিফোর্নিয়া, ইউ.এস.এ. থেকে পিএইচ.ডি. ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৫ জুন ২০১৫ ঈসায়ী তারিখে এডাব্লউি ইউএসএ থেকে আগত পিএইচ.ডি, সনদ, ট্রান্সস্ক্রীপ্ট ও এডাব্লউি ইউএসএ এপ্রোভড থিসিস (ইংলিশ মিডিয়াম) তিনি ঢাকা থেকে সংগ্রহ করেছেন।
অন্যান্য গবেষণা কর্ম: বেসরকারি পর্যায়ে সিলেট বিভাগে প্রথম টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, জালালাবাদ টিচার্স ট্রেনিং কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্য হিসেবে কলেজের বি.এড. প্রশিণের অংশ হিসেবে কারিকুলামভূক্ত কর্মসহায়ক গবেষণা বিষয় সংশ্লিষ্ট গবেষণা পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দীর্ঘদিন যাবৎ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি ১৯৯৯ সনে জালালাবাদ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই প্রাইভেট টি.টি, কলেজ হিসেবে এ জাতীয় কলেজের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে চিন্তাভাবনা, আলোচনা-পর্যালোচনা এবং লেখা-লেখি ও গবেষণা শুরু করেন। তাঁর বি.এড. প্রশিণ এবং শিক প্রশিণ কলেজ নিয়ে বিভিন্ন সময় গবেষণামূলক প্রবন্ধ, নিবন্ধ যা বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ের উপর তাঁর লেখা পাঠ্যবই আছে। কিছু বই পাঠ্য হিসেবে পড়ানো হচ্ছে। তিনি শৈশবকাল থেকে সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী প্রতিভার অধিকারী। ‘বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ও বি. এড. প্রশিণ’ শিরোনামে তাঁর লেখা গবেষণামূলক প্রবন্ধ বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। চট্রগ্রাম বিশ্বাবিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগে এম.এসসি শেষ বর্ষে অধ্যয়নকালিন সময়ে টু সার্ভে টি রাইস ফিল্ড এন্টমফান অব দ্যা চিটাগাং ইউনিভাসিটি ক্যাম্পাস এন্ড ইটস সাবিয়াস এই শিরোনামের উপর একটি সমৃদ্ধ গবেষণাকর্ম ইংলিশ মিডিয়ামে সফলভাবে সম্পাদন করেন। এম. এড. প্রোগ্রামে অধ্যয়নকালীন সময়ে ও শিা প্রশাসন বিষয়ের উপর তিনি গবেষনণাকর্ম সম্পাদন করেন।
অধ্যাপক ডক্টর মো. হাসমত উল্লাহ জন্ম ও পরিবারিক জীবন: অধ্যাপক ডক্টর মো. হাসমত উল্লাহ ১লা জুন ১৯৬২ সনে বিশ্বনাথ উপজেলার ৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নের ০৩নং সিঙ্গেরকাছ ওয়ার্ডের গোয়াহরি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম বুরহান উল্লাহ ও মাতা মরহুমা কুলছুমা বেগম, স্ত্রী মিসেস মনাক্কা আক্তার চৌধুরী। তিনি তিন ছেলে এবং এক মেয়ের জনক।
শিা জীবন: অধ্যাপক ড. মো. হাসমত উল্লাহ ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত গোয়াহরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করেন। ১৯৭২ সনে বুরাইয়া আলিয়া মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করেন। ১৯৭৩-১৯৭৫ সন পর্যন্ত একলিমিয়া হাই স্কুল বৈরাগী বাজার-এ ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নের পর অষ্টম শ্রেণী পাশ করেন। ১৯৭৬-১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বিশ্বনাথ রামসুন্দর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম ও দশম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নের পর ১৯৭৮ সালে কুমিল্লা শিা বোর্ডের অধীনে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেণিতে এস.এস.সি. পাশ করেন। ১৯৭৯-১৯৮০ সালে সিলেট সরকারি এম.সি কলেজে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নের পর ১৯৮১ সালে কুমিল্লা শিা বোর্ড হইতে বিজ্ঞান বিভাগে দ্বিতীয় শ্রেণিতে এইচ.এস.সি. পাশ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সিলেট সরকারি এম. সি. কলেজ হতে ১৯৮৩ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে বি.এস্সি পাশ করেন। ১৯৮৪-১৯৮৫ শিা বর্ষে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নের পর দ্বিতীয় বিভাগে এম.এস্সি প্রথম পর্ব পাশ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৮৬ সালে এম, এস্সি শেষ পর্বে দ্বিতীয় বিভাগে পঞ্চম স্থান অধিকার করে কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে উচ্চতর দ্বিতীয় বিভাগে ১৯৯৫ সালে বি.এড. (বিজ্ঞান) ডিগ্রী লাভ করেন। ২০০০ সালে খানবাহাদুর আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা হতে দ্বিতীয় শ্রেণিতে এম.এড. (শিা প্রশাসন) ডিগ্রী লাভ করেন।
চাকুরী জীবন: তিনি ১৯৮৯ সালে শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, সিলেট-এ বিজ্ঞান শিক হিসেবে চাকুরী জীবন শুরু করেন। ১৯৯২-৯৩ শিাবর্ষে বিশ্বনাথ ডিগ্রী কলেজে জীববিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করেন। ১৯৯৯ থেকে সিলেট বিভাগের প্রথম শিক প্রশিণ প্রতিষ্ঠান ‘জালালাবাদ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যাবধি অধ্য হিসেবে দায়িত্ব পালনরত আছেন। দারুল ইহসান বিশ্বাবিদ্যালয়, ঢাকা এর অধীনস্থ মৌলভীবাজার আউটরিচ ক্যাম্পাসের কো-অর্ডিনেটর ছিলেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এড প্রোগ্রামের শিা প্রশাসন বিষয়ের অধ্যাপক ছিলেন। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের, বি.এড. প্রোগ্রামের শিা প্রশাসন বিষয়ে অধ্যাপনা করেছেন।
শিা েেত্র: *পরীক: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর। *সাবেক পরীক: বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিাবোর্ড, কুমিল্লা, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
সামাজিক জীবন: অধ্যাপক ড. মো. হাসমত উল্লাহ, ইসলামী ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি বিশ্বনাথ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, হযরত ওমর ফারুক (রা.) একাডেমি, বিশ্বনাথ এর অন্যতম উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি, ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ, গোয়াহরী এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শাহজালাল উপশহর একাডেমি (আই-ব্লক) সিলেট এর পরিচালনা কমিটির সদস্য, শাহজালাল উপশহর ওয়েলফেয়ার সোসাইটি এর সেক্রেটারি, শাহজালাল উপশহরস্থ ‘বাইতুন নাজাত’ জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ-সিলেটের আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ আদর্শ শিক পরিষদ ফেডারেশন-এর সিলেট জেলার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, সিলম্যান প্রোপার্টিজ কোম্পানী লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এ ছাড়াও বিভিন্ন েেত্র নানা ধরনের সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে তিনি জড়িত।
বিশিষ্ট শিাবিদ, রাজনীতিক, সমাজকর্মী অধ্যাপক ড. মো. হাসমত উল্লাহ দেশ জাতি ও সমাজের উন্নয়নে একজন নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তিত্ব। এলাকায় শিা বিস্তারে তিনি সদা তৎপর। একটি আলোকিত সমাজ প্রতিষ্ঠার ল্েয অধ্যাপক ড. মো. হাসমত উল্লাহ অকান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাঁর অবদান কালের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

Developed by: