বিভাগ: স ফ ল ব্য ক্তি ত্ব

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. খাদেমুল ইনসান মোহাম্মদ ইকবাল

B.G.Dr. Ikbalব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. খাদেমুল ইনসান মোহাম্মদ ইকবাল দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি ইউনিয়নের বরইকান্দি সুনামপুর গ্রামে ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্র“য়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা (মরহুম) মোহাম্মদ মকবুল আলী। খাদেমুল ইনসান মোহাম্মদ ইকবাল সিলেট সরকারি পাইলট স্কুল থেকে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক, সিলেট সরকারি কলেজ থেকে ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ইন্টারমেডিয়েট এবং ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে সিলেট মেডিকেল কলেজ থেকে এম.বি.বি.এস পাস করেন। তিনি ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরে সরাসরি ক্যাপটেন হিসেবে কমিশন প্রাপ্ত হন। ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে মেজর রেঞ্জে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবং সামরিক চিকিৎসা সার্ভিসের সহকারী মহাপরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০০ খ্রিস্টাব্দে কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি হয় এবং বাংলাদেশ রাইফেলস এর মেডিকেল সার্ভিসের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তিনি ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ হতে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিডফোর্ড হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করেন। বর্তমানে তিনি অবসর গ্রহণ করছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ৩ কন্যা সন্তানের জনক।

প্রবাসী জিলানী : একজন আদর্শ ব্যক্তিত্ব

images11মেধা মননে একজন বিচক্ষণ বাঙালি এ কে এম জিল্লুর রহমান জিলানী। পরোপকারে বেশিভাগ সময় ব্যয় করেন। তিনি ইউরোপের ইংল্যান্ডে বসবাস করলেও বুকে ধারণ করেন বাংলাদেশকে। আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে গভীরভাগে ভালোবাসেন জিলানী। এ মাধ্যমগুলোতে মিশে থাকতে চান আজীবন। কারণ এখানে রয়েছে তাঁর মনের খোরাক। আত্মার মিল।
জিল্লুর রহমান জিলানীর জন্ম ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মার্চ। তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কুচাই ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মরহুম হাবিবুর রহমান ও মাতা মরহুমা রোকেয়া খানম। পিতা হাবিবুর রহমান প্রথম দিকে মুসলিম লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন, পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ রাজনীতি করতেন। তিনি কুচাই ইউনিয়ন পরিষদে দুই মেয়াদে বার বছর মেম্বার হিসেবে জনগণের সেবা করেন এবং মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত বাস মালিক সমিতির সভাপতির গুরুদায়িত্ব পালন করেন।
জিল্লুর রহমান জিলানী প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন ব্লুবার্ড স্কুলে। পরবর্তীতে তিনি দুর্গাকুমার পাঠশালায় তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে সিলেট সরকারি পাইলট হাই স্কুল থেকে ১৯৭২ সালে এসএসসি পাশ করেন। ভর্তি হন এমসি কলেজে (বর্তমানে যা সরকারি কলেজ) এবং ১৯৭৫ সালে যথারীতি এইচএসসি পাশ করেন। তারপর সুপরিচিত বিদ্যাপীঠ সিলেট সরকারি কলেজ অর্থাৎ বর্তমান এমসি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স পাস করেন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮১ খ্রিস্টাবে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। লেখাপড়া শেষে দেশে কিছু দিন চাকরি করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি স্বপ্নের দেশ ইংল্যান্ড ভ্রমণ করেন এবং সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
ইংল্যান্ডে বাঙালিদের চিরচেনা রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি এবং ধীরে ধীরে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। ব্যবসায় সফল হলেও তিনি শুধু ব্যবসায় ডুবে থাকেননি। ইংল্যান্ডের বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকায় কাজ করার প্রয়াস পান। সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকার সত্যবাণী সম্পাদনা দায়িত্ব তাঁর ওপর পড়ে এবং সফলতার সাথে তিনি সম্পাদনা করেন। পরবর্তীতে তিনি ‘সাপ্তাহিক পত্রিকায়’ কাজ শুরু করেন। সাপ্তাহিক পত্রিকায়ও তিনি ইসলামের শিক্ষা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য পাতা সম্পাদনা করেন। বর্তমানেও তিনি সাপ্তাহিক পত্রিকায় কর্মরত আছেন। ধর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাস এবং ধর্মীয় চিন্তাচেতনায় গভীর মনোযোগ থাকায় তাঁর ওপর পত্রিকার ধর্মীয় পাতাগুলো সম্পাদনার দায়িত্ব পড়ে। তিনি দৃঢ়তা ও দক্ষতার সাথে তাঁর দায়িত্ব পালন করে যান।
জিল্লুর রহমান জিলানী আপাদমস্তক একজন মুসলমান। কোরআন ও হাদিসের শাশ্বত বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে মেধা ও অর্থ উভয় ব্যয় করতে কার্পণ্য করেন না। তিনি বাংলাদেশের খুলনার প্রফেসর শামসুর রহমান এর ৪০টির মত ইসলামী বই নিজের অর্থায়নে প্রকাশ করে দিয়েছেন।
জিলানী একজন গর্বিত বাঙালি। যিনি কাজে বিশ্বাসী। নিরবে নিভৃতে কাজে ডুবে থাকতে চান। কাজে আনন্দ পান। কথায় আর কাজে মিল রেখে এগুতে চান সামনের দিকে। তিনি সর্বদা প্রচারবিমুখ। প্রবাসে ব্যবসার পাশাপাশি বহুল প্রচার মাধ্যম সংবাদপত্রে কাজ করেও প্রচারবিমুখ তিনি।
আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও ফার্স্ট ওয়ার্ল্ডের কালচার সংস্কৃতিকে ধারণ করতে চান না। শাশ্বত ইসলামের ঐশিবাণী বুকে ধারণ করে তাঁর নিত্যদিনের পথ চলা। তিনি কুরআন ও সুন্নার প্রতি গভীর অনুরক্ত। তাই নিজ খরচে ও নিজের তত্বাবধানে বোখারী শরীফ ও আবু দাউদ শরীফের সকল খন্ড বাংলায় অনুবাদ করান এবং সাধারণ মানুষের পড়ার সুযোগ করে দেন। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকার আলবাণী একাডেমি থেকে বোখারী শরীফ ও আবু দাউদ শরীফ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আবার আলবাণী একাডেমির অনেক ইসলামি বইয়ের প্রকাশক এবং পৃষ্ঠপোষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এ জন্য আলবাণী একাডেমি তাঁকে প্রধান উপদেষ্টা মনোনিত করেছেন এবং খুলনার প্রফেসর শামসুর রহমান সংসদের সাথেও তিনি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত।
জিল্লুর রহমান জিলানী ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। তিনি ১৯৮৩ সালে বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ হন। তাঁর সহধর্মিণী জেসমিন নাহার রহমান। তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান। বড় ছেলে সানিয়াত রহমান অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে বায়ো কেমিস্ট্রিতে এমএসসি পাস করে লন্ডন ইমপিয়েল কলেজে পিএইচ.ডি অধ্যয়নরত। ছোট ছেলে জাহিন রহমান ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স করছেন। আর একমাত্র মেয়ে রামিশা রহমান ও লেভেল পরীক্ষার ফল প্রার্থী।
জিলানী একজন সফল, সুখী ও সার্থক মানুষ। তাঁর মনে সদানন্দ বিরাজ করছে। বাকী দিনগুলো এভাবেই কাটিয়ে দিতে চান তিনি।

অধ্যাপক ড. আহমদ কবীর

2-18শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কবীর দণি সুরমার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের নিদনপুর (লতিপুর) গ্রামে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা হাজি মো. রিয়াজুল ইসলাম ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ট্রেজারি একাউন্টেন্ট ও দাদা (মরহুম) হাজি আবদুর রহমান ছিলেন ডিসি অফিসের জেলা নাজির। ড. আহমদ কবীর ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে এস.এস.সিতে প্রথম বিভাগে, ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দের এইচ.এস.সিতে প্রথম বিভাগে পাস করেন। তিনি ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এস.সি (সম্মান) প্রথম বিভাগে পাস করেন এবং ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এস.সি প্রথম বিভাগে পাস করেন। তিনি ২০০১ খ্রিস্টাব্দে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৬ থেকে ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিষয়ে পোস্ট ডক্টরেট আন্ডার কমনওয়েলথ ফেলোশিপ লাভ করেন। তিনি ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ডিসেম্বর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি এই বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়া তিনি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক সমিতির ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে নির্বাচিত সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।

মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান রাজু

2-21শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান রাজু দণি সুরমার সিলাম ইউনিয়নের মনজলাল গ্রামে ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দের ৪ মে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মোহাম্মদ শামসুজ্জামান। আখতারুজ্জামান জালালপুর হাইস্কুল থেকে ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে এস.এস.সি, সিলেট এম.সি কলেজ থেকে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে এইচ.এস.সি, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে অর্থনীতিতে বি.এস.এস (সম্মান) এবং ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে এম.এস.সি ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ২০০১ খ্রিস্টাব্দের ফেব্র“য়ারি মাসে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৭ থেকে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত জার্মান সরকারের বৃত্তি নিয়ে জার্মানির বার্লিন থেকে ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ডেবলপমেন্ট ইকনমিক্স বিষয়ে এম.এ ডিগ্রি অর্জন করেন। অতঃপর জন এফ কেনেডি ইনস্টিটিউট বার্লিনে এক বছর গবেষণা করেন। বর্তমানে তিনি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।

ড. কবির হোসেন চৌধুরী

27-7-1সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বরইকান্দি ইউনিয়নের বরইকান্দি গ্রামে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে ড. কবির হোসেন চৌধুরী জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রিতে বি.এস.সি অনার্স ও ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে এম.এস.সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে ফার্মাসিউটিক্যালসে এম.এস ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে একই ইউনিভার্সিটি থেকে একই শাস্ত্রে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি রয়্যাল সম্মানিত মেম্বার এবং ক্যামিক্যাল সোসাইটির সম্মানিত ফেলো।
১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে তিনি ওয়ার্ল্ড ইয়ূথ কাউন্সিলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি ম্যানচেস্টার কাউন্সিল ফর দ্যা কমিউনিটি রিলেশন্সের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি কুয়েতে থাকাকালে কুয়েতে বাংলাদেশ এসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলাদেশ-ব্রিটিশ চেম্বার অব কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা ডাইরেক্টর জেনারেল হন। একই খ্রিস্টাব্দে যুক্তরাজ্যের গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের যুগ্মআহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হন।
তিনি বাংলা, ইংরেজি ও আরবি এই তিনটি ভাষায় খুবই পারদর্শী। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ট্রাফালগার স্কোয়ারের বিশাল গণজমায়েতে উদ্দীপনাময়ী বক্তৃতা করেন। ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে একই স্থানে কুয়েতমুক্ত করার আন্দোলন চলাকালে অনুষ্ঠিত সভায় তাঁর বক্তৃতা বিরাট আবেদন ও সাড়া জাগায় মানুষের মনে। লন্ডনের স্কুল অব ইকনোমিক্সে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের উপর অক্সফোর্ডের নাফিল্ড কলেজে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উপর তাঁর বক্তৃতা সমাজে আলোড়ন সৃষ্টির পাশাপাশি অক্সফোমের অক্সফামের ফান্ডরাইজিং অভিযানেও তাঁর বক্তৃতা বিরাট সহায়তা জোগায়।
রাজনীতির ক্ষেত্রে ট্রেনিং শিক্ষা সম্প্রসারণ এবং উন্নয়নমূলক কাজের দিকে ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল কনজারভেটিভ পার্টিকে তিনি ব্রিটেনের বিশেষ করে পূর্ব লন্ডনের বাঙালি কমিউনিটির স্বার্থ ও অধিকার এবং উন্নয়ন কর্মপ্রচেষ্টার প্রতি আন্তরিকভাবে আরও বেশ আগ্রহী করে তুলছেন। তিনি ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাশীন কনজারভেটিভ পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে টাওয়ার হেমলেটেস বেথেনল গ্রিন অ্যান্ড ব্রো নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে সাড়া জাগান।
কবির চৌধুরী একজন নিরহংকার, সদালাপী, মার্জিত রুচির মানুষ। তিনি নিরলসভাবে কাজ করতে ভালোবাসেন। দক্ষিণ সুরমার শিক্ষা বিস্তারে তাঁর উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তিনি শিক্ষার ক্ষেত্রে দক্ষিণ সুরমার অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাইস্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজে শিক্ষা বিস্তারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি ২০০২ খ্রিস্টাব্দ থেকে দেশে অবস্থান করছেন। দেশে অবস্থানকালীন তিনি প্রথমে শাহজালাল ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করেন। তিনি সিলেটের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির (সাবেক) ভিসির দায়িত্ব পালন করেন। হাফিজ আহমদ মজুমদার ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ও স্কলার্স হোম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যানও তিনি।

দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট গুপ্তরগাঁও হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসা শাখা সুললিত কণ্ঠে কোরআনের ধ্বনিতে মুখরিত পরিবেশ মোহাম্মদ নওয়াব আলী

DSC01850রমজান সিয়াম সাধনার মাস। পাপ থেকে মুক্তি লাভের মাস। এ মাসেই পবিত্র কোরআন শরিফ নাজিল হয়েছিল। পূন্যতায় ভরপুর এ মাসে যত বেশি ইবাদত, তত বেশি কল্যাণ, তত বেশি সাফল্য, ততবেশি পরজাগতিক মুক্তির পথ সুগম করা। অন্য মাসের চেয়ে রমজানে প্রতিটি সৎকাজে সত্তর গুণ ছওয়াব পাওয়া যায়।
পবিত্র কোরআন নাজিলের মাস মাহে রমজানে সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ বিদেশেও সহি শুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করে দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট। দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন পীরে কামিল আল্লামা হযরত মাওলানা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী ১৯৫০ সাল থেকে এ অনবদ্য সহি শুদ্ধ কোরআন তেলাওয়ের সুযোগ করে দেন। যা দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে এবং সহি শুদ্ধ কোরআন তেলাওয়াতের ক্বারিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ মহান ব্যক্তিত্ব ফুলতলী সাহেব কিবলা আমাদের মাঝ থেকে ২০০৮ সালের ১৫ জানুয়ারি বুধবার পরকালে চলে গেছেন। কিন্তু তাঁর প্রতিষ্ঠিত দারুল ক্বিরাতের বাগানের সুভাসে দিন দিন নতুন নতুন এলাকা মুখরিত হচ্ছে। মানুষ আলোকিত হচ্ছে কোরআনের আলোয়।
দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্টের অসংখ্য শাখার মধ্যে গুপ্তরগঁও হাফিজিয়া দাখিল মাদ্রাসা একটি শাখা। যা যাত্রা করে ২০০১ সালে। শুরুর বৎসরে জামাতে ছুরা থেকে জামাতে ছালিছ পর্যন্ত পাঠ দান শুরু হয়। ২০০২ সালে পাঠ দান বৃদ্ধি পায় জামাতে রাবে পর্যন্ত এবং ২০১১ সাল থেকে জামাতে খামিছ পর্যন্ত পড়ানো হচ্ছে। পরবর্তী বছর থেকে মহিলা জামাতে ছাদিছ পর্যন্ত অর্থাৎ একজন পূর্ণাঙ্গ ক্বারি হতে যতটুকু ইলিম দরকার ততটুকু এ কেন্দ্রে পাঠ দান করা হচ্ছে। এবারের দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট গুপ্তরগাঁও শাখায় জামাতে ছুরায় ক ও খ শাখায় ২২৭ জন, জামাতে আউয়ালে ৭০ জন, জামাতে ছানীতে ৪০ জন, জামাতে ছালিছে ১০ জন, জামাতে রাবে ১৫ জন, জামাতে খামিছে ৩২ ও মহিলা ছালিছ জামাতে ১০ জন প্রশিক্ষণার্থী রয়েছেন।
রমজান মাস ছাড়া গুপ্তরগাঁও হাফিজিয়া মাদ্রাসা শাখায় সাপ্তাহিক ক্বিরাত প্রশিক্ষণ চলে প্রতি শুক্রবার। সেখানে জামাতে সুরা থেকে জামাতে রাবে পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এ শাখায় প্রধান ক্বারীর দায়িত্ব পালন করছেন ক্বারী আনছার আলী। অত্র শাখায় বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন নাজিম- ক্বারী হাফিজ আব্দুর রহিম, প্রধান ক্বারী আনছার আলী, ক্বারী আব্দুল হান্নান, ক্বারী জিবলুল ইসলাম, ক্বারী ফখরুল ইসলাম, ক্বারী জামিল আহমদ, ক্বারী রজব আলী, ক্বারী আব্দুল গনি, ক্বারী রাকিব আলী, ক্বারী সৈয়দ ফখরুল ইসলাম, ক্বারী মিছবাহ উদ্দিন ও ক্বারী ছালেহ আহমদ।
বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছেন আব্দুল ওয়াহিদ, সহসভাপতি সামছু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ক্বারী আব্দুর রহিম, সহসাধারণ সম্পাদক ইউনুছ আহমদ, কোষাধ্যক্ষ মো. ছোয়াব আলী, সদস্য আব্দুল করিম, সেলিম আহমদ, ইলিয়াছ আলী, সোহেল আহমদ, আজাদ মিয়া ও আব্দুল হামিদ।
প্রতি বছরই এ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। কোরআনের আয়াতে পরিবেশ মুখরিত হচ্ছে। মানুষ শ্রবণ করছেন কোরআনে সুললিত ধ্বনি।

Developed by: