ড. মাহবুব উল্লাহর ওপর হামলা

Mahbubঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহর ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।গতকাল শনিবার দুপুর একটায় সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে বিএনপি নেতা ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদের একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে তার ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মাহবুব উল্লাহ অডিটোরিয়াম থেকে বের হওয়ার পরপরই আট থেকে ১০ জন অতর্কিতে হামলা করে। তারা মাহবুব উল্লাহকে কিলঘুষি দেয় এবং তার শার্ট ছিড়ে ফেলে। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
আহত ড. মাহবুব উল্লাহ জানিয়েছেন, তার চোখে আঘাত লেগেছে। পরে সেখান থেকে তিনি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অ্যাবের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

সেখানে মাহবুবউল্লাহ তার ওপর হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি করেন।

মাহবুবউল্লাহ বলেন, “আমার জানামতে কোনো শত্রু নাই আমার। আমি সাধারণত সভা-সেমিনারে কাউকে আক্রমণ করে কোনো বক্তব্য দিই না। সত্য ও তথ্যনির্ভর কথাগুলোই বলার চেষ্টা করি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের মতো স্থানে হামলার ঘটনার পর বুঝতে পারছি, আর এই দেশে কোনো সভ্য মানুষের পক্ষে বসবাস করা সম্ভব নয়।” তিনি বলেন, “আমি এই হামলার বিচার চাই।  যারা হামলার জন্য দায়ী তাদের শাস্তির দাবি করছি।”

সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে বিএনপির নেতা ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের লেখা ‘বাংলাদেশ: ইমার্জেন্সি অ্যান্ড দ্য আফটারমাথ: ২০০৭-২০০৮’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মাহবুবউল্লাহ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আরো অনেকের সঙ্গে মাহবুবউল্লাহ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান শেষে মিলনায়তনের বাইরে যাওয়ার পর অজ্ঞাতপরিচয় তিন যুবক তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। তাকে কিলঘুষি ও লাথি মেরে মেঝেতে ফেলে দেয়। এতে তার পোশাক ছিড়ে যায়। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

হামলাকারীরা চলে যাওয়ার পর বিধ্বস্ত অবস্থায় ড. মাহবুবউল্লাহ যখন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে যান, তখন খালেদা জিয়া অ্যাবের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তাকে ওই হামলার কথা জানানোর পর তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানান এবং অবিলম্বে দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতারের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

খালেদা জিয়া আরো বলেন,  “এই হলো দেশের অবস্থা। তিনি (মাহবুব) একজন শিক্ষক মানুষ। সুপ্রিম কোর্টের মতো স্থানে তার ওপর হামলার ঘটনা প্রমাণ করে দেশে কোনো মানুষ নিরাপদ নয়। এর দায়িত্ব শেখ হাসিনাকে নিতে হবে, অন্যথায় তাকে (শেখ হাসিনা) গদি ছাড়তে হবে।”

খালেদা আরো বলেন, “হামলাকারীদের গ্রেফতার করা না হলে বুঝতে হবে, শেখ হাসিনার নির্দেশে এই ধরনের হামলা হচ্ছে।”

এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে মাহবুবউল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানান।

তিনি বলেন, “বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের পর জোর করে ক্ষমতা দখলে রেখে বিরোধী মতের বুদ্ধিজীবী, কলামিস্ট, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও শিক্ষাবিদদের ওপর দলন-পীড়ন শুরু করেছে।  ড. মাহবুবউল্লাহর ওপর হামলা চালিয়ে তাকে নির্যাতনের মধ্য দিয়ে সরকারের বাকশালি চরিত্রের প্রকৃত স্বরূপ আরো একবার উন্মোচিত হলো।”

Developed by: