১১ বছরেও বিচার হয়নি আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যার

আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে আওয়ামী লীগের জনসভায় জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত তিনি। তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ওই হামলায় আরো নিহত হন তার ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী।

ঘটনার পর হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। এ দুটি মামলার বিচার কাজ ১১ বছরেও শেষ হয়নি। আলোচিত এ মামলায় ৩২ আসামির মধ্যে ১৪ জন কারাগারে, ৮ জন জামিনে এবং ১০ জন পলাতক রয়েছেন।

নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে তৃতীয় দফা সম্পূরক চাজশিট দেওয়ার পর মামলাটি হবিগঞ্জ থেকে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। কিন্তু আসামি ও স্বাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে মামলাটির ১৩৫ কার্যদিবস অতিবাহিত হওয়ায় সিলেটে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষ। গত ৬ জানুয়ারি আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ জানান, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি ১৩৫ কার্যদিবস অতিবাহিত হওয়ায় আইন মন্ত্রনালয়ে সময় বর্ধিত করার আবেদন করা হয়েছে।

সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার কর বলেন, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নানা কারণে মামলাটির ১৩৫ কার্যদিবস অতিবাহিত হয়েছে। ফলে আইনী জটিলতা দেখা দিয়েছে। তাই মামলার সময় বাড়ানোর জন্য আইন মন্ত্রনালয়ে সময় বর্ধিত করার আবেদন করেছি আমরা। বিষয়টি আদালতকে অবগত করা হয়েছে। আইন মন্ত্রনালয় থেকে সময় বাড়ানো হলে মামলাটি আবারো ট্রাইব্যুনালে কার্যক্রম শুরু হবে। অন্যথায় হবিগঞ্জ আদালতে মামলা ফেরত যাবে। মামলার অপর অংশ হবিগঞ্জ আদালতে বিচারাধীন।

আলোচিত কিবরিয়া হত্যা মামলায় চার্জশিটভূক্ত আসামিদের মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছ, হরকাতুল জিহাদ প্রধান মুফতি আবদুল হান্নান, দেলওয়ার হোসেন রিপন, বদরুল আলম, মিজানুর রহমান, হাফেজ নাঈম, মুহিবুল্লাহ, শরীফ শাহেদুল আলম, মুফতি মঈন উদ্দিন, আবদুল মাজেদ ভাট, শেখ মাওলানা আবদুস সালাম ও শেখ ফরিদ কারাগারে রয়েছেন। এছাড়া এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরীসহ ১০ আসামি পলাতক রয়েছেন।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) আবদুল আহাদ চৌধুরী জানান, আলোচিত এ মামলায় মোট ১৭১ জন স্বাক্ষী রয়েছেন। গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার বাদীর স্বাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে এ মামলার স্বাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরই মধ্যে আসামি ও স্বাক্ষী অনুপস্থিত থাকার কারণে স্বাক্ষ্যগ্রহণ ১৬ বার পিছিয়েছে। এ পর্যন্ত ১৩ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।

এর আগে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এমএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জগঠনের তারিখ ২১ জুন, ৬, ১৪ ও ২৩ জুলাই এবং ৩, ১০, ১৮, ২৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর মোট নয়বার পেছানো হয়। গত ১৩ সেপ্টেম্বর মামলার সকল আসামির উপস্থিতিতে সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান ৩২ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জগঠন করেন।–মৃদুভাষণ

Developed by: