বিভাগ: খেলাধুলা

আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে বিদ্রূপ ভারতেও

1426789517গতকাল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে রুবেলের বলে ভারতের সেট হওয়া ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা আউট হবার পরেও ‘নো-বল’ এর সিদ্ধান্ত দেয়ায় পাকিস্তানি আম্পায়ার আলীম দারের সমালোচনায় সরব হয়েছে বিশ্বমিডিয়া ও ক্রিকেট বোদ্ধারা। মজার ব্যাপার হলো, আম্পায়ারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও বিদ্রুপ প্রকাশ করেছে এমনকি ভারতের মিডিয়া, সাধারণ মানুষ এবং ক্রিকেট অনুরাগীরাও।
ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক রিপোর্টে সেদেশের জয়ের কারণ হিসেবে কয়েকটি বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো – ভারতের টস জয়, রিভিউর আবেদনে রাইনাকে ‘নট আউট’ দেয়া, ভুল বোঝাবুঝির কারণে ইমরুল কায়েসের রান আউট, সৌভাগ্যক্রমে মাহমুদুল্লাহ’র ‘ছক্কা’ হয়ে যাওয়া বলটি ক্যাচ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। তবে ম্যাচ জয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে রোহিতকে বাঁচিয়ে দেয়া আলীম দারের ‘উদারতা’কে। ভারতের ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি, জি নিউজ, দ্য হিন্দুসহ ছোটবড় প্রায় সমস্ত মিডিয়া রোহিতের সেঞ্চুরি ‘উদযাপন করার মতো নয়’ বলে স্বীকার করেছে। কারণ হিসেবে সবাই বলেছে এই সেঞ্চুরি এসেছে আম্পায়ারের ভুলে। যে ভুলের খেসারত দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ‘আউট’ হবার পর রোহিত যে বাড়তি রানগুলো করেছেন সেই রানগুলোই বাংলাদেশের মনোবল ভেঙে দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে এসব প্রতিবেদনে।
ভারতের ‘ওয়ানইন্ডিয়া’ নিউজ পোর্টালে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি আম্পায়ার আলীম দারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ক্ষোভের ঝড় শুরু হয়েছে দুনিয়ার প্রায় সবগুলো সোশ্যাল মিডিয়াতে। এটাকে ‘বিতর্কিত সিদ্ধান্ত’ না বলে ওয়ান ইন্ডিয়া বলেছে ‘ভুল সিদ্ধান্ত’। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে তো বটেই, অভিজ্ঞ এই আম্পায়ার তার জীবনের সবচে বাজে সিদ্ধান্তগুলোর একটি দিয়ে বাংলাদেশের পরাজয়ে বড় ভূমিকা রেখে অগণিত ক্রিকেটপ্রেমীর মনে ক্ষোভের সঞ্চার করেছেন। কারণ, তিনি অত কাছে থেকে যে বলটিকে ‘নো’ বল বানিয়ে রোহিতকে বাঁচিয়ে দিলেন, গ্যালারি থেকেও স্পষ্ট বোঝা গেছে ওটা রোহিতের উরুতে আঘাত করত; কোমরের উপর নয়।
অপরদিকে, ইন্ডিয়া ডটকম লিখেছে আম্পায়ার আলীম দারের ভয়ানক বাজে আম্পায়ারিং বাংলাদেশি ক্রিকেট দর্শকদের চরম ক্ষুব্ধ এবং হতাশ করেছে। রুবেলের একটা নিশ্চিত উইকেট কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশের কাছ থেকে ম্যাচ ‘কেড়ে নেয়ার’ অভিযোগও এড়াতে পারছেন না তিনি।
অন্যদিকে, ভারতের ক্রিকেট নিউজ পোর্টাল ক্রিকেটকান্ট্রি ডটকম লিখেছে রোহিত আউট হয়ে যাবার পরেও আম্পায়ারের বাজে সিদ্ধান্তে তিনি জীবন পেয়ে বাংলাদেশকে তুলোধুনা করেন। রোহিতের ৯০ এর পরের রানগুলো ‘করুণার দান’ বলে মনে করা হচ্ছে, যা বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়ায় ভূমিকা পালন করেছে। এতে আরো লেখা হয়, আম্পায়াররা একটু ধীরে সুস্থ্যে সিদ্ধান্ত নিলে কি অমন ক্ষতি হতো! নকআউট পর্বের মতো জীবন-মরণ ম্যাচে এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো আম্পায়াররা পরস্পরের সাথে আলাপ-আলোচনা করে নিয়ে থাকেন। তারাও সিদ্ধান্ত না নিতে পারলে উপরে (থার্ড আম্পায়ারের কাছে) রেফার করে দেন। কিন্তু মাঠে থাকা দুই আম্পায়ার মিলে যা করেছেন তাতে ক্রিকেটের শুভাকাঙ্খী যে কাউকে বেদনাহত করবে।
কেবল ভারতের মিডিয়া নয়, দেশটিতে ক্রিকেটের মঙ্গলকামী সাধারণ মানুষও আম্পায়ের এই বাজে সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেয়নি। দিল্লির প্রখ্যাত সাংবাদিক এবং লেখক রাজদ্বীপ সারদেশাই তার টুইটার অ্যাকাউন্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, কি আর বলব -‘আলীম দার জিন্দাবাদ’! চৌহান নামের এক ক্রিকেট দর্শক লিখেছেন, আলীম দার ‘সু-প্রতিবেশি সুলভ’ আচরণ করেছেন ভারতের আরেক প্রতিবেশিকে (বাংলাদেশকে) বিশ্বকাপ থেকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়ার জন্য!

টুইটারে জোসেফ নামের আরেক ভারতীয় লিখেছেন, রোহিত শর্মার ক্রিকেট মেধা নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আম্পায়ারের বাজে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ করে নিজেই সাজঘরে ফিরে যেতে পারতেন। আর যখন গেলেন না তখন, সেঞ্চুরি করার পর গ্যালারির দর্শকদের দিকে ব্যাট না উচিয়ে সেটি আলীম দারের দিকেই তোলা উচিত ছিল!

বাংলাদেশকে অপমান করে বিজ্ঞাপন বানালো ভারতীয় ক্রিকেট দলের সমর্থকরা!

বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ- ভারত ম্যাচ নিয়ে নানা ধরনের বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে মিডিয়ায়। ভারতের নামী ক্রিকেটাররা বাংলাদেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সমীহের সঙ্গে দেখছেন বাংলাদেশ দলকে। আবার অনেকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার চেষ্টাও করছেন বাংলাদেশকে। এবার বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করছে দেশটির একটি বিজ্ঞাপন। বাংলাদেশ-ভারত কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ নিয়ে মওকা মওকা নামে একটি বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই বিজ্ঞাপনে- বুকে ইন্ডিয়া লেখা জার্সি পরা এক ছেলে কলিংবেলের আওয়াজে বাসার দরজা খোলে।
ছেলেটি দরজা খুলে দেখে বুকে বাংলাদেশ লেখা জার্সি পরে একটি ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেটির হাতে পূজার ফুল ও প্রসাদ। তারপর বুকে ইন্ডিয়া লেখা ছেলেটি তার ঘরের দেওয়ালের দিকে আঙ্গুল দিয়ে নির্দেশ করে, সেখানে একটি বিশ্বমানচিত্র আছে যেখানে ভারতের পাশে বাংলাদেশকে দেখাচ্ছে এবং পাশে লেখা: 1971, India created Bangladesh অর্থাৎ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে ইন্ডিয়া তৈরি/ স্বাধীন করেছে।
এটা দেখার পর বুকে বাংলাদেশ লেখা ছেলেটা ইন্ডিয়ার পায়ে ফুল দিয়ে প্রণাম করে চলে যায়। মূলত বাংলাদেশ বনাম ভারতের কোয়ার্টার ফাইনালের আগে বাংলাদেশকে অপমানিত করার জন্যই এই বিজ্ঞাপন বানিয়ে ইউটিউবে ছাড়া হয়েছে। আর এ নিয়েই তোলপাড় শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। টাইগার সমর্থকরা কিছুতেই মানতে পারছে এই অপমানজনক বিজ্ঞাপন। এই বিজ্ঞাপন কারা তৈরি করেছে তা নিয়েও চলছে তর্ক-বিতর্ক। বিজ্ঞাপনটি দেখে বোঝা যায়, কোনো ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোনো দুষ্ট সমর্থক কাজটি করেছেন। তবে যেই কাজটি করে থাকুক, বিজ্ঞাপনটির অপমানজনক বক্তব্য নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় বইছে সোশাল মিডিয়ায়।

নিউজিল্যান্ডকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ

এ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স নিউজিল্যান্ডের। সেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আজ হ্যামিল্টনে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সও হলো বলার মতোই।

জিততে পারলে হয়তো প্রাপ্তির ষোলোকলা পূর্ণ হতো। তবে ৩ উইকটে হারের পরও বাংলাদেশের প্রাপ্তি নেহাত মন্দ নয়। নিউজিল্যান্ডকে কাঁপিয়ে দেওয়ার অভিজ্ঞতাটাও বলতে হবে দারুণই।

২৮৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই কিউইদের ছন্দপতন। সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে ৩৩ রানেই ২ উইকেটের পতন। তৃতীয় উইকেটে কিউইদের কক্ষপথে ফেরায় মার্টিন গাপটিল ও রস টেলরের জুটি। এ জুটিতে আসে সর্বোচ্চ ১৩১ রান। জুটি ভাঙেন সাকিব।

বাংলাদেশের বাঁহাতি অলরাউন্ডারের ভেলকিতে ফেরার আগে গাপটিলের সংগ্রহ ১০৫ রান। চতুর্থ উইকেটে গ্রান্ট এলিয়টকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়েন টেলর। এ জুটিতে আসে ৪৬ রান। রুবেলের বলে ফেরার আগে এলিয়টের সংগ্রহ ৩৯ রান। এরপর ৫৬ রান করা টেলরকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ফেরান নাসির হোসেন।

এ সময় দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ। ৩ উইকেটে ২১০ রান থেকে ৬ উইকেটে ২৪৭—৩৭ রানে কিউইদের ৩ উইকেট নেই! শেষ দিকে বাংলাদেশের কাছ থেকে জয়টা কেড়ে নেয় মূলত কোরি অ্যান্ডারসনের ২৬ বলে ৩৯, ড্যানিয়েল ভেট্টোরির ১০ বলে ১৬ ও টিম সাউদির ৬ বলে ১২ রানের ছোট ছোট তিনটি ঝোড়ো ইনিংস। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট সাকিবের দখলে। ২ উইকেট নিয়েছেন নাসির আর রুবেলের সংগ্রহে ১টি।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করে মাহমুদউল্লাহর অপরাজিত ১২৮ ও সৌম্য সরকারের ৫১ রান ও শেষ দিকে সাব্বির রহমানের ২৩ বলে ৪০ রানের ঝোড়ো ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৮৮ রান করে বাংলাদেশ।

এ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড যা করতে পারেনি, বাংলাদেশ সেটা করেছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে এই প্রথম কোনো দল খেলেছে পুরো ৫০ ওভার। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশের করা ৭ উইকেটে ২৮৮ রানও কিউইদের বিপক্ষে করা এ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান। নিজেদের ধারটা ভালোই দেখিয়েছে বাংলাদেশ!

এ ম্যাচ হারলেও বাংলাদেশের আক্ষরিক অর্থে কোনো ক্ষতি নেই। তবে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর রসদ জোগানোর দারুণ সুযোগ ছিল। সেটা পুরোপুরি না হলেও একেবারে ব্যর্থও বলা যাবে না বাংলাদেশকে।

১৯ মার্চ মেলবোর্নের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হওয়ার আগে বাংলাদেশের সামনে থাকবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা।

ইংল্যান্ডকে বিদায় দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ

Bangladesh+players+celebrate+their+win+over+England,+knocking+them+out+of+the+Cricket+World+Cup+tournament+in+Adelaideএক ম্যাচ হাতে রেখেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে বিদায় ঘণ্টা বাজল ক্রিকেটের অন্যতম পরাশক্তি ইংল্যান্ডের। সোমবার এক শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ইংলিশদের ১৫ রানে হারিয়েছে টাইগাররা।
রাজনৈতিক আগুনে যখন পুরো দেশের বিবর্ণ অবস্থা, তখন অবিস্মরণীয় এই জয় পুরো দেশটাকে আনন্দের জোয়ারে ভাসালো। ম্যাচ শেষের সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে আনন্দ মিছিল বের হয়েছে।
সোমবার অস্ট্রেলিয়ার এডিলেডে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করে মাহমুদউল্লাহর শতকে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২৭৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
জবাবে ২৬০ রানে অল আউট হয় ইংল্যান্ড। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে ১৫ রানের জয় পায় মাশরাফিরা। রুবেলের অসাধারণ বোলিং ছিল নজর কাড়ার মতো। তিনি নেন ৪ উইকেট। মাশরাফি ও তাসকিন নেন ২টি করে উইকেট। এর আগে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি আর মুশফিকের ৮৯ রানের সুবাদে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৭৫ রান।
এই জয়ের ফলে ৫ ম্যাচ থেকে ৭ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের তৃতীয় স্থানে উঠে গেছে বাংলাদেশ। সমান সংখ্যক ম্যাচ থেকে ৬ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশের নিচে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। আর সমান ম্যাচ থেকে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ২ পয়েন্ট।
২৭৬ রানে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় ৪৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেটের পতন হয় ইংল্যান্ডের। রান আউটের শিকার হন মইন আলী।
দ্বিতীয় উইকেটে ৫৪ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন আলেক্স হেলস ও ইয়ান বেল। হেলসকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মাশরাফি। তার বলে মুশফিকুরের গ্লাভসবন্দি হন হেলস।
দলীয় ১২১ রানের মাথায় জোড়া আঘাত হানেন রুবেল হোসেন। বেল ও মর্গ্যানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভবনা উজ্জ্বল করেন তিনি।
এরপর তাসকিন আহমেদের হাতে ইমরুলের তালুবন্দি হন জেমস টেইলর। ইংল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ১৩২/৫। তবে এখানেই ম্যাচের রহস্য শেষ হয়নি। ধারাবাহিকভাবে ছোট ছোট জুটি গড়তে থাকে ব্রিটিশরা। ১৬৩ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলা ইংল্যান্ডকে খেলায় ফেরান জস বাটলার ও ক্রিস ওকস। ৬১ বলে ৭৫ রানের জুটি গড়েন এই দুই জনে।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করা বাটলারকে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করে বিপজ্জনক জুটি ভাঙেন তাসকিন। ৫২ বলে খেলা বাটলারের ৬৫ রানের ইনিংসটি গড়া ৬টি চার ও ১টি ছক্কায়। অসম্ভব একটি রান নিতে চেয়েছিলেন ক্রিস জর্ডান। রান নেয়া সম্ভব নয় বুঝতে পেরে ফেরার চেষ্টা করেন তিনি। সাকিবের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় তাকে।
শেষ দুই ওভারে ইংল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ১৫ রান। তবে তাদের স্কোর এখান থেকে আর এগোতে দেননি রুবেল হোসেন। দুর্দান্ত বল করে বোর্ড ও এন্ডারসনকে বোল্ড করে দলকে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দেন রুবেল হোসেন। দলের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ চারটি উইকেট নিয়েছেন এই ফাস্ট বোলার।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও মাহমুদুল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের অর্ধশতকে ভর করে ৭ উইকেটে ২৭৫ রান করে বাংলাদেশ। শুরুতেই ইমরুল কায়েস ও তামিম ইকবালকে ফিরিয়ে দেন জেমস অ্যান্ডারসন। কায়েস থার্ড স্লিপে ক্রিস জর্ডানের হাতে ক্যাচ দেন। একবার জীবন পাওয়া তামিম ফিরে যান প্রথম স্লিপে জো রুটের তালুবন্দি হয়ে।
পাঁচ রানের মধ্যে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারানো বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়ে সৌম্য সরকার ও মাহমুদুল্লাহর ব্যাটে। তৃতীয় উইকেটে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা জুটি উপহার দেন এই দুই জনে।
চার দিয়ে শুরু করা সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে ১৮.১ ওভার স্থায়ী জুটি। জর্ডানের বাউন্সার ঠিকভাবে খেলতে না পেরে জস বাটলারের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। পরের ওভারেই আরেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসানের বিদায়ে অস্বস্তিতে পড়ে বাংলাদেশ।
পাঁচ রানের মধ্যে সৌম্য-সাকিবের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়েন মাহমুদুল্লাহ-মুশফিক। বিশ্বকাপের ইতিহাসে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে শতক করা মাহমুদল্লাহ দেখেশুনে খেললেও শুরু থেকেই রানের গতি বাড়িয়ে নেয়ার দিকে মনোযোগী ছিলেন মুশফিকুর। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটি উপহার দেন মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ। পঞ্চম উইকেটে ১৪১ রান করেন এই দুই জনে।
আগের রেকর্ডেও ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচেই ১৩৯ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি। ম্যাচ সেরা হন ১০৩ রান করা মাহমুদুল্লাহ।

প্রচন্ড চাপে ইংল্যান্ড আজ জিতলেই কোয়ার্টারে বাংলাদেশ

Bangladesh‘ডু অর ডাই’ অথবা ‘মাস্ট উইন’-এরকম কথাবার্তা এখন ইংলিশ শিবিরে। আজ তাদের সামনে বাংলাদেশ। পরের ম্যাচ আফগানিস্তানের সাথে। শেষ আটে জায়গা করে নিতে হলে ম্যাচ দুটো জিততেই হবে। অবশ্য নিউজিল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশ জিতলে সে সুযোগও থাকবে না। ইংল্যান্ডের ভরসা জো রুট আর জস বাটলার, যারা ব্যাটিংয়ে ভালো ফর্মে আছেন। অপরদিকে মঈন আলী ধারাবাহিকভাবে ভাল বোলিং করে যাচ্ছেন। কিন্তু চাপের মধ্যে এরা কতটুকু ভাল করবেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন ইংলিশ ক্যাপ্টেন এউন মরগান। তবে এন্ডারসন এবং ব্রোডকে নিয়ে তিনি বোলিংয়ে আশাবাদি। বাংলাদেশ আজ জয়ের জন্যই মাঠে নামবে। তামিম ইকবাল দারুনভাবে তার ব্যাটিং ফর্মে ফিরে এসেছেন। আহত আনামুলের জায়গায় ইমরুল কায়েস দলে যোগ দিয়েছেন। সৌম্য সরকার ওপেন করলে ইমরুল ৩ নম্বরে খেলতে নামবেন। এরপর মাহমুদউল্লাহ, সাকিব, মুশফিক এরা ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের মিডল অর্ডারে মূল ভরসা। মাশরাফি, রুবেল আজ তাদের পেস এটাক দিয়ে ইংলিশ ব্যাটিং লাইন আপ শুরু থেকেই ভেঙে দিতে তৎপর থাকবেন। আর সাকিব, সাব্বিররা তাদের ঘূর্ণিবল দিয়ে হয়তো ধস নামিয়ে দিবেন ইংল্যান্ডের ইনিংস। আরাফাত সানিকেও আজ দলে দেখা যেতে পারে। আজকের ম্যাচে সম্ভাব্য বাংলাদেশ দল: তামিম, ইমরুল/সৌম্য সরকার, মাহমুদ উল্লাহ, মুশফিক, সাকিব, সাব্বির, নাসির, মাশরাফি, রুবেল, তাসকিন এবং আরাফাত সানি। যতই চাপের মধ্যে থাকুক বাংলাদেশকে খেলতে হবে ইংল্যান্ডের মতো একটি শক্ত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। স্কটল্যান্ডকে হারানোর বাড়তি প্রেরণা নিয়ে আজ বাংলাদেশ জিতবে। শুভ কামনা টাইগারস।

রেকর্ড গড়ে টাইগারদের জয়

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১৯ রানের টার্গেটে নেমে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। বিশ্বমঞ্চে লাল-সবুজদের হয়ে রেকর্ড রান তাড়া করে জয় ছিনিয়ে নিল মাশরাফি বাহিনী। ১১ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটের জয় পায় টাইগাররা।

গ্রুপ পর্বের তলানিতে থাকা স্কটিশদের হারিয়ে গ্রুপ পর্ব পেরোনোর রাস্তাটা সুগম করলো টাইগাররা। আর টাইগারদের জয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে ব্যাট হাতে দারুণ ইনিংস খেলেছেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান আর সাব্বির রহমান।

স্কটল্যান্ডের ছুড়ে দেওয়া ৩১৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জোস ড্যাভের বলে উইকেটের পিছনে ক্রুসের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন সৌম্য (২ রান)।

প্রাথমিক ধাক্কা সামলে তামিম-রিয়াদ জুটি ভালোই এগিয়ে নিচ্ছিলেন দলকে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের রেকর্ড জুটি গড়ে ওয়ার্ডল’র বলে বোল্ড হয়ে রিয়াদ সাজঘরে ফিরলেও, ততক্ষণে বাংলাদেশের দলীয় স্কোর ১৪৪। এ দু’জন মিলে ১৩৯ রানের জুটি গড়েন।

এর আগে ৫ চার ও এক ছক্কায় ক্যারিয়ারের ১২তম অর্ধশতক হাঁকান রিয়াদ। শেষ পর্যন্ত শতভাগ স্ট্রাইক রেটে ৬২ বলে ৬২ রান করে সাজঘরে ফেরেন রিয়াদ। আউট হওয়ার আগে ৬টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান রিয়াদ।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২৮তম অর্ধশতক করে বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল ৯৫ রান করে ফেরেন। তামিমের এ ইনিংসটি বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের একক ইনিংস সর্বোচ্চ রান। ড্যাভের বলে এলবি’র ফাঁদে পড়ে আউট হওয়ার আগে তামিম ১০০ বলে ৯টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান।

দলীয় ২০১ রানের মাথায় টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল ফিরে গেলে ব্যাটিংয়ের দায়িত্ব নেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম। ওয়ার্ডল’র বলে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ২০তম অর্ধশতক তোলা মুশফিক বিদায় নেন ব্যক্তিগত ৬০ করে। ৪২ বলের মুশফিকের এ ইনিংসে ছিল ৬টি চার আর দুটি ছয়।

দলকে জয়ের বন্দরে নিতে সাকিব অপরাজিত থাকেন ৫২ রানে। আর সাব্বির ৪২ রান করে সাকিবকে যোগ্য সঙ্গ দেন।

পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় এক উইকেট হারিয়ে ৬২ রান। ২০ ওভার শেষে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় এক উইকেট হারিয়ে ১২৩ রান। আর ৩০ ওভার শেষে টাইগাররা তোলে দুই উইকেটে ১৯১ রান। ৪০ ওভার শেষে টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে টাইগাররা তোলে ২৫২ রান।

টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে স্কটল্যান্ড ৮ উইকেট হারিয়ে তোলে ৩১৮ রান। স্কটিশদের হয়ে ১৫৬ রানের ঝকঝকে একটি ইনিংস খেলেন ওপেনার কোয়েটজার।

অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের বোলিং ব্যর্থতার মাঝেও তাসকিন আহমেদ নেন তিনটি উইকেট। এছাড়া নাসির হোসেন পান দুটি উইকেট। সাকিব আল হাসান, মাশরাফি ও সাব্বির পান একটি করে উইকেট।

কোয়েটজার আউট হওয়ার আগে ১৩৪ বলে ১৭টি চার আর চারটি ছয়ে করেন ১৫৬ রান। এর আগে রুবেল হোসেনের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক পূর্ণ করেন কোয়েটজার। আর এটিই স্কটল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসে বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথম সেঞ্চুরি।

বিশ্বকাপের আসরে ১৬ বছর বছর পর নিউজিল্যান্ডের নেলসনের সেক্সটন ওভালে টাইগাররা আবার মুখোমুখি হয়েছে স্কটল্যান্ডের। ১৯৯৯ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেই এসেছিল বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম জয়।

২০০৬ সালে অবশ্য দ্বিপাক্ষীয় সিরিজে বাংলাদেশ-স্কটল্যান্ড দু’বার মুখোমুখি হয়। দুটি ম্যাচেই সহজ জয় পায় টাইগাররা। ওই সিরিজে খেলা মাশরাফি, সাকিব ও মুশফিক রয়েছেন এবারের বাংলাদেশ শিবিরে।

শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য বিশ্বকাপ ‘শেষ’ আল-আমিনের

বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনের উদ্ধৃতি দিয়ে রোববার ইএসপিএন ক্রিকেইনফো ডান-হাতি পেসার আল-আমিনকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি জানায়।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে এখন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে আছে বাংলাদেশ দল।

আল-আমিনের শৃঙ্খলা ভাঙার বিষয়ে মাহমুদ জানান, রাত দশটার পরে বাইরে থাকতে হলে টিম ম্যানেজমেন্টে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু তা না নিয়েই বৃহস্পতিবার রাতে আল-আমিন দশটার পর ফেরেন। বিষয়টি আইসিসির দুর্নীতি দমন ও নিরাপত্তা ইউনিট (আকসু) তাদের জানায়।

আল-আমিনকে যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফেরত পাঠানোর কথা উল্লেখ করে মাহমুদ জানান, কোনো দুর্নীতির সঙ্গে ২৫ বছর বয়সী এই পেসারের যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলেনি।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষের ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে অভিষেক হয় আল-আমিনের। ১১ ওয়ানডে খেলা এই পেসার এবার ক্যারিয়ারে প্রথম বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায় ছিলেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে খেলেননি এই পেসার।

দাপুটে জয়ে গেরো ছুটল ভারতের দাপুটে জয়ে গেরো ছুটল ভারতের

শিখর ধাওয়ানের দুর্দান্ত শতকে বড় সংগ্রহ গড়ে এবি ডি ভিলিয়ার্সের দলকে ১৩০ রানে হারিয়েছে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বিশ্বকাপে এটাই ভারতের প্রথম জয়।

বিশ্বকাপে এটা দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় পরাজয়। ওয়ানডের সেরা টুর্নামেন্টে এই প্রথম কোনো ম্যাচে শতরানে হারল তারা।

রোববার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ৩০৭ রান করে ভারত। জবাবে ৪০ ওভার ২ বলে ১৭৭ রানে অলআউট হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলার পথে বিরাট কোহলি ও অজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে শতরানের দুটি অসাধারণ জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন ধাওয়ান। আরো বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা জাগালেও শেষ দিকে দ্রুত উইকেট হারানোয় তত রান করতে পারেনি শিরোপাধারী ভারত।

দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের বেহিসেবী ব্যাটিং আর রান অহেতুক রান আউটে ওয়ানডের সেরা টুর্নামেন্টে ভারতের কাছে প্রথম হার এড়াতে পারেনি তারা।

ইনিংসের শুরুতেই মোহাম্মদ সামির বলে বিরাট কোহলির হাতে ধরা পড়েন কুইন্টন ডি কক। ভারতের বিপক্ষে আগের তিন ম্যাচেই শতক করা এই ব্যাটসম্যান এবার ফেরেন মাত্র ৭ রান করে।

উইকেটে থিতু হয়ে বিদায় নেন অন্য উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হাশিম আমলা। দলের সংগ্রহ তখন ২ উইকেটে ৪০ রান।

তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে ৬৮ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন ফাফ দু প্লেসি। তাদের ১২.৩ ওভার স্থায়ী চমৎকার জুটি ভাঙে ডি ভিলিয়ার্সের রান আউটে। দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক।

এক সময়ে ২ উইকেটে ১০৮ রানে পৌছে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা পথ হারায় অধিনায়কের বিদায়ের পরই। মাত্র ৬৯ রান যোগ করতে শেষ ৮ উইকেট হারায় তারা।

অর্ধশতকে পৌছানোর পর বিদায় নেন দু প্লেসি। ৫৫ রান করা এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের ৭১ বলের ইনিংসটি সাজানো ৫টি চারে।

রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বল রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে স্লিপে সুরেশ রায়নার ক্যাচে পরিণত হয়ে বিদায় নেন জেপি ডুমিনি।

ডি ভিলিয়ার্সের মতোই ঝুঁকিপূর্ণ দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন ডেভিড মিলার। তার বিদায়ের মধ্য দিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার হার নিশ্চিত হয়ে যায়।

পরের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় লক্ষ্যর ধারে কাছে পৌঁছাতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়েইন পার্নেল চেষ্টা করলেও দলের সংগ্রহ দুইশ’ পার করতে পারেননি।

৪১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার অফস্পিনার অশ্বিন।

এর আগে শুরুটা ভালো হয়নি ভারতেরও। দলীয় ৯ রানে প্রথম উইকেট হারায় তারা। ডি ভিলিয়ার্সের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে যান রোহিত শর্মা।

দ্বিতীয় উইকেটে কোহলির সঙ্গে ১২৭ রানের জুটি গড়ে দলকে সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে দেন ম্যাচ সেরা ধাওয়ান। ইমরান তাহিরের বলে কোহলি দু প্লেসির তালুবন্দি হলে ভাঙে ২৪.২ ওভার স্থায়ী জুটি।

তৃতীয় উইকেটে রাহানের সঙ্গে ১৬.৩ ওভার স্থায়ী ১২৫ রানের আরেকটি চমৎকার জুটি উপহার দেন ধাওয়ান। পার্নেলের বলে আমলার ক্যাচে পরিণত হয়ে থামে তার ১৩৭ রানের দারুণ ইনিংসটি।

বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটাই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। আগের সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন স্টিফেন ফ্লেমিং। ২০০৩ এর আসরে দলকে জয় এনে দেয়ার পথে ১৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন নিউ জিল্যান্ডের এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

ক্যারিয়ারের সপ্তম শতকে পৌঁছানো ধাওয়ানের ১৪৬ বলের ইনিংসটি ১৬টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজানো ছিল। ব্যক্তিগত ৫৩ রানে পার্নেলের বলেই আমলার হাতে একবার জীবন পেয়েছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

ধাওয়ানের বিদায়ের পর সুরেশ রায়না, রাহানে ও রবিন্দ্র জাদেজার দ্রুত বিদায়ে অস্বস্তিতে পড়ে ভারত। ৭৯ রান করা রাহানের ৬০ বলের আক্রমণাত্মক ইনিংসটি গড়া ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায়।

অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির ১০ বলে খেলা ১৮ রানের আক্রমাত্মক ইনিংসে তিনশ’ পার হয় ভারতের সংগ্রহ।

দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার মর্নে মরকেল ২ উইকেট নেন ৫৯ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৫০ ওভার ৩০৭/৭ (রোহিত ০, ধাওয়ান ১৩৭, কোহলি ৪৬, রাহানে ৭৯, রায়না ৬, ধোনি ১৮, জাদেজা ২, অশ্বিন ৫*, সামি ৪*; মরকেল ২/৫৯, তাহির ১/৪৮, স্টেইন ১/৫৫, পার্নেল ১/৮৫)

দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪০.২ ওভারে ১৭৭ (আমলা ২২, ডি কক ৭, দু প্লেসি ৫৫, ডি ভিলিয়ার্স ৩০, মিলার ২২, ডুমিনি ৬, পার্নেল ১৭*, ফিল্যান্ডার ০, স্টেইন ১, মরকেল ২, তাহির ৮; অশ্বিন ৩/৪১, সামি ২/৩০, মোহিত ২/৩১, জাদেজা ১/৩৭)

ম্যাচ সেরা: শিখর ধাওয়ান।

প্রেমের কথা স্বীকার করলেন আনুশকা, তবে…

ভারতীয় পত্রিকা অ্যাবসোলিউট ইন্ডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রথমবারের মত নিজের নীরবতা ভেঙ্গেছেন আনুশকা। বলেছেন, তাদের ব্যক্তিগত জীবনের ব্যাপারে মানুষের অতিরিক্ত আগ্রহের কারণেই এ বিষয়ে মুখ খোলেননি এতদিন।

“আমি ভিরাটের সঙ্গে প্রেম করছি আর আমাদের এই সম্পর্ককে খুবই সম্মান করি। এ ব্যাপারে আমি কখনও কথা বলি না কারণ আমরা দুজনই বুঝতে পারি না, কতখানি বলা উচিত। আমাদের প্রেমের কথা স্বীকার করার পরপরই আমাকে শত শত প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। আমার মনে হয় এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার আর আমি সব প্রশ্নের উত্তর দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবো না।”

‘পিকে’ খ্যাত এই অভিনেত্রী এই বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, নিজের সম্পর্কের ব্যাপারে সরব হবেন না তিনি। কারণ হিসেবে বললেন, যখন সবাই তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মাতামাতি শুরু করে তখন তার ক্যারিয়ার এবং কাজের প্রতি কারও আগ্রহ থাকে না।

“আমি ব্যক্তিগত জীবনে কী করছি তা নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না, কারণ এর ফলে কেউ অভিনেত্রী হিসেবে আমাকে গুরুত্ব দেবে না। শুধুমাত্র আমার প্রেমের গুজব নিয়েই থাকবে।”

‘পিকে’র পর এখন মুক্তির অপেক্ষায় আছে আনুশকা অভিনীত ও তার প্রযোজনায় প্রথম সিনেমা ‘এনএইচ টেন’। এছাড়াও মুক্তি পাবে বহুল আলোচিত ‘বোম্বে ভেলভেট’।

শুটিং চলছে জোয়া আখতারের সিনেমা ‘দিল ধাড়াকনে দো’র, এতে আনুশকাকে দেখা যাবে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, রানভির সিং, ফারহান আখতার এবং অনিল কাপুরের সঙ্গে।

বিজয়-রাহানের ব্যাটে চালকের আসনে ভারত

অস্ট্রেলিয়ার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে সৃদৃঢ় অবস্থানে রয়েছে সফরকারী ভারত। দিন শেষে মহেন্দ্র সিং ধোনির দলের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩১১ রান। ৮৩ ওভার ব্যাট করে ৩.৭৪ গড়ে রান তুলেছে ভারত। অজিঙ্কা রাহানে ৭৫ ও রোহিত শর্মা ২৬ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন।

ব্রিজবেনের গ্যাবায় টস জিতে সকালে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ধোনি। ধোনির সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করে ব্যাট চালাতে থাকেন শিখর ধাওয়ান ও মুরালি বিজয়। প্রথম ভারতীয় ওপেনার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টানা তিন ইনিংসে হাফ-সেঞ্চুরি করে ইতিহাসে ঢুকে পড়েন বিজয়। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি তিনি, এরপর করেন এক দুরন্ত শতরান। ২১৩ বলে ১৪৪ রান করে থামেন বিজয়। নাথান লায়নের বলে হ্যাডিনের হাতে ধরা পড়েন এ সেঞ্চুরিয়ান।

এদিন টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মধ্যাহ্নভোজের বিরতি পর্যন্ত ভারতের রান ছিল ১ উইকেটে ৮৯। শিখর ধবন ২৪ রানে আউট হয়ে গেলেও অন্য ওপেনার মুরলী বিজয়ের ব্যাটে ভর করে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময় তিনি ৪৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। তার সঙ্গী ছিলেন চেতেশ্বর পূজারা পরে অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করে বিজয়। অ্যালিলেডে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র এক রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্রিসবেনে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে শুরুটা ভালো হলেও লাঞ্চ বিরতির পর পূজারা (১৮) ও কোহলিকে (১৯) হারিয়ে কিছুটা বিপাকে পরে ভারত।

তবে রাহানে ও রোহিত শর্মার অবিচ্ছিন্ন ৫০ রানের জুটিতে আবারো বড় সংগ্রহ গড়ার কক্ষপথে নিয়ে যায় সফরকারীদের।

অস্ট্রেলিয়া বোলারদের মধ্যে অভিষিক্ত জোশ হ্যাজলেউড দুটি, লাথান লায়ন ও মিচেল মার্শ একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, প্রথম টেস্টে অ্যাডিলেডে লড়াই করে হেরেছে সফরকারী দল ভারত। আর অসিরা ফিল হিউজকে স্মরণ করেছে আবেগী এক জয়ে। ফলে চার ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে মাঠে নেমেছে মহেন্দ্র সিং ধোনি বাহিনী।

Developed by: