বিভাগ: খেলাধুলা

বিশ্বরেকর্ড গড়ল চট্টগ্রাম টেস্ট!

72635নানা কারনে এবার আলোচনায় এসেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর। ওয়ানডে সিরিজের পর এখন এই দুই দলের মধ্যে চলছে টেস্ট ম্যাচ। ইংল্যান্ড-বাংলাদেশের মধ্যকার চলমান প্রথম টেস্ট ম্যাচটি একটি অনন্য বিশ্ব রেকর্ড গড়তে সক্ষম হয়েছে। তবে এই রেকর্ড কোন ব্যাট-বল দ্বারা হয়নি। বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড এই টেস্ট ম্যাচটি রেকর্ড গড়েছে রিভিউ নেওয়ার ক্ষেত্রে। এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ১০ বার রিভিউ নিয়ে বিশ্বরেকর্ডের খাতায় নাম লেখালেন মুশফিকুর রহিম-অ্যালিস্টার কুকের দল।  এই ঘটনা ঘটেছে টেস্টের ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে।

বৃহস্পতিবার ম্যাচের প্রথম দিন মঈন আলী সবমিলিয়ে পাঁচবার বেঁচে গেছেন। আর এই রিভিউয়ের কারণেই মঈন আলী পাঁচবার প্রাণ ফিরে পান। প্রথম দিনে নেওয়া সাতটি রিভিউয়ের পাঁচটিই ছিল মঈনের। দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সকালে আরো তিনটি রিভিউ নেওয়া হয়। তবে দূর্ভাগ্য বলতে হবে বাংলাদেশেরেই। কেননা মোট দশটি রিভিউয়ের মাত্র দুটি বাংলাদেশের পক্ষে গেছে।

আজ ম্যাচের তৃতীয় দিন চলছে। তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত ১৬টি রিভিউ নেওয়া হয়েছে। যা ক্রিকেট ইতিহাসে বিশ্বরেকর্ডের মর্জাদা পেয়েছে।

বাংলাদেশের টেস্ট দল ; চমকের আরেকনাম

18479বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচটি যেখানে খেলেছিল বাংলাদেশ, নয় মাস পর সেই চট্টগ্রামেই মেহেদী হাসান মিরাজ পেয়ে যেতে পারেন স্বপ্নের টেস্ট ক্যাপ! বাংলাদেশের সবশেষ যুব দলের অধিনায়ক ডাক পেয়েছেন টেস্ট দলে।

শুধু মিরাজই নয়, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের বাংলাদেশ দলে চমক আর বদলের ছড়াছড়ি। সীমিত ওভারের নিয়মিত মুখ সাব্বির রহমান এবার সুযোগ পেলেন টেস্ট দলে। কার্যকর একটি পেস আক্রমণ গড়ার নিয়ত চেষ্টায় এবার ডাকা হয়েছে পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বিকে। ফিরেছেন আরেক পেসার শফিউল ইসলাম। ফিরেছেন অফস্পিনিং অলরাউন্ডার শুভাগত হোমও। সুযোগ পেয়েছেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান।

সব মিলিয়ে গত বছরের জুলাই-অগাস্টে বাংলাদেশের সবশেষ টেস্ট স্কোয়াড থেকে পরিবর্তন ছয়টি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই দল থেকে এবার নেই মুস্তাফিজুর রহমান, জুবায়ের হোসেন, লিটন দাস, মোহাম্মদ শহীদ, নাসির হোসেন ও রুবেল হোসেন।

১৪ সদস্যের দলে পেসার মাত্র দুজন। একাদশে তিন স্পিনার খেলানোর ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন নির্বাচকরা।

জেনুইন অলরাউন্ডার হলেও মিরাজকে নেওয়া হয়েছে মূলত বোলিং সামর্থ্যের কারণে। সাকিব আল হাসান ও তাইজুল থাকায় তৃতীয় আর কোনো বাঁহাতি স্পিনার চাননি নির্বাচকেরা।

লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন হারিয়েছেন নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের ভরসা। নির্বাচকরা বেছে নিয়েছেন অফ স্পিনার মিরাজ ও শুভাগতকে।

১২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৪১ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। এর মধ্যে গত জাতীয় লিগেই ৫ ম্যাচে নিয়েছিলেন ৩০ উইকেট। ব্যাট হাতে ১৪ ইনিংসে গড় ৪০.৩০, অর্ধশত ৫টি।

শুভাগতকে ফেরানোর পেছনেও নির্বাচকরা জানালেন তার স্পিন সামর্থ্যের কথা। ইংল্যান্ডের বেশ কজন ব্যাটসম্যান বাঁহাতি বলে দুজন অফ স্পিনার রেখেছেন নির্বাচকরা।

কামরুল দেশের ক্রিকেটে খেলছেন বেশ কবছর ধরেই। মোটামুটি পারফর্মও করেছেন। জাতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়ছিলেন বেশ কিছু দিন ধরেই। গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে থাকলেও আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়নি রাব্বির। ৪৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে তার উইকেট ১০৩টি।

শফিউল সবশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৪ সালের নভেম্বরে, চট্টগ্রামেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ২০১০ সালে এই চট্টগ্রামেই অভিষেক। ৮ টেস্ট খেলে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে ফিরেছিলেন ওয়ানডেতে। ফেরার চক্র পূরণ করলেন টেস্ট দলে জায়গা পেয়ে।

গত মৌসুমের শেষ তিন টেস্টে কিপিং গ্লাভস ছেড়ে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবেই খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। কিপিং সামলেছেন লিটন; উইকেটের সামনে-পেছনে খারাপ ছিল না পারফরম্যান্স। কিন্তু জাতীয় লিগের ম্যাচে কাঁধে চোট পাওয়াটাই কাল হলো লিটনের। চোট সারলেও ম্যাচ খেলার মত ফিট নন এখনও। সুযোগ পেলেন নুরুল হাসান।

অনেক দিন থেকেই নুরুলকে মনে করা হচ্ছে দেশের সেরা উইকেটকিপার। জাতীয় দলের বিবেচনায় এর আগে মূলত টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট হিসেবেই ভাবা হয়েছে তাকে। ৬টি টি-টোয়েন্টি খেলে জায়গা হারিয়েছেন দলে। তবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও রেকর্ড তার যথেষ্টই উজ্জ্বল। ৪৯টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে করেছেন ৫টি সেঞ্চুরি, ব্যাটিং গড় ৪১.৮১। সপ্তাহখানেক আগেই জাতীয় লিগে করেছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি।

ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দেওয়ার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচেও রান পেয়েছিলেন শাহরিয়ার নাফীস। তবু খুলতে পারেননি ফেরার দরজা। সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও টিকে গেছেন সৌম্য সরকার।

আগামী বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড।

প্রথম টেস্টের বাংলাদেশ দল: মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, সাব্বির রহমান, সৌম্য সরকার, তাইজুল ইসলাম, শুভাগত হোম চৌধুরী, শফিউল ইসলাম, কামরুল ইসলাম রাব্বি, নুরুল হাসান।

দুই বছর পর সিরিজ হারল বাংলাদেশ

18479২০১৪ সালের নভেম্বরে শুরু হয়েছিল এই জয়যাত্রা। অবশেষে এসে থামল ২০১৬ সালের অক্টোবরে। টানা প্রায় দুই বছর পর ওয়ানডেতে কোনো সিরিজ হারল বাংলাদেশ। ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে হারানো গেলেও পারা গেল না ইংল্যান্ডকে। আজ সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে গেল ৪ উইকেটে।

বাংলাদেশের দেওয়া ২৭৮ রানের লক্ষ্যটা এক রকম অনায়াসে ছুঁয়ে ফেলল ইংল্যান্ড। ৪৭তম ওভারের পঞ্চম বলে ইংল্যান্ড জিতল বটে, তবে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের সময় একবারও মনে হয়নি, ম্যাচটা তারা হারতে পারে। জিততে হলে চট্টগ্রামের এ মাঠে রান তাড়া করে জেতার নতুন রেকর্ড গড়তে হতো। কন্ডিশন এতটাই ইংলিশদের দিকে হাত মেলে দিল, বাংলাদেশের বোলাররা হয়ে গেল নির্বিষ। ইংল্যান্ড রেকর্ড গড়েই জিতল ম্যাচ। প্রতিপক্ষের মাঠে তৃতীয় বৃহত্তম রান তাড়া করা জয় এটি ইংল্যান্ডের জন্য।

বাংলাদেশ আক্ষেপ করতে পারে, ব্যাটিংয়ে আরও ২০-৩০ রান হয়তো বেশি তোলার সুযোগ ছিল। এ নিয়ে আক্ষেপ না হলেও বাংলাদেশের নিশ্চিত আক্ষেপ হবে সিরিজের প্রথম ম্যাচ নিয়ে। ৫২ বলে ৩৯ রান দরকার, হাতে ৬ উইকেট-এই সমীকরণও মেলাতে পারেনি বাংলাদেশ। সিরিজ জয়ের জন্য চট্টগ্রাম পর্যন্ত তো আসতেই হয় না!

তবু আক্ষেপ ঝেড়ে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশকে আজ ব্যাটিংয়েও বেশ উজ্জীবিত মনে হয়েছে। কিন্তু তখনো বোঝা যায়নি, ম্যাচটা এত সহজে জিতে যাবে ইংল্যান্ড! টানা ছয়টি সিরিজ জেতার পর অবশেষে হারের মুখ দেখতে হলো মাশরাফি বিন মুর্তজার দলকে। এই ম্যাচেই মাশরাফি বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট (২১৬টি) নেওয়ার রেকর্ড গড়েছেন। কিন্তু অধিনায়কের বিমর্ষ মুখটাই দেখতে হলো।

টেস্টে মাশরাফি থাকছেন না। কিন্তু তাঁর লড়াইয়ের প্রেরণা খুব দরকার। ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হবে দুই টেস্টের সেই সিরিজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৭/৬ (তামিম ৪৫, ইমরুল ৪৬, সাব্বির ৪৯, মাহমুদউল্লাহ ৬, মুশফিক ৬৭*, সাকিব ৪, নাসির ৪, মোসাদ্দেক ৩৮; রশিদ ৪/৪৩, স্টোকস১/২৪, আলী ১/৪২)

ইংল্যান্ড: ৪৭.৫ ওভারে ২৭৮/৬ (ভিন্স ৩২, বিলিংস ৬২, ডাকেট ৬৩, বেয়ারস্টো ১৫, স্টোকস ৪৭*, বাটলার ২৫, আলী ১, ওকস ২৭*; মাশরাফি ২/৫১, শফিউল ২/৬১, সাকিব ০/৪৫, তাসকিন ০/৪৬, নাসির ১/৫৩, মোসাদ্দেক ১/২২)

ফল: ইংল্যান্ড ৪ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে জয়ী।

‘দুই ম্যাচ’ খেলে সেমিফাইনালে জকোভিচ

30696_Jokovichআরো একবার পুরো ম্যাচ খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলেন নোভাক জকোভিচ। কোয়ার্টার ফাইনালে দুই সেট খেলেই সেমিফাইনালে উঠে গেলেন সার্বিয়ার এ টেনিস তারকা। এবারের ইউএস ওপেনের জকোভিচের প্রতিপক্ষের যেন কী হয়েছে! সেমিফাইনাল পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচের তিনটিতেই তার প্রতিপক্ষ ইনজুরিতে পড়লো। প্রথম রাউন্ডে ঘাম ঝরাতে হয় এক নম্বর এ টেনিস তারকাকে। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে তার প্রতিপক্ষ চেক প্রজাতন্ত্রের জিরি ভেসেলি কোর্টে নামার আগেই ইনজুরিতে পড়েন। ম্যাচ না খেলেই তৃতীয় রাউন্ডে ওঠেন জকোভিচ। তৃতীয় রাউন্ডে গিয়ে আবার প্রায় একই অবস্থায় পড়তে হয় তাকে। এবার তার প্রতিপক্ষ রাশিয়ার মিখাইল ইয়োজনি। জকোভিচের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেটেই ইনজুরিতে পড়ে কোর্ট ছাড়তে হয় তাকে। এতে এখানেই পুরো ম্যাচ খেলা থেকে বঞ্চিত হন জকোভিচ। তবে চতুর্থ রাউন্ডে পুরো ম্যাচ খেলার সুযোগ পান তিনি। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে ফের তার প্রতিপক্ষ পড়লেন ইনজুরিতে। এবার মাত্র দুই সেট খেলতে পারলেন ফরাসি ষেলোয়াড় জো উইলফ্রেড সোঙ্গা। দুই সেটে জকোভিচ এগিয়ে ছিলেন ৬-৩, ৬-২ গেমে। কিন্তু তৃতীয় সেটের শুরুতেই পায়ের গোড়ালির ইনজুরিতে পড়েন সোঙ্গা। তিনি আর লড়াই করতে পারেননি। এতে সেমিফাইনালের টিকিট পেয়ে যান বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জকোভিচ। সেমিফাইনাল ওঠা পর্যন্ত ৫ ম্যাচের মাত্র দু’টিতে তিনি পুরোপুরি খেলতে পারলেন। শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্যে সেমিফাইনালে জকোভিচের প্রতিপক্ষ আরেক ফরাসি খেলোয়াড় গায়েল মনফিলস। তিনি কোয়ার্টার ফাইনালে স্বদেশি খেলোয়াড় লুকাস পওলিকে হারিয়েছেন ৬-৪, ৬-৩, ৬-৩ গেমে। মনফিলস ২০০৮ সালে গ্রান্ড সøাম আসর ফ্রেঞ্চ ওপেনে খেলা শুরু করেন। তবে প্রথমবারের মতো এবার গ্রান্ড সøাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালে উঠলেন তিনি।

ম্যাক্সওয়েল-অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বরেকর্ড

30690_Maxwellসবকিছু যেন পরিকল্পিত। অস্ট্রেলিয়ার মারকুটে ব্যাটসম্যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু ৩৪ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের কখনো ওপেনিংয়ে নামেননি। তবে কী মনে করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে তাকে নিয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে গেলেন অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। আর প্রথমবার ওপেনিংয়ে নেমেই একের পর এ রেকর্ড ভেঙে গেলেন ম্যাক্সওয়েল। ব্যক্তিগত এবং দলীয় বেশ কয়েকটি পুরোনো রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়লেন ম্যাক্সওয়েল ও অস্ট্রেলিয়া। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে শ্রীলঙ্কাকে ৮৫ রানে হারালো সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। পাল্লেকেলেতে টস হেরে আগে ব্যাটে গিয়ে ম্যাক্সওয়েলেন সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়া সংগ্রহ করে ৩ উইকেটে ২৬৩ রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি। এর আগে সর্বোচ্চ ২৬০ রানের রেকর্ড ছিল শ্রীলঙ্কার। ২০০৭ বিশ্বকাপে কেনিয়ার বিপক্ষে তারা এই রেকর্ড গড়ে। তবে এবার সেটা গেলো অস্ট্রেলিয়ার দখলে রেকর্ড গড়া সেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। শুধু আন্তর্জাতিক নয়, ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতেও সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি। ভারতীয় প্রিমিয়ার লীগে লীগে (আইপিএল) ২০১৩ সালে সমান- ২৬৩ রান করে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টির ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রকের্ড প্রায় করে ফেলেছিলেন ম্যাক্সওয়েল। তিনি এদিন ৯ ছক্কা ও ১৪ চারে ৬৫ বলে ১৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন। টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ১৫৬ রানের ইনিংসে অ্যারোন ফিঞ্চের। ২০১৩ সালে সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি এই রেকর্ড গড়েন। এতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের শীর্ষ তিনে তিন অস্ট্রেলীয়। ফিঞ্চ ও ম্যাক্সওয়েলের পর ১২৪* রান নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছেন শেন ওয়াটসন। ম্যাক্সওয়েল এদিন ফিঞ্চকে স্পর্শ করতে না পারলেও অন্য একটি বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। ওপেনিংয়ে নেমে প্রথম ম্যাচেই সর্বোচ্চ রানের ঘটনা এটি। এর আগে প্রথম ওপেনিংয়ে নেমে সর্বোচ্চ ৯৬ রানের রেকর্ড ছিল অস্ট্রেলিয়ার ড্যামিয়েন মার্টিনের। ২০০৬ সাল ব্রিজবেনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেতিনি এই রেকর্ড গড়েন।
অস্ট্রেলিয়ার এই রেকর্ড রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কা ৯ উইকেটে ১৭৮ রান তুলতে পারে। দলীয় মাত্র ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেন দিনেশ চন্ডিমাল। এছাড়া চামারা কাপুগেদারা করেন ২৫ বলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩ রান। ষষ্ঠ উইকেটে তারা সর্বোচ্চ ৪৪ রান যোগ করেন। এতে চলতি বছর টি-টোয়েন্টিতে হার জারি থাকলো শ্রীলঙ্কার। চলতি বছর তারা ১৫ টি-টোয়েন্টির ১২টিই হেরেছে। এক পঞ্জিকা বর্ষে সর্বাধিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হারের ঘটনা এটি। ২০১০ সালে সমান- ১২ ম্যাচ হারের রেকর্ড আছে পাকিস্তানের। তবে পাকিস্তান ওই লজ্জার রেকর্ড গড়ে ১৮ ম্যাচে। শ্রীলঙ্কা-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার দ্বিতীয় ও শেষ ওয়ানডে শুক্রবার।

রেকর্ড স্কোরে ওয়ানডে সিরিজ জয় ইংল্যান্ডের

ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড গড়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে নিশ্চিত করেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। সোমবার ট্রেন্ট ব্রিজে অ্যালেক্স হেলসের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ৪৪৪ রানের রেকর্ড রান সংগ্রহ করে ইংল্যান্ড। জবাবে পাকিস্তান ৪৪ বল বাকি থাকতে ২৭৫ রানে গুটিয়ে গেলে ১৬৯ রানের বিশাল জয় পায় স্বাগতিকরা।

২০০৬ সালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ৯ উইকেটে ৪৪৩ রানের রেকর্ড ছিল সর্বোচ্চ। গত বছর জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা ২ উইকেটে ৪৩৯ রান সংগ্রহ করেছিল যা এতদিন সর্বোচ্চ ছিল।11

রেকর্ড ভাঙা-গড়ার এই ম্যাচে আরেকটি রেকর্ড গড়েছেন ইংলিশ ওপেনার অ্যালেক্স হেলস। তিনি ইংলিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ (১৭১) রানের রেকর্ড এখন তার দখলে। ১৯৯৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এজবাস্টনে রবিন স্মিথ অপরাজিত ১৬৭ রান করেছিলেন। সোমরার রাতে হেলস ১৭১ রান করে হাসান আলীর বলে এলবিডবিস্নউ আউট হওয়ার আগে দ্বিতীয় উইকেটে জো রুটকে (৮৫) নিয়ে ২৪৮ রান তোলেন। দু’জনেই অল্প সময়ের মধ্যে সাজঘরের পথ ধরলে ইংল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৩৮ ওভারে ৩ উইকেটে ২৮৩। কিন্তু জোস বাটলার (অপরাজিত ৯০) ও অধিনায়ক ইয়ন মরগান (অপরাজিত ৫৭) জুটি ৭৬ বলে অপরাজিত ১৬১ রান তুললে ইংল্যান্ড পাহাড় সমান স্কোর দাঁড় করায়। বাটলার ২২ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন যা ইংল্যান্ডের যেকোন ব্যাটসম্যানের জন্য একটি রেকর্ড। ৫১ বল মোকাবিলায় বাটলার সাতটি করে ওভার বাউন্ডারি ও বাউন্ডারি হাঁকান।

১২২ বলে ২২টি বাউন্ডারি ও ৪টি ওভার বাউন্ডারির সহায়তায় হেলসে ১৭১ রানের ইনিংস গড়ে তুলেন।

ওয়ানডে সিরিজের আগে চার ম্যাচের ২-২ ব্যবধানে ড্র হওয়া টেস্ট সিরিজে হেলস মাত্র ১৮.১২ গড়ে ১৪৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন। প্রথম দুটি ওয়ানডে তার রান ছিল যথাক্রমে ৭ ও ১৪। ম্যাচ সেরা এই ব্যাটসম্যান ম্যাচ শেষে বলেন, ‘সিরিজ এখনও সব শেষ হয়নি, শেষ দুটি ম্যাচেও জিততে চাই।’

উচ্ছ্বসিত অধিনায়ক মরগান বলেন, নিজেদের মাঠে হেলস দারুণ একটি ইনিংস খেলেছেন। যেকোন ফর্মেটে ১৭১ রান করা সত্যিই বিশেষ কিছু।

পাকিস্তানি বাঁ-হাতি ফাস্ট বোলার ওয়াহাব রিয়াজ ১০ ওভারে ১১০ রান দিয়ে কোন উইকেট নিতে পারেননি। ওয়ানডেতে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ওভারের তালিকায় এটি দ্বিতীয়। ২০০৬ সালে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ান মিক লুইস ১১৩ রানে কোন উইকেট সংগ্রহ করতে পারেননি। রিয়াজ তার স্বভাবসুলভ নো বল দিয়ে দুটি উইকেট দখল করেছিলেন। ৭২ রানে হেলসকে ও ৭৫ রানে বাটলারকে আউট করলেও নো বলের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়।

টেস্ট র‌্যাংকিংয়ে শীর্ষ স্থানে থাকলেও ওয়ানডে টেবিলে নবম স্থানে থাকা পাকিস্তান কোনভাবেই সীমিত ওভারের ম্যাচের ব্যর্থতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না।

পাক অধিনায়ক বলেন, আমি মনে করি হেলস ও বাটলার অস্বাভাবিক ইনিংস খেলেছেন। এই ধরনের উইকেটে বোলারের সহযোগিতাটা অত্যন্ত জরুরি। আর আমাদের সেটাই হয়নি। ব্যক্তিগত ১১৪ রানে লেগ-স্পিনার ইয়াসির শাহর বলে এক্সট্রা কভারে আজহার আলীর হাতে জীবন ফিরে পেয়েছিলেন হেলস। পরের বলেই হেলস শাহকে বাউন্ডারির ওপারে উড়িয়ে মারেন।

ইংল্যান্ডের বিশাল রানের নিচে চাপা পড়া পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা প্রথম থেকেই বাধ্য হয়েই আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করে। কিন্তু এই কৌশল কার্যত কোন কাজে আসেনি। শারজিল খান ৩০ বলে ৫৮ রান ও শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মোহাম্মদ আমির ২৮ বলে ৫৮ রান করলেও তাতে কোন ফল হয়নি। ওয়ানডেতে ১১ নম্বর ব্যাটসম্যানের হিসেবে আমিরের এটা সর্বোচ্চ স্কোর। আজ বুধবার চতুর্থ ওয়ানডে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর : ইংল্যান্ড ৪৪৪/৩ (হেলস ১৭১, বাটলার ৯০, রুট ৮৫, মরগান ৫৭; আলী ২/৭৪)। পাকিস্তান ৪২.৪ ওভারে ২৭৫ (শারজিল ৫৮, আমির ৫৮, সরফরাজ ৩৮, নেওয়াজ ৩৪, ইয়াসির শাহ ২৬*; ওকস ৪/৪১, আদিল ২/৭৩)।

ম্যান অফ দ্য ম্যাচ : অ্যালেক্স হেলস। বাসস/ওয়েবসাইট।

ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের তালিকা

স্কোর ওভার দল প্রতিপক্ষ ভেন্যু সাল

৪৪৪/৩ ৫০ ইংল্যান্ড-পাকিস্তান নটিংহ্যাম ২০১৬

৪৪৩/৯ ৫০ শ্রীলঙ্কা-নেদারল্যান্ডস অ্যামসটেলভিন ২০০৬

৪৩৯/২ ৫০ দ. আফ্রিকা-উইন্ডিজ জোহানেসবার্গ ২০১৫

৪৩৮/৯ ৪৯.৫ দ. আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া জোহানেসবার্গ ২০০৬

৪৩৮/৪ ৫০ দ. আফ্রিকা-ভারত মুম্বাই ২০১৫

৪৩৪/৪ ৫০ অস্ট্রেলিয়া-দ. আফ্রিকা জোহানেসবার্গ ২০০৬

৪১৮/৫ ৫০ দ. আফ্রিকা জিম্বাবুয়ে পোচেস্ট্রুম ২০০৬

৪১৮/৫ ৫০ ভারত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইন্দোর ২০১১

৪১৭/৬ ৫০ অস্ট্রেলিয়া আফগানিস্তান পার্থ ২০১৫

৪১৪/৭ ৫০ ভারত-শ্রীলঙ্কা রাজকোট ২০০৯

ওয়াসিম আকরামকে টপকালেন ডেল স্টেইন

29682_Stayneকিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামকে টপকালেন ডেল স্টেইন। পাকিস্তানের সাবেক পেসার ওয়াসিম আকরাম ক্যারিয়ারের ১০৪ টেস্টে নেন ৪১৪ উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটে উইকেটের হিসাবে তাকে টপকে গেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার ডেল স্টেইন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দুই ইনিংসে ৮ উইকেট নেন স্টেইন। এতে আকরামকে টপকে তার উইকেট এখন ৪১৫। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তারচেয়ে বেশি উইকেট আছে মাত্র ৬ জন পেসারের। স্টেইনের তোপে পড়ে সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে ২০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে সফরকারী নিউজিল্যান্ড। এতে দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে প্রোটিয়ারা। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়। এই নিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা ৫ টেস্ট সিরিজ জিতলো দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের এই জয় ধারা শুরু হয়েছে ২০০৬ সালের এপ্রিল থেকে। অবশ্য এখন পর্যন্ত আফ্রিকাকে একটি টেস্ট সিরিজও হারাতে পারেনি কিউইরা। ১৫ সিরিজের ১২টা জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর বাকি তিন টেস্ট ড্র হয়েছে। সেঞ্চুরিয়ন টেস্টের প্রথম ইনিসে ৮ উইকেটে ৪৮১ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ২১৪ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। ২৬৭ রানে এগিয়ে থেকে ৭ উইকেটে ১৩২ রানে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে জয়ের জন্য শেষ ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৪০০ রানের। এই রান তাড়া করতে নেমে ১৯৫ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। টেস্টের চতুর্থ দিন শেষ ইনিংসে ব্যাটে নেমে শুরুতেই ডেল স্টেইনের তোপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। মাত্র ৭ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। এরমধ্যে প্রথম ওভারেই টম লাথাম ও মার্টিন গাপটিলকে কোনো রান যোগ করার আগেই ফেরান স্টেইন। এরপর ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে শূন্য রানে ফেরান রস টেইলরকে। শুরুতেই বড় ধাক্কা খাওয়ার পর পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন বিজে ওয়াটলিং ও হেনরি নিকলস। তারা সর্বোচ্চ ৬৮ রান যোগ করেন। নিকলস ৭৬ ও ওয়াটলিং করেন ৩২ রান। কিন্তু এরপর আর কেউ উইকেটে লম্বা সময় দাঁড়াতে পারেনি। এতে চতুর্থ দিনেই জয় নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩ রানে ৫ উইকেট নেন প্রোটিয়া পেসার ডেল স্টেইন।

২৯ গোলের রোমাঞ্চকর এক ফুটবল ম্যাচ

28619_29-goalইংলিশ লীগ কাপে রোমাঞ্চকর এক ফুটবল ম্যাচ দেখলো দর্শকরা। দুই দল মিলে করলো ২৯ গোল! তারপরই ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হলো। লীগ কাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে মুখোমুখি হয় ডার্বি কাউন্টি ও কার্লাইল ইউনাইটেড। ম্যাচটি নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে সমতায় শেষ হয়। ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য টাইব্রেকারের আশ্রয় নেয়া হয়। সেখানে কার্লাইলকে ১৪-১৩ গোলে হারিয়েছে ডার্বি কাউন্টি। রোমাঞ্চকর এ টাইব্রেকারে দুই দলের খেলোয়াড়রা পাঁচটি পেনাল্টি শট মিস করেন। আর শেষ পর্যন্ত ডার্বির জয় নিশ্চিত করেন ১৮ বছর বয়সী খেলোয়াড় টিমি ম্যাক্সের গোলে। ডার্বির হয়ে এই ম্যাচেই তার অভিষেক হয়। নিজের অভিষেকেই নাটকীয় এক জয়ের নায়ক হয়ে গেলেন সেøাভেনিয়ার এ খেলোয়াড়। টাইব্রেকারের আগেও ম্যাচটি ছিল নাটকীয়তায় ভরা। ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল ডার্বি। এমন কি যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিট পর্যন্ত তারা জয় দেখছিল। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার এক মুহূর্ত আগে কার্লাইল ইউনাইটেডকে সমতায় ফেরান মাইক জোন্স। এতে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। কিন্তু সেখানে দুই দলই গোল করতে ব্যর্থ হয়।
এদিন তৃতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছে প্রিমিয়ার লীগে খেলা চেলসি, লিভারপুল ও এভারটন। বারটন আলবিয়নকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ইয়ুর্গেন ক্লপের লিভারপুল। আর ব্রিস্টল রোভার্সকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে অ্যান্তনিও কন্তের চেলসি। এছাড়া ইয়োভিল টাউনকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে এভারটন।

বোল্ট ও ফেলপসের শূন্যতা অপূরণীয়

2_81539৩২টি স্বর্ণপদক জয়ের মাধ্যমে অলিম্পিক গেমসের আবেদনকে অন্যরকম এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন দুই কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদ উসাইন বোল্ট ও মাইকেল ফেলপস। রিও গেমসে তাদের অংশগ্রহণ বিশ্বব্যাপী যে রকম এক আলোড়ন তৈরি করেছিল, তাদের বিদায়ের খবরে আগামীতে এই গেমসে যে শূন্যতার সৃষ্টি করবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।এই দুই সুপার স্টারকে গেমসের ‘আইকন’ খেতাবে ভূষিত করেছেন আইওসি সভাপতি থমাস বাখ। ৩১তম আসরে তারা আলো ছড়ালেও আগামীতে কিভাবে পূর্ণ হবে তাদের ঘাটতি অনেকের কাছে এখন সেটাই একটা বড় প্রশ্ন।এই মুহূর্তে তাদের মতো স্পোর্টিং পাওয়ার বা ক্যারিসমার ধারে-কাছেও নেই কোন অ্যাথলেট। সাঁতার ও অ্যাথলেটিক ট্র্যাক থেকে এই দুই ক্রীড়াবিদ মিলে জয় করেছেন ৩২টি স্বর্ণপদক। সফলতা অর্জনের মাধ্যমে বোল্ট হয়তো নিজেকে বক্সার মোহাম্মদ আলীর মতো ‘কিংবদন্তি’ হওয়ার দাবি করেন। কিন্তু তিনটি অলিম্পিক আসর থেকে ট্র্যাকে নেমে তার মতো ৯টি স্বর্ণপদক ভবিষ্যতে আদৌ কেউ অর্জন করতে পারবে কিনা সেটি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।এদিকে একবার অবসরের ঘোষণা দেয়ার পরও ৩১ বছর বয়সে ফের পুলে ফিরে রিও অলিম্পিকে অংশ নিয়েও ৫টি স্বর্ণপদক জয় করেন মার্কিন সাঁতারু ফেলপস। বাখ শনিবার বলেন, ‘এখানে অংশগ্রহণের আগে থেকেই অনেক অ্যাথলেট নিজেদের আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এখানে এসে বোল্ট ও ফেলপস ‘আইকন’ হিসেবে নিজেদের ওই অবস্থানকে তারা আরও সংহত করেছেন। ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিক থেকে শুরু করে লন্ডন অলিম্পিক এবং সবশেষ রিও অলিম্পিকে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বোল্ট এবং ফেলপস বিপুল সংখ্যক ভক্ত সৃষ্টি করেছেন, সৃষ্টি করেছেন দারুণ এক উন্মাদনা।দুই জনই অলিম্পিকে এসে তাদের দক্ষতাকে পূর্ণতা দিতে সক্ষম হয়েছে। ২০০০ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ফেল্পস সাঁতারের ২০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে অংশ নিয়েছিলেন। আর ২০০৪ সালে বোল্ট ২০০ মিটার স্প্রিন্টে অংশ নিয়ে ৫ম স্থান লাভ করেছিলেন।ফেলপস ২০০৪ সালের এথেন্স অলিম্পিকে অংশ নিয়েই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেন মার্ক স্পিজের এক গেমসে ৭টি স্বর্ণপদক জয়ের রেকর্ডকে। তবে শেষ পর্যন্ত ৬টি সোনা ও একটি ব্রোঞ্জ পদক জয় করেন তিনি। বেইজিং অলিম্পিকে এসেই ফেলপস সেই রেকর্ডটি শেষ পর্যন্ত ভাঙতে সক্ষম হন। ৮টি ইভেন্টের সবকটিতেই স্বর্ণপদক জয় করেন এই মার্কিন সাঁতারু।বার্ড নেস্টে অনুষ্ঠিত ওই আসরে ১০০, ২০০ ও ৪ গুণিতক ১০০ মিটার স্প্রিন্টের সবকটি স্বর্ণপদক জয়ের মাধ্যমে সবার মধ্যে বৈদ্যুতিক শিহরণ জাগাতে সক্ষম হন জ্যামাইকান স্প্রিন্টার উসাইন বোল্ট। বেইজিং থেকে যোগ্যতার প্রদর্শন দিতে শুরু করা এই দুই ক্রীড়াবিদ লন্ডন অলিম্পিকে গিয়ে নিজকে পেঁৗছে দেন কিংবদন্তির আসনে। ২০১২ সালের ওই গেমসে বোল্টের আরেক দফা শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পাশাপাশি ফেলপস তার সংগ্রহশালায় যোগ করেন আরও চারটি অলিম্পিক স্বর্ণ। ওই আসরের পর ফেলপস অলিম্পিক থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণা দিলেও এক বছর পর ফের ওই সিদ্ধান্ত বদল করে ফের পুলে ফিরে আসেন। ক্যারিয়ারের পঞ্চম আসরে এসে তিনি যে কীর্তি প্রদর্শন করলেন তা সবার জন্যই দৃশ্যমান। আরও ৫টি স্বর্ণপদক জয়ের মাধ্যমে ফেলপস অলিম্পিক থেকে সর্বমোট ২৩টি স্বর্ণপদক জয়ের বিরল গৌরব অর্জন করেন। অলিম্পিকে তার সর্বমোট পদক সংখ্যা এখন ২৮টি।আর ঘোষণা দিয়েই অ্যাথলেটিক ট্র্যাকের তিন আকর্ষণীয় ইভেন্টের সবকটিতে স্বর্ণপদক জয়ের অন্যন্য নজির সৃষ্টি করলেন বোল্ট। ১০০, ২০০ ও ৪ গুণিতক ১০০ মিটার ইভেন্টে ফের স্বর্ণপদক জয়ের মাধ্যমে ‘ট্রিপল ট্রিপল’ অর্জনের পর নিজেকে ‘কিংবদন্তি অলিম্পিয়ান’ হিসেবে ঘোষণা করেন বোল্ট। তিনি বলেন, ‘আমি প্রমাণ করেছি যে আমিই সর্বকালের সেরা।’আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সভাপতি সেবাস্তিয়ান কো বোল্টের অবসর গ্রহণের বিষয়ে বলেন, ‘এটা ঠিক যে তার অনুপস্থিতিতে বিশাল এক শূন্যতার সৃষ্টি হবে। তবে সেটি অপূরণীয় নয়।’প্রসঙ্গক্রমে ১৯৭০ এর দশকে বক্সিং কিংবদন্তি মোহাম্মদ আলীর অবসর গ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরপর কিন্তু ফ্লুয়েড মেওয়েদার, মারভিন হ্যাগলার, ম্যানি পাচকুইয়াও এবং রাই লিওনার্ডকে আমরা পেয়েছি। এদিকে নবজাতক সন্তানকে নিয়ে পদক জয় উদযাপনের সময় ফেলপস বলেছেন, ‘আমি যখন ছোট্ট ছিলাম, তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এমন কিছু করব যা এর আগে কেউ করে দেখাতে পারেনি। এখন আমি আমার ক্যারিয়ারের দিকে তাকিয়ে বলতেই পারি ‘আমি সেটি করতে পেরেছি’। বাসস/এএফপি।

ঝলমলে অনুষ্ঠানে রিও অলিম্পিকের সমাপ্তি পরবর্তী আসর ২০২০ সালে টোকিওতে

1_81538বিশ্ব বিখ্যাত সাম্বা, চোখ ধাঁধানো আতশবাজি, মন মাতানো নাচ-গানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে রিও অলিম্পিক গেমসের।ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির সভাপতি টমাস বাখ আনুষ্ঠানিকভাবে রিও অলিম্পিক গেমসের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। সাধারণত যেকোন বড় আসরের সমাপনী অনুষ্ঠানে থাকে বিষাদের ছায়া। কিন্তু আমোদপ্রিয় ব্রাজিলিয়ানরা দেখিয়েছে কীভাবে আনন্দের মাধ্যমেও একটি অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা যায়। ১৬ দিনব্যাপী গেমসের সমাপনী অনুষ্ঠানটি ছিল বলতে গেলে একেবারেই ব্রাজিলের নিজম্ব সংস্কৃতির প্রকাশ।সমাপনী অনুষ্ঠানে ঝড় বৃষ্টি হানা দিলেও অনুষ্ঠান চলেছে একেবারে স্বাভাবিক গতিতেই। সমস্যা জর্জরিত ব্রাজিল নিরাপদ এবং ভালোভাবেই অলিম্পিক আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছে। তাদের এখনও অনেক সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে। কিন্তু তারপরেও তারা বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছে আনন্দ কীভাবে করতে হয়। তাই থমাস বাখ ঘোষণা দিতে পারেন, ‘মার্ভেলাস শহরে অসাধারণ অলিম্পিক’ বলে। এর কিছুক্ষণ পরই তিনি বলেন, ‘আমি ৩১তম অলিম্পিক গেমসের সমাপ্তি ঘোষণা করছি।’ ২০২০ সালের অলিম্পিক হবে জাপানের টোকিও শহরে। তাই সমাপনী অনুষ্ঠানে জাপানের জন্য বরাদ্দ ছিল কিছু সময়। সেই সময়ের মধ্যেই জাপান দেখিয়েছে প্রযুক্তিগত দিক থেকে তারা কতটা উন্নত। প্রযুক্তির ব্যবহার ছিল ব্রাজিলের উদ্বোধনী ও সমাপনীতেও। বিশেষ করে তারা যেভাবে লেজার রশ্মির ব্যবহার দেখিয়েছে তা অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। সমাপনী অনুষ্ঠানটি ছিল একেবারেই ব্রাজিলিয়ান সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রদর্শনী। বিমান আবিষ্কারক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া আলবার্তো স্যান্টোস ডুমন্টের একটি বাণী দেখানো হয়। তার কথা ছিল ‘ব্রাজিলিয়ানরা খালি হাতেই সবকিছু করতে পারে।’ রং বেরংয়ের পালক ও পোশাক পরিহিত পারফরমাররা ব্রাজিলের বিভিন্ন ঐতিহ্যের প্রতিকৃতি সৃষ্টি করেন। যার মধ্যে ক্রাইস্ট রিডিমার থেকে শুরু করে সুগারলফও ছিল। সমাপনী অনুষ্ঠানকে আরও আকর্ষণীয় করে বৃষ্টি। হালকা বৃষ্টির মধ্যে রং বেরংয়ের লাইটিং সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া ব্রিটিশ অ্যাথলেটরা বিশেষ জুতা পরে যান। যাতে বিভিন্ন রংয়ের আলো ছড়ায়। টোগোর তায়কোয়ান্দো খেলোয়াড় পিটা টাউফাটুফুয়ার বিশেষ নৃত্য আনন্দ দেয় উপস্থিত দর্শকদের। এ গেমস ব্রাজিলকে অনেক কিছু দিয়েছে। এতদিন ফুটবলে স্বর্ণপদক ছিল অধরা। তারা প্রথমবারের মতো অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয় করেছে। ইতিহাস গড়েছেন জ্যামাইকান স্প্রিন্টার উসাইন বোল্ট। তিনি প্রথম অ্যাথলেট হিসেবে ট্রিপল ট্রিপল জয় করেছেন। অলিম্পিকের ইতিহাসে একই ইভেন্টে তিনটি করে স্বর্ণপদক জয়ের কৃতিত্ব আর কারুর নেই। এমন কৃতিত্বের পাশাপাশি খারাপ ঘটনাও ঘটেছে। এর মধ্যে আমেরিকান চার সাঁতারুর ছিনতাইয়ের নাটক সৃষ্টি ছিল লজ্জার। ব্রাজিলের একটি পেট্রল পাম্পে ভাঙচুর করার পর নিরাপত্তাকর্মীদের চাপের মুখে জরিমানা দেয়া আমেরিকানরা ছিনতাইয়ের গল্প ছড়ায়। পরে রিও পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে আসল ঘটনা। এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চায় আমেরিকান অলিম্পিক কমিটি ও চার সাঁতারু। তাদের জরিমানাও দিতে হয়। সব মিলিয়ে দক্ষিণ আমেরিকায় অনুষ্ঠিত প্রথম অলিম্পিক সফল বলা চলে। এখন অপেক্ষা টোকিওর। টোকিওর গভর্নর ইউরিকো কোইকে অলিম্পিক পতাকা গ্রহণ করেন রিওর মেয়র এডুয়ার্ডো পায়েস ও আইওসির সভাপতি থমাস বাখের কাছ থেকে। দর্শকদের অনেকেই বলেন, ‘বিদায় রিও, দেখা হবে টোকিওতে।’ ওয়েবসাইট।

Developed by: