মনীষা কৈরালা। আগের বছর ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই সেরে আমেরিকা থেকে বাড়ি ফেরা। আর এবার প্রত্যাবর্তন চেনা পরিসরে। এতদিন ঘনিষ্ঠ মহল থেকে অল্পস্বল্প খবর আসছিল। যদিও খবরের সত্যতা স্বীকার করতে কেউ রাজি ছিলেন না। কিন্তু এবার এক প্রকার পাকাপোক্ত ভাবেই জানা গিয়েছে, সিনেমায় ফিরছেন তিনি। মধ্যিখানে সিনেমা থেকে দীর্ঘ বিশ্রাম। কারণ, অসুস্থতা। রোগবালাইকে হার মানিয়ে একেবারে সুস্থ শরীরেই কাজে ফিরছেন তিনি। হ্যাঁ, মনীষা কৈরালা। যত দূর জানা গিয়েছে, দুইটি ছবির কাজের অফার রয়েছে তাঁর হাতে। তার মধ্যে একটি ছবিতে তিনি অভিনয় করবেন বলে মোটামুটি মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়ে গিয়েছেন তিনি। দুইটি ছবিতেই প্রধান চরিত্রে তিনি থাকছেন কি না, তা জানা না গেলেও, এটা মোটামুটি নিশ্চিত দুটি গল্পেই মনীষার চরিত্রটি হতে চলেছে অন্যতম প্রধান চরিত্র। এবং গল্পের ধারা তাঁকে ঘিরেই আবর্তিত।
মনীষা আজকাল পুরো সময়টাই বাড়িতে চিত্রনাট্য পড়ে কাটাচ্ছেন। নাইলে যোগাসন করছেন। আর বাদ বাকি সময়টা তিনি কাটাচ্ছেন ছবির বিষয়ে আলোচনা করে, বলেছেন মনীষার ম্যানেজার সুব্রত ঘোষ। সুব্রত এমনটাও জানিয়েছেন, যতগুলো চিত্রনাট্য মনীষার হাতে পৌঁছেছে, তার মধ্যে একটি তাঁর খুব পছন্দ হয়েছে, এবং সেটি রাজকুমার সন্তোষীর আগামী ছবির। রাজকুমার সন্তোষীর সঙ্গে মনীষার বেশ কয়েকটা মিটিং হয়েছে। চরিত্রটির বিষয়ে দুজনের আলোচনাও হয়েছে ভালোই। আর সেই কারণেই মনীষা ওজন কমানোর জন্য পাওয়ার যোগার সাহায্য নিচ্ছেন। কারণ চরিত্রটার জন্য ওঁকে অনেকটা ওজন কমাতে হবে, বলেছেন সুব্রত।
ইতিমধ্যেই এই পাওয়ার যোগা করার ছবি মনীষা কৈরালা তুলিয়েছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে মনীষা নিজের ওজন অনেকখানিই কমিয়ে ফেলেছেন। পাওয়ার যোগার পর ফটো সেশন হয়েছে মনীষার। অনেকটাই রোগা হয়ে গিয়েছেন উনি। এটা থেকেই বোঝা যায়, ছবিটার ব্যাপারে উনি বেশ সিরিয়াস। কারণ গল্পটা ওঁর ভালো গেলেছে। সব ঠিকঠাক চললে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে শ্যুটিং শুরু হবে। ছবিতে মনীষা ছাড়াও থাকতে পারেন পঙ্কজ কাপুরও, জানাচ্ছেন সুব্রত। প্রসঙ্গত এর আগে ২০০১ সালে রাজকুমার সন্তোষীর লজ্জা ছবিতে কাজ করেছিলেন মনীষা।
মনীষা নিজেও এটা জানাচ্ছেন যে তিনি রাজকুমার সন্তোষীর দেওয়া চিত্রনাট্যটি পড়েছেন, তবে ছবিতে কাজ করবেন এই মর্মে এখনও সইটা করেননি। ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, মনীষার বলিউডে ফেরা একপ্রকার নিশ্চিত হলেও এখনও পর্যন্ত কোনো ছবির জন্যই সইটা করে ওঠেননি উনি। কারণটা কী? পুরোটাই দাঁড়িয়ে আছে ছবিগুলোতে মনীষার রেমুনারেশন-এর ওপর। সেটা ঠিক হয়ে গেলেই সই-এর কাজটা সেরে ফেলবেন উনি, বলেছেন ওই ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। জানা যাচ্ছে, সন্তোষীর ছবির ক্ষেত্রেও রেমুনারেশনের বিষয়ে কথাবার্তা অনেকটাই এগিয়েছে। দুই পক্ষই মোটামুটি একটা অঙ্কে সম্মতও হয়েছেন। এরপর স্রেফ সই করাটাই যা বাকি৷ অভাবনীয় কিছু না হলে, সে ক্ষেত্রে এটাই হয়তো হবে মড়ীষা কৈরালার কর্কটাক্রান্ত হওয়ার পর, প্রথম ছবি। অর্থাত্ ফিরে আসার ছবি।
রাজকুমার সন্তোষীকে এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, আমি যেমন এখনই জোর দিয়ে বলতে পারব না, উনি ছবিটা করছেন, তেমনই এটাও একবারও বলতে পারব না, উনি ছবিটা করছেন না। খুব শিগগিরই আমরা এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করব। তাঁর কথায় বিষয়টা এখন অ্যাডভান্সড স্টেজ-এ রয়েছে।
ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, গল্পটা একজন চল্লিশোর্ধ্ব নারীকে কেন্দ্র করে। তাঁর সম্পর্কজনিত সমস্যা নিয়েই আবর্তিত হচ্ছে ছবিটি। তবে শুধু তাঁকে নিয়েই ছবিটি নয়। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে থাকবে আরও অনেক নারীচরিত্র ও পুরুষচরিত্র। ছবিতে বেশ কিছু সাহসী দৃশ্যও দেখা যাবে। যেখানে মনীষার চরিত্রটির জন্যও রয়েছে এমনই বেশ কিছু অংশও, যেখানে স্বল্পবাসেও দেখা যেতে পারে তাঁকে। আর সেই কারণেই তিনি ওজন কমাতে এত তত্পর। ওই সূত্র থেকেই জানা গিয়েছে, সামনের মাসে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটাও হয়ে যাবে।
তবে শুধু এই ছবিটিই নয়, এ ছাড়াও নাকি আরও একটি চিত্রনাট্য রয়েছে মনীষার হাতে। এমনও শোনা যাচ্ছে, হাতে রয়েছে একটি বাংলা ছবির অফারও। এর আগে ঋতুপর্ণ ঘোষের খেলা ছবিতে কাজ করেছিলেন তিনি। তবে এসব বিষয়ে এখনই কোনও কথা বলছেন না মনীষা।