বিভাগ: খেলাধুলা

৩০ নম্বর জার্সি পরেই পিএসজিতে খেলবেন মেসি

আর ‘এলএম-১০’ নয়, এবার লিওনেল মেসি গোল করলেই লিখতে হবে ‘এলএম-৩০’। কারণ যাবতীয় প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ৩০ নম্বর জার্সি পরে প্যারিসের মাঠে নেমে পড়লেন লিওনেল মেসি। তবে এবার পিএসজি’র ঘরের ছেলে হয়ে।মেসি সেই ৩০ নম্বর জার্সি বেছে নেওয়ায় অনেকেই নস্টালজিয়ায় ভেসে গেছেন। কারণ ১৭ বছর আগে বার্সার সিনিয়র দলের হয়ে প্রথমবার মাঠে নামার সময় মেসির জার্সি নম্বর ছিল ৩০। দুইটি মৌসুমে ১৯ নম্বর জার্সিও পরেছিলেন। তারপর ২০০৮ সালে ১০ নম্বর জার্সি বেছে নিয়েছিলেন তিনি।মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) দিবাগত রাতে পিএসজি এর পক্ষ হতে ১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করে মেসির পিএসজিতে যোগ দেওয়ার খবরটি নিশ্চিত করা হয়। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা ছিল, পিএসজি * মেসি : প্যারিসের নতুন নায়ক। সেই ভিডিওর একদম শেষে আবার লেখা আছে, ‘লিও মেসি ২০২৩’। অর্থাৎ দুই বছরের চুক্তিতে প্যারিসে যোগ দিয়েছেন মেসি। তবে ফরাসি ক্লাবের তরফে জানানো হয়েছে, তৃতীয় বছরের একটি বিকল্পও আছে।পিএসজি’র ঘরের ছেলে হওয়ার পর মেসি বলেন, পিএসজিতে আমার ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায় শুরু করতে পেরে আমি উচ্ছ্বসিত। ফুটবল নিয়ে আমার যে স্বপ্ন, তার প্রতিটি এই ক্লাবের সঙ্গে মিলে গেছে। আমি জানি, এখানকার খেলোয়াড় এবং সাপোর্ট স্টাফরা কতটা প্রতিভাবান। ক্লাব এবং সমর্থকদের জন্য ভালো কিছু তৈরি করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমি।

বার্সেলোনাকে বিদায় জানিয়ে ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে যোগ দিয়েছেন আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি। দুই বছরের জন্য ক্লাবটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন মেসি। যার ফলে ২০১৭ সালের পর আবারও ফুটবলে দেখা যাবে মেসি-নেইমার জুটি। এবার কেবল জার্সির রং বদলে যাবে। ২০১৭ সালে বার্সা থেকে পিএসজিতে যোগ দিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার।

ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাকেই দায়ী করলেন মাহমুদউল্লাহ

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো টি-২০ সিরিজ জিতে ইতিহাস লিখেছে বাংলাদেশ। স্বপ্ন দেখছিল হোয়াইটওয়াশের। সে স্বপ্ন নিয়েই গতকাল শনিবার টাইগাররা পাঁচ ম্যাচ সিরিজের চতুর্থটি খেলতে নামেন মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বে। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ হয়নি। হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিতে হয়েছে ড্যান ক্রিশ্চিয়ানের আগ্রাসী ১৫ বলে ৩৯ রানের ইনিংসে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ১ ওভারে ক্রিশ্চিয়ান ৫ ছক্কায় ৩০ রান তুললে ৩ উইকেটে ম্যাচ জিতে সিরিজের ব্যবধান ৩-১ করে ম্যাথু ওয়েডের অস্ট্রেলিয়া।

সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে বাংলাদেশ। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ১০৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে মাত্র ১০৪ রান জমার পরও লড়াই করে হেরেছে বাংলাদেশ। কিন্তু রান কম থাকায় শেষ পর্যন্ত ভাগ্য টাইগারদের পক্ষে ছিল না। ইনিংসের ৬ বল বাকি থাকতে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ হারে ৩ উইকেটে।
ম্যাচ শেষে পরাজয়ের কারণ হিসেবে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাকেই দায়ী করলেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনি বলেন, আমরা মুস্তাফিজের দুইটি ওভার রেখে দিয়েছিলাম শেষের জন্য। কারণ আমাদের স্কোরবোর্ডে যথেষ্ট রান ছিল না। কিন্তু ব্যাটসম্যানরা মূলত পারফর্ম করেনি। আজকে এই সিরিজের সবচেয়ে কঠিন উইকেট ছিল। আমরা এখান থেকে তেমন কিছু নিতে পারিনি। ব্যাটিংয়ের সময় যে সুযোগ পেয়েছি, সেটার সুবিধা নিতে পারিনি।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে হয় উইকেট ভালোমতো বুঝতে পারিনি। এই উইকেটে ১২০ রান হলে ভালো হতো। আমরা ১০-১৫ রান কম করেছি। এর মধ্যেও বোলাররা ভালো করেছে। এই রান নিয়েও খেলাটা আমরা ১৯তম ওভারে এনেছি। তবে ব্যাটসম্যানদের আরো সতর্ক ও বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং করতে হবে।

ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

পণ করেই যেন নেমেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ম্যাচে নায়ক, মহানায়ক হবেন তিনি। যদিও ম্যাচসেরা হয়েছেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু ম্যাচের ১৯ নম্বর ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজ অস্ট্রেলিয়াকে ঠেলে দেন খাদের কিনারায়। তার দেখানো পথে বাকি কাজটুকু সারেন মেহেদি হাসান। শেষ ওভারে মেহেদি ১১ রান দিয়ে গোটা বাংলাদেশকে প্রজাপতির রঙিন ডানায় উৎসব করার উপলক্ষ তৈরি করে দেন। ম্যাচের শেষ বল হতেই বাঁধভাঙা উৎসব, উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন মাহমুদুল্লাহ, মেহেদি, মুস্তাফিজ, সাকিবরা। এমন উৎসব, এমন উচ্ছ্বাস শুধু মাহমুদুল্লাহরাই গতকাল এঁকেছেন মিরপুরের সবুজ ক্যানভাসে। দিনের প্রথম সেশনে হ্যাটট্রিক করে নাথান এলিস ‘এলিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ গল্পের নতুন ভার্সন লিখেন মিরপুরে। দ্বিতীয় সেশনে এলিসকে আড়াল করে ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান নতুন করে লিখেন রূপকথার গল্প ‘মুস্তাফিজ ইন মিরপুর’। তার দুঃস্বপ্নের বোলিংয়ে ১০ রানের স্বপ্নের জয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অবিস্মরণীয় সিরিজ জিতে সোনালি হরফে ইতিহাস লিখে বাংলাদেশ। শুধু টি-২০ সিরিজই নয়, যে কোনো ফরম্যাটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টাইগারদের  এটা প্রথম সিরিজ জয়। গতকাল সিরিজ নিশ্চিত করতে শেষ ওভারে জয়ের জন্য সফরকারীদের দরকার ছিল ২২ রান। মেহেদি হাসানের প্রথম বলে ছক্কা, দ্বিতীয় বলে ১ রান, তৃতীয় বলে ডট, চতুর্থ বলে নোসহ ২ রান নেয় সফরকারীরা। এরপর সমীকরণ দাঁড়ায় শেষ তিন বলে ১৩ রান। কিন্তু শেষ ওভারে ১১ রানের বেশি নিতে পারেনি ওয়েড বাহিনী। ১০ রানের স্বপ্নিল জয় তুলে নেয় মাহমুদুল্লাহ বাহিনী। আজ সিরিজের চতুর্থ ম্যাচ খেলবে। সিরিজ নিশ্চিতের পর এখন হোয়াইটওয়াশের স্বপ্ন দেখছে টাইগাররা। এর আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১২ সালে টি-২০ সিরিজ জিতেছিল ৩-০ ব্যবধানে। সব মিলিয়ে এটা বাংলাদেশের সপ্তম সিরিজ জয়। আগের দুই ম্যাচে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। হেরেছিল যথাক্রমে ২৩ রান ও ৫ উইকেটে। গতকালের ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের সিরিজ নিশ্চিতের। বিপরীতে সিরিজে ফেরার ম্যাচ ছিল ম্যাথু ওয়েডের অস্ট্রেলিয়ার। জান বাঁচানোর এমন ম্যাচে একাদশে তিন পরিবর্তন এনে খেলতে নামে সফরকারী ওয়েড বাহিনী। টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামে অস্ট্রেলিয়া এবং অভিষেক হয় এলিসের। ম্যাচে পাঁচ নম্বর বোলার হিসেবে বোলিং করেন। ম্যাচ শেষ করেন ৪-০-৩৪-৩ নিয়ে। প্রথম ৩.৫ ওভারে তিনি ৩৪ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। শেষ তিন বলে স্লোয়ারে একে একে সাজঘরে ফেরান টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ, মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদি হাসানকে। টানা তিন বলে তিন উইকেট নিয়ে মিরপুর স্টেডিয়ামকে রঙিন করেন এলিস। টি-২০ ক্রিকেট ইতিহাসে অভিষেক ম্যাচে হ্যাটট্রিক করার বিরল কীর্তি গড়েন ডানহাতি মিডিয়াম পেসার। সব মিলিয়ে টি-২০ ক্রিকেটে এটা ১৭ নম্বর হ্যাটট্রিক। বাংলাদেশের বিপক্ষে চতুর্থ। বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের তিন হ্যাটট্রিকম্যান ব্রেট লি ২০০৭ সালে, ল্যাসিথ মালিঙ্গা ২০১৭ সালে এবং দীপক চাহার ২০১৯ সালে। অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় বোলার হিসেবে টি-২০ ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক করেন এলিস। বাকি দুজন ব্রেট লি ও অ্যাস্টন অ্যাগার।আগের দুই ম্যাচ টস হেরেছিলেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। ম্যাচ দুটি জিতেছিল বাংলাদেশ। গতকাল টস জিতে ব্যাট করেন প্রথমে। মিচেল স্টার্ক, এন্ড্রু টাই ও জশ ফিলিপকে ছাড়া খেলতে নামা নতুন একাদশ নিয়ে অলআউট ক্রিকেট খেলে ওয়েড বাহিনী। ব্যাট করতে নেমে আগের দুই ম্যাচের মতো গতকালও ব্যর্থ হয় ওপেনিং জুটি। দুই ওপেনার সাজঘরে ফেরেন ২.১ ওভারে ৩ রানের মধ্যে। গোটা সিরিজে পুরোপুরি ব্যর্থ সৌম্য সরকার গতকাল আউট হন মাত্র ২ রানে। তিন ম্যাচে তার রান ২, ০ ও ২। মোট ৪ রান। অথচ জিম্বাবুয়ে সিরিজে করেছিলেন দুটি হাফসেঞ্চুরি। প্রথম ম্যাচে ওপেনিং জুটিতে রান ছিল ৩.৩ ওভারে ১৫ এবং দ্বিতীয়টিতে ২.২ ওভারে ৯ রান। দুই ওপেনার ব্যর্থ হলেও দলকে টেনে নিয়ে যান অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ, ক্যারিয়ারের দেড় দশক পূর্ণ করা সাকিব ও তরুণ আফিফ। সাকিব ২৬ রান করেন ১৭ বলে। মাহমুদুল্লাহ ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফসেঞ্চুরির ইনিংস খেলেন ৫৩ বলে। ৫২ রানের ইনিংসে ছিল ৪টি চার। ধারাবাহিক পারফরমার আফিফ ১৯ রান করেন ১৩ বলে ১ চার ও এক ছক্কায়। টার্গেট ১২৮ রান। আগের দুই ম্যাচে যেখানে সফরকারীদের স্কোর যথাক্রমে ১০৮ ও ১২১, সেখানে ১২৮ রান একটু বেশিই। তারপরও ছন্দে থাকা মার্শের চওড়া ব্যাটে চড়ে লড়াই করেছে সফরকারীরা। কিন্তু মার্শ ৪৭ বলে ছয় চার ও এক ছক্কায় ৫১ রান করে সাজঘরে ফিরলে চাপে পড়ে ওয়েড বাহিনী। সেখান থেকে টেনে নিতে পারেননি আর কোনো অসি ক্রিকেটার। আগের দুই ম্যাচের মতো গতকালও দুর্দান্ত বোলিং করেন ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমান। ১২ বলে যখন অস্ট্রেলিয়ার দরকার ২৩ রান তখন ইনিংসের ১৯ নম্বর ওভারে ১ রান দেন। ৪ ওভারে তিনি রান দেন মাত্র ৯। শেষ ওভারে মেহেদি রান দেন মাত্র ১১। সিরিজ হারের ম্যাচেও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন মার্শ। আগের দুই ম্যাচে তার স্কোর ছিল যথাক্রমে ৪৫ ও ৪৫। গতকাল প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে বেন মাকডারমট করেন ৩৫ রান।

বাঘের থাবায় ক্যাঙ্গারু কুপোকাত

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ের ফলে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিয়ে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো টাইগাররা। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ১৩১ রানের পুঁজি নিয়েও অস্ট্রেলিয়াকে ২৩ রানে হারায় স্বাগতিকরা

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। কিন্তু অধিনায়কের সিদ্ধান্তের প্রতি কেউ সুবিচার করতে পারেনি। দারুণ বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়াকে চেপে ধরে মোস্তাফিজ-সাকিবরা। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২১ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। দলের হয়ে মিশেল মার্শ সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন।

বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজুর রহমান তিনটি, শরিফুল ইসলাম দুটি এবং সাকিব আল হাসান ও শেখ মেহেদী হাসান নেন একটি করে উইকেট নেন।

১২২ রানের লক্ষে খেলতে নেমে শুরুতেই সৌম্য সরকারকে হারায় বাংলাদেশ। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে মিশেল স্টার্কের গতির বলে বোল্ড হন সৌম্য সরকার। সৌম্য আউট হওয়ার ঠিক পরের ওভারে জশ হ্যাজলউডের বলে বোল্ড নাঈম শেখ। ১৬ বলে ২৬ রান করা সাকিব আল হাসান অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন। অ্যাস্টন অ্যাগারের বলে বোল্ড হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আর এডাম জাম্পার বল এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হন মেহেদি হাসান। শেষ পর্যন্ত আফিফ হোসেন ও নুরুল হক সোহান অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।

সাকিবের ঘূর্ণিতে বোল্ড হ্যানরিকসপ্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ১৩১ রানের পুঁজি নিয়েও অস্ট্রেলিয়াকে ২৩ রানে হারায় টাইগাররা। নাসুম আহমেদদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে অজিদের ১০৮ রানে আটকে দেওয়া সম্ভব হয়। টানা দুই ম্যাচ জয়ের ফলে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টিতে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।

অলিম্পিক ফুটবলে আর্জেন্টিনার বিদায়

টোকিও অলিম্পিকের ফুটবল ইভেন্টে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করতে শেষ রাউন্ডের ম্যাচে জিততেই হতো আর্জেন্টিনাকে। তবে সেটা আর করতে পারেনি আলবিসেলেস্তারা। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্পেনের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বিদায় নিয়েছে আর্জেন্টনা। আর গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে স্পেন। ‘সি’ গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ আটে উঠল মিশর।এদিন প্রথমার্ধে গোলশুন্য ব্যবধানে সমতায় ছিল দুই দল। বিরতির পর ৬৬ মিনিটে গোল করে স্পেনকে এগিয়ে দেন মিডফিল্ডার মিকেল মেরিনো। নির্ধারিত সময়ের ৩ মিনিট আগে মিডফিল্ডার টমাস বেলমন্তের গোলে সমতায় ফেরে আর্জেন্টিনা। শেষ দিকে দারুণ খেলেও জয়সূচক গোলের দেখা পায়নি কোপা আমেরিকাজয়ী দেশটি।

গ্রুপে ৩ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন দল হয়ে শেষ আটে উঠল স্পেন। আজই অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ গোলে হারানো মিশর ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা দল হিসেবে শেষ আটে স্পেনের সঙ্গী হলো।আর ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে তৃতীয় হয়ে বিদায় নিল আর্জেন্টিনা। বিদায়ে তাদের সঙ্গী অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৩ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট।

জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ফের বিদেশের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করার কৃতিত্ব দেখাল টাইগাররা

২০ জুলাই – প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ে পাত্তাই পায়নি। দ্বিতীয়টিতে দারুণ লড়াই করেছিল। তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে ২৯৯ রানের বড় লক্ষ্য ছুড়ে দিয়ে জয়ের স্বপ্নই দেখছিল স্বাগতিকরা।

কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। জিম্বাবুয়েকে স্বান্ত্বনার জয়ও পেতে দিল না তামিম ইকবালের দল। হারারেতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বড় লক্ষ্য হেসেখেলেই পাড়ি দিয়েছে বাংলাদেশ, জিতেছে ৫ উইকেট আর ২ ওভার হাতে রেখে।

এই জয়ে ‘মিশন হোয়াইটওয়াশ’ও পূর্ণ করেছে টাইগাররা। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাঠে হারানোর এক যুগ পর আবারও বিদেশের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করার কৃতিত্ব দেখাল তারা।

২৯৯ রানের বড় লক্ষ্য। শুরুটা যেমন ভালো হওয়া চাই, তেমনই দিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর লিটন দাস। প্রথমে দেখেশুনে খেললেও (৬ ওভারে ২৬ রান) পরে আস্তে আস্তে রানের গতি বাড়িয়েছেন এই যুগল।

আরও পড়ুন ::

ওভারপ্রতি ছয়ের ওপর নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। এরই মধ্যে তামিম তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৫২তম হাফসেঞ্চুরি, ৪৬ বলে। কিন্তু তামিমের ফিফটি ছোঁয়া ওভারেই উইকেট হারিয়ে বসেন লিটন।

ওয়েসলে মাদভেরে নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই সাজঘরে ফিরিয়েছেন লিটনকে, তাতে ভাঙে ৮৮ রানের উদ্বোধনী জুটি। সুইপ খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ হন এই ওপেনার। ৩৭ বলে ৩ বাউন্ডারিতে করেন ৩২ রান।

তারপর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৬৯ রানের আরেকটি জুটি তামিমের। সেই জুুটিটি ভেঙেছেন লুক জঙউই। জিম্বাবুইয়ান পেসারের স্লোয়ার এক ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ সাকিব। ৪২ বলে একটি করে চার-ছক্কায় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ব্যাট থেকে আসে ৩০ রান।

৩৪ ওভার শেষে ২ উইকেটে ২০৪ রান ছিল বাংলাদেশের। ৯৬ বলে দরকার ৯৫। পানি পানের বিরতিতে যাওয়ার সময় সহজ জয়ের পথেই ছিল টাইগাররা।

কিন্তু বিরতির পরই জোড়া আঘাত ডোনাল্ড তিরিপানোর। টানা দুই বলে সেঞ্চুরিয়ান তামিম আর অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ফিরিয়ে জিম্বাবুয়েকে লড়াইয়ে ফেরান ডানহাতি এই পেসার।

৯৭ বলে ৮ চার আর ৩ ছক্কায় ১১২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা তামিম উইকেটরক্ষকের ক্যাচ হওয়ার পর প্রায় একইভাবে আউট হন মাহমুদউল্লাহ (০)। হ্যাটট্রিক বল খেলতে উইকেটে আসেন সিরিজে প্রথমবারের মতো একাদশে সুযোগ পাওয়া নুরুল হাসান সোহান।

সোহান অবশ্য ওই বলটিতে একটুও নার্ভাস হননি। বরং বাউন্ডারিতে দূর করেন হ্যাটট্রিকের শঙ্কা। চোখ ধাঁধানো কিছু শট খেলে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন এরপরও।

পঞ্চম উইকেটে মিঠুনের সঙ্গে গড়েন ৫৪ বলে ৬৪ রানের জুটি। যাতে মূল অবদান সোহানেরই (৩৯)। মিঠুন খেলেছেন ভীষণ ধীরগতিতে। একের পর এক শট খেলতে গিয়ে মিস করেছেন। একদমই আত্মবিশ্বাসহীন মনে হচ্ছিল তাকে।

শেষ পর্যন্ত নিজেই যেন নিজের ওপর বিরক্ত হয়ে যান মিঠুন। জিম্বাবুইয়ান স্পিনার মাদভেরেকে বড় শট খেলতে ডাউন দ্য উইকেটে এসেছিলেন, এবারও ঠিকমত ব্যাটে বলে করতে পারেননি। লংঅফে ক্যাচ হয়েছেন চাতারার।

তবে এরপর আর দলকে কোনো বিপদে পড়তে দেননি সোহান-আফিফ। ৩৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বিজয়ীর বেশেই মাঠ ছেড়েছেন তারা। সোহান ৩৯ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৪৫ আর আফিফ হোসেন ধ্রুব ১৭ বলে ৩ চার, এক ছক্কায় ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে ২৯৮ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় জিম্বাবুয়ে। রেগিস চাকাভা ওপেনিংয়ে নেমে ৮৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে দিয়েছেন। তারপরও অনেকটা সময় জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইনআপকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন বাংলাদেশি বোলাররা।

সেই নিয়ন্ত্রণ ছুটে যায় সিকান্দার রাজা আর রায়ান বার্লের এক জুটিতে। ষষ্ঠ উইকেটে ঝড়ো গতিতে ৮০ বলে ১১২ রান যোগ করেন এই যুগল। যাতে ভর করেই প্রায় তিনশোর কাছাকাছি স্কোর দাঁড় করিয়েছে স্বাগতিকরা।

তবে শেষদিকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (৩/৮৭) আর মোস্তাফিজুর রহমানের (৩/৫৭) ঝলকে বেশ কয়েকটি উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। তাতেই ইনিংসের ৩ বল বাকি থাকতে জিম্বাবুয়ে অলআউট হয়েছে ২৯৮ রানে।

হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচটিতে পাঁচ নম্বরে নেমে দলের পক্ষে একমাত্র ফিফটি করেছিলেন রেগিস চাকাভা। দ্বিতীয় ম্যাচে তাকে নামানো হয় তিন নম্বরে। আর আজ প্রমোশন পেয়ে ইনিংস সূচনার দায়িত্বই বর্তায় এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের কাঁধে।

ওপেনিংয়ে নেমে প্রথম ওভারটা দেখেশুনেই খেলেন চাকাভা। তবে সাইফউদ্দিনের করা দ্বিতীয় ওভারে আত্মবিশ্বাসী শটে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। এরপর মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের বিপক্ষেও সাবলীল ব্যাটিং করেন তিনি। যার সুবাদে জিম্বাবুয়ের শুরুটাও হয়েছিল বেশ ভালো। প্রথম ৮ ওভারে কোনো সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ।

মনে হচ্ছিল, প্রায় তিন বছর পর প্রথম উইকেটে ৫০ রানের জুটি গড়তে পারবে জিম্বাবুয়ে। কিন্তু নবম ওভারে আক্রমণে এসে তা আর হতে দেননি সাকিব আল হাসান। বাঁহাতি ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে এনে দেন প্রথম সাফল্য।

শুরু থেকেই ইতিবাচক ব্যাটিং করছিলেন চাকাভা। অপরপ্রান্তে মারুমানি ছিলেন খানিক নড়বড়ে। যার ফায়দাই নিয়েছেন সাকিব। তিনি হালকা ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে সুইপ শটে প্রলুব্ধ করেন মারুমানিকে। আর সেই ফাঁদে পা দিয়ে লেগ বিফোর আউট হয়েছেন জিম্বাবুইয়ান বাঁহাতি ওপেনার।

আউট হওয়ার আগে খেলা ১৯ বলে ৮ রান করতে পেরেছেন মারুমানি। এরপর যখন মনে হচ্ছিল প্রাথমিক চাপ সামাল দিয়ে ফেলেছেন চাকাভা ও টেলর, তখনই আঘাত হানেন মাহমুদউল্লাহ।

দ্বিতীয় উইকেটে ৯ ওভারে চাকাভা-টেলর তুলেন ৪২ রান। টেলরকে (২৮) তামিম ইকবালের ক্যাচ বানিয়ে এই জুটিটি ভাঙেন ক্যারিয়ারের দুইশতম ম্যাচ খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ।

এরপর ডিয়ন মায়ার্সকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন চাকাভা। তৃতীয় উইকেটে তাদের ৭১ রানের জুটিটিও ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। ৩৪ রান করা মায়ার্সকে করেন বোল্ড।

বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ওয়েসলে মাদভেরে (৩)। মোস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ার বুঝতে না পেরে ব্যাট পেতে দিয়ে মিডউইকেটে সাকিবের ক্যাচ হন তিনি।

এর তিন ওভার পর পথের কাঁটা চাকাভাকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে হাসি ফোটান তাসকিন আহমেদ। সেঞ্চুরির কাছাকাছি এসে তাসকিনের দারুণ এক ডেলিভারি ফ্লিক করতে গিয়ে লাইন মিস করে বসেন চাকাভা, ওপরে যায় অফস্ট্যাম্প। ৯১ বলে ৭ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় তিনি তখন ৮৪ রানে।

১৭২ রানে ৫ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে আরও একবার অল্পতেই আটকে যাবে, মনে হচ্ছিল তখন। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে সব হিসেব বদলে দেন রাজা আর বার্ল। চার-ছক্কায় মাঠ মাতিয়ে দলকে এগিয়ে নেন তারা অনেকদূর।

শেষ পর্যন্ত ৪৮তম ওভারে এসে ১২০ রানের জুটিটি ভাঙেন মোস্তাফিজ। কাটার মাস্টারের সুইংয়ে পরাস্ত হয়ে ক্যাচ তুলে দেন ৫৪ বলে ৭ চার আর ১ ছক্কায় ৫৭ রান করা রাজা।

৪৯তম ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন তুলে নেন সফরকারি দলের তিন-তিনটি উইকেট। তাতেই জিম্বাবুয়ের তিনশো ছোঁয়া সম্ভব হয়নি।

ওভারের দ্বিতীয় বলে রায়ান বার্লকে (৪৩ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় ৫৯) ক্যাচ আর তৃতীয় বলে ডোনাল্ড তিরিপানোকে (০) বোল্ড করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন সাইফউদ্দিন। সেটা না হলেও ওভারের শেষ বলে তেন্দাই চাতারাকে (১) বোল্ড করেন এই পেসার। পরের ওভারের তৃতীয় বলে ব্লেসিং মুজারবানিকে (০) বোল্ড করে জিম্বাবুয়েকে তিনশোর আগে আটকান মোস্তাফিজ।

তথ্যসূত্র: জাগো নিউজ

স্বপ্নের ট্রফিটা আর্জেন্টিনার

কত দীর্ঘ রাতের অপেক্ষা, কত হতাশা-আক্ষেপে পোড়া শেষে একটা ট্রফি। আর্জেন্টিনার হাতে একটা ট্রফি। বিশ্বসেরা লিওনেল মেসির হাতে একটা ট্রফি।

১৯৯৩ সালের পর ৭টি ফাইনালে হার। আর্জেন্টিনা জানে ক্ষতটা কতো বড়! একটা ট্রফির জন্য যার বিশ্বসেরার তকমায় ছেদ পড়ে, প্রশ্ন উঠে যায়, সেই লিওনেল মেসি জানেন এই ট্রফিটার মহাত্ম্য কত!

অবশেষে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের বিপক্ষে সেই মারাকানায় এলো চ্যাম্পিয়নের ট্রফি। সেই মারাকানা, যেখানে বিশ্বকাপের ফাইনাল হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিলো মেসিদের।

ম্যাচের একমাত্র গোলটা আনহেল দি মারিয়ার। রদ্রিগো দি পলের পাস থেকে ম্যাচের ২১ মিনিটে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে গোল করেন এই তারকা।

পুরো ম্যাচের সারসংক্ষেপ ওই একটি গোলই। আর ওই এক গোলে ঘুচলো দীর্ঘ ২৮ বছরের আক্ষেপ।

পেরুকে হারিয়ে ফাইনালে ব্রাজিল

ব্রাজিলের আক্রমণভাগ ফর্মে নেই। তাতেও অবশ্য ব্রাজিলের কোপা আমেরিকার ফাইনালে যাওয়া রুখতে পারেনি পেরু। নেইমারের দারুণ নৈপুণ্যে ব্রাজিলকে লিড এনে দেন লুুকাস পাকুয়েতা। সেই লিড ধরে রেখেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল। নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের টানা দ্বিতীয় ফাইনালে ওঠা। গত আসরে পেরুকে হারিয়েই শিরোপা জেতে ব্রাজিল। কোয়ার্টার ফাইনালেও ব্রাজিলের ত্রাতা ছিলেন পাকুয়েতা। তার একমাত্র গোলেই চিলিকে হারিয়েছিল দশ জনের ব্রাজিল।

১৪ বছর পর সম্ভাবনা জেগেছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফাইনালের।

আগামীকাল দ্বিতীয় সেমিতে কলম্বিয়াকে আর্জেন্টিনা হারালেই দেখা মিলবে কাঙ্ক্ষিত দ্বৈরথের। আগামী রোববার মারাকানায় হবে ফাইনাল। কোপা আমেরিকার ফাইনালে শেষবার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মুখোমুখি হয়েছিল ২০০৭ সালে। সেবার ৩-০ গোলে জিতেছিল ব্রাজিল।

বলতে গেলে ব্রাজিলকে একাই টানছেন নেইমার। আসরে ব্রাজিল করেছে ১২ গোল। যার ৫টিতেই অবদান নেইমারের। ২ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট। জিতেছেন তিনটি ম্যাচসেরার পুরস্কার। ২০১৯ কোপা আমেরিকায় শিরোপাজয়ী ব্রাজিল দলে ছিলেন না নেইমার। ইনজুরি ছিটকে দিয়েছিল তাকে। তাই এখনো কোপার শিরোপা জয়ের স্বাদ পাওয়া হয়নি নেইমারের। ২৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের দুর্দান্ত ফর্ম ব্রাজিলকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে দশম কোপা আমেরিকা জয়ের।

রিও ডি জেনিরোর নিলতন সান্তোস স্টেডিয়ামে দুই অর্ধে দুইরকম খেলেছে ব্রাজিল। প্রথম ৪৫ মিনিট দাপুটে খেললেও বিরতির পর মনযোগী হয় লিড ধরে রাখায়। ম্যাচের শুরু থেকেই গোল পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে ব্রাজিল। ২০ মিনিটের মধ্যেই গোলমুখে পাঁচটি শট নেয় সেলেসাওরা। সবগুলোই ছিল লক্ষ্যে। পেরু গোলরক্ষক পেদ্রো গাইয়েসে একাই ঠেকিয়েছেন সব শট। নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছেন তিনটি। গোলবঞ্চিত করেছেন নেইমার, কাসেমিরো ও রিচার্লিসনকে। ব্রাজিল লিড নেয় নেইমার জাদুতে । বামপ্রান্ত দিয়ে দারুণভাবে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন নেইমার। তিন ডিফেন্ডারকে পায়ের কারুকাজে পরাস্ত করে মাইনাস বাড়ান লুকাস পাকুয়েতার উদ্দেশ্যে। অরক্ষিত পাকুয়েতা লক্ষ্যভেদ করতে ভুল করেননি। জাতীয় দলের হয়ে পঞ্চম গোল অলিম্পিক লিঁও মিডফিল্ডারের। ব্রাজিলের জার্সিতে প্রথমবার টানা দুই ম্যাচে গোলের দেখা পেলেন তিনি। আসরে তৃতীয় অ্যাসিস্ট করেন নেইমার। চিলির বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের জয়সূচক গোলটি এসেছিল পাকুয়েতার পা থেকেই।

বিরতির পর খোলস ছেড়ে বেরোয় পেরু। দেশের মাটিতে কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের সর্বশেষ পরাজয় এই পেরুর বিপক্ষেই, তা সেই ১৯৭৫ সালে। দ্বিতীয়ার্ধে পেরু সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনার কাছাকাছি পৌঁছেও গিয়েছিল। পেরুর দারুণ দুটি প্রচেষ্টা থামিয়েছেন ব্রাজিল গোলরক্ষক এডারসন। ব্রাজিলের হয়ে আগের ছয় প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে অরক্ষিত রেখেছিলেন গোলপোস্ট। সপ্তম ম্যাচে দারুণ দুটি সেভে ব্রাজিলের ফাইনাল নিশ্চিতে বড় অবদান ম্যানচেস্টার সিটি গোলরক্ষকের।

উরুগুয়েকে বিদায় করে সেমিফাইনালে কলম্বিয়া

কোপা আমেরিকায় কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার সঙ্গে নির্ধারিত সময়ে গোলশুন্য ড্র করে উরুগুয়ে। কিন্তু টাইব্রেকারে ৪-২ গোলের জয়ে উরুগুয়েকে বিদায় করে সেমিফাইনালে স্থান করে নিয়েছে কলম্বিয়া।

বাংলাদেশ সময় রবিবার ভোরে এ জয় পায় কলম্বিয়া। গোলকিপার ডেভিড ওসপিনা কলম্বিয়ার টাইব্রেকার জয়ের নায়ক। উরুগুয়ের দুটি শট ঠেকিয়ে দেন তিনি। মাতিয়াস ভিনা ও হোসে হিমিনেজকে লক্ষ্যভেদ করতে দেননি তিনি।

ডেভিড ওসপিনা আজকের ম্যাচটি দিয়ে কার্লোস ভালদেরামাকে টপকে কলম্বিয়ার ইতিহাসে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ডও (১১২ ম্যাচ) গড়লেন।

মাঠে দুই দল প্রচুর পাস খেললেও গোলের সুযোগ সেভাবে তৈরি করতে পারেনি। উরুগুয়ে তারকা লুইস সুয়ারেজ প্রথমার্ধে মোটেও ভালো খেলতে পারেননি। বক্সের মধ্যে সহজাত দক্ষতায় গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেননি।

তবে দুই দল যে গোলপোস্ট তাক করে শট নেওয়ার চেষ্টা করেছে। উরুগুয়ে ৭টি শট নিয়ে ৩টি গোলপোস্টে রাখতে পেরেছে। কলম্বিয়ার ৩টি শট গোলপোস্টে রাখতে ৯টি শট নিতে হয়েছে।

বিরতির পর কলম্বিয়া ৫১ শতাংশ সময় বল দখলে রাখে। আর ৪৯ শতাংশ সময় বল দখলে রাখে উরুগুয়ে।

ইত্তেফাক/এএএম

মেসির জাদুতে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা

এক লিওনেল মেসি ছাড়া নাকি আর্জেন্টিনা দলে কিচ্ছু নেই। আর্জেন্টিনার সমালোচকরা বলেন এমন কথা। কথাটা যে একেবারে ভিত্তিহীন তাও কিন্তু না। ইকুয়েডরকে আর্জেন্টিনা হারালো ৩ গোলে, সবগুলোতেই অবদান ওই এক মেসির।

মেসির জাদুতে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনাপ্রথমার্ধ্বে ডি পলকে দিয়ে গোল করিয়েছেন। পাস দিয়েছিলেন নিকো গঞ্জালেসকে। তাকে ঠেকাতে ছুটে আসেন ইকুয়েডর গোলকিপার। বল চলে যায় মেসির পায়ে। চাইলে নিজেই শট নিতে পারতেন। ফাঁকায় দাঁড়ানো দি পলের দিকে বলটা বাড়িয়ে দিলেন ক্ষুদে জাদুকর। ঠান্ডা মাথায় জালে জড়ান দি পল।

শেষমুহুর্তে লওতারো মার্টিনেজের গোলটাও এসেছে মেসির পাস থেকেই। একেবারে শেষ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে নিজেও তুলে নিলেন একটি গোল।

ডি পলের প্রথম গোলে এগিয়ে আর্জেন্টিনা

এর আগে বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন নিকো গঞ্জালেস, লওতারো মার্টিনেজরা। গোলকিপারকে ওয়ান টু ওয়ান পেয়েও গোল করতে পারেননি মেসিও। তবে শেষপর্যন্ত বড় জয় নিয়েই সেমিফাইনালে পা রাখলো আলবিসেলেস্তারা।

Developed by: