বিভাগ: প্রবাস

তিন অপরাজিতার কথা

দক্ষতা আর চারিত্রিক গুণাগুণ যাচাই করে ভোটাররা ভোট প্রদান করেন : টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক
এলাকার কল্যাণে কাজ করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা নিরলসভাবে করে যাব। আমার ক্ষতি করার জন্য যারা চেষ্টা করেছিলেন তাদের জন্য দুঃখ হয়। প্রার্থীর দক্ষতা আর চারিত্রিক গুণাগুণ যাচাই করে ভোটার ভোট প্রদান করেন। এভাবেই নির্বাচনে জয়ী টিউলিপ তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বলেন, পরম করুণাময়ের অশেষ রহমতে এবং ভোটারদের দোয়ায় আমি নির্বাচিত হয়েছি। আমার সমর্থক এবং এলাকাবাসীকে রইল প্রাণঢালা শুভেচ্ছা।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্ন আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়ন পান। রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা টিউলিপ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন। লন্ডনের ক্যামডেন কাউন্সিলের সাবেক কাউন্সিলর ও সংস্কৃতিবিষয়ক কেবিনেট মেম্বার টিউলিপ শেখ রেহানা ও ড. শফিক সিদ্দিকের বড় মেয়ে। টিউলিপের জন্ম লন্ডনের মিচাম এলাকায়। তার শৈশব কেটেছে ব্রুনাই, ভারত, সিঙ্গাপুর এবং বাংলাদেশে। তিনি লন্ডনে কিংস কলেজ থেকে রাজনীতি, পলিসি ও গভর্নমেন্ট বিষয়ে মাস্টার ডিগ্রি করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি ব্রিটেনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, গ্রেটার লন্ডন অথরিটি ও সেভ দ্য চিলড্রেন ফান্ড চ্যারিটির জন্য কাজ করেন। লেবার পার্টির লিডার এড মিলিব্যান্ডের লিডারশিপ ক্যাম্পেইনেও তিনি কাজ করেন। এছাড়া টাওয়ার হ্যামলেটের সাবেক এমপি উনা কিং, সাদিক খান এমপি, হ্যারি কোহেনের
সঙ্গে কাজ করেন।
২০০৮ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে অংশ নেন টিউলিপ। ২০১০ সালে ক্যামডেন কাউন্সিলে প্রথম বাঙালি নারী
কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের তিনি একজন সদস্য। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে স্থানীয় লেবার পার্টির সদস্যদের ভোটে হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে লেবার পার্টির মনোনয়ন লাভ করেন। এর আগে আসনটিতে এমপি ছিলেন অস্কার পুরস্কার বিজয়ী নেত্রী লেবার দলের গেন্ডা জ্যাকসন। তিনি টানা ২৩ বছর এমপি থাকার পর বার্ধক্যজনিত কারণে অবসরে যান। ফলে আসনটিতে নতুন একজনকে মনোনয়ন দেয় পার্টি। টিউলিপ সেখানে এমপি পদের প্রার্থীর জন্য মনোনীত হন। টিউলিপ সিদ্দিক ক্যামডেন অ্যান্ড ইজলিংটন এনএইচএস ট্রাস্টের গভর্নর, রয়েল সোসাইটি অব আর্টের একজন ফেলো। স্থানীয় পত্রিকা হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেইট এক্সপ্রেসের নিয়মিত লেখক। স্বামীর সঙ্গে ওয়েস্ট হ্যামস্টেডে বসবাস করেন।
দায়িত্ব পালনে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব : রূপা আশা হক
হাউসিং সমস্যাকে প্রাধান্য দিয়ে আমি আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করব। নির্বাচনের সময় যারা আমার পক্ষে কাজ করেছেন তাদের এবং আমার এলাকাবাসী যারা আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছেন তাদের অনেক ধন্যবাদ। সবার সহযোগিতা পেলে বিরোধী প্রার্থীর চেয়ে আরও ভালো কাজ করতে পারব। জনগণের কল্যাণের জন্য সর্বদা আমি সোচ্চার ছিলাম, নির্বাচিত হওয়ার পর দায়িত্ব পালনে আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। নির্বাচিত রূপা হক এভাবেই তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টি হয়ে ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন রূপা হক। এর আগে লন্ডন বারা অব ইলিং-এর সাবেক ডেপুটি মেয়র রূপা হক ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে ২০০৪ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০০৫ সালে লেবার পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চেশাম অ্যান্ড এমারশাম আসন থেকে লড়েন। গত বছরের ২ নভেম্বর লেবার পার্টি থেকে ইলিং সেন্ট্রাল ও অ্যাকটন পার্লামেন্টারি আসনে মনোনয়ন পান তিনি। পাবনার মেয়ে রূপা ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৯৩ সালে রাজনীতি, সমাজ বিজ্ঞান এবং আইনে গ্রাজুয়েশন করেন। কালচারাল স্টাডিজের ওপর ১৯৯৯ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কিংস্টন ইউনিভার্সিটির সোসিওলোজির সিনিয়র লেকচারার রূপা হক-এর জন্ম লন্ডনের ইলিংয়ে ১৯৭২ সালে। ষাটের দশকে তার মা-বাবা ব্রিটেনে বসবাস শুরু করেন। তিনি ১৯৯১ সালে লেবার পার্টির সদস্য হন। তখন থেকেই তিনি বিভিন্ন নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থীদের জন্য ক্যাম্পেইন করেন। ২০০৪ সালে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে, ২০০৫ ও ২০১০ সালের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থীদের জন্য ক্যাম্পেইনে বিশাল ভূমিকা রাখেন রূপা হক। ব্রিটেনের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান, সানডে অবজারভার, ট্রিবিউন প্রভৃতি পত্রিকায় তিনি নিয়মিত কলাম লেখেন। তার লেখা তিনটি বই প্রকাশিত হয়েছে। ইংলিশনেস, রেইস ও কমিউনিটি রিলেশন্সে লেবার পার্টির নীতিনির্ধারকদের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। টনি বেন এমপি ও প্যাট্রিশিয়া হিউট এমপির রিসার্চার হিসেবে কাজ করেছেন রূপা। বর্তমানে তিনি কিংস্টন ইউনিভার্সিটিতে সোসিওলোজি ও ক্রিমিনালজিতে লেকচারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রূপা হকের মতে, তার এলাকার বর্তমান এমপি কনজারভেটিভ দলীয় এমপি থেকে ভালো কিছু দিতে পারবেন জনগণকে।
ভোটাররা আমাকে গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ ভোট দিয়েছেন : রুশনারা আলী
এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে আপনারা আমাকে অনেক সমর্থন, সহযোগিতা করেছেন। আপনারা আমাকে আবার এমপি নির্বাচিত করেছেন। আপনাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেষ করতে পারব না। গত নির্বাচনের তুলনায় এবার দ্বিগুণ ভোট প্রদান করে আমাকে নির্বাচিত করেছেন। ভোটার, সমর্থক ও শুভাকাক্সক্ষীদের উদ্দেশ্যে এভাবেই ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নির্বাচিত এমপি রুশনারা আলী তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মেয়ে রুশনারা আলী ২০১০ সালের ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। এবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এমপি নির্বাচিত হন লেবার পার্টি থেকে।
রুশনারার জন্ম সিলেটে ১৯৭৫ সালে ১৪ মার্চ। তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় সিলেটে। দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত এখানে পড়ে সাত বছর বয়সে তিনি বাবা-মার সঙ্গে পাড়ি জমান লন্ডনে। লেখাপড়া করেন পূর্ব লন্ডনের মালবারি গার্লস স্কুলে। পরে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে রাজনীতি, দর্শন এবং অর্থনীতিতে ডিগ্রি লাভ করেন। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রুশনারা আলী ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রথম বাঙালি এমপি। প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হয়েই তিনি লেবার পার্টির রাজনীতির সামনের কাতারে চলে আসেন। গত পাঁচ বছরে রুশনারা তার নির্বাচনী এলাকার জনগণের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজ করেন। কয়েক হাজারেরও বেশি বাসিন্দার হাউসিং, ইমিগ্রেশন, এন্টি-সোস্যাল বিহেভিয়ার ইত্যাদি মোকাবেলায় সহযোগিতা করেন। তিনি শ্যাডো ডিএফআইডি মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করেন লেবার পার্টির এমপি হিসেবে। পরে এডুকেশন মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় ব্রিটেনের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। লেবার পার্টির প্রতিনিধি হিসেবে হাউস অব কমন্সের ১৩ সদস্যবিশিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ট্রেজারি সিলেক্ট কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ব্রিটেনের অর্থসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি তদারকি করাই হচ্ছে এই কমিটির প্রধান কাজ। টাওয়ার হ্যামলেট হাউসিং সমস্যার সমাধানেও তিনি ব্যাপক চেষ্টা চালান। তার লবিংয়ের ফল হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের নিউ হোমস বোনাস ফান্ডিং থেকে এই বারা ১৬৫ মিলিয়ন পাউন্ড লাভ করে। ডিএফআইডি মিনিস্টারের দায়িত্ব পালনকালে মিয়ানমারে নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে তাদের কষ্টের চিত্র প্রথমবারের মতো পশ্চিমা বিশ্বের নজরে আনেন। তাছাড়া লেবাননে সিরিয়ানদের শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে সেখানকার দুর্দশা লাঘবে ব্রিটিশ সরকার এবং জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সফর করেন কেনিয়ার খরা পীড়িত অঞ্চল। বাংলাদেশের জলবায়ু সমস্যা মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক জনমত গড়ার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন তিনি। গার্মেন্ট কর্মীদের ন্যায্য বেতন এবং বাংলাদেশের বহুল আলোচিত গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় নিহত এবং আহতদের ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। নো মোর ফ্যাশন ভিকটিম আন্দোলনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষকও রুশনারা। 2_2654782_265478

নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসব ও বইমেলা শুরু

1432368372যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসব ও বই মেলা। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের পিএস-৬৯ মিলনায়তনে ফিতা কেটে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্বসসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ। এ সময় বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু লেয়ার লেভিনের উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে গিয়েছিলেন লেয়ার লেভিন। তার ক্যামেরায় বন্দি করেছিলেন দুর্লভ অনেক চিত্র। যে চিত্র দিয়ে পরে প্রয়াত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ তৈরি করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘মুক্তির গান।’

লেয়ার লেভিনের কাছ থেকেই সেই দুর্লভ চিত্রগুলো সংগ্রহ করেছিলেন। লেভিন নিজেও জানালেন সেই কথা। তাকে ২৪তম বই মেলা এবং আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসবের প্রথম দিনেই সম্মাননা জানানো হয়। তাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. শামীম আহসান।
সম্মাননা অনুষ্ঠানে লেয়ার লেভিন আবেগ আপ্লুত কণ্ঠে বলেন, আমি এই চিত্র দিয়ে ‘জয় বাংলা’ চলচ্চিত্র তৈরির চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমার তা করতে পারিনি। তারেক মাসুদ এবং ক্যাথরিন মাসুদ আমার কাছে আসলে আমি তাদের তা নিঃশর্তে তুলে দিই।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ অনেক সুন্দর দেশ। বাংলাদেশের মানুষ ও তাদের সংস্কৃতিও সুন্দর।

তিনি বলেন, আমি যখন চিত্রগ্রহণ করছিলাম, সেই সময় আমাকে আমেরিকান স্পাই বলে গ্রেফতার করা হয়, আমেরিকায় পাঠিয়েও দেয়া হয়। লেয়ার লেভিনকে মঞ্চে পরিচয় করিয়ে দেন সাংবাদিক ও কলামিস্ট হাসান ফেরদৌস। লেভিনের বাড়ি যাওয়া এবং চিত্রগুলো তুলে দেয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন ফার্মাসিস্ট সৈয়দ টিপু সুলতান।
উদ্বোধনের পরই মঞ্চে ২৪টি মঙ্গল প্রদীপ জ্বেলে বইমেলা ও আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসবের উদ্বাধনী অনুষ্ঠানের সূচনা করেন অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ, বইমেলার আহ্বায়ক ও ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান রোকেয়া হায়দার, বিশিষ্ট নাট্যকার রামেন্দু মজুমদার, বিশ্বভারতীর পরিচালক রাম কুমার মুখোপাধ্যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নববিক্রম কিমোর ত্রিপুরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিজ্ঞানী ও নিউজার্সির প্লেইন্সবরোর কাউন্সলম্যান ড. নূরন নবী, নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল মো. শামীম আহসান, প্রকাশক আমিনুল ইসলাম, আহমেদ মাজহার, হুমায়ুন কবীর ঢালি, সাংবাদিক আহমেদ মুসা, বিশিষ্ট ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন, বীরু প্রকাশ পাল, হাসান ফেরদৌস, জার্মান প্রবাসী লেখিকা নাজমুন নেসা পিয়ারি, বিশিষ্ট লেখিকা শারমিন আহমেদ, সম্মুদাস গুপ্ত, নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক মনজুর আহমদ, লেখক ফেরদৌস সাজেদীন প্রমুখ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, নিউইয়র্কে দুই যুগ বাংলা বইমেলা হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসব হচ্ছে এটা কম কথা নয়। আগামী বছর ২৫ বছর পূর্ণ হবে। রজতজয়ন্তীতে আরো বড় অনুষ্ঠান হবে। বাঙালী উৎসবে মেতে উঠবে। আমি মনে করি এই উৎসবের ধারা অব্যাহত থাকবে। আন্তর্জাতিক এই উৎসব সবার প্রাণের উৎসবে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, উৎসব না হলে জীবন চাঙ্গা হয় না। আগামী তিনটি দিন আপনাদের আন্দন্দের মধ্যে দিয়ে কাটুক এই প্রত্যাশা করি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে আবার মঞ্চে আসেন অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ। এ সময় তিনি বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা বইবিরোধী। বইয়ের সঙ্গে মানুষের একমাত্র সম্পর্ক হয় পরীক্ষা দেবার সময়।

এবারের বইমেলার আহবাক রোকেয়া হায়দার স্বাগত বক্তব্যে বই মেলায় আগত সকল অতিথিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আগামী তিন দিন আমরা উৎসবে মেতে থাকবো। আপনারা যা বলবেন আমরা তা শুনবো, আর আমরা যা বলবো তা আপনারা শুনবেন। তিনি বলেন, বইমেলা এবং আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসব সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি এবং বিশ্ব বাঙালির প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে।

আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয় সঙ্গীত পরিষদের উদ্বোধনী সঙ্গীত এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি শিল্পীদের নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে। জজ হ্যারিসনের সঙ্গীত দিয়েই নতুন প্রজন্মের শিল্পী দ্বিতীয় ফেরদৌস, দীপাঞ্জলি ভৌমিক, বাসমা, শ্রুতিকনা দাসের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় কনসার্ট ফর বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে যশোর রোড কবিতা আবৃত্তি করে ও সৌরভ সরকার। আরো সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পী মেহরুন আহমেদ, মারিয়া ও স্থানীয় শিল্পী পার্থ সারথি মুখোপাধ্যায়। এর আগে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন কাবেরী দাশের পরিচালনায় নিউইয়র্কের সঙ্গীত পরিষদের শিল্পীরা।

পুরো অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের কর্ণধার বিশ্বজিৎ সাহা। যৌথ উপস্থাপনায় ছিলেন ডানা ইসলাম, ক্লারা রোজারিও, সাবিনা হাই উর্বি, মিহির চৌধুরী। মঞ্চ ব্যবস্থাপনা, অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন নিনি ওয়াহেদ ও সেমন্তী ওয়াহেদ।

এদিকে বিকালে বই মেলা ও আন্তর্জাতিক বাংলা উৎসব উপলক্ষে জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজা থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভা যাত্রাটি বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বই মেলার প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। এই শোভা যাত্রায় অতিথিসহ সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশীরা অংশগ্রহণ করেন।

ব্রিটেনের সরকার ও বিরোধীরা স্কটল্যান্ড নিয়ে একাট্টা

uk_leaders_148414স্কটল্যান্ড নিয়ে এবার একাট্টা ব্রিটেনের সরকার ও বিরোধী দল। স্বাধীনতা প্রত্যাখ্যান করলে স্কটল্যান্ডের হাতে আরো ক্ষমতা দেয়ার অঙ্গীকার করেছে ব্রিটেনের প্রধান তিনটি দল। ব্রিটেনের মূল তিনটি দলের নেতা ডেভিড ক্যামেরন, এড মিলিব্যান্ড এবং নিক ক্লেগ তিনজনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে স্কটিশরা স্বাধীনতা প্রত্যাখ্যান করলে তারা স্কটল্যান্ডের কাছে আরো ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। আগামী বৃহস্পতিবার স্বাধীনতার প্রশ্নে স্কটল্যান্ডে গণভোট অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। খবর বিবিসি।
এদিকে স্কটল্যান্ডে স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোটের আগে শেষবারের মতো সেখানে সফর করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। আবেগাপ্লুত এক ভাষণে ক্যামেরন স্কটদেরকে যুক্তরাজ্য ছেড়ে না যাবার আবেদন জানিয়ে ডেভিড ক্যামেরন তার ভাষণে বলেন, এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র এ প্রজন্মের স্কটদের জন্য নয়, বরং এটি তাদের সন্তান, নাতি-নাতনি এবং তার পরবর্তী প্রজন্মের জন্যেও। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ভাঙ্গন হলে সেটি হবে বেদনাদায়ক বিচ্ছেদের মতো। গণভোটে না ভোট জয়ী হলে স্কটল্যান্ডকে আয়কর এবং ব্যয়ের ক্ষেত্রে আরো ক্ষমতা দেয়ার অঙ্গিকার করেন মি. ক্যামেরন।
তবে স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার এলেক্স স্যামন্ড বলেছেন, স্বাধীন হলে স্কটিশ অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটবে। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ’ ভোট জয়ী হলে স্কটিশ অর্থনীতি আরো বেগবান হবে।

 

ফ্রান্স জাতীয় ক্রিকেটলীগে পাকিস্থানকে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন

10168531_10201774714505454_1225082968_nফ্রান্সে তৃতীয় বিভাগ জাতীয় টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট লীগের ফাইনালে শিরোপা জিতল বাংলাদেশ ক্রিকেট ক্লাব,প্যারিস | গত শনিবার বিকেলে প্যারিসের বিনসেন মাঠে অনুষ্ঠিত ফাইনাল খেলায় এর্জেনটাইল ক্রিকেট ক্লাব পাকিস্তান,ফ্রান্সকে ৩৭ রানে হারিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট ক্লাব,প্যারিস চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

আর এ বিজয়ের ফলে নির্ধিদায় ফ্রান্স ২য় বিভাগ জাতীয় টি -টুয়েন্টি ক্রিকেট লীগে অংশ গ্রহণ করার পথ সুগম হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট ক্লাব প্যারিসের। ফলে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে বইছে আনন্দের বন্যা।

ফ্রান্সের ১৭টি ক্লাবের অংশগ্রহনে অনুষ্ঠিত টি -টুয়েন্টি ক্রিকেট লীগের ফাইনালে বাংলাদেশ দল টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন দলের অধিনায়ক রাশেদ হাসান শাকিল।

দর্শকদের তুমুল করতালি আর বাংলাদেশ বাংলাদেশ স্লোগানের মধ্যে দিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন ওপেনিং জুটি শুভ ও জনী। উত্সাহ দিতে থাকেন মাঠের বাইরে অবস্থান নেয়া ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের দুতাবাসের কাউন্সিলর হজরত আলী খান ,ইয়ত ক্লাবের সভাপতি শরিফ আল মমিন ,সম্পাদক টিএম রেজা ,শিল্পী আরিফ রানা ,হেনু মিয়া, মিন্টু চৌধুরী ,শুভ্র দাসহ প্যারিসে অবস্থানরত বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠনের রাজনৈতিক ,সামাজিক, ও মিডিয়া নেতৃবৃন্দ ।

শুভ করেন ৩৬ আর জনি করেন ১৩। এরপর ১৯ ওভার ৪ বল খেলে সব কটি উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত

বোলিংয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জুলিতে রানের সংখ্যা দাড়ায় ১০১। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করেন শুভ।

জবাবে বাংলাদেশ দলের অনবদ্য পারফরম্যান্সের ফলে ৩৭ রানে জয়ী হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট ক্লাব ফ্রান্স। ফ্রান্সের বুকে রচিত হয় আরেক অধ্যায়ের। বাংলাদেশ দলের বোলিংয়ে এদিন ধারহীন নৈপুণ্য দেখান মোজাহিদ। তিনি নেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট।

খেলায় ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হন বাংলাদেশ দলের শুভ মল্লিক।

বাংলাদেশ দলের স্কোর শুভ ৩৬,ফয়সাল ২৪,জনি ১৩,আশু ৮,শামস ৭,শাকিল ৬,ও অতিরিক্ত ৭। উইকেট নেন মোজাহিদ ৩,হালিম ২,আশু ১,শামস ২,শাকিল ১ ও রান আউট হয় ১ টা।

বাংলাদেশ দলে খেলোয়ার ছিলেন যতাক্রমে রাশেদ হাসান শাকিল (অধিনায়ক),ওয়াশিউজ্জামান (সহ অধিনায়ক), আজিজুল হক সুমন ,শামসুল আলম শামস ,ফয়সাল খান ,রাহাত খান জনি,আরিফ মোজাহিদ ,আব্দুল হালিম ,মোহাম্মদ জাবেদ , শুভ মল্লিক ,নজিব উল্লাহ পিয়াস ,মুবারক রাকিব ,সুমন মল্লিক ,মামুন খান ,সাগর খান আনোয়ার হোসেন ,মঞ্জুর আহমদ ,আক্তারুজ্জামান রয়েল।

ডেনমার্কে মুসলমানদের প্রথম মসজিদ

1002_1ডেনমার্কে নির্মিত হয়েছে মুসলমানদের নামাজ আদায়ের জন্য প্রথম মসজিদ। দেশটিতে বসবাসকারী মুসলমান নাগরিকদের জন্য এ মসজিদটি বৃহস্পতিবার উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

কাতার সরকারের অনুদানে কোপেনহেগেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গ্রিটিতে মিনারসহ নির্মিত হয়েছে মসজিদটি। অনুদানের পরিমাণ ছিল ২১০ কোটি ৮২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। মসজিদটি ৭২ হাজার ১১৮ বর্গফুটের। মুসলিম নাগরিকরা কাতার সরকারকে এজন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এছাড়া ডেনমার্ক সরকার এতে সহযোগিতা করায়স্থানীয় মুসলমানরা তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ।

উল্লেখ্য, ডেনমার্কে বর্তমানে সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মুসলমানরা। প্রায় দুই লাখ মুসলিম নাগরিক বাস করেন এখানে। কোপেনহেগেনের মুসলিম কমিউনিটিতে রয়েছে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, একটি টেলিভিশন স্টুডিও ও একটি ব্যায়ামাগার। এবার নির্মিত হলো মসজিদ কমপ্লেক্স। স্থানীয় মুসলিমরা তাই বেশ আনন্দিত। সূত্র: এএফপি

প্রবাসী জিলানী : একজন আদর্শ ব্যক্তিত্ব

images11মেধা মননে একজন বিচক্ষণ বাঙালি এ কে এম জিল্লুর রহমান জিলানী। পরোপকারে বেশিভাগ সময় ব্যয় করেন। তিনি ইউরোপের ইংল্যান্ডে বসবাস করলেও বুকে ধারণ করেন বাংলাদেশকে। আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে গভীরভাগে ভালোবাসেন জিলানী। এ মাধ্যমগুলোতে মিশে থাকতে চান আজীবন। কারণ এখানে রয়েছে তাঁর মনের খোরাক। আত্মার মিল।
জিল্লুর রহমান জিলানীর জন্ম ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মার্চ। তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কুচাই ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মরহুম হাবিবুর রহমান ও মাতা মরহুমা রোকেয়া খানম। পিতা হাবিবুর রহমান প্রথম দিকে মুসলিম লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন, পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ রাজনীতি করতেন। তিনি কুচাই ইউনিয়ন পরিষদে দুই মেয়াদে বার বছর মেম্বার হিসেবে জনগণের সেবা করেন এবং মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত বাস মালিক সমিতির সভাপতির গুরুদায়িত্ব পালন করেন।
জিল্লুর রহমান জিলানী প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন ব্লুবার্ড স্কুলে। পরবর্তীতে তিনি দুর্গাকুমার পাঠশালায় তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে সিলেট সরকারি পাইলট হাই স্কুল থেকে ১৯৭২ সালে এসএসসি পাশ করেন। ভর্তি হন এমসি কলেজে (বর্তমানে যা সরকারি কলেজ) এবং ১৯৭৫ সালে যথারীতি এইচএসসি পাশ করেন। তারপর সুপরিচিত বিদ্যাপীঠ সিলেট সরকারি কলেজ অর্থাৎ বর্তমান এমসি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স পাস করেন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮১ খ্রিস্টাবে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। লেখাপড়া শেষে দেশে কিছু দিন চাকরি করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি স্বপ্নের দেশ ইংল্যান্ড ভ্রমণ করেন এবং সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
ইংল্যান্ডে বাঙালিদের চিরচেনা রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি এবং ধীরে ধীরে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। ব্যবসায় সফল হলেও তিনি শুধু ব্যবসায় ডুবে থাকেননি। ইংল্যান্ডের বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকায় কাজ করার প্রয়াস পান। সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকার সত্যবাণী সম্পাদনা দায়িত্ব তাঁর ওপর পড়ে এবং সফলতার সাথে তিনি সম্পাদনা করেন। পরবর্তীতে তিনি ‘সাপ্তাহিক পত্রিকায়’ কাজ শুরু করেন। সাপ্তাহিক পত্রিকায়ও তিনি ইসলামের শিক্ষা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য পাতা সম্পাদনা করেন। বর্তমানেও তিনি সাপ্তাহিক পত্রিকায় কর্মরত আছেন। ধর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাস এবং ধর্মীয় চিন্তাচেতনায় গভীর মনোযোগ থাকায় তাঁর ওপর পত্রিকার ধর্মীয় পাতাগুলো সম্পাদনার দায়িত্ব পড়ে। তিনি দৃঢ়তা ও দক্ষতার সাথে তাঁর দায়িত্ব পালন করে যান।
জিল্লুর রহমান জিলানী আপাদমস্তক একজন মুসলমান। কোরআন ও হাদিসের শাশ্বত বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে মেধা ও অর্থ উভয় ব্যয় করতে কার্পণ্য করেন না। তিনি বাংলাদেশের খুলনার প্রফেসর শামসুর রহমান এর ৪০টির মত ইসলামী বই নিজের অর্থায়নে প্রকাশ করে দিয়েছেন।
জিলানী একজন গর্বিত বাঙালি। যিনি কাজে বিশ্বাসী। নিরবে নিভৃতে কাজে ডুবে থাকতে চান। কাজে আনন্দ পান। কথায় আর কাজে মিল রেখে এগুতে চান সামনের দিকে। তিনি সর্বদা প্রচারবিমুখ। প্রবাসে ব্যবসার পাশাপাশি বহুল প্রচার মাধ্যম সংবাদপত্রে কাজ করেও প্রচারবিমুখ তিনি।
আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও ফার্স্ট ওয়ার্ল্ডের কালচার সংস্কৃতিকে ধারণ করতে চান না। শাশ্বত ইসলামের ঐশিবাণী বুকে ধারণ করে তাঁর নিত্যদিনের পথ চলা। তিনি কুরআন ও সুন্নার প্রতি গভীর অনুরক্ত। তাই নিজ খরচে ও নিজের তত্বাবধানে বোখারী শরীফ ও আবু দাউদ শরীফের সকল খন্ড বাংলায় অনুবাদ করান এবং সাধারণ মানুষের পড়ার সুযোগ করে দেন। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকার আলবাণী একাডেমি থেকে বোখারী শরীফ ও আবু দাউদ শরীফ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আবার আলবাণী একাডেমির অনেক ইসলামি বইয়ের প্রকাশক এবং পৃষ্ঠপোষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এ জন্য আলবাণী একাডেমি তাঁকে প্রধান উপদেষ্টা মনোনিত করেছেন এবং খুলনার প্রফেসর শামসুর রহমান সংসদের সাথেও তিনি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত।
জিল্লুর রহমান জিলানী ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। তিনি ১৯৮৩ সালে বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ হন। তাঁর সহধর্মিণী জেসমিন নাহার রহমান। তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান। বড় ছেলে সানিয়াত রহমান অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে বায়ো কেমিস্ট্রিতে এমএসসি পাস করে লন্ডন ইমপিয়েল কলেজে পিএইচ.ডি অধ্যয়নরত। ছোট ছেলে জাহিন রহমান ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স করছেন। আর একমাত্র মেয়ে রামিশা রহমান ও লেভেল পরীক্ষার ফল প্রার্থী।
জিলানী একজন সফল, সুখী ও সার্থক মানুষ। তাঁর মনে সদানন্দ বিরাজ করছে। বাকী দিনগুলো এভাবেই কাটিয়ে দিতে চান তিনি।

বিচারক শাহিনা রহমান

27-7-6সিলেট জেলার প্রথম মহিলা জজ হিসেবে কৃতিত্ব অর্জন করেন শাহিনা রহমান। শাহিনা রহমানের জন্ম ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দের ১৫ অক্টোবর। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ গ্রামের (মরহুম) হাবিবুর রহমান ও (মরহুমা) রোকেয়া খানমের গর্বিত সন্তান শাহিনা রহমান সিলেট গভর্নমেন্ট হাইস্কুল থেকে ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে কৃতিত্বের সঙ্গে এস.এস.সি, সিলেট মহিলা কলেজ থেকে ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে এইচ.এস.সি পাস করেন। তিনি ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে এল.এল.বি অনার্স সম্পন্ন করেন এবং ১৯৮১ থেকে ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল.এল.এম পাস করেন। শাহিনা রহমান ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে বি.সি.এস পাস করে বিচার বিভাগে সহকারী জজ হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। তিনি ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে বিজনেস ম্যানেজমেন্টে এসোসিয়েট ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৯৫ থেকে ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনেন্স কর্পোরেশন ঢাকার ল অফিসার এবং প্রিন্সিপাল অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিলেট জেলার প্রথম মহিলা জজ। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্ক সিটির বোর্ড অব এডুকেশনে কর্মরত আছেন। তিনি শীঘ্রই বাংলাদেশে ফিরে ল প্র্যাকটিস করতে চান। শাহিনা রহমান দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন সামাজিক ও সমাজসেবা মূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন।

ইঞ্জিনিয়ার এম.এ. হামিদ

31-17মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তরুণ প্রজন্মের এক গর্বিত উত্তরাধিকারীর নাম। ইংল্যান্ড প্রবাসী এম.এ হামিদ অক্লান্ত পরিশ্রম ও সাধনার ফলে স্থান করে নিয়েছেন সাউথঅ্যান্ড এয়ারপোর্ট প্রসপেক্ট এভিয়েশন সেন্টারে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপক পদের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজেকে।
লালাবাজার ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের বাসিন্দা এম.এ হামিদ ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দের ৮ জুন জন্মগ্রহণ করেন। পিতা (মরহুম) আব্দুন নূর মাস্টার ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ। শিক্ষার প্রতি ছিল অসাধারণ দুর্বলতা। তাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শিক্ষার প্রসারে কাজ করে গেছেন। তাঁর গর্ভধারিণী মাতা রাবেয়া খাতুন।
এম.এ হামিদ ইংল্যান্ডের ৫৪ হারকোট এভিনিউ সাউথঅ্যান্ড অন-সি-তে বসবাস করেন। তিনি সাসেক্স এর ব্রাইটন কলেজ অব টেকনোলজি থেকে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে সিটি অ্যান্ড গিল্ডস ইন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ইঞঊঈ ভরৎংঃ পবৎঃরভরপধঃব রহ ঊহমরহববৎরহম লাভ করেন। সাসেক্স সোরহাম এয়ারপোর্টের নথব্রোক কলেজ  থেকে নভেম্বর ১১৯৭ খ্রিস্টাব্দে অবৎড়ঢ়ষধহব অ১ ্ ঢ়রংঃড়হ ঊহমরহব ঈঅঅ ‘অ্ঈ (খরপবহংবফ ঊহমরহববৎ) উরঢ়ষড়সধ রহ অরৎপৎধভঃ গধরহঃবহধহপব কোর্স সম্পন্ন করেন। লন্ডনের সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০৩ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে ই ঊহম (যড়হ’ং) অরৎ ঞৎধহংঢ়ড়ৎঃ ঊহমরহববৎরহম কোর্স সম্পন্ন করেন। ফার্নব্ররো কলেজ অব টেকনোলজি হতে সেপ্টেম্বর ২০১০ থেকে ডিসেম্বর ২০১২ খ্রিস্টাব্দে চএ ঈবৎঃরভরপধঃব রহ ঊফঁপধঃরড়হ সার্টিফিকেট অর্জন করেন।  কেন্টের বিগিন হিল এয়ারপোর্টের ফলকন ফ্লাইয়িং সার্ভিস হতে ডিসেম্বর ১৯৯৭ থেকে জুলাই ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে অরৎপৎধভঃ সধরহঃবহধহপব ঃবপযহরপরধহ কোর্স সম্পন্ন করেন।
সাসেক্স সোরহাম এয়ারপোর্টের কে.বি এভিয়েশন হতে আগস্ট ১৯৯৮ থেকে মে ২০০৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত গধরহঃবহধহপব ঊহমরহববৎ (রিঃয পড়সঢ়ধহু ধঢ়ঢ়ৎড়াধষ)
জুলাই ২০০৪ থেকে সেপ্টেম্বর ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি টিউটর ইন প্রথম এবং দ্বিতীয় বর্ষ এরোনটিকেল সাবজেক্টে সিটি ইউনিভার্সিটি লন্ডন থেকে এবং একজন এয়ারক্রাফট মেনটেনেন্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর থেকে ২০০৯ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর বাংলাদেশের এরোনেটিক্যাল কলেজে উচ্চতর শিক্ষা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ঢাকায় সৌদিআরব এয়ারলাইন স্টেশনে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর থেকে ২০১০ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি পর্যন্ত লাইন মেনটেইনেন্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পার্টটাইম কাজ করেন। তিনি হ্যামশায়ার শহরের ফার্মবরো কলেজ অব টেকনোলজিতে লেকচারার হিসেবে ২০১০ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল হতে ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি সাউথঅ্যান্ড এয়ারপোর্ট প্রসপেক্ট এভিয়েশন সেন্টারে প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপক পদে নিয়োজিত আছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। তাঁর স্ত্রী নাজিয়া মান্নান। একমাত্র কন্যা মাইমুনা হামিদের জনক তিনি।

হোসেন আহমদ

31-16ব্রিটেনে সফল ক্যাটারিং ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী আলহাজ হোসেন আহমদ দক্ষিণ সুরমা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের রায়খাইল গ্রামে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হাজি আছাব আলী ও মাতা সূর্যবান বিবি।
আত্মপ্রচারবিমুখ এবং সহজসরল সাদামাটা জীবনযাপনের অধিকারী হোসেন আহমদ ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটেনে গমন করেন। তিনি ব্রিটেনে ব্যবসার পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক নানা কর্মকাণ্ডেও নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন। তাঁর মাতৃভূমির
প্রতি অগাধ ভালোবাসা লক্ষ করা যায়। সুযোগ পেলেই তিনি চলে আসেন। মাতৃভূমিতে কাজ করতে চান সমাজের কল্যাণে। তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিজস্ব ভূমিতে প্রতিষ্ঠা করেছেন রায়খাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়। পিতার নামে হাজি আছাব আলী বৃত্তি,  যা মেধাবী ছাত্রছাত্রীদেরকে প্রতিভা বিকাশে সাহায্য করে। জালালপুর কলেজের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য একটি গাড়ি কিনে দিয়েছেন। এছাড়া বড়বাঘা সেতু নির্মাণ কাজে বিরাট অঙ্কের অর্থ সাহায্যসহ মসজিদ মাদ্রাসায় দান করে যাচ্ছেন। তিনি জালালপুর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান। উপদেষ্টা দক্ষিণ সুরমা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থা ‘হেলিক্স’ এর অন্যতম উপদেষ্টা।
তিনি সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ সিলেট মিলেনিয়াম এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর। ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন এই মার্কেটটি ২০০২ খ্রিস্টাব্দে উদ্বোধন করা হয়। তাঁর সহধর্মিণী ফাতেমা খানম।

এ. বারী

31-18অদম্য ইচ্ছা আর প্রবল আত্মশক্তিতে বলীয়ান এ. বারী ব্যক্তিমালিকানায় ম্যানর পার্কের পাশে গড়ে তোলেন ‘দি রয়েল রিগানন্সি’ নামক সুবিশাল কমিউনিটি সেন্টার। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ হলে রাতে ৭৫০ জন অতিথি ও বিকেলে ১১শ অতিথি আপ্যায়নের আসন রয়েছে। এছাড়া আলাদা অডিটরিয়ামে ৩৫০ জন অতিথির আসন আছে। গাড়ি পাকিং এর সুযোগ সুবিধাসহ এ বিশাল হলগুলোতে প্রবাসীরা তাদের সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নির্দ্বিধায়
পালন করতে পারেন। দক্ষিণ সুরমার লালাবাজার ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের অধিবাসী হাজি মন্তাজ আলীর একমাত্র পুত্র এ. বারী দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পূর্বেই পাড়ি জমান বিলাত মুল্লুকে। বিলাতে গিয়ে লেখাপড়াসহ রেস্টুরেন্টে কাজ শুরু করেন। রেস্টুরেন্টে কাজ করে বড় কিছু করার স্বপ্ন বুনেন যার প্রতিফলন ঘটে ‘দি রয়েল রিগানন্সি’ নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। এখন তিনি একজন সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ব্যবসার পাশাপাশি রয়েছে সামাজিক কর্মকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততা।

Developed by: